আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) ক্রিকেটে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে। ক্রিকেটের এই নিয়ন্ত্রককারী সংস্থা পুরুষ ও নারীদের বিশ্বকাপের জন্য সমান পুরস্কার অর্থ ঘোষণা করেছে। এই নতুন নিয়মটি প্রথমবারের মতো প্রয়োগ হবে ২০২৪ সালের আইসিসি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, যা সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) অনুষ্ঠিত হবে। নারীদের ক্রিকেটকে অগ্রাধিকার দিয়ে ২০৩২ সালের মধ্যে খেলার ব্যাপক প্রসার ঘটানোর লক্ষ্যে আইসিসি এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
পুরস্কারের অর্থে ঐতিহাসিক বৃদ্ধি
আগামী নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মোট পুরস্কার তহবিল নির্ধারণ করা হয়েছে ৭.৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯৫ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের ২.৪৫ মিলিয়ন ডলারের তুলনায় ২২৫ শতাংশ বেশি। এই টুর্নামেন্টের বিজয়ীরা পাবেন ২.৩৪ মিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় শিরোপাজয়ী অস্ট্রেলিয়ার প্রাপ্ত ১ মিলিয়ন ডলারের তুলনায় ১৩৪ শতাংশ বেশি। রানার্সআপ দল পাবে ১.১৭ মিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের ৫০০,০০০ ডলারের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।
সেমিফাইনালে হেরে যাওয়া দুই দল প্রত্যেকেই পাবে ৬৭৫,০০০ ডলার, যা ২০২৩ সালের ২১০,০০০ ডলারের তুলনায় অনেক বেশি। গ্রুপ পর্যায়ে প্রতিটি ম্যাচ জয়ে দলগুলো পাবে ৩১,১৫৪ ডলার এবং যারা সেমিফাইনালে পৌঁছাতে ব্যর্থ হবে তাদের মধ্যে ১.৩৫ মিলিয়ন ডলার ভাগ করে দেওয়া হবে পারফরম্যান্স অনুযায়ী।
লিঙ্গ সমতার প্রতি আইসিসির প্রতিশ্রুতি
আইসিসি ২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রার সাত বছর আগেই এই সমান পুরস্কার অর্থ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা নারীদের ক্রিকেটকে পুরুষদের সমকক্ষ করতে একটি বড় পদক্ষেপ। পুরুষ ও নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সমান পারফরম্যান্সের জন্য সমান পুরস্কারের অর্থ প্রদান করা হবে। তবে পুরুষদের ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পুরস্কার তহবিল কিছুটা বেশি ছিল, কারণ সেখানে অতিরিক্ত ১০টি দল এবং ৩২টি ম্যাচ বেশি থাকবে।
আইসিসি নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২২-এর পুরস্কার তহবিলও বেড়ে ৩.৫ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর পর এ উদ্যোগটি নেওয়া হয়।
সূচির পরিবর্তন এবং ম্যাচগুলো
আইসিসি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৪-এর উদ্বোধনী ম্যাচটি ৩ অক্টোবর শুরু হবে, যেখানে বাংলাদেশ শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি হবে। ৫ অক্টোবরের ডাবল হেডারের সূচিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া দুপুর ২টায় শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে এবং বাংলাদেশ সন্ধ্যা ৬টায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে।
মোট ১০টি দল ২৩টি ম্যাচ খেলবে দুবাই ও শারজাহর মাঠে, যেখানে ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণ হবে।
ক্রিকেটে লিঙ্গ সমতা আনার এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপটি বিশ্বব্যাপী নারীদের ক্রিকেটকে আরও জনপ্রিয় করতে এবং সমর্থন বাড়াতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন