দুই ম্যাচে ৬২ গড়ে ৬২ রান—দারুণ ছন্দের জানান দিচ্ছেন এখন শামীম হোসেন পাটোয়ারী। নিজের রানের ধারাবাহিকতার সঙ্গে দলের সিরিজ জয়ের মিশে গেছে তার অবদান। তিন ম্যাচের সিরিজ ইতিমধ্যে ২-০ ব্যবধানে জিতে রেকর্ডও গড়েছে বাংলাদেশ। এমন অর্জনের পর শামীম জানালেন, আত্মবিশ্বাসই তার সবচেয়ে বড় অস্ত্র। সেটাতেই সফল হয়েছেন উইন্ডিজের বিপক্ষে এই সিরিজে।
ক্যারিবীয় দ্বীপে প্রথম কোনো সংক্ষিপ্ত সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। ৬ বছর আগেও নিরপেক্ষ ভেন্যুতে উইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জেতার রেকর্ড আছে। তবে সেবার দুটি ম্যাচই হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার লডারহিলে। কিন্তু এবার সবকয়টি ম্যাচই ক্যারিবীয় দ্বীপ সেন্ট ভিনসেন্টের আর্নোস ভ্যালে গ্রাউন্ডে। ১২৯ রানের ইনিংসে শামীম একাই করেছিলেন ৩৫ রান। ১৭ বলে তার স্ট্রাইকরেট ছিল ২০৫.৮৮—এমন কাউকেই তো লোয়ার মিডল অর্ডারে চায় বাংলাদেশ! ম্যাচসেরার পুরস্কার নিতে গিয়ে সফল শামীমও সেকথাই বললেন, ‘আমি হলাম ফিনিশার, আমার কাজই হলো মারা। শেষ কয়েক মাসে পরিশ্রম তো কম করিনি।’
এক বছর জাতীয় দলের আশপাশেও ছিলেন না শামীম। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ড সফরটা তার ভালো কাটেনি। যুক্তরাষ্ট্র ও উইন্ডিজে হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াডেও জায়গা মেলেনি তার। এত লম্বা বিরতির পর ফিরেই খেলেছিলেন ১৩ বলে ২৩ রানের ইনিংস। আজ দলের বিপর্যয়ের পর সেটাকেও ছাপিয়ে গেলেন তিনি। ম্যাচসেরা ইনিংসটা কাউকে উৎসর্গ করবেন কী না—এমন প্রশ্নে তরুণ এই ব্যাটারের উত্তর, ‘কাউকে উৎসর্গ করার কিছু নেই। ভালো খেলতে পেরেছি, আমি খুশি, আমার পরিবার খুশি, পুরো দেশ খুশি; এটাই ভালো লাগছে।’
৭২ রানে ৬ উইকেট পড়ার পর নেমেছিলেন শামীম। আর শেষ করলেন অপরাজিত থেকেই। নিজের ভেতরকার চিন্তা-ভাবনা কেমন ছিল সেটার শামীমের মুখেই শুনুন, ‘আসলে আমার সময় সময় চিন্তা থাকে, দল যেরকমই থাকুক আমি যদি খেলতে পারি আমার টিম অনেক ওপরে চলে যাবে। আমার সব সময় ইতিবাচক চিন্তা থাকে।’
জাতীয় দলে না থাকলেও বিসিবির অন্য প্রোগ্রামগুলোতে ছিলেন শামীম। এইচপির হয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরও করেছিলেন। সেসব প্রোগ্রামে নিজের দক্ষতার আরও উন্নতির চেষ্টা করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আসলে আমি শেষ যতগুলো ম্যাচ খেলেছি এইচপি, ইমার্জিং দল সবগুলোতে ভালো খেলে এসেছি। সেগুলোর জন্য আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে, সুযোগ পেলে ভালো করবো ইনশাআল্লাহ।’
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পরও শামীমের আত্মবিশ্বাস ছিল নিজের দক্ষতার ওপর, ‘বাদ পড়েছি, এগুলো নিয়ে চিন্তা করি না। আমি ইতিবাচক চিন্তা ভাবনায় থাকতে পছন্দ করি। আমি অনেক খুশি থাকতে পছন্দ করি এবং আমি জানি আমি যেকোনো সময় ক্যামব্যাক করব। এটাই ছিল আমার আত্মবিশ্বাস।’
নিজের ফিটনেস আর দক্ষতার উন্নতি নিয়ে খুবই সতর্ক শামীম। জাতীয় দলে ফেরার পর দুই ম্যাচেই অবদান রাখতে পেরেছেন তিনি। তবে এখনই খুব বেশি উচ্ছ্বাসিত নন তিনি। মাটিতে পা রেখেই বললেন, ‘অবশ্যই, মাত্র তো শুরু। এখনও অনেক ক্যারিয়ার বাকি আছে।’ শামীমের কথাই সত্যিই। এখনো অনেক বাকি…।
মন্তব্য করুন