সম্প্রতি দেশজুড়ে তোলপাড় চলেছে বিসিএসে প্রশ্ন ফাঁসকাণ্ডে। বিসিএস ও বিভিন্ন সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় একটি চক্র প্রশ্ন ফাঁস করে আসছে এমন প্রকাশের পর গ্রেপ্তার করা হয় পিএসসির কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ১৭ জনকে। আর এবার এই প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডে জড়িয়ে পরেছে জনপ্রিয় অভিনেতা ও সংগীতশিল্পী তাহসান খানের মায়ের নাম।
এই প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডে সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তি সৈয়দ আবেদ আলী। জানা যায়, এ আবেদ আলী ছিলেন সংগীতশিল্পী তাহসান খানের মা ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগমের গাড়ির চালক। তাহমিদা বেগম যখন পিএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন, তখন তার ব্যক্তিগত গাড়ির ড্রাইভার ছিলেন সৈয়দ আবেদ আলী।
সেইসঙ্গে গুঞ্জন ছড়িয়েছে মা জিনাতুন নেসার চেয়ারম্যান থাকাকালীন ২৪তম বিসিএসে পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হয়েছিলেন তাহসান। কিন্তু সেই পরীক্ষা বাতিল হয়। পরবর্তী ভাইভা অনুষ্ঠিত হলে বাদ পড়েন তিনি। এরইমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে গুঞ্জনটি।
এদিকে সোশ্যল মিডিয়ায় রিউমার স্ক্যানার গ্রুপে উঠে এসেছে, ২৪তম বিসিএসে ভাইভায় তাহসানের বাদ পড়ার বিষয়টি সত্য নয়। সেখানে বলা হয়েছে, ‘মূলত ২০০৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ২৪তম বিসিএস এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে ৩ মার্চ পরীক্ষাটি বাতিল করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি)। পরবর্তী সময়ে পুনরায় ২৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং লিখিত পরীক্ষা ও ভাইবার মাধ্যমে নিয়োগ কার্যক্রম শেষ হয়। অর্থাৎ, যে বিসিএসে তাহসান পররাষ্ট্র ক্যাডার হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে সেটি প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পর-ই বাতিল হয়, তাই সেই বিসিএসে তাহসানের পররাষ্ট্র ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়ার কোনো সুযোগই নেই। তাছাড়া ২৪তম বিসিএসে ভাইবা একবারই হয়েছিল। যার কারণে পুনরায় ভাইবায় অংশগ্রহণের দাবিটিও অমূলক।’
এদিকে ২৪তম বিসিএসের প্রশ্নফাঁস কেলেঙ্কারির বিষয়টি উঠে এসেছিল ওই সময়কার জাতীয় দৈনিকগুলোতে। ২০০৩ সালের ৪ মার্চের দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় শিরোনাম ছিল ‘২৪তম বিসিএস পরীক্ষা বাতিল’।
ওই প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছে ২৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরিক্ষা বাতিলের কথা। সেখানে বলা হয়েছে, ‘২৪তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। গতকাল (সোমবার) বিকেলে পাবলিক সার্ভিস কমিশনে (পিএসসি) অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় আকস্মিকভাবেই এই পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অবশ্য এর আগে গতকাল সকালেই পিএসসি ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কিন্তু তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করতে না করতেই রহস্যজনকভাবে পুরো পরীক্ষা বাতিলেরই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।’
রিউমার স্ক্যানার ও ২০০৩ সালের ৪ মার্চের খবরের কাগজে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণ করে স্পষ্ট হয় ২০০৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ২৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা বাতিল হয়। ফলে বিসিএসে তাহসানের পররাষ্ট্র ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়ার কোনো সুযোগই নেই। এছাড়া ২৪তম বিসিএসে ভাইবা একবারই হয়েছিল। যার কারণে পুনরায় ভাইবায় অংশগ্রহণের দাবিটিও অমূলক।
মন্তব্য করুন