তখনো স্টেডিয়ামের গেটগুলো খোলা হয়নি। চারপাশে শতশত পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাহারা। তার আগেই দর্শকদের বিশাল লম্বা লাইন দেখে মনে হতে পারে, ‘ভেতরে হয়তো কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হচ্ছে!’ ঝাঁক ধরে আসতে শুরু করে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও।
তাদের সঙ্গে দেখা মিলল শিক্ষকদেরও। না কোনো টি-টোয়েন্টি নয়। তিন বছর পর হতে যাওয়া কানপুর টেস্ট ঘিরে এমনই উন্মোদনার দেখা মিলল ‘গ্রীন পার্ক স্টেডিয়ামে’। ক্লাস রেখেই স্টেডিয়ামে আসতে শুরু করেন বিভিন্ন শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা।
রাতে বৃষ্টি হওয়াতে আউট ফিল্ড ভেজা ছিল। তাতে করে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে এক ঘণ্টা দেরিতে শুরু হচ্ছে খেলা। তবে তার আগে স্টেডিয়ামের কয়েকটা গ্যালারি কানায় কানায় পরিপূর্ণ। ম্যাচ দেখতে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে কালবেলা।
এ সময় তারা বলেছেন, ‘টেস্ট ম্যাচ দেখব বলেই স্কুল থেকে ছুটে এলাম।’ আবার অনেকে স্কুলেই যায়নি রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিদের দেখবে বলে। গুরু হার রাই একাডেমি থেকে কয়েক’শ শিক্ষার্থী এসেছিলেন মাঠে।
তাদের সঙ্গে থাকা শিক্ষক ধর্মল দাস জানিয়েছেন, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীকে মাঠে নিয়ে এসেছেন তারা। গ্রিন পার্কে স্টুডেন্টদের জন্য আলাদা করে গ্যালারি থাকায় টিকিট নিতে হয়নি তাদের। সকল শিক্ষার্থীই স্কুলের জন্য নির্ধারিত পোশাক পরিধান করে এসেছে।
হাজার সমর্থদের মধ্যে দেখা মিলল ভারতের কিছু ডাইহার্ট ক্রিকেট ফ্যানেরও। ভারতের খেলা মানেই বিভিন্ন রাজ্যে রাজ্যে গিয়ে তাদের সরব উপস্থিতি। লম্বা সময় পর কানপুরে টেস্ট দেখতে এসে খুশি ধরম কুমার মোদি।
তিনি বলেন, ‘কানপুরে শুধু টেস্ট নয়, যেকোনো ম্যাচই লম্বা সময় পর হচ্ছে। এখানে ভারতই জিতবে, আমরা তাদের সমর্থন করতে এসেছি।’
আবার কখন কানপুরে ম্যাচ হবে, সেটা আরও দীর্ঘ অপেক্ষা। তবে ভারতের খেলা মানেই ধরম কুমারদের উপস্থিতি সেটা তার কথায় স্পষ্ট, ‘আমরা খুবই খুশি যে এখানে ম্যাচ হচ্ছে। টেস্ট-টি-টোয়েন্টি সবই আমরা দেখব। মুম্বাইতে আমরা বিশ্বকাপ দেখেছি। টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য গোয়ালিওর যাব ৬ তারিখ, সবই আমাদের বুক করা আছে। পুরো সিরিজ আমরা দেখব। আমাদের হোটেল-ফ্লাইট সবই বুক করা আছে। ভারতের সব ম্যাচই আমরা দেখি।’
পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশের টেস্ট ম্যাচ দেখে ভারত সিরিজটি চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছিল আনান্দ কুমারের। তবে চেন্নাই টেস্ট দেখার পর তিনি আত্মবিশ্বাসী, ২-৩ দিনেই ম্যাচ জিতবে ভারত, ‘বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিপক্ষে যেভাবে খেলেছিল, ওটা দেখে তাদের চ্যালেঞ্জ মনে হয়েছিল। কিন্তু এখানে তো আমরা ২-৩ দিনেই জিতে যাব।’
মন্তব্য করুন