ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ সশস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়েছেন। এ সময় ২০ জনের বেশি আহত হন।
‘এই ঘটনার পর বাংলাদেশের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও হেফাজতে ইসলামের নেতা মুফতী হারুন ইজহারের মধ্যে একটি বৈঠক হয়েছে’ শীর্ষক একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে। সেই দাবির সঙ্গে একটি ছবিও প্রচারিত হয়, যেখানে তাদের একসঙ্গে দেখা যায়।
এমন দাবিটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় তার ফেসবুক পেজে প্রচার করেন। তাকে উদ্ধৃত করে ভারতের কতিপয় গণমাধ্যমেও এ খবর প্রচারিত হয়।
তবে রিউমর স্ক্যানার এক প্রতিবেদনে জানায়, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও হেফাজত নেতা মুফতি হারুন ইজহারের মধ্যে সাক্ষাৎ ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে হামলার পরে নয়, বরং এর আগের দিন, অর্থাৎ গত ২১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে মূলত ইসলামপন্থি ও হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
আলোচিত ছবিটির বিষয়ে রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধান করে হারুন ইজহারের ফেসবুক পেজে গত ২৩ এপ্রিল প্রকাশিত একটি পোস্ট পায়। ওই পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘মাজলুমদের জন্য আমাদের দীর্ঘ দিনের মানবিক আইনি সহয়তার তাগাদায় রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট অথরিটির সাথে আমরা সংলাপে বসেছি দফায় দফায়। তারই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার আমরা আইন উপদেষ্টা মহোদয়ের সাথে একান্ত বৈঠক করেছি। আইন উপদেষ্টাকে আমরা বিস্তারিত ব্রিফিং করেছি।’
অর্থাৎ আলোচিত ছবিটি গত সোমবার (২১ এপ্রিল) ড. আসিফ নজরুল ও মুফতি হারুন ইজহারের সাক্ষাতের সময় তোলা।
গত ২৩ এপ্রিল ড. আসিফ নজরুলের ফেসবুক পেজে প্রচারিত একটি পোস্টে উল্লেখ করা হয়, ‘ইসলামবিদ্বেষী হাসিনা সরকারের আমলে আলেম-উলামাদের বিরুদ্ধে বহু রকম নির্যাতন ও হয়রানি করা হয়েছিল। এর একটা পদ্ধতি ছিল মিথ্যা মামলা প্রদান। কিছুদিন আগে হেফাজতে ইসলামের নেতারা এসে মামলার তালিকা দিয়ে গেছেন। উনাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলাগুলো প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
অর্থাৎ ড. আসিফ নজরুলের বক্তব্য অনুযায়ী, হেফাজত নেতাদের সঙ্গে তার সাক্ষাৎটি ঘটেছে ‘কিছুদিন আগে’।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করতে রিউমর স্ক্যানার টিম মুফতি হারুন ইজহারের কাছ থেকে আলোচিত ছবিটিসহ বৈঠকের একাধিক ছবির মূল ফাইল সংগ্রহ করে। ছবিগুলোর মেটাডাটা বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেগুলো ২১ এপ্রিল সকাল ১০টা ৪৯ মিনিটে ধারণ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন