সম্প্রতি ‘গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত কষ্ট করে বাজার করলেন! রান্না করবেন কিভাবে?’ শিরোনামে #BangladeshCrisis হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজ থেকে একটি ফটোকার্ড প্রচার করা হয়েছে। ফটোকার্ডের ডান পাশে নিচে ‘আগেই ভালো ছিলাম’ একটি লেখাটি দেখা যায়।
এর মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে, বাসা-বাড়িতে গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার কারণে মানুষ বাজার করতে পারলেও রান্না করতে পারবে না।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্যকে সঠিক বলে জানিয়েছে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভোক্তা পর্যায়ে বাসা-বাড়িতে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করার কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। বরং শিল্প খাতে গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করার জন্য বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা), যা ইতোমধ্যে জ্বালানি বিভাগের নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে। বাসা-বাড়িতে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বাড়ানোর জন্য এখন পর্যন্ত কোনো প্রস্তাব করা হয়নি।
অনুসন্ধানের শুরুতে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি বিষয়ক প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দৈনিক কালের কণ্ঠের ওয়েবসাইটে গত ৭ জানুয়ারি প্রকাশিত হওয়া, ‘দ্বিগুণ হচ্ছে শিল্প খাতে গ্যাসের দাম’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বর্তমানে শিল্প গ্রাহকদের প্রতি ঘনমিটার গ্যাস কিনতে ৩০ টাকা এবং ক্যাপটিভ পাওয়ারে (শিল্পে ব্যবহৃত নিজস্ব বিদ্যুৎ) ৩০ টাকা ৭৫ পয়সা দিতে হয়। এলএনজির গড় আমদানি ব্যয় ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের কথা বলে গ্যাসের দাম প্রায় দ্বিগুণ করা হয়। কিন্তু প্রতিশ্রুত গ্যাস মিলছে না।
এ ছাড়া প্রথম আলো, ইত্তেফাক, এবং জনকণ্ঠের অনলাইন ভার্সনে প্রচারিত প্রতিবেদন থেকেও এই তথ্যের স্বপক্ষে প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে বাসা-বাড়ির গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কোনো তথ্য প্রতিবেদনগুলোতে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভোক্তা পর্যায়ে এলপি গ্যাসের দাম ১২ কেজি সিলিন্ডারে ৪ টাকা বেড়েছে।
সুতরাং, কেবল শিল্প খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবকে বাসা-বাড়িতে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বাড়ানোর দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।
মন্তব্য করুন