নাটকীয়তায় ভরা এক ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা পাকিস্তানকে দুই উইকেটে হারিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (ডব্লিউটিসি) ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। সেঞ্চুরিয়নে অনুষ্ঠিত টেস্ট ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত রোমাঞ্চকর পর্যায়ে পৌঁছে। চতুর্থ দিন শুরু হয় দক্ষিণ আফ্রিকার ১২১ রান প্রয়োজন দিয়ে, যেখানে তারা ৯৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে যথেষ্ট সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল।
তবে পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ আব্বাসের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং (১৫.৩ ওভারে ৬-৫৪) হোস্টদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। এক পর্যায়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ৯৯ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে।
তবুও, কাগিসো রাবাদা এবং মার্কো ইয়ানসেন নবম উইকেটে ৫১ রানের অজেয় পার্টনারশিপ গড়ে পাকিস্তানের জয়ের স্বপ্ন নষ্ট করে দেন। আব্বাসের দুর্দান্ত স্পেল সত্ত্বেও তারা ম্যাচটি জয় করতে সমর্থ হন।
দক্ষিণ আফ্রিকার এদিন শুরু হয় এডেন মার্করাম এবং টেম্বা বাভুমার ধৈর্যশীল ব্যাটিং দিয়ে। তারা অফ-স্টাম্পের বাইরে কোনো শট খেলার ঝুঁকি নেননি। বাভুমা এক পর্যায়ে মোহাম্মদ আব্বাসের বল বাউন্ডারি পার করেন, যেখানে নাসিম শাহ বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ ধরলেও তার পা লাইনের বাইরে যাওয়ায় বাঁচেন।
ড্রিঙ্কস বিরতির পরেই ম্যাচ নাটকীয়ভাবে মোড় নেয়। আব্বাস তার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের পুরস্কার পেয়ে মার্করামকে বোল্ড করেন, যেখানে বল নিচু হয়ে অফ-স্টাম্পে আঘাত হানে। এর কিছুক্ষণ পর বাভুমা নিজের অদ্ভুত আউটের মাধ্যমে সবাইকে অবাক করেন। পকেটে লেগে বাউন্স করা বল উইকেটকিপারের হাতে চলে যায়, আর বাভুমা রিভিউ না নিয়ে মাঠ ছাড়েন।
বাভুমার বিদায়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে ধস নামে। নাসিম শাহ কাইল ভেরেইনকে বোল্ড করার পর আব্বাস টানা দুই বলে ডেভিড বেডিংহাম এবং করবিন বোশকে ফিরিয়ে দেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার নবম উইকেটে রাবাদা ও ইয়ানসেন সাবলীল ব্যাটিং করেন। তারা অফ-স্টাম্পের বাইরে বল ফেলার ক্ষেত্রে সতর্ক ছিলেন এবং বাউন্সার মোকাবিলায় আত্মবিশ্বাস দেখান। তারা লাঞ্চ পর্যন্ত কোনো উইকেট না হারিয়ে দলকে ১১৬ রানে নিয়ে যান।
লাঞ্চের পর মাত্র ৫.৩ ওভার খেলে রাবাদা ও ইয়ানসেন দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। রাবাদা নাসিম শাহের বলকে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে আত্মবিশ্বাস দেখান। অন্যদিকে, ইয়ানসেন আব্বাসের বল স্কয়ার কাট করে জয় নিশ্চিত করেন।
পাকিস্তানের অদ্ভুত কৌশল, যেখানে আমের জামালকে শেষদিকে বল করানো হয়েছিল, ব্যর্থ প্রমাণিত হয়। রাবাদা তার ওভারে দুটি বাউন্ডারি মারেন, যা ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ২১১ এবং ২৩৭ (সাউদ শাকিল ৬৬*, বাবর আজম ৫০; মার্কো ইয়ানসেন ৫-৪২, কাগিসো রাবাদা ২-৬৮)
দক্ষিণ আফ্রিকা ৩০১ এবং ১৫০/৮ (টেম্বা বাভুমা ৪০, এডেন মার্করাম ৩৭; মোহাম্মদ আব্বাস ৬-৫৪, নাসিম শাহ ১-৩৪)
দক্ষিণ আফ্রিকার ২ উইকেটে জয়।
মন্তব্য করুন