অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলমান ওয়ানডে সিরিজে অ্যাডিলেডে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নয় উইকেটের বড় জয় তুলে নিয়েছে পাকিস্তান। পেস বোলার হারিস রউফের বিধ্বংসী বোলিং এবং সাইম আইয়ুবের চমকপ্রদ ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে পাকিস্তান সিরিজে সমতা আনতে সক্ষম হয়েছে। এই জয়ে ২০১৭ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে জয়ের স্বাদ পেল পাকিস্তান। সিরিজের ফাইনাল ও নির্ধারণী ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে পার্থে।
মেলবোর্নে সিরিজের প্রথম ম্যাচেও দুর্দান্ত বোলিং করা হ্যারিস রউফ এই ম্যাচেও অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপকে চাপে রাখেন। বিশেষ করে মারনাস লাবুশেনকে আউট করার সময় তার অসাধারণ ডেলিভারি ছিল ম্যাচের অন্যতম সেরা মুহূর্ত। রউফ তার স্পেলের শেষ অবধি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ রেখেছিলেন এবং অস্ট্রেলিয়াকে মাত্র ১৬৩ রানে অলআউট করতে ৫ উইকেট তুলে নেন। এটি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় পাঁচ উইকেট।
তার বোলিং পারফরম্যান্সে উইকেটকিপার ও ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ রিজওয়ানকে বেশ কয়েকটি ক্যাচ নিতে সহায়তা করেছে, যার ফলে রিজওয়ান একক ওয়ানডেতে সর্বাধিক ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ডও স্পর্শ করেন। যদিও ম্যাচ শেষে একটি ক্যাচ হাতছাড়া করে সেই রেকর্ডকে এককভাবে দখল করার সুযোগ হাতছাড়া করেন তিনি। পাকিস্তানের বোলিংয়ে শাহীন আফ্রিদিও তার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন।
মাত্র ১৬৪ রানের সহজ লক্ষ্য সামনে রেখে পাকিস্তানের ওপেনার সাইম আইয়ুব ও আব্দুল্লাহ শফিক সতর্কতার সাথে ইনিংস শুরু করেন। আইয়ুব প্রথম দিকে কিছুটা ধীরগতিতে শুরু করলেও ধীরে ধীরে তিনি তার আক্রমণাত্মক রূপে ফিরে আসেন। জশ হ্যাজলউডের একটি বাউন্ডারি দিয়ে নিজের স্কোর এগিয়ে নিয়ে যান এবং পরে মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্সের বলকে দর্শকদের গ্যালারিতে পাঠিয়ে দর্শকদের মাতিয়ে তোলেন। আয়ুব ৫২ বলে তার অর্ধশতক পূর্ণ করেন এবং দুর্দান্ত শট খেলে তার ইনিংসের শতকের পথে ছিলেন, তবে শর্ট থার্ড ম্যানের ফিল্ডারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হন।
আব্দুল্লাহ শফিক ধীরগতিতে খেললেও পরে তিনিও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন এবং দলকে সহজেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করেন। পাকিস্তান মাত্র ২৩.৩ ওভারে ১৬৯ রান করে নয় উইকেট হাতে রেখেই ম্যাচটি জিতে নেয়।
এই জয়ে পাকিস্তান সিরিজে ১-১ সমতা আনতে সক্ষম হয়েছে। সিরিজের শেষ ও নির্ধারণী ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে পার্থে, যেখানে পাকিস্তান সিরিজ জয়ের সুযোগ পাবে। অস্ট্রেলিয়ার এই পরাজয়ের ফলে তাদের দল নিয়েও কিছু ভাবনা তৈরি হয়েছে। শেষ ম্যাচে তাদের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় অনুপস্থিত থাকবেন যারা পরবর্তী টেস্ট সিরিজের প্রস্তুতিতে মনোযোগ দিচ্ছেন। ফলে পাকিস্তানের জন্য এটি একটি সুবিধাজনক সুযোগ হতে পারে সিরিজ নিজেদের করে নেয়ার জন্য।
পাকিস্তানের জন্য এই জয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ওয়ানডে জয়গুলির একটি।
মন্তব্য করুন