জাতীয় লিগের (এনসিএল) এ মৌসুমে নিজের প্রথম ম্যাচেই ১১৮ রান করেছিলেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টেও অভিষেক হয় তার। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজের প্রথম ম্যাচের এক ইনিংসে শূন্য ও অন্য ইনিংসে খেলেছিলেন মাত্র ২৯ রানের ইনিংস। এরপর আবারও জাতীয় লিগে ফিরে খেলেন ৯৯ রানের ইনিংস। বাংলাদেশের ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের পার্থক্যটা ছোট্ট এই উদাহরণ থেকেই পাওয়া যায়। শুধু যে মাহিদুলই তা কিন্তু নয়, আগেও অনেকে ঘরোয়ায় দুর্দান্ত পারফর্ম করে জাতীয় দলে এসে ব্যর্থ হয়েছে; এমন উদাহরণ আছে অহরহ।
জাতীয় লিগ আর জাতীয় দল পার্থক্যটা যে ঢের, তা আর অস্বীকার করতে পারলেন না খোদ জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেলের সদস্য হান্নান সরকার। বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘এখানে বলার বা লুকোচুরির কিছু নেই। আমাদের ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মধ্যে অনেক বড় একটা পার্থক্য আছে। প্রায়ই দেখবেন ঘরোয়া ক্রিকেটের পারফরমার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে গিয়ে ভুগতে থাকে। তখন এক-দুই ম্যাচ খেলার পর তাকে নিয়ে ফের অন্য চিন্তা করতে হয়েছে।’
তরুণ ব্যাটার অমিত হাসানকে নিয়ে তাই তাড়াহুড়া কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না তারা।
অমিত এবারের জাতীয় লিগের চতুর্থ রাউন্ড শেষে সর্বোচ্চ রান স্কোরার। ৭ ইনিংসে একটি ডাবল সেঞ্চুরিতে তার সংগ্রহ ৪৬৬ রান। এবারই ভালো করছেন, ব্যাপারটা তা নয়। ২০১৯ সালে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেকের পর এখন পর্যন্ত ৩৩টি ম্যাচ খেলেছেন অমিত। ৮ সেঞ্চুরিতে ৪৯.৪৮ গড়ে করেছেন ২ হাজার ৪২৫ রান। জাতীয় দলের পাইপলাইনের প্রোগ্রামগুলোতেও নিয়মিত পারফর্ম করছেন তিনি। অমিত যে নির্বাচকদের নজরে আছেন, সেটাই জানালেন হান্নান, ‘অমিত এমন একজন ক্রিকেটার, যে নিয়মিত রান করছে। তাকে আমরা প্রক্রিয়ার মধ্যে রেখেছি। প্রস্তুত করছি। আমি বিশ্বাস করি, একজন ক্রিকেটারকে সুযোগ দিলে তাকে যেন যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়। আর সেই সুযোগ দেওয়ার আগে তাকে পরিপক্ব বা যথাযথভাবে তৈরি করে নিয়ে যাওয়াটা তার জন্য যেমন ভালো, আমাদের জন্যও ভালো।’
শুধু তাই নয়, একজন ক্রিকেটারকে চাইলেই অভিষেক করানো যায় না বলে মনে করেন হান্নান। কন্ডিশন, ভেন্যুসহ বিভিন্ন বিষয় চিন্তা করতে হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একজন ক্রিকেটারকে অভিষেক করানোর ক্ষেত্রে কোন কন্ডিশনে, কোথায় করালে ভালো হয়—এই বিষয়গুলো কিন্তু ম্যাটার করে। অনেক বিষয় এখানে আলোচনা হয়েছে। অমিত আমাদের (জাতীয় দলের) কাছাকাছি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। এমন নয় যে, অমিত শুধু এই বছর রান করেছে। সে প্রতি বছরই রান করছে এবং খুব কাছাকাছি রয়েছে।’
অমিতদের মতো প্রতিভাবানদের সময় দিতে চান নির্বাচকরা। জাতীয় দলে আসার আগে আরও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন করে নেওয়াকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে নির্বাচক প্যানেল।
মন্তব্য করুন