বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে এবার কথা বলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ১টায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
ফেসবুকে হাসনাত লিখেছেন, এটা বিডিআর বিদ্রোহ নয়; এটি হলো বিডিআর হত্যাকাণ্ড।
কালবেলার পাঠকদের জন্য হাসনাত আব্দুল্লাহর স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো :
এটা বিডিআর বিদ্রোহ নয়; এটি হলো বিডিআর হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার সবার আগে প্রয়োজন। যত দ্রুত সম্ভব।
এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, পিলখানা বিডিআর বিদ্রোহের পুনঃতদন্ত শিগগিরই শুরু হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের অধিকার, সুশাসন এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বদ্ধপরিকর। শুধু স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে নয়, একজন সাধারণ নাগরিক ও সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সদস্য হিসেবে আমি বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার চাই।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সঠিকভাবে এ হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্ত ও ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়া শিগগিরই শুরু করা হবে।
বিডিআর বিদ্রোহের মর্মান্তিক সে ঘটনা নিয়ে সেনাবাহিনী গঠিত তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, যিনি তার আগে বিডিআর প্রধানেরও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর সদরদপ্তরের সংঘটিত বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলে ওই ঘটনা।
এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে মুক্তি আটকে আছে ৪৬৮ বিডিআর সদস্যের।
হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ৮৫০ জনের বিচারকাজ শেষ হয়েছে। এতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ও হয়ে যায় হাইকোর্টে। তাতে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে এবং বিভিন্ন মেয়াদে ২২৮ জনকে সাজা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া ২৮৩ জনকে খালাস দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের রায়ের পূর্বে ১৫ জনসহ মোট ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন। অন্যদিকে হাইকোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়।
অন্যদিকে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ২০১০ সালে ৮৩৪ আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু মাঝপথে বিস্ফোরক মামলার কার্যক্রম একপ্রকার স্থগিত রেখে শুধু হত্যা মামলার সাক্ষ্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ফলে এ মামলার বিচার ঝুলে যায়। তবে শাসনক্ষমতার পরিবর্তনে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত পুনরায় শুরুর দাবি ওঠে।
মন্তব্য করুন