টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ করে দেশে ফিরেছেন ক্রিকেটাররা। আপাতত খেলা নেই, তাই ছুটিতে কোচিং স্টাফ। সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমানসহ অনেকে ব্যস্ত বিদেশের ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ নিয়ে। তবে শেষ হচ্ছে না টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের তাসকিন আহমেদের ঘুমকাণ্ড।
কলম্বো স্ট্রাইকার্সে হয়ে লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ (এলপিএল) খেলতে বর্তমানে শ্রীলঙ্কায় আছেন তাসকিন। সেখান থেকে ঘুমকাণ্ড নিয়ে আবারও গণমাধ্যমের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন ডানহাতি এই ফাস্ট বোলার। দেশের ক্রিকেট বিষয়ক এক গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
ঘটনার সূত্রপাত্র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভারত ম্যাচের আগে। ঘুম ভাঙতে দেরি হওয়ায় টিম বাসে উঠতে পারেননি তিনি। সে দিন কী ঘটেছিল তার ব্যাখ্যায় তাসকিন বলেন, ‘আমি সর্বশেষ যখন ঘড়ি দেখেছিলাম, তখন রাত ১১টার মতো বাজে। ভুল করে আমি মোবাইল সাইলেন্ট করে ফেলেছিলাম এবং ডাটাও অফ করেছিলাম। অ্যালার্ম মিস করি। সাড়ে ৮টা বাস ছাড়ার কথা, আমি চোখ খুলে দেখি ৮ : ৪০ বাজে। ৯টায় হোটেল থেকে রওনা দেই। টসের ২০-২২ মিনিট আগে আমি মাঠে গিয়েছি।’
দেরি করার কারণে তিনি দল থেকে বাদ পড়েনি উল্লেখ করেন বলেন, ‘এর জন্য আমি নিজেকে কোনোভাবে দোষী মনে করি না। তবে এটা ঠিক একজন সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে টিম বাস মিস করা উচিত হয় নাই। এ জন্য টিম মিটিংয়ে দাঁড়িয়ে সকলের কাছে ক্ষমা চেয়েছি।’
এরপর দেশের একটি গণমাধ্যমের নাম উল্লেখ্য করে তাসকিন বলেন, ‘কয়েকদিন আগে ৭১ টিভি একটা বাজে নিউজ করেছে, তারা বলেছে আমি টসের পর মাঠে গিয়েছি। তাদের ধারণা আমি চুরি-বাটপারী করছি। কোনো আজে-বাজে কাজ করে ফেলছি। এই নিয়ে অনেকে ইন্টারভিউ দিয়েছেন। আমি নিশ্চিত তাদেরও টিম বাস মিস হয়েছে। অ্যালার্ম মিস হতেই পারে, এটা কোনো ক্রাইম না।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, একটা ভুল সংবাদ প্রকাশের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের কাছে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে, ‘এই যে একটা ভুল নিউজ হলো, এ জন্য এলপিএলে শাদাব খান (পাকিস্তানি ক্রিকেটার), শ্রীলঙ্কার কিছু খেলোয়াড় ওরা জানতে চাচ্ছে, ‘‘এই তুমি নাকি টসের পর মাঠে গিয়েছে?”, ভুল নিউজের কারণে দেশের একজন ক্রিকেটারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে এই জিনিষটা কেমন হচ্ছে? আমারও তো নিজের আত্মসম্মান রয়েছে।’
কয়েকদিন আগে দেশের একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, তাসকিন নেপাল ম্যাচে আগে ‘বিশেষ পানীয়’ পান করে বমি করেছিলেন। এর জবাবে টাইগার পেসার বলেন, ‘প্রি-ওয়াকআউট খেলে একটু বমি বমি হয়। রাস্তাঘাট গুলো ঘুরে ঘুরে উঠতে হয় যা প্রায় ৩০-৪০ মিনিট লাগে। এতে মাথা ঘুরায় এবং আমি বাস থেকে নেমে বমি করেছি। পরে ডাক্তার দেবাশীষ স্যার (বিসিবির চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী) এবং বায়েজিদ ভাই (ফিজিও) আমাকে বমির ওষুধ দেয়। পরে আমি সুস্থ বোধ করি। উল্টা পাল্টা জিনিষ খেয়ে কোনো মানুষ কি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে পারে?’
এ সময় তাসকিন প্রশ্ন তোলেন, ‘যে সাংবাদিক এই নিউজটি করেছেন, তিনি তো ওয়েস্ট ইন্ডিজে যান নাই। সেখানে না গিয়ে তিনি কীভাবে নিউজটি করেন। এবার তো বিশ্বকাপে তাকে আমি দেখিই নাই।’
এ ছাড়া ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে এমন ভুল সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন তাসকিন আহমেদ।
মন্তব্য করুন