‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’ নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা নতুন ছাত্র-সংগঠনের ঘোষণা করেছেন। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ নাম ঘোষণা করা হয়।
নতুন ছাত্রসংগঠন ঘোষণার আগে মধুর ক্যান্টিনে বিক্ষোভ করেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
দল ঘোষণা ও নেতৃত্ব নিয়ে কোন্দলে দুপক্ষের হাতাহাতির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন নবগঠিত বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি আব্দুল কাদের।
বুধবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হয়েছে। আজকের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমি লজ্জিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী।
নতুন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার এবং সদস্যসচিব হয়েছেন জাহিদ আহসান।
আহ্বায়ক কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়ামকে। এ ছাড়া রিফাত রশীদকে সিনিয়র সদস্যসচিব, তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরীকে মুখ্য সংগঠক এবং আশরেফা খাতুনকে মুখপাত্র করা হয়েছে সংগঠনটির।
প্রসঙ্গত, গত বছরের জুলাইয়ে কোটাবিরোধী ও পরে সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাদের অব্যাহত আন্দোলনে নির্বিচার গুলির মুখেও দমেননি সংগঠনের শিক্ষার্থীরা। তাদের বিভিন্ন দাবির মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। শেখ হাসিনা আশ্রয় নেন ভারতে।
সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের একটি অংশ নতুন একটি ছাত্র সংগঠনের গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা জানান, জুলাই-আগস্টে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা যুক্ত হয়েছিলেন। এখন সবাই নিজেদের সংগঠনে ফিরে গেছেন। এর বাইরে সাধারণ শিক্ষার্থী যারা যুক্ত ছিলেন, তাদের নিয়েই নতুন সংগঠন করবেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে বেরিয়ে ছাত্র সংগঠন করার ঘোষণা দেন একাংশের ছাত্রনেতারা। তারা বলেন, নতুন সংগঠনটির মূল কাজ হবে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা করা।
ওই সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘বাংলাদেশের সংগ্রাম ও স্বাধীনতার ইতিহাসকে স্বীকার করে এবং সাতচল্লিশ, বায়ান্ন, বাষট্টি, ছেষট্টি, আটষট্টি, ঊনসত্তর, একাত্তর, নব্বই এবং চব্বিশের সব গণআন্দোলন এবং ছাত্র-জনতার সংগ্রামী চেতনাকে ভিত্তি করে ছাত্র রাজনীতি আমরা সক্রিয় করব।’
মন্তব্য করুন