দুবাই বসে স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন স্বামী
রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলায় দুবাই প্রবাসীর স্ত্রী রোজিনা ওরফে আরজিনা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে দুই লাখ টাকা চুক্তিতে ভাড়াটে খুনি দিয়ে স্ত্রীকে হত‍্যা করে প্রবাসী স্বামী লিটন শেখ।  শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পাংশা মডেল থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার।  এ ঘটনায় মো. শিহাব শেখ (৪৫) নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত শিহাব পাংশা উপজেলার বাজেয়াপ্ত বাগলী গ্রামের হেকমত আলী শেখের ছেলে।  পুলিশ জানায়, গত ৯ ফেব্রুয়ারি সকালে উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নের উত্তর পাট্টা গ্রামের বাঁশবাগান থেকে আরজিনার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ১০ ফেব্রুয়ারি নিহত আরজিনার বাবা মো. আবজাল খাঁ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে পাংশা থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর তদন্তে নামে পুলিশ। শুক্রবার রাতে পাংশা থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামি মো. শিহাব শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার তাকে আদালতে পাঠানো হলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।  পাংশা মডেল থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার কালবেলাকে জানান, আরজিনার স্বামী দুবাই প্রবাসী লিটন শেখ পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে আরজিনাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই লাখ টাকা চুক্তিতে আসামি শিহাব ও তার সহযোগীদের ভাড়া করেন বিদেশে বসেই। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার দিকে আরজিনাকে তার স্বামী লিটন শেখ ফোন করে বলে বাইরে লোক আছে, তাদের সঙ্গে দেখা করতে। স্বামীর কথায় আরজিনা দরজা খুলে বের হলে হত্যাকারীরা বাড়ি থেকে সুকৌশলে পাশের বাঁশবাগানে নিয়ে যায়। পরে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং গাছের ডাল দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে। এ ঘটনায় অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে জিয়া : নানক
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার নেপথ্যে মোশতাক, ডালিমের সঙ্গে জিয়াউর রহমানও সমানভাবে জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। গতকাল সোমবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। নানক বলেন, ১৫ আগস্টের এক সপ্তাহ আগে গুলশানের একটি বাড়িতে খুনিদের সাথে বৈঠক করেছিল জিয়াউর রহমান। সেখানে কিলিং প্ল্যান চূড়ান্ত করেছিল জিয়াউর রহমান। এই জিয়াউর রহমানের কিলিং প্ল্যানের ফসলই হলো ১৫ আগস্ট। সপরিবারে হত্যা করা হলো শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার সঙ্গে জিয়াউর রহমান যদি জড়িতই না থাকবে তাহলে কেন জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ করা হলো? কেন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে? কেন বাংলাদেশ বেতার কেন্দ্রর নাম পরিবর্তন করে রেডিও বাংলাদেশ রাখা হয়েছে- এমন প্রশ্ন রাখেন নানক। বাংলাদেশ হঠাৎ করে স্বাধীন হয়ে যায়নি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আজ যারা বড় বড় কথা বলে, স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলে, যারা স্বাধীনতা দিবস স্বীকার করলেও বঙ্গবন্ধুকে স্বীকার করতে চায় না, তাদের কাছে প্রশ্ন তখন কোথায় ছিল জিয়াউর রহমান? কোথায় ছিল তার অবস্থান?  তিনি বলেন, ৫২'তে জিয়াউর রহমান নাই, ৬২’তে জিয়াউর রহমান নাই, ৬৬’র ছয় দফা আন্দোলনে জিয়াউর রহমান নাই, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাতে জিয়াউর রহমান নাই, গণঅভ্যূত্থানে নাই। বাংলাদেশে স্বাধীনতা সংগ্রামের কোথাও জিয়াউর রহমানের দেখা মেলেনি। জিয়াউর রহমানকে দিয়ে কালুরঘাট থেকে বক্তব্য দেওয়ানো হলো- আর দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লো, বিষয়টি এমন নয়! বাঙালি জাতি এটি বিশ্বাস কখনই করবে না বলেও জানান সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ঠেকাতে একটি মহল গভীর ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। ষড়যন্ত্র করে কেউ এই উন্নয়নে ঠেকাতে পারবে না। এ জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে সকলকেই সতর্ক থাকতে হবে। হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর সিকদারের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক মিশাত সরকারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজাহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ।  
১৫ আগস্ট, ২০২৩

হত্যার পরিকল্পনা ছিল স্ত্রীকে, মারা গেল মেয়েও স্বামীর স্বীকারোক্তি
অনেক বছর ধরে এসএম সেলিম এবং মাহমুদা হক বৃষ্টির দাম্পত্য জীবনে চলছিল কলহ। স্বামী সেলিমের একাধিক নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক এ কলহের মূল কারণ। এর পরও ১০ বছর বয়সী মেয়ে সানজা মারোয়া এবং ৯ মাসের ছেলে শিশু সারিমের জন্য আঁকড়ে ধরেছিলেন সংসার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সংসার এবং পৃথিবী—কোনোটাই তিনি ধরে রাখতে পারলেন না ঘাতক স্বামীর জন্য। বৃষ্টিকে হত্যার জন্য দুধের মধ্যে ৩০টি ঘুমের ওষুধ মিশিয়েছিল সেলিম। সেই দুধ বৃষ্টি খাওয়ার পর খেয়েছিল মেয়ে সানজা। সেই ঘুমের ওষুধ মেশানো দুধ খেয়ে মারা যায় মা-মেয়ে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এসব জানিয়েছে ঘাতক সেলিম। গত মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় নিজ বাসা থেকে মা ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সেলিমকেও আটক করে পুলিশ। শুরুতে জিজ্ঞাসাবাদে সেলিম জানিয়েছিল, বৃষ্টি নিজে কিছু খেয়ে পরে সেটা মেয়েকে খাইয়ে হত্যা করেছেন। কিন্তু পরে সে স্বীকার করে, তার পরকীয়া সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে দুধের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মেশায় সে। সেই দুধ যে মেয়েও খাবে, সেটি সে বুঝতে পারেনি। মেয়েকে হত্যা করার উদ্দেশ্য তার ছিল না। পুলিশ ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সেলিমের পৈতৃক বাড়ি মেরুল বাড্ডা এলাকায়। এত দিন পরিবারের সঙ্গে থাকলেও দুই মাস আগে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে মেরুল বাড্ডার নতুন ফ্ল্যাটে উঠেছিল। বর্তমানে বেকার সেলিম পারিবারিক সম্পদের ওপর নির্ভর করে চলত। শিশু সানজা স্থানীয় মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত। মঙ্গলবার রাতে সেলিম বৃষ্টির বাসায় ফোন দিয়ে জানায় বৃষ্টি অসুস্থ। এরপর বাসায় গিয়ে দুই ঘরের দুই বিছানার ওপর দুটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন বৃষ্টির স্বজনরা। এ ঘটনায় নিহত বৃষ্টির বাবা মো. মোজাম্মেল হক বাড্ডা থানায় মামলা করেছেন। ওই মামলায় বুধবার রাতে আটক সেলিমকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। বৃষ্টির বাবা বলেন, ১৪ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় বৃষ্টি এবং সেলিমের। শুরুতে তাদের সংসার ভালোই চলছি। কিন্তু তিন বছর আগে থেকে তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ শুরু হয়। এ নিয়ে একাধিকবার পারিবারিকভাবে সালিশ হয়েছে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। আমার মেয়েটাকে মেরেই ফেলল। বৃষ্টির মামা রাসেল সিকদার জানান, মঙ্গলবার রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন বাসার ভেতরে একটি রুমের বিছানায় বৃষ্টি এবং অন্য রুমের বিছানায় সানজার নিথর দেহ পড়ে আছে। ছেলে শিশুটি তখন প্রতিবেশীদের কোলে। তাদের ঢামেকে নিতে বাধা দিচ্ছিল অভিযুক্ত সেলিম। পরে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে কৌশলে পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। এরপর পুলিশ এসে তাদের ঢামেকে নিয়ে যায়। বাড্ডা থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, শুরুতে সন্দেহ হলে সেলিমকে আটক করা হয়। সেলিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে স্বীকার করে, স্ত্রীকে হত্যার জন্য দুধের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়েছিল সে। তবে শুধু স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল সেলিমের। এ ঘটনায় বৃষ্টির বাবা একটি হত্যা মামলা করেছেন।
১৫ জুন, ২০২৩
X