ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছে। সোমালিয়ার গারাকাড উপকূল থেকে ৭২ মাইল দূরে অবস্থান করছে জাহাজটি।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ব্যুরোর (আইএমবি) বরাতে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন এ তথ্য জানিয়েছে।
সংগঠনটি জানায়, বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, সোমালিয়ার গারাকাড উপকূল থেকে ৭২ মাইল দূরে অবস্থান করছে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ।
আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়ে বাংলাদেশি পতাকাবাহী এ জাহাজ। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) উপকূল থেকে ৪৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে থাকা কয়লাবাহী জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালীয় জলদস্যুরা। কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি নৌপথে পণ্য পরিবহন করে। জাহাজের ২৩ নাবিককে স্পিডবোটে সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন একজন। জাহাজের ক্যাপ্টেনের নাম আব্দুর রশিদ।
এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে থাকা নাবিকদের মধ্যে ১১ জন চট্টগ্রামের বাসিন্দা। বাকিরা নোয়াখালী, ফেনী, ফরিদপুর, খুলনা, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার।
এসআর শিপিংয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আক্রান্ত নাবিকদের সবাই সুস্থ রয়েছেন।
জাহাজটি ছাড়িয়ে আনার জন্য কাজ শুরু করেছে এসআর শিপিং। এ জন্য সরকার ও আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অরগানাইজেশনের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
এসআর শিপিংয়ের মিজানুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ‘আন্তর্জাতিক সব সংস্থার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা আমাদের কাজ পরিচালনা করছি। তারা আমাদের যেভাবে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন আমরা সেভাবেই এগোচ্ছি।’
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, নানা প্রক্রিয়া শেষ করে সব নাবিকসহ জাহাজটিকে মুক্ত করতে বেশ সময় লাগতে পারে। এক্ষেত্রে কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি সমঝোতাই মুক্তির মূল উপায়।
সাবেক মেরিনার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ জিয়াউল হক গণমাধ্যমকে জানান, সব প্রক্রিয়া শেষ করে নাবিকদের ছাড়া পেতে ১ থেকে ৪ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। কেননা, মুক্তিপণ দাবির পর তা নিয়ে দরকষাকষিসহ অনেক প্রক্রিয়া রয়েছে। এর আগে ২০১০ সালে এই কবির গ্রুপেরই জাহাজ জাহান মণি মুক্তি পেতে ১০০ দিন সময় লেগেছিল।
সাবেক মেরিনারদের মতে, মুক্তিপণ পাওয়ার সম্ভাবনা দেখলে জলদস্যুরা কোনো নাবিককেই ক্ষতি করে না। এমভি আবদুল্লাহর ক্ষেত্রেও যেহেতু মালিক প্রতিষ্ঠান সবকিছু করতে আগ্রহী, তাই ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি ছাড়িয়ে আনার ব্যাপারে তারা আশাবাদী।
মন্তব্য করুন