বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) পুনর্গঠনে শুরুতে শোনা যাচ্ছিল সৈয়দ আশরাফুল আলম ও নাজমুল আবেদীন ফাহিমের নাম। হঠাৎ বদলে যায় চিত্রপট। সামনে চলে আসেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ।
জাতীয় দলে খেলা প্রথম ক্রিকেটার এবং অধিনায়ক হিসেবে বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। বুধবার (২১ আগস্ট) যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স রুমে হয় বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সভা। সেখানেই প্রায় ১ যুগ পর সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন নাজমুল হাসান পাপন।
এরপরই সভায় উপস্থিত বোর্ড পরিচালকদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হন ফারুক আহমেদ। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হওয়ায় আগে থেকে বিসিবির কাউন্সিলর ছিলেন তিনি। ফলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) মনোনীত পরিচালক হিসেবে যুক্ত হন ক্রিকেট বোর্ডে। পরে সভায় উপস্থিত পরিচালকরা তাকে ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করেন।
বোর্ড সভায় পরিচালকের মধ্যে ছিলেন কাজী ইনাম, মাহবুব আনাম, ইফতেখার আহমেদ মিঠু, আকরাম খান, খালেদ মাহমুদ সুজন, ফাহিম সিনহা, সাইফুল আলম স্বপন ও সালাউদ্দিন চৌধুরী। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন নাজমুল আবেদীন ফাহিম। আর বোর্ড সভায় আমন্ত্রণ পাননি, পদত্যাগ করার আবেদনে সাড়া না দেওয়া আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি।
বিসিবির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় ফারুক আহমেদের ক্যারিয়ার নিয়ে অনেকের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। দেশের ইতিহাসে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে বিসিবির নীতিনির্ধারক পর্যায়ে দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। ১৯৬৬ সালের ২৪ জুলাই ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
১৯৮৮ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত খেলেছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলে। মূলত ডানহাতি টপ অর্ডার ব্যাটার ছিলেন ফারুক আহমেদ। ১৯৮৮ সালের ২৯ অক্টোবর চট্টগ্রামে এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দলের জার্সিতে অভিষেক হয় তার। একই দিনে অভিষেক হয়েছিল আকরাম খান ও ওয়াহিদুল গণির। ১৯৯০ সালে চন্ডিগড়ে ভারতের বিপক্ষে ৫৭ রান তার ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ। সে ম্যাচে তৃতীয় উইকেটে আতহার আলী খানের সঙ্গে ১০৮ রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি।
ঘরোয়া ক্রিকেটে অধিনায়ক হিসেবেও সফল ছিলেন ফারুক আহমেদ। সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৩-৯৪ সালে জাতীয় দলের অধিনায়ক নির্বাচিত করা হয় তাকে। তার নেতৃত্বে কেনিয়ায় অনুষ্ঠিত ১৯৯৪ সালের আইসিসি ট্রফিতে অংশ নেয় বাংলাদেশ দল। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম বিশ্বকাপে দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন ফারুক আহমেদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জনপ্রশাসন বিভাগে স্নাতক ডিগ্রিধারী ফারুক আহমেদ খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসরের পর যুক্ত ছিলেন ক্রিকেটের উন্নয়নে। দুই মেয়াদে জাতীয় দলের নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ছিলেন প্রধান নির্বাচকও। পরে পদত্যাগ করে দীর্ঘদিন ক্রিকেট বোর্ড থেকে দূরে ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক এ অধিনায়ক।
এবার রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বোর্ড সভাপতির দায়িত্ব পেলেন ফারুক আহমেদ।
মন্তব্য করুন