বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে বলিউডে তৈরি রাজা কৃষ্ণ মেনন পরিচালিত হিন্দি ‘পিপ্পা’য় ব্যবহৃত হয় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘কারার ঐ লৌহকপাট’ গানটি প্রকাশের পর থেকেই বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। এ গানের রিমেকের সংগীতায়োজন করেন অস্কারজয়ী ভারতীয় সুরকার এ আর রাহমান। মূলত গানে নতুন করে এ আর রাহমান সুরারোপ করায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে নজরুলভক্তদের মধ্যে।
এবার এই ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের ভেরিফায়েড পেজে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ইসলামি আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) এক বার্তায় তিনি চলমান এই ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া জানান। নিচে তা তুলে ধরা হলো।
‘কাজী নজরুল ইসলামের একটি বিপ্লবী সংগীতের সুর বিকৃত করায় নজরুলপ্রেমীদের প্রতিবাদে ফেটে পড়তে দেখা যাচ্ছে। তাদের একই কথা—নজরুলগীতির সুর বিকৃত করে নজরুলের মৌলিকত্বকে নষ্ট করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে।’
নজরুলপ্রেমীদের কষ্টের জায়গাটা আমরা বুঝতে পারছি। যিনি যা ভালোবাসেন, যে আদর্শ অনুসরণ করেন, তিনি সব সময়ই চান, সেই অনুসরণীয় বিষয়ের মৌলিকত্ব যেন অটুট থাকে। এটাই প্রকৃতির দাবি।
একই নিয়ম ইসলামের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ইসলামকে যারা ভালোবাসেন, তারাও চান, তাদের অনুসরণীয় ইসলাম যেন ইসলামবিদ্বেষী কিংবা ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ ব্যক্তিদের হাতে পড়ে বিকৃত না হয়। কেউ যদি বিকৃত করার চেষ্টা করে, তবে ইসলামপ্রেমীরা প্রতিবাদে ফেটে পড়েন, যেভাবে ফেটে পড়েছেন নজরুলপ্রেমীরাও।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো নজরুলপ্রেমীদের প্রতিবাদকে মৌলবাদিতা বলা না হলেও ইসলামপ্রেমীদের প্রতিবাদকে খুব সহজেই মৌলবাদিতা বলে দেওয়া হয়। এটা এক শ্রেণির মানুষের পরিকল্পিত দ্বিচারিতা। মূলত আপন আপন আদর্শে আমরা প্রত্যেকেই মৌলবাদী। দোষ হয় শুধু ইসলামপন্থিদের।’
একই পোস্টের কমেন্টে তিনি লিখেন, ‘অনেক সময় ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ ব্যক্তিরা পাণ্ডিত্য জাহির করতে গিয়ে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা করেন। আবার কেউ কেউ বিদ্বেষবশত ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এতে ইসলামের মৌলিকত্ব নষ্ট হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়। তখন ইসলামপ্রেমীরা ইমানের দাবিতে এর প্রতিবাদ করেন। মজার ব্যাপার হলো অন্যান্য বিষয়ের প্রতিবাদকে স্বাভাবিক মনে করা হলেও ইসলামপ্রেমীদের প্রতিবাদকে ঘিরে এক শ্রেণির মানুষ তাচ্ছিল্য করে। এটা তাদের দ্বিচারিতা ছাড়া কিছু নয়।’
মন্তব্য করুন