মঙ্গল শোভযাত্রার নাম শুধু ‘বর্ষবরণ শোভাযাত্রা’ করার অনুরোধ জানিয়েছেন আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান ওরফে সামি। এ সময় তিনি এই শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করা নিয়ে যারা আপত্তি করেছেন, তাদেরও সমালোচনা করেন তিনি।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে এক পোস্টে তিনি এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে জুলকারনাইন লেখেন, ‘যেখানে শোভাযাত্রাটা হওয়া নিয়েই অনিশ্চয়তা ছিল, সেখানে শোভাযাত্রা হচ্ছে এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এবং আকর্ষণীয় আয়োজন করে হচ্ছে—এতে কি কারো মনে জ্বালা করতেছে?’
সঠিক নামে ফেরার অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘শোভাযাত্রা কি ঈশ্বর প্রেরিত কোনো বার্তা, যার নাম পরিবর্তন করা যাইবে না? এত কষ্ট এত ইগো কই রাখেন? যশোরে যেটা শুরু হইলো “বর্ষবরণ শোভাযাত্রা” নামে, ওইটারে ঢাকায় আইন্ন্যা বানাইলেন “আনন্দ শোভাযাত্রা”। তারপর কিছু সাংস্কৃতিক মোড়ল ওইটারে বানাইলো “মঙ্গল শোভাযাত্রা”। তা ঐ চেন্জগুলা কেন করছিলেন? এখন তাহলে চেন্জ হয়ে আগের নামে ফিরে যেতে পারবে না কেন? এইডা কি কেউ দিলের ভিত্রে খোদাই কইরা লিখা দিছে যে "নাম পরিবর্তন যোগ্য নহে”? আমি তো বরং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কর্তৃপক্ষরে অনুরোধ করব এটা শুধু “বর্ষবরণ শোভাযাত্রা” নাম করার জন্য। তাদের উচিত ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বোঝানো একদম অরিজিনাল নামে ফেরত যাওয়ার জন্য।’
‘কেউ আবার বলতেছে এই শোভাযাত্রার মাঝ্যমে নাকি ঘৃণার চাষ করা হবে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ভিলিফাই করা হবে। তা সেই প্রতিপক্ষটা কেডা? পলাতক আপা?’
সংস্কৃতি নিয়ে শেখ হাসিনার বিষয়ে এই সাংবাদিক লেখেন, ‘শোনেন, শেখ হাসিনা আর ফ্যাসিস্ট এখন সমার্থক। তিনি এমন একটি কাল্ট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যার সুরক্ষায় এহেন কোনো অপকর্ম নাই যা করা হয় নাই। আর এসবই হয়েছে তার নির্দেশে। বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ কাল্ট গডেস হাসিনা ও তার শাসনকে ধ্বংস করেছে। হাসিনা তার কাল্ট পার্সোনালিটি ইন্টেনসিফাই করতে কালচারাল ফ্রন্টকে বর্ম হিসেবে ব্যবহার করেছে, কখনো অস্ত্র হিসেবেও।’
‘বিজয়া দশমীর দিনে রাবণ বধ করেন রাম, যার স্মরণে হিন্দু ধর্মের অনুসারীরা এখনো প্রতিবছর এই দিন রাবণের মূর্তি গুঁড়িয়ে দেন। সকল ধর্ম-বর্ণের বাংলাদেশিরা সমন্বিতভাবে যে ফ্যাসিজমকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে, তারাও চাইলে ফ্যাসিজমের সেন্টার ফিগারকে এভাবে তুলে ধরতে পারেন।’
সাবেক সরকারের গুম-খুনের বিষয়ে জুলকারনাইন বলেন, ‘যার ইশারায় হাজারো মানুষকে পেট চিরে, পেটে সিমেন্ট ঢুকিয়ে বুড়িগঙ্গায় ডুবিয়ে দিয়ে গুমের নাটক করা হয়েছে, দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের রীতিমতো উৎসব করা হয়েছে, বিপ্লবে যার নির্দেশনায় গুলিতে ঝাঁঝরা হয়েছে হাজারো বুক আর খুলি, তার জন্য ঘৃণার পরিবর্তে ভালোবাসার বৃষ্টি ঝরাতে হবে বুঝি?’
মন্তব্য করুন