পবিত্র রমজান মাস শুরু হয়েছে। সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত উপবাস পালন করছেন বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান। সুর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করতে হয়।
আমাদের দেশে রোজায় যে ধরনের ইফতার তৈরি হয় সেগুলোর বেশির ভাগই ভাজাপোড়া। যার মধ্যে সুতি কাবাব, মাংসের কিমা, ডাবলি, বুটের ডাল, ডিম, পেয়াজু, বেগুনি, ছোলা, মুড়ি উল্লেখযোগ্য। আর বাঙালীদের কাছে ইফতারে মুড়ি মাখানো খুবই জনপ্রিয়। সাধারণত আলুর চপ, বেগুনি, পেয়াজু ও ছোলা দিয়ে মুড়ি মাখানো হয়। তবে মাঝেমধ্যে এই মুড়ি মাখায় জিলাপি মেশানো হবে কি না তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। সম্প্রতি এই বিতর্ক ডাইনিং টেবিল থেকে শুরু হয়ে ফেসবুকের ইভেন্ট পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘মুড়িতে জিলাপি, পক্ষ/বিপক্ষ’ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ফেসবুকে বেশ কয়েকটি ইভেন্ট খোলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ইভেন্টের নাম ‘মুড়ি মাখাতে জিলাপি বন্ধ কর্মসূচি’। এই ইভেন্ট খোলার পর মুড়িমাখায় জিলাপি দেওয়ার পক্ষে-বিপক্ষে ভার্চুয়াল বিতর্ক শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ‘ইফতারে মুড়িতে জিলাপি মাখার পক্ষে vs বিপক্ষে মারামারি চাই’ শিরোনামে আরও একটি ইভেন্ট দেখা যায়। সেখানেও ফেসবুক ব্যবহারকারীরা নানারকম মন্তব্য করতে থাকেন, তুলে ধরতে থাকেন পক্ষে-বিপক্ষে নানা যুক্তি।
এর মধ্যে তৌহিদুল ইসলাম রাব্বি নামে এক ফেসবুক ব্যবহারী লিখেছেন, ‘ঝাল মুড়ির ভিতরে মিষ্টান্ন (জিলাপি, বুন্দিয়া) মিক্স করে খাওয়া একটা স্বৈরাচারি পদ্ধতি!’
আমেন রাহমান নামে অপর একজন লিখেছেন, ‘ঝাল মুড়ির ভিতরে মিষ্টান্ন (জিলাপি, বুন্দিয়া ) যারা মিক্স করে তারা হাউন আংকেল।’
অপরদিকে, এ আহসান নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘পূর্বের ন্যায় মুড়ি মাখাতে জিলাপি থাকবে এবং এই ধারা আমৃত্যু অব্দি অব্যাহত চাই। লাউড এন্ড ক্লিয়ার।’
যারা জিলাপিতে মুড়িমাখা পছন্দ করেন না, তাদের স্বাদগ্রন্থি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওয়াসি জামান নামে একজন। তিনি লিখেছেন, ‘মুড়িমাখাতে জিলাপি না হইলে, সেইডা আবার কিসের মুড়ি মাখা! ডাক্তার দেখান। আপনাদের টেস্টবাড গেছে গা।’
মুড়ি ও জিলাপির আদি আলাপ
মুড়ি শতাব্দী প্রাচীন একটি খাবার। চাল দিয়ে তৈরি এ খাবারটি বেশ হালকা হওয়ায় সহজেই হজম হয়ে যায়। এটি বেশ ঝামেলামুক্ত হালকা নাশতা হিসেবে জনপ্রিয়। ইফতারে সাধারণত সরিষার তেল, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, আলুর চপ, বেগুনি, পেয়াজু আর ছোলা মিশিয়ে মুড়ি মাখানো হয়।
অপর দিকে, মোঘল আমলের খাবার হলো জিলাপি। যা এই উপমহাদেশে এসেছিল পারস্যের ব্যবসায়ীদের হাত ধরে, যারা আমাদের মতোই ডুবো তেলে ভাজা মিষ্টান্নপ্রেমী ছিলেন।
মন্তব্য করুন