পরিসংখ্যান বলছে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ে বাংলাদেশের স্পিনারদের চেয়ে পেসারদের ভূমিকাই বেশি। দুই ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশের পেসাররা শিকার করেছেন ২১ উইকেট। অন্য দিকে স্পিনারদের শিকার ১৫টি।
বাংলাদেশের পেসারদের গতিময় বোলিংয়ের প্রশংসা হচ্ছে সর্বত্র। পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়। ক্রিকেটের সব স্তরে (ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং) পাকিস্তানকে পরাস্ত করেছেন টাইগাররা।
বিশেষ করে পাকিস্তানের সাবেক ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতারের শহর রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশি পেসার গতির ঝড়ে লন্ডভন্ড পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইন আপ। টেস্ট ক্রিকেটে স্পিন নির্ভর ছিল বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর তালিকায় প্রথম চারজনই স্পিনার। এদের মধ্যে তিনজনই বাঁহাতি। একমাত্র ব্যতিক্রম অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ।
তালিকার পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে যথাক্রমে রয়েছেনে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ও শাহাদৎ হোসেন। তবে পেস আক্রমণে নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন নাহিদ রানা। ধারাবাহিকভাবে গড়ে ঘণ্টায় ১৫২ কিলোমিটার গতিতে বল করে, গড়েছেন নতুন রেকর্ড। পেছনে ফেলেন রুবেল হোসেনকে (১৪৯ কিলোমিটার)।
দ্বিতীয় ইনিংসে তার গতির ঝড়ে পরপর তিন ওভানে তিন উইকেট হারিয়ে কোনঠাসায় পড়ে পাকিস্তান। অধিনায়ক শান মাসুদকে পরাস্ত করেন ১৪৪.৬ কিলোমিটার গতিতে। ৬.২ ফুট উচ্চতার পেসার নাহিদের ১৪৬ কিলোমিটার গতি কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করেন বাবর আজম। ২১ বছর বয়সী এ তরুণ পেসারের দুর্ভাগ্য, প্রথম বলে মোহাম্মদ রিজওয়ানের ক্যাচ মিস করেন সাদমান ইসলাম।
পঞ্চম দিনে রানার ধ্বংসযজ্ঞের পর পাকিস্তানকে গুটিয়ে দেন হাসান মাহমুদ। যদিও তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে দখল করেছিলেন দুই উইকেট। দুর্দান্ত আউট সুইংয়ে পরাস্ত করেছিলেন আবদুল্লাহ শফিক ও নাইট ওয়াচম্যান খুররম শেহজাদকে। পরদিন আরও তিন উইকেট শিকার করেন তিনি। এতে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথমবারের মতো শিকার করেন ৫ উইকেট। অপর উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। ফলে তিন পেসারের শিকারের পাকিস্তানের সবগুলো উইকেট। যা নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে প্রথম।
দুই টেস্টে বাংলাদেশের চার পেসার শিকার করেন ২১ উইকেট। এর মধ্যে প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে শরীফুল ইসলামের শিকার ৩ উইকেট। এরপর ইনজুরিতে পড়েন তিনি। তার পরিবর্তে দ্বিতীয় টেস্টের একাদশে জায়গা পান তাসকিন আহমেদ। দুই ইনিংসে ডানহাতি ফাস্ট বোলারের শিকার ৪ উইকেট।
দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসে ১৪ ওভার বল করে ৬০ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি হাসান মাহমুদ। প্রথম টেস্টে ৩ উইকেট শিকার করা হাসান জ্বলে উঠেন দ্বিতীয় ইনিংসে। পাকিস্তান অল্প রানে গুড়িয়ে দিতে মূল ভূমিকা তার।
রাওয়ালপিন্ডির সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন শোয়েব আখতার। গতির কারণ ডানহাতি এ ফাস্ট বোলারকে বলা হতো পিন্ডি এক্সপ্রেস। সে শহরে গতির ঝড় তোলেন বাংলাদেশের ফাস্ট বোলাররা। ১৪০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার গতিতে নিয়মিতভাবে বল করে গেছেন টাইগার পেসাররা।
এমনকি প্রথম টেস্টের পর পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আসে, স্বাগতিক পেসারদের চেয়ে বাংলাদেশের ফাস্ট বোলাররা বেশি গতিতে বল করেছেন। আলদাভাবে নজর কাড়েন নাহিদ রানা। বিশেষ করে তার বাউন্সার সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে পাকিস্তানি ব্যাটারদের।
গতি দানব শোয়েব আখতারের শহরে রাজত্ব করলো টাইগার পেসাররা।
মন্তব্য করুন