উইকেটের দু’পাশে জিমি অ্যান্ডারসন ও গাস অ্যাটকিনসনের বোলিং আক্রমণ। শেষ ব্যাটার জেডেন সিলসকে ফিরিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ইনিংস ও ১১৪ রানের ব্যবধানে হারাল ইংল্যান্ড। এমন জয়ের দিনেও সবাইকে আবেগতাড়িত করেছে অ্যান্ডারসনের বিদায়। শেষ বেলায় পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, সতীর্থ, ভক্ত-সমর্থক—সবার ভালোবাসায় সিগ্ধ হলেন তিনি। কদিন পরই ৪২ বছর ছুঁতে যাওয়া অ্যান্ডারসন সাদা পোশাকের ইতি টানলেন ৭০৪ এ। তার এই রেকর্ড হয়তো কয়েক যুগ অক্ষত থেকে যেতে পারে।
লর্ডস টেস্টের দ্বিতীয় দিনেই জয়ের সুভাস পেতে থাকে ইংল্যান্ড। কিন্তু তারপরও অ্যান্ডারসনের বিদায় বেলা বলেই এই ম্যাচে বিশেষত্ব ছিল ইংলিশদের। আজ দিনের শুরুতে লর্ডসের বিখ্যাত লং রুম পেরিয়ে যখন মাঠে নামছিলেন অ্যান্ডারসন। তখন প্রতিপক্ষ কিংবা তার সতীর্থরা লাইন ধরে মাঠে দাঁড়িয়ে দিলেন গার্ড অব অনার। আর গ্যালারি থেকে অভিনন্দনে ভাসালেন ভক্ত-সমর্থকগণ। ইনিংসে নিজের সেরা নিবেদনও রাখলেন তিনি। প্রায় বাউন্ডারি ছুঁতে যাওয়া একটি চারও বাঁচালেন। তারপরও একটি ক্যাচ ফসকে যাওয়া নাকি পোড়াচ্ছে অ্যান্ডারসনকে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিংয়ের দ্বিতীয় ইনিংসের ৪৩.১ ওভারের সময় বোলিং করছিলেন অ্যান্ডারসন নিজেই। ব্যাটার গুদাকেশ মতির ফিরতি ক্যাচ ঠিকভাবে ধরতে পারেননি তিনি। বেঁচে গিয়ে ৩১ রানে অপরাজিত ছিলেন মতি। অ্যান্ডারসনের আক্ষেপ বলটি ধরতে না পারা, ‘সত্যি বলতে, আমি স্তব্ধ; ক্যাচটা ফেলে দেওয়া ঠিক হয়নি।’
তবে পরের কথাগুলোতে শুধু মুগ্ধতাই প্রকাশ করে গেলেন তিনি, ‘শেষ সপ্তাহটা ভালোই কাটল। সতীর্থদের সঙ্গে উপভোগ করলাম। বহু মানুষ আমাকে অভিনন্দন, শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সত্যিই আমি মুগ্ধ, অভিভূত। ক্রিকেটজীবন নিয়ে আমি তৃপ্ত।’
২০৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক। শেষ করার আগ পর্যন্ত ১৮৮ টেস্টে তার শিকার ৭০৪ উইকেট। একজন পেসার বোলার হয়েও এত লম্বা ক্যারিয়ার। অ্যান্ডারসন বললেন সহজ ছিল না, ‘একজন পেসার হিসাবে ২০ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা সহজ নয়। এমন কিছু করতে পেরে আমি অনেক খুশি। ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা আমার কাছে বিশ্বের সেরা কাজ। দীর্ঘ সময় ধরে সেটা চালিয়ে যাওয়া বিশেষ এই সুবিধা আমি পেয়েছি। ড্রেসিংরুমের অসংখ্য স্মৃতি আমার সঙ্গী। পরিবার, সতীর্থ, কোচদের এবং সংশ্লিষ্টদের সাহায্য ছাড়া এত দূর আসা সম্ভব ছিল না। তাই সকলকে ধন্যবাদ। আমি ভাগ্যবান, দুর্দান্ত কিছু ক্রিকেটারের সঙ্গে খেলার সুযোগ পেয়েছি।’
মন্তব্য করুন