হলমার্কের তানভীর ও তার স্ত্রীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. তানভীর মাহমুদ ও তার স্ত্রী জেসমিন ইসলামসহ ৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. আবুল কাশেম এ রায় ঘোষণা করেন। পাশাপাশি তানভীর মাহমুদ ও জেসমিন ইসলামকে ৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। এছাড়া প্রতারনার আরেক ধারায় তাদের সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২৫ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির সহকারী উপমহাব্যবস্থাপক সাইফুল হাসান, নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল মতিন, জেনারেল ম্যানেজার তুষার আহম্মেদ, ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের মালিক মীর জাকারিয়া, প্যারাগণ গ্রুপের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা, নকশী নিটের এমডি আব্দুল মালেক এবং টি অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক তসলিম হাসান। যাবজ্জীবন দণ্ডের পাশাপাশি তাদের ১০ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। প্রতারণরা আরেক ধারায় তাদের সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি দুই লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। রায়ে সোনালী ব্যাংকের শীর্ষ সাত কর্মকর্তা-প্রধান কার্যালয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির, সাবেক জিএম ননী গোপাল নাথ, সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সাবেক জিএম মীর মহিদুর রহমান, ডিএমডি মাইনুল হক, উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. সফিজউদ্দিন আহমেদ, এজিএম কামরুল হাসান খান ও সোনালী ব্যাংক ধানমণ্ডি শাখার জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুন্নেছা মেরীকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। আর প্রতারণার আরেক ধারায় তাদের সাত বছরের কারাদণ্ড, দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। এছাড়া সাভারের হেমায়েতপুরের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন সরকারকে এক ধারায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছর। আরেক ধারায় দুই বছরের কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। এর আগে ২৮ জানুয়ারি আদালত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন। তবে ওইদিন দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রায় থেকে মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে পাঠান। পরে গত ১২ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের জন্য ১৯ মার্চ দিন ধার্য করেন।   মামলার সূত্রে জানা গেছে, ভুয়া ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের হিসাবে সুতা রপ্তানির নামে ৫২৫ কোটি ৬২ লাখ ৯২ হাজার ৮০০ টাকা মূল্যের সুতা রপ্তানি করা হয় বলে নথিপত্রে দেখানো হয়। ওই হিসাবে পুরো অর্থ জমা করা হলে তা থেকে ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা হলমার্কের আরেক ভুয়া প্রতিষ্ঠান অ্যাপারেল এন্টারপ্রাইজের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়, যা পরে তানভীর ও তার স্ত্রী তুলে নেন। ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ, পরস্পরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অর্থের অপব্যবহার এবং পাচারের অভিযোগে রাজধানীর রমনা থানায় এ মামলা করে দুদক। ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা মামলার অভিযোগ গঠন করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এ বদলির আদেশ দেন।
১৯ মার্চ, ২০২৪
X