সম্প্রতি কুমিল্লায় সেনাবাহিনীর অভিযানে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রসহ ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগ্নেয়াস্ত্রসহ আটক ১০ ব্যক্তিকে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে।
তবে ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার জানায়, কুমিল্লার ওই ঘটনায় জামায়াত-শিবিরের কোনো নেতাকর্মীকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি।
সংস্থাটি জানায়, অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ১০ জন জামায়াতে-শিবিরের নেতা-কর্মী নন। কোনো প্রকার তথ্য-প্রমাণ ছাড়া গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের ওয়েবসাইটে গত ২৬ জানুয়ারি ‘কুমিল্লায় বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ১০’ শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনের ফিচারে আলোচিত দাবিতে ব্যবহৃত ছবিটির অনুরূপ একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৫ জানুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা থেকে ২৬ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে কুমিল্লা আদর্শ সদর সেনাবাহিনীর একটি দল বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র-গুলিসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি রিভলভার, তিনটি শর্টগান, ৯ রাউন্ড শটগানের বুলেট, ৪ রাউন্ড পিস্তল ও রিভলবারের বুলেটসহ বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নগরীর ঝাউতলা এলাকার মো. নাইমুল ইসলাম নাঈম (৩৬), মো. জাবেদুর রহমান (২৯), কালিয়াজুড়ির আবির হামিদ মাহি (২১), মো. রাকিব (২১), ছোটরা এলাকার মো. সাজিদুল ইসলাম (২১), মোহাম্মদ আলী (২৪), মো. সাব্বির হোসেন (২১), ধর্মসাগর পাড় এলাকার অভিজিৎ রায় সরকার (৩০), মো. অপু (৪২) ও বুড়িচংয়ের সাদকপুর এলাকার মো. আবুল খায়ের (৩৯)। প্রতিবেদনে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার কথা উল্লেখ করা হয়নি।
পরে একই ঘটনায় মূলধারার আরেকটি সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটে গত ২৬ জানুয়ারি ‘কুমিল্লায় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ১০’ শিরোনামে একই ছবি ব্যবহার করে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। তবে ওই প্রতিবেদনেও গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার কথা উল্লেখ করা হয়নি।
এ বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে রিউমর স্ক্যানার টিমের পক্ষ থেকে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহিনুল ইসলাম ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।’
সুতরাং কুমিল্লায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ১০ ব্যক্তি জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা।
মন্তব্য করুন