দীর্ঘ ১৮ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার! কত ঘটনা, কত রেকর্ডের সাক্ষী হয়েছেন সাকিব আল হাসান। তবে ক্যারিয়ারের শেষ দিকে এসে অনেকের কাছে হয়ে উঠেন অপ্রিয়। এর প্রধান কারণ ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ করার আগেই রাজনীতিতে যোগদান।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টের সংবাদ সম্মেলনে অবসরের ঘোষণা দেন সাকিব। এতে দুঃখ ভারাক্রান্ত সাকিবের দুই গুরু নাজমুল আবেদীন ফাহিম ও মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। অবসরটা আরও ভালোভাবে হতে পারত বলে মত দেন দুজনই।
মিরপুরে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সভা শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেটে তার অবদান আমরা সবাই জানি। হয়তো অনেকে সামনাসামনি স্বীকার করি না। সবার মনে সে কোনো না কোনোভাবে থেকে যাবে। কারও কাছে ইতিবাচকভাবে, কারও কাছে নেতিবাচকভাবে। ঘরের মাঠে শেষ টেস্ট খেলে সবার ভালোবাসা নিয়ে অবসর নিলে ভালো হতো।’
ক্রিকেটার হয়ে ওঠার দীক্ষা সাকিব পান বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি)। সে সময় ক্রিকেট বিভাগের প্রধান কোচ ছিলেন নাজমুল আবেদীন ফাহিম। তাই ছোটবেলা থেকে সাকিবকে ভালো করে চেনা অভিজ্ঞ এ কোচের।
তার মতে অবসরের ঘোষণা দেওয়ার সময় সাকিবকে বেশ আবেগপ্রবণ লেগেছে, ‘আজকেও (বৃহস্পতিবার) যখন তার সাক্ষাৎকার দেখছিলাম, কণ্ঠস্বর খুব স্বাভাবিক শোনা গিয়েছিল। জানি তার মনের ভেতর অনেক কিছু যাচ্ছে।’
সাকিবের বাল্যকালের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। প্রিয় শিষ্যের বিদায়কে মেনে নিতে পারছেন না তিনি। যেমন পারেননি শিষ্যের রাজনীতিতে আসাটাও। তিনি বলেন, ক্যারিয়ারের শেষ দিকে সাকিব রাজনীতিতে জড়িয়েছিল, যা কখনই আমার পছন্দ ছিল না। তার কোচ হিসেবে আমার জন্য এটা মেনে নেওয়াটাও কষ্টের ছিল। এটা ওকে অনেক ক্ষতি করেছে। আমি সব সময়ই এটার বিপক্ষে ছিলাম।’
দেশের অন্যতম সেরা এ কোচ জানান, সাকিবের বিদায়টা দেশের মাটিতে না হলে কষ্ট পাবেন তিনি, ‘দেশের মাটিতে মিরপুরে টেস্ট খেলে সে বিদায় নিতে চেয়েছে। ঢাকার মাঠে ওকে সুন্দর বিদায় দেবে, এটা তার প্রাপ্য। সে যদি দেশের মাঠে বিদায় না নিতে পারে, অনেক কষ্ট পাব। খেলা ছাড়ছে এতটা কষ্ট পাব না। কিন্তু দেশের মাঠে সুন্দরভাবে বিদায় না বলতে পারলে ওই কষ্ট সারা জীবন থেকে যাবে আমার।’
ভারতের বিপক্ষে সিরিজ শেষ করে দেশে ফিরবে বাংলাদেশ দল। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হোম সিরিজ রয়েছে টাইগারদের। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট খেলে অবসরে যাওয়ার কথা জানান সাকিব।
তবে তার দেশে ফেরা নিয়ে ‘কিন্তু’ রয়েছে। টেস্ট শেষে দেশত্যাগের নিশ্চয়তা চান তিনি। তবে নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদ জানান, সাকিবের নিরাপত্তা দায়িত্ব নেবে না বিসিবি।
মন্তব্য করুন