অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার ফিলিপ হিউজের অকাল মৃত্যু এখনো অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট অঙ্গনে গভীর বেদনার স্মৃতি হয়ে রয়েছে। ২০১৪ সালের ২৫ নভেম্বর শেফিল্ড শিল্ড ম্যাচে ব্যাটিং করার সময় গলায় বলের আঘাতে আহত হয়ে দুই দিন পর তার মৃত্যু হয়। সে ঘটনা কেবল অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার নয়, গোটা ক্রিকেট বিশ্বকেই গভীর শোকগ্রস্ত করে তোলে।
এই বছর হিউজের মৃত্যুর দশমবার্ষিকী। নভেম্বরের এই সময়ে, গত নয় বছর ধরে ক্রিকেট বিশ্বে তাকে স্মরণ করার বিশেষ মুহূর্ত হিসেবে পালন করা হচ্ছে। তবে এটি শুধু একটি তারিখ নয়, বরং ২৫ থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত একটি দীর্ঘ শোকের সময়কাল। এ বছর, তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ৬ ডিসেম্বর অ্যাডিলেড টেস্টে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।
হিউজের মৃত্যু তার সতীর্থদের মানসিকভাবে ভেঙে দেয়। স্টিভ স্মিথ, নাথান লায়ন এবং মিচেল মার্শ এখনো জাতীয় দলে রয়েছেন এবং এই স্মৃতি তাদের পিছু ছাড়েনি। ২০১৪ সালের সেই শেফিল্ড শিল্ড ম্যাচে খেলা মিচেল স্টার্ক ও ট্রাভিস হেডও এখনো সক্রিয় খেলোয়াড়। এমনকি সেই ম্যাচে উপস্থিত ধারাভাষ্যকার ও সতীর্থরাও এ ঘটনার ভার থেকে মুক্ত হতে পারেননি।
হিউজের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন তৎকালীন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। তার স্মরণে দেওয়া ক্লার্কের আবেগঘন শ্রদ্ধার্ঘ্য আজও স্মরণীয়। পরবর্তী সময়ে ক্লার্ক স্বীকার করেন যে, তার ওই সময়ই ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া উচিত ছিল, কারণ তার মানসিক অবস্থা আর খেলার উপযুক্ত ছিল না।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবং পিটার সিডল দুজনই হিউজের মৃত্যুতে গভীরভাবে প্রভাবিত হন। সিডলের জন্মদিন ২৫ নভেম্বর হওয়ায় সে দিনটি তার কাছে আনন্দের বদলে বেদনার প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়। অন্যদিকে, হিউজের মৃত্যু-পরবর্তী সময়ে ম্যাক্সওয়েলের মানসিক অবস্থা ভেঙে পড়ে, যা তার পারফরম্যান্সেও প্রভাব ফেলেছিল।
ফিলিপ হিউজ কেবল ২৬টি টেস্ট খেলা একজন তরুণ প্রতিভা ছিলেন না, তিনি ছিলেন সম্ভাবনার প্রতীক। তার আকস্মিক মৃত্যু অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট এবং ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে এক অপ্রাপ্তির গভীর দাগ কেটেছে।
সময় বেদনার প্রভাব কমায়, তবে পুরনো স্মৃতি কখনো ভুলে যাওয়া যায় না। এই দশম বার্ষিকীতে তার বন্ধুরা, সতীর্থরা এবং গোটা ক্রিকেটবিশ্ব তাকে স্মরণ করছে। তার জীবনের গল্প এবং অকাল প্রয়াণ আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ক্রিকেট কেবল খেলা নয়, এর সঙ্গে মানুষের আবেগ ও জীবন গভীরভাবে জড়িয়ে আছে।
মন্তব্য করুন