সম্প্রতি, ‘৪ মাসে ডিপোজিট ৪৫ কোটি অস্বাভাবিক ব্যাংক লেনদেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সাজিদুল ইসলাম বাপ্পির’ শীর্ষক শিরোনামে দৈনিক কালবেলার ডিজাইনের আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
ফটোকার্ডটিতে আরও দাবি করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় এই সহসমন্বয়ক সিন্ডএফ থেকে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কোটি টাকা আদায় করেছেন। এ ছাড়া তিনি মামলা বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত আছেন বলেও ফটোকার্ডটিতে দাবি করা হয়।
তবে কেন্দ্রীয় এই সহসমন্বয়ককে নিয়ে এই ফটোকার্ড ও বিভিন্ন দাবি সঠিক নয় বলে শনিবার (২১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দেশের জনপ্রিয় ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার।
তারা জানায়, রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ‘৪ মাসে ডিপোজিট ৪৫ কোটি অস্বাভাবিক ব্যাংক লেনদেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সাজিদুল ইসলাম বাপ্পির’ শীর্ষক শিরোনামে দৈনিক কালবেলা কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় দৈনিক কালবেলার ডিজাইন নকল করে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটিতে কালবেলার লোগো ব্যবহার করা হয়েছে এবং ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রচারিত কার্ডের তথ্যের সূত্রে কালবেলার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ পর্যবেক্ষণ করে এমন শিরোনামে কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া গণমাধ্যমটির ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলেও এই তথ্য-সম্বলিত কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে গত ১৯ ডিসেম্বর কালবেলার ফেসবুক পেজ ‘ফাঁস প্রশ্নের টাকায় নিজ পকেটের উত্তর মেলান আবেদ আলী’ শীর্ষক শিরোনামে একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। যার ডিজাইন প্যার্টানের সঙ্গে আলোচিত দাবির ফটোকার্ডের ডিজাইন প্যার্টানের মিল রয়েছে।
উভয় ফটোকার্ড পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত ফটোকার্ডের শিরোনামের ফন্টের লাল রং কালবেলার ফটোকার্ডের তুলনায় ডার্ক এবং শিরোনামের কালো রঙের ফন্টটিও ভিন্ন।
পরবর্তীতে আলোচিত ফটোকার্ডটির বিষয়ে জানতে কালবেলার অনলাইন সম্পাদক পলাশ মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কালবেলায় এমন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশিত হয়নি।
এ ছাড়া দাবিগুলোর বিষয়ে জানতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক সাজিদুল ইসলাম বাপ্পির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও রিউমর স্ক্যানারকে জানান, আলোচিত দাবিগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আগেও এমন বিভিন্ন অভিযোগ তোলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে তোলা এমন কোনো অভিযোগের যদি প্রমাণিত হয়, তবে সংগঠন থেকে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, আমি তা মাথা পেতে নেব।’
রিউমর স্ক্যানার বলছে, সুতরাং ‘৪ মাসে ডিপোজিট ৪৫ কোটি অস্বাভাবিক ব্যাংক লেনদেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সাজিদুল ইসলাম বাপ্পির’ শীর্ষক শিরোনামে দৈনিক কালবেলার নামে প্রচারিত ফটোকার্ডটি সম্পূর্ণ ভুয়া ও বানোয়াট।
মন্তব্য করুন