কোকাকোলা নিয়ে সমালোচনা অনেক আগে থেকেই। এর আগেও এই পণ্যটিকে বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছিল বেশ কয়েকবার। কিন্তু সম্প্রতি কোকাকোলা নিয়ে একটি বিজ্ঞাপন প্রচার হওয়ায় আবারও নতুন করে সমালোচনা শুরু হয়। তোলপার ওঠে নেট দুনিয়ায়।
এবার বিজ্ঞাপনটিসহ কোকাকোলাকে বয়কটের ডাক দিয়েছে নেটিজেনরা। এ নিয়ে একের পর এক পোস্ট দেওয়া হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে।
তবে কোকাকোলা বয়কটের এই ডাক কি শুধুই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সীমাবদ্ধ কি না তা যাচাই করতে বা বয়কটের পক্ষে বা বিপক্ষে সমর্থন দেখতে জরিপ করেছে দৈনিক কালবেলা। সেই জরিপ অনুযায়ী প্রায় ৮৯ শতাংশ মানুষ এই দাবির সঙ্গে একমত।
গত ১১ জুন বিকেল ৪টা ২১ মিনিটে মতামত জরিপ শুরু করে কালবেলা অনলাইন। যেখানে রোববার (১৬ জুন) সোয়া ৬টা পর্যন্ত প্রায় ৩৩ হাজার ৪৪৪ জন মতামত দেন। (মতামত জরিপের লিংক)
কালবেলার মতামত জরিপে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোকাকোলা বয়কটের পক্ষে-বিপক্ষে চলছে তর্ক-বিতর্ক। আপনি কি কোকাকোলা বয়কট সমর্থন করেন? এই প্রশ্নের তিনটি উত্তর রাখা হয়। প্রথমটি, হ্যা? দ্বিতীয়টি, না? আরেকটি হলো-মন্তব্য নেই।
এখানে প্রথম প্রশ্নের উত্তরে সমর্থন করেছেন ৮৮ দশমকি ৯৮ শতাংশ। প্রশ্নের উত্তরে সমর্থন জানায় ০৯ দশমিক ৬০ শতাংশ। এ ছাড়াও শেষ প্রশ্নের উত্তরে সমর্থন দিয়েছে ০১ দশমিক ৪১ শতাংশ মানুষ।
কোকাকোলা বয়কট কেন?
কোকাকোলা পানীয়ের জগতে সুপরিচিত ব্র্যান্ড। যা বিশ্বব্যাপী চলে। বাংলাদেশেও এর ইতিবাচক ধারণা ছিল। কিন্তু গত বছরের ৭ অক্টোবরের পরে নাটকীয়ভাবে এই অবস্থায় পরিবর্তন ঘটে।
মূলত গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলার পর থেকেই কোকাকোলা বয়কটের ডাক দেওয়া শুরু হয়। যদিও বিষয়টি একপর্যায়ে গিয়ে খুব বেশি প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। কিন্তু সম্প্রতি কোকাকোলার বিজ্ঞাপনটি আবারও সেই বয়কট প্রচারণাকে উসকে দিয়েছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে কোকাকোলার সম্পর্ক
১৯৬৬ সাল থেকেই কোকাকোলা ইসরায়েলের কট্টর সমর্থক। কোকাকোলার যে ফ্যাক্টরি নিয়ে বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে সেটি ১৯৬৭ থেকে ১৯৯১ সালে দখল করা ফিলিস্তিনি ভূমিতেই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
যার ফলে সেই সময়ে আরব লিগ কোকাকোলাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বয়কট করেছিল। এমনকি ২০২০ সালে দখল করা ভূমিতে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জাতিসংঘ কর্তৃক ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করা হয়েছিল।
ইসরায়েল সরকারের অর্থনৈতিক মিশন থেকেও কোকাকোলার সঙ্গে তেল আবিবের সম্পর্কের গভীরতা অনুমান করা যায়। ১৯৯৭ সালে ব্র্যান্ডটিকে প্রায় ৩০ বছর ধরে সহযোগিতা করার জন্য সম্মানিত করা হয়।
কোম্পানিটি মার্কিন-ইসরায়েলি চেম্বার অফ কমার্স অ্যাওয়ার্ডসকেও স্পনসর করে। যার মাধ্যমে ইসরায়েলি অর্থনীতিতে অবদান রাখা ব্যবসায়িক গোষ্ঠীকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন