গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশে যে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে মব সংস্কৃতির কারণে তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এতে তিনি লেখেন, তৌহিদি জনতা নামে আপনারা যারা নিজেদের পরিচয় দেন, তাদের আমি হুমকি দিইনি, সতর্ক করেছি। কেন করেছি? গত পনেরো বছর নিপীড়ন সহ্য করে এবং অভ্যুত্থানে ভূমিকা রেখে সকল নাগরিকদের মতই আপনারা একটি জাতীয় সম্ভাবনা হাজির করেছেন, কিন্তু মব সংস্কৃতির কারণে তা ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে আপনাদেরই এ সম্ভাবনা রক্ষা করতে হবে।
উপদেষ্টা লেখেন, আমার আপনাদের প্রতি ঘৃণা নেই, বরং বাংলাদেশের সকল নাগরিকদের মতই আপনাদের প্রতি দরদ আছে। আলেমদের প্রতি সম্মান আছে। আমি নিজে বিশ্বাসী মুসলিম হিসেবে তৌহিদবাদী, কিন্তু কেউ তৌহিদের নামে উগ্রতা দেখালে সেটার আসন্ন পরিণতি সম্পর্কে সাবধান করাও নাগরিক ও দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে আমার কর্তব্য মনে করেছি।
তিনি আরও লেখেন, বাংলাদেশে এখন স্থিতিশীলতা দরকার। বিপ্লবী জনতা আর খণ্ড খণ্ড মব আলাদা জিনিস। লক্ষ্যহীন, উদ্দেশ্যবিহীন এ মব সংস্কৃতির কারণে উপকৃত হচ্ছে আমাদের শত্রুরা। রাষ্ট্রের অখণ্ডতা, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষার্থে আমাদের কঠোর হতে হবে।
মাহফুজ আলম লেখেন, এ কঠোরতার হুঁশিয়ারি অপরাধীদের জন্য, যারা তৌহিদের কথা বলে নিপীড়ন করছে, নৈরাজ্য করছে। কিন্তু, আগে যেভাবে ইসলামফোবিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সাধারণ মুসলিমদের নিপীড়ন করা হত, যার শিকার আমিও হয়েছি- তা কোনমতেই আর পুনরাবৃত্ত হবে না।
তিনি লেখেন, আলেম উলেমা, মাদ্রাসার ছাত্ররা গত ১৫ বছর নিপীড়নের স্বীকার হয়েছেন, এবারের অভ্যুত্থানেও রক্ত দিয়েছেন কিন্তু যে স্বাধীনতা এত রক্তাক্ত, সে স্বাধীনতা রক্ষায় প্রজ্ঞা না দেখালে যে জুলুম নেমে আসবে- এ সতর্কতা উচ্চারণ যদি ভুল হয়, তাহলে আমার কিছু বলার নেই। আমি জালিম বা মজলুম- দুইটা হওয়া থেকেই আল্লাহর কাছে পানাহ চাই।
সবশেষ পোস্টে মাহফুল আলম লেখেন, পুনশ্চ : ব্যক্তি আক্রমণ, ব্যক্তিগত বিশ্বাস নিয়ে আক্রমণ বা সন্দেহ তৈরি, পরিবারের সদস্যদের হুমকি বা বেইজ্জতি ইত্যাদি কাজগুলো নবীজির অনুসারী হিসাবে সবার পরিত্যাগ করা উচিত। চলুন, বিভাজন আর ঘৃণা বাদ দিয়ে রাষ্ট্রকে সবার করে গড়ে তুলি। পরস্পর সম্মান ও মর্যাদার সম্পর্কই নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি।
মন্তব্য করুন