রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে এক দুঃস্বপ্নময় শুরুর পর বাংলাদেশ দল দাঁড় করালো এক অবিশ্বাস্য ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প। ২৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়ে লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজের রেকর্ড জুটিতে বাংলাদেশ ফিরে পায় ম্যাচের দখল। মিরাজ সেঞ্চুরি মিস করলেও, লিটন দাস তার ব্যাটে গড়ে তুললেন এক অনবদ্য শতক।
২৭ মাসের অপেক্ষার পর আবার সেঞ্চুরির দেখা পান লিটন দাস। ২০২২ সালের মে মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। এবার রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৭১ বল খেলে ১১টি চার ও ১টি ছক্কায় তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছান তিনি। এটি তার টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি, যা তাকে নতুন করে স্বস্তি এনে দিয়েছে।
লিটনের সেঞ্চুরি উদযাপন শুধু মাঠেই থেমে থাকেনি। তার স্ত্রী দেবশ্রী বিশ্বাস সঞ্চিতা সামাজিক মাধ্যমে একটি ছবি শেয়ার করে স্বামীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ছবিতে লিটনের সঙ্গে তাদের মেয়ে আনায়রাও ছিল। পোস্টে সঞ্চিতা লিখেছেন, "অভিনন্দন আনায়রার বাবা। আমরা তোমাকে ভালোবাসি।" লিটনের ক্যারিয়ারে সবসময় তার পাশে ছায়ার মতো থাকা সঞ্চিতা বারবারই প্রেরণা জুগিয়েছেন।
২৬ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ক্রিজে আসেন লিটন। বিপর্যয়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা দলটির সামনে ছিল নিজেদের ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্কোরের শঙ্কা। কিন্তু লিটন ও মিরাজের অসাধারণ পার্টনারশিপ সেই চাপকে দূরে সরিয়ে ফেলে। দুজনের দৃঢ়তায় বাংলাদেশ ফলোঅন এড়ায় এবং দলকে সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যায়।
লিটন ও মিরাজের ১৬৫ রানের পার্টনারশিপ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বিশ্ব ক্রিকেটের জন্যও স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ৫০ রানের কম স্কোরে ৬ উইকেট হারানোর পর সপ্তম উইকেটে এত বড় জুটি আগে কখনো হয়নি। এর আগে এই রেকর্ড ছিল পাকিস্তানের, যারা ২০০৬ সালে ভারতের বিপক্ষে ৩৯ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর সপ্তম উইকেটে ১১৫ রানের পার্টনারশিপ গড়েছিল।
এদিনের সেঞ্চুরির মাধ্যমে লিটন দাস আরেকটি বিরল রেকর্ড গড়েছেন। ৫০ রানের আগে ৫ উইকেট হারানোর পর তিনবার সেঞ্চুরি করা একমাত্র ব্যাটসম্যান এখন তিনিই।
অবশ্য লিটন তার শতককে ১৫০ পর্যন্ত নিতে পারেননি। পাকিস্তানের রান থেকে ১২ রান দূরে থাকা অবস্থায় তিনি ১৩৮ রানে আউট হন। তার বিদায়ের পর বাংলাদেশও আর বেশিক্ষণ টিকেনি। শেষ উইকেট পতন হয় ২৬২ রানে। বাংলাদেশের চেয়ে ১২ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করছে বাংলাদেশ।
মন্তব্য করুন