আইপিএল মেগা নিলামের দ্বিতীয় দিন মাত্র ১৩ বছর আট মাস বয়সে ক্রিকেটের নতুন ইতিহাস রচনা করেছেন বৈভব সুর্যবংশী। রাজস্থান রয়্যালস তাকে ১.১০ কোটি রুপিতে কিনে আইপিএলের সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে দলে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
বিহারের সামস্তিপুর জেলার ১৫ কিলোমিটার দূরের মোটিপুর গ্রামের কৃষক সঞ্জীব সুর্যবংশী নিজের জমি বিক্রি করে ছেলের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের জন্য অর্থ জুগিয়েছিলেন। বৈভবের এই অর্জন সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ও এখন শুধু আমার ছেলে নয়, পুরো বিহারের ছেলে।’
তবে, আইপিএলে দল পাওয়া বৈভবের বয়স নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। অনেকেই মনে করছেন তার প্রকৃত বয়স ১৫ বছর। এ প্রসঙ্গে সঞ্জীব বলেন, ‘আমার ছেলে যখন আট বছর ছয় মাস বয়সী, তখনই বিসিসিআই তার বোন টেস্ট করেছিল। সে ইতোমধ্যেই ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেছে। আমরা কোনও কিছুকে ভয় পাই না, প্রয়োজনে আবার বয়স পরীক্ষা করা যাক।’
বৈভবের ক্রিকেট যাত্রার কথা বলতে গিয়ে সঞ্জীব জানান, প্রতিদিন ছেলেকে সামস্তিপুরে কোচিংয়ে নিয়ে যাওয়া এবং ফিরিয়ে আনার কষ্টের দিনগুলো। তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটে শুধু অর্থ নয়, বড় বিনিয়োগ প্রয়োজন। আমি জমি পর্যন্ত বিক্রি করেছি। এখনো আর্থিক অবস্থার পুরো উন্নতি হয়নি।’
বৈভবের ভিত্তিমূল্য ছিল ৩০ লাখ রুপি। প্রথম বিড করে দিল্লি ক্যাপিটালস। এরপর রাজস্থান রয়্যালস ৩৫ লাখে বিড করে। রাজস্থানের ব্যাটিং কোচ বিক্রম রাঠোরের তত্ত্বাবধানে বৈভব নাগপুরে ট্রায়ালে অংশ নেন। ম্যাচ পরিস্থিতিতে ১৭ রান তোলার চ্যালেঞ্জে তিনটি ছক্কা মেরে নজর কাড়েন। সঞ্জীব গর্বের সঙ্গে বলেন, ‘ট্রায়ালে সে আটটি ছক্কা এবং চারটি চার মেরেছিল।’
বিহার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএ) সভাপতি রাকেশ তিওয়ারি বলেন, ‘বৈভবের এই অর্জন আমাদের গর্বিত করেছে। তার সাফল্য বিহারের ক্রিকেট প্রতিভার প্রমাণ।’
১৩ বছরের বৈভবের জন্য কোটি টাকা কীভাবে সামলানো হবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তার বাবা। তবে, তিনি জানান, ‘ও শুধু ক্রিকেট খেলতে চায়। কয়েক বছর আগে ডোরেমন পছন্দ করত, এখন আর করে না।’
রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে আইপিএলে মাঠে নামার আগে বৈভব এখন দুবাইয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে খেলছে। তার এই যাত্রা তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
মন্তব্য করুন