বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রায় ভঙ্গুর। রাজধানীসহ সারা দেশে চলছে লুটপাট, ছিনতাই, ডাকাতি, মারামারিসহ ধর্ষণ হত্যা। জনজীবন হয়ে ওঠেছে আতঙ্কিত। এবার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে এসব পরামর্শ দেন তিনি।
পোস্টে তিনি লিখেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে কিছু পরামর্শ :
১. রাজধানী ঢাকায় কেন্দ্রীয় এবং দেশের সব বিভাগীয় সদরে আনসার/পুলিশ/RAB/বিজিবি/সামরিক কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে টাস্কফোর্স গঠন করুন। প্রতি সপ্তাহে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আপডেট জানান।
২. নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যকলাপে যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করুন। থানার ওসিসহ যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদায়নে কর্মকর্তার যোগ্যতা, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং সততাকে প্রাধান্য দিন, প্রয়োজনে এনএসআইয়ের নিরাপত্তা ছাড়পত্র গ্রহণ করুন। কোনো দল বা গোষ্ঠীর সুপারিশ নয়।
৩. আওয়ামী লীগ সমর্থক বা সংশ্লিষ্ট হলেই কাউকে গ্রেপ্তার, হয়রানি বা মিথ্যা মামলায় জড়ানো থেকে বিরত থাকুন। আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসস্থান এবং পরিবারের সদস্যের যদি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকে, তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করুন।
৪. গুরুত্বপূর্ণ এলাকা এবং স্থাপনায় টহলের মাত্রা বৃদ্ধি করুন। রাজনৈতিক পরিচয়ে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
৫. অতিউৎসাহী ব্যক্তি-গোষ্ঠীর তৎপরতা বন্ধ করুন।
৬. নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত সকল সদস্য যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিতে পারে তা নিশ্চিত করুন। তাদের খাবারের মানোন্নয়ন করুন, ব্যারাক/লাইনে যেন একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারেন সেটার ব্যবস্থা করুন।
৭. দেশের সকল ট্র্যাফিক পুলিশের ভাতা বৃদ্ধি করুন। তাদের রেইনকোট, ছাতাসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করুন। থানায় দায়িত্ব পালনরত পুলিশ সদস্যদের সঠিকভাবে প্রশাসনিক কাজের পরিবেশ ও আসবাবপত্রের ব্যবস্থা করুন।
৮. স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশ প্রধান মাসে অন্তত ৭ দিন যেন দেশের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন সেটা নিশ্চিত করুন। তাদের পরিদর্শন যেন কেবল দরবার বা মিটিংয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিতদের সঙ্গে ইন্টারেকশনমূলক হয় সেটার ব্যবস্থা করুন।
৯. আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ যারা নিয়োজিত তাদেরও পরিবার রয়েছে। তারা যেন পরিবারের সময় ন্যূনতম সময় কাটাতে পারেন সে ব্যবস্থা করুন।
১০. দেশের সকল জেলে কারারক্ষীদের কাজে সহায়তায় এপিবিএন মোতায়েন করুন। কারাগারে মাদকসহ নিষিদ্ধসামগ্রীর ব্যবসা বন্ধ করুন। বিনাবিচারে আটকদের মুক্তির ব্যবস্থা করুন। রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে চিহ্নিত অপরাধীরা যেন ফায়েদা লুটতে না পারে সে বিষয়ে দৃষ্টি রাখুন। কারা-বন্দিদের খাবারের মানোন্নয়ন করুন।’
মন্তব্য করুন