সাকিব আল হাসানের বোলিং অ্যাকশনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। এতে করে পরবর্তী পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ইসিবির কোনো ধরনের প্রতিযোগিতায় বোলিং করতে পারবেন না বাংলাদেশ অলরাউন্ডার। এই নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কিংবা অন্যকোনো বোর্ডের অধীনের টুর্নামেন্টে বোলিংয়ে বাধা দেবে কী না—তার উত্তরও মিলেছে! খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আপাতত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বোলিংয়ের সুযোগ নেই সাকিবের। শুধু তাই নয়, বাইরের কোনো টুর্নামেন্টেও বোলিং করতে পারবেন না তিনি। একমাত্র দেশের প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টগুলোতে বোলিং শুধরানোর সুযোগ আছে তার।
ইসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তির শেষ দিকে আইসিসির অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের বেশ কিছু নিয়মের প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে। আইসিসির সন্দেহজনক ও ত্রুটিপূর্ণ বোলিং নিয়ে যে নীতিমালা আছে, তার অনুচ্ছেদ নং ১১.৩-এ বলা আছে, ‘কোনো জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশন একজন বোলারকে তাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে যদি বোলিংয়ে নিষিদ্ধ করে আর সেই নিষেধাজ্ঞা যদি স্বীকৃত পরীক্ষাগারে মানসম্মত বিশ্লেষণী বিধি অনুযায়ী করা হয়, তাহলে সেই নিষেধাজ্ঞাকে আইসিসি আমলে নেবে এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও তা আরোপ করবে।’ একই অনুচ্ছেদে আরও বলা হয়, ‘অতিরিক্ত কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া সব জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশন এবং তাদের অধীনস্থ ঘরোয়া ক্রিকেটেও একই নোটিশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে। আইসিসি এবং জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশনগুলো সিদ্ধান্ত আরোপ ও কার্যকরের জন্য সব পদক্ষেপ বিধিসম্মতভাবে নেবে।’
আইসিসির ১১.৫ অনুচ্ছেদ বলছে, ১১.১ ও ১১.৩ অনুসারে নিষেধাজ্ঞায় পড়া খেলোয়াড় চাইলেই তার জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশন ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় বোলিং চালিয়ে যেতে পারবেন (কোনো অভিযোগ না উঠলে)। বিষয়টি নিয়ে বিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘আমার ধারনা সে স্থানীয় টুর্নামেন্টে খেলেই এখন বোলিংয়ের ত্রুটিমুক্ত হতে পারে। তবে পরীক্ষায় ইতিবাচক ফল না আসার আগ পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে তার বোলিং করার সুযোগ নেই। অবশ্য ব্যাটার হিসেবে খেলতে কোথাও বাধা থাকবে না।’
সাকিবের বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষার রিপোর্টটি ১০ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে বলেও জানানো হয় ইসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। আইসিসির স্বীকৃত ইংল্যান্ডের লাফবরো ইউনিভার্সিটির পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষাটি নেওয়া হয়েছিল। এতে করে সাকিবের ওপর ইসিবির নিষেধাজ্ঞাটি যেহেতু স্বীকৃত পরীক্ষাগারের মাধ্যমেই দেওয়া। সেহেতু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কিংবা বিশ্বের বিভিন্নপ্রান্তের ক্রিকেট বোর্ডগুলোতেও একই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন দেখা যেতে পারে। নীতিমালার ১১.৪ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ১১.৩ ধারায় নিষিদ্ধ খেলোয়াড় যে কোনো সময় তার বোলিং অ্যাকশনের আরও বিশদ পরীক্ষাপত্র জমা দিতে পারেন। যেই ক্রিকেট ফেডারেশনের দ্বারা নিষিদ্ধ হলেন, সেই ফেডারেশনেরই স্বীকৃত পরীক্ষাগারে মানসম্মত বিশ্লেষণী বিধি অনুযায়ী পরীক্ষা দিতে হবে। এই পরীক্ষায় বৈধ বোলিং অ্যাকশনে বোলিং করতে পারলে, আইসিসি খেলোয়াড়টিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বোলিংয়ের অনুমতি দেবে এবং সব জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশনও তাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে বোলিংয়ের অনুমতি দেবে অতিরিক্ত আর কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই।
মন্তব্য করুন