ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে জয়ী ঘোষণা করেছেন আদালত। একই সঙ্গে ভোট কারচুপির অভিযোগে শেখ ফজলে নূর তাপসের মেয়র পদ বাতিল করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ মো. নুরুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামলার বাদী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
এদিকে, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাককে ঢাকার মেয়র ঘোষণার পর নিজের আসনে এমপি পদ দাবি করেছেন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে এমনটা দাবি করেন তিনি।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে হিরো আলম লেখেন, ‘যেহেতু ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ঘোষণা করা হয়েছে। হিরো আলমের ঢাকা-১৭, বগুড়া-৪ ও ৬ আসনের এমপি পদ ফিরিয়ে দেওয়া হোক। আমি তো অনেক নির্যাতিত হয়েছি।’
এর আগে ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন বিএনপি সমর্থিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রার্থী ইশরাক হোসেন।
আদেশে নৌকা প্রতীক নিয়ে সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে মেয়র হিসেবে সরকারের গেজেট বাতিল করা হয়। ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা দেন আদালত।
অনিয়ম, দুর্নীতি ও অগ্রহণযোগ্যতার অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচন ও ফলাফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেছিলেন মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন। মামলায় তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা, রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসসহ মোট আটজনকে বিবাদী করা হয়।
ইশরাকের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ বলেন, অনিয়ম, দুর্নীতি ও অগ্রহণযোগ্যতার অভিযোগে আমরা নির্বাচন বাতিল চেয়ে মামলা করেছিলাম। তাকে মেয়র হিসেব ঘোষণার আবেদন করেছিলাম। আদালত আজ আমমাদের পক্ষে রায় দিলেন। ইসরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম উত্তরে ও ফজলে নূর তাপস দক্ষিণের মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচন কমিশন ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের গেজেট প্রকাশ করেন। তারা শপথ গ্রহণ করে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তাদের মেয়র পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
নির্বাচনী আইন অনুযায়ী ফলাফলের গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে সংক্ষুব্ধ প্রার্থী বা তার মনোনীত ব্যক্তিকে আবেদন করতে হয়। মামলার পর পরবর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করবেন ট্রাইব্যুনাল। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি রায়ে খুশি না হলে ৩০ দিনের মধ্যে তিনি নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালে যেতে পারবেন। নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনাল ১২০ দিনের মধ্যে আপিলটি নিষ্পত্তি করবেন।
মন্তব্য করুন