চাকু দিয়ে চোখ উপড়ে ব্যবসায়ীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় মোস্তাফিজার রহমান বুটু (৪০) নামে এক ব্যবসায়ীকে চাকু দিয়ে চোখ উপড়ে ফেলে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেলের দিকে ভুক্তভোগীর বড় ভাই ইয়াছিন আলী বাদী হয়ে থানায় এ মামলা দায়ের করেন। ব্যবসায়ী মোস্তাফিজার রহমান গাবতলী উপজেলার বেলতলী পূর্বপাড়ার মৃত আফজাল হোসেনের ছেলে। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওই মামলায় বগুড়া সদরের গোদারপাড়া গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে মিজানুর রহমানের নাম উল্লেখ্য করে অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।  অভিযুক্ত মিজানুর রহমান ধুনট উপজেলার নিমগাছ ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি করেন।  মামলা সূত্রে জানা যায়, ধুনট-সোনাহাটা ভায়া বগুড়া পাকা সড়কের পাশে বেড়েরবাড়ি এলাকায় মোস্তাফিজার রহমানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ৩০ জুন বিকেলের দিকে মিজানুর রহমান কর্মস্থল থেকে মোটরসাইকেলযোগে বগুড়া শহরের বাসার দিকে রওনা হন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মোস্তাফিজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছে পৌঁছামাত্র বৃষ্টি শুরু হলে মিজানুর রহমান তার মোটরসাইকেলটি ওই ব্যবসায়ীর কাছে রেখে যেতে চায়। কিন্তু ব্যবসায়ী মোটরসাইকেলটি রাখতে অস্বীকার করেন। তারপরও মিজানুর রহমান জোরপূর্বক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মোটরসাইকেলটি রেখে সিএনজিতে চড়ে বগুড়ার বাসায় যান। ওই ব্যবসায়ী মোটরসাইকেলটি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে রেখে সেখানেই তিনি একাই ঘুমিয়ে পড়েন।  এ অবস্থায় রাত ১২টার দিকে মিজানুর রহমান ও তার লোকজন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দরজায় গিয়ে মোস্তাফিজারকে ঘুম থেকে ডেকে তুলেন। এরপর মোটরসাইকেলটি রাখতে না চাওয়ার অভিযোগ তুলে চাকু দিয়ে তার চোখ উপড়ে ফেলে হত্যার চেষ্টা করে। তখন ব্যবসায়ীর চিৎকারে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে পৌঁছলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করেন।  ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈকত হাসান বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মিজানুর রহমানের মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়েছে। এ মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
০২ জুলাই, ২০২৪

প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীর ছেলেকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
নরসিংদী সদর উপজেলার একটি দোকানে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।  সোমবার (৩ জুন) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জেলখানা মোড়ে মোল্লা ট্রেডার্স নামের একটি স্টিলের দোকানে এ ঘটনা ঘটে।  দোকানমালিক ওহাব মোল্লার ছেলে মুহিদ মোল্লাকে লক্ষ্য করে স্থানীয় যুবক রবিউল ইসলাম ভূঁইয়া রবি পরপর তিনটি গুলি ছোড়েন বলে অভিযোগ করেন মুহিদের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী বাবু।  গুলি করা ‍যুবক রবিউল ইসলাম রবি নরসিংদী সদরের তরোয়া এলাকার বাসিন্দা। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, স্টিলের দোকানের সামনে লাল টিশার্ট পরা দুই যুবকসহ কিছু মানুষের জটলা। দোকানের ভেতরেও কিছু মানুষ। তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি চলছে। হঠাৎ লাল টিশার্ট পরা উত্তজিত এক যুবক দোকানের ভেতরে কয়েকটি গুলি ছুড়ে। এতে সেখানকার লোকজন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এ সময় একজন গুলিবর্ষণকারী যুবককে থামানোর চেষ্টা করছেন। দোকানমালিক ওহাব মোল্লার ছেলে মোহাম্মদ আলী বাবু অভিযোগ করে বলেন, রবিউল ইসলাম রবি নামে স্থানীয় ওই যুবক দোকানের ভেতরে থাকা আমার ছোট ভাই মুহিদ মোল্লাকে গুলি করে। পরপর তিনটি গুলি ছুড়লেও কেউ গুলিবিদ্ধ হয়নি, তবে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে মুহিদের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। নরসিংদী সদর মডেল থানার ওসি তানভীর আহমেদ কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জেলখানার মোড়ে একটি দোকানে গুলি করার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেছি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও পেয়েছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতকে আটক করতে পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে। আশা করছি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে আইনের আওতায় আনা যাবে।
০৪ জুন, ২০২৪

পটুয়াখালীতে কিশোর গ্যাং নেতার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
পটুয়াখালীর দুমকিতে মো. সিয়াম নামের সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে নির্জন জঙ্গলে নিয়ে জবাই করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া কিশোর গ্যাংয়ের নেতা মো. রিফাত নামের এক কিশোরের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের তেঁতুলবাড়িয়া নামক এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার লেবুখালী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জসিম শিকদারের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে সিয়াম এবং কিশোর গ্যাংয়ের নেতা রিফাত ছোটবেলা থেকেই পাঙ্গাশিয়া নলদোয়ানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একসঙ্গে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। বর্তমানে সিয়াম লেবুখালী সরকারি হাবিবুল্লাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। অভিযুক্ত রিফাত পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের কাঞ্চন হাওলাদারের মেয়ের ঘরের নাতি। ছোট থেকেই রিফাত নানা বাড়িতেই  থাকেন। তাই সিয়াম ও রিফাতের বসবাস পাশাপাশি এলাকায়। বর্তমানে সিয়াম অন্য প্রতিষ্ঠানে পড়লেও সহপাঠী হিসেবে সিয়াম ও রিফাতের মধ্যে মোটামুটি একটা বন্ধুসুলভ সম্পর্ক ছিল। আহত সিয়ামের বাবা জসিম সিকদার বলেন, গত কয়েকদিন ধরে সিয়াম ও রিফাতের মধ্যে একটা ঘনিষ্ঠতা লক্ষ করেছি,  তবে ওদের মধ্যে কোনোসময় কোনো ঝগড়া হয়নি। তবে শুনেছি রিফাত কিশোর গ্যাংয়ের নেতা। শুক্রবার সন্ধ্যায় সিয়ামকে ডেকে অটোরিকশায় করে তেতুলবাড়িয়া নামক এলাকার এক নির্জন স্থানে নিয়ে যায় এবং সেখানে নিয়ে সিয়ামকে বেধড়ক মারধর করে একপর্যায়ে হত্যার উদ্দেশ্যে গলায় ছুরি দিয়ে জবাই করার চেষ্টা করলে সিয়ামের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে রিফাত পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় সিয়ামকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সঙ্গে সঙ্গে ঢাকায় রেফার করেন। বর্তমানে সিয়াম ঢাকার আগারগাঁও জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দুমকি থানা অফিসার ইনচার্জ তারেক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, ঘটনাটি শুনেছি তবে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
৩১ মার্চ, ২০২৪

জেলেনস্কিকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার রাশিয়ার
গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার ইউক্রেনের ওডেসায় গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। যুদ্ধে ওই অঞ্চলের অবস্থা দেখাতেই তিনি সেখানে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাদের গাড়িবহরের মাত্র ৫০০ মিটার দূরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রাশিয়া। ইউক্রেনের অভিযোগ, জেলেনস্কি এবং গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করতেই এই আক্রমণ চালানো হয়। কিন্তু রাশিয়া তা অস্বীকার করেছে। রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ জানিয়েছেন, রাশিয়া চাইলে জেলেনস্কির গাড়ির ওপরেই হামলা চালাত, গাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে নয়। জেলেনস্কিকে হত্যার জন্য ওই আক্রমণ চালানো হয়নি।
০৯ মার্চ, ২০২৪

চলন্ত বাসে ইবি শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থীকে গলাটিপে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ক্যাম্পাস থেকে কুষ্টিয়া যাওয়ার পথে দুপুর ৩টার বাসে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী আবু জাহেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্তরা হলেন, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রতন রায় ও বিহাব রিদোয়ান। তারা উভয়ই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী। তবে রতন রায় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতের সক্রিয় অনুসারী বলে জানা গেছে। জানা যায়, ক্যাম্পাস থেকে কুষ্টিয়া যাওয়ার উদ্দেশে বিকেল ৩টার বাসে উঠেছিলেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। এ সময় তিনি বন্ধুর ধরে রাখা দুইটা সিটের একটিতে বসে অন্যটি অভিযুক্ত রতনকে দেন। কিছুক্ষণ পর নিচে গিয়ে রতন তার বন্ধুদের ডেকে আনে এবং ভুক্তভোগীকে পাশের সিটে সরে বসতে বলেন। ভুক্তভোগী সিট থেকে সরে না যেতে চাইলে রতন তার সেশন জিজ্ঞেস করে। এ সময় ভুক্তভোগী শুধু সেশন কেন ভাই, পুরো পরিচয় দেব বলে জবাব দিলে আচমকা তার গলা টিপে ধরে রতন। একইসঙ্গে অপর অভিযুক্ত রিহাব রিদোয়ান ভুক্তভোগীর চোখে আঙুল ঢুকিয়ে দেয়। এ সময় ভুক্তভোগী হাত সরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে সিট থেকে উঠে পড়েন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। পরে বাসের অন্যরা চিল্লাচিল্লি শুরু করেন এবং ভুক্তভোগীকে তাদের থেকে ছাড়িয়ে নেন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আবু জাহেদ বলেন, তারা আমাকে আচমকা গলাটিপে ধরে। আমার গলায় দাগ পড়ে যায়। আমার মনে হয়েছিল আর ৯ থেকে ১০ সেকেন্ড থাকলে আমি মারা যেতাম। অভিযুক্ত রতন রায় বলেন, আমি তাকে গলাটিপে ধরিনি। রিদোয়ান তার শার্টের কলার ধরায় গলায় লাগতে পারে। তবে রিহাব বলেন, আমি তাকে কিছু করিনি। তাকে পাশের সিটে সরে যেতে বলায় সে রতনকে ধাক্কা দেয়। এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল সিদ্দীকী আরাফাত বলেন, কেউ ব্যক্তিগতভাবে কোনো অন্যায় কাজ করলে তার দায় সংগঠন নেবে না। তবে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে এটা একটি নিকৃষ্ট ধরনের কাজ। ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে তার এ ধরনের কাজ কোনোভাবেই কাম্য নয়। প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

আওয়ামী লীগ নেতার ওপর হামলা চালিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার গুনাইঘর উত্তর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মকবুল হোসেন মুকুলের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ গেটে তার ওপর হামলা হয়।  এ ঘটনায় দুপুরে অভিযুক্ত নুরনবীসহ অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনের বিরুদ্ধে দেবিদ্বার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন চেয়ারম্যান মুকুল। অভিযুক্ত নুরনবী নিজেকে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা পরিচয় দিলেও কমিটিতে তার নাম নেই বলে জানা গেছে।  অভিযোগে বলা হয়েছে, উপজেলা পরিষদ গেটে মুকুলের ওপর হামলা চালায় নুরনবী। এ সময় তাকে কিল-ঘুষি, লাথি ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা চেষ্টার চালানো হয়।  ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। আহত মুকুল বর্তমানে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। আওয়ামী লীগ নেতা মুকুল বলেন, ‘আমি উপজেলা পরিষদে জরুরি কাজে যাচ্ছিলাম। এ সময় নুরনবী আমার ওপর হামলা করে। এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি, লাথি মেরে ও ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’ এ বিষয়ে অভিযুক্ত নুরনবীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। যোগাযোগের চেষ্টা করে তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।  দেবিদ্বার থানার ওসি কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, চেয়ারম্যানের লিখিত অভিযোগ পেয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
০২ নভেম্বর, ২০২৩

চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
আসছিলেন টেকনাফ হাসপাতালে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার অধীনে নার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে। রিয়া (ছদ্মনাম) নার্স হিসেবে বেশ ভালোই কাজ করতেন টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সরকারি নিয়োগপ্রাপ্ত না হলেও আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মী হিসেবে বেশ নাম-ডাক তার। রাজধানী ঢাকায় বড় হয়েছেন। চাকরির সুবাদে হাসপাতালে নার্সেস কোয়ার্টারে থাকতেন। অবিবাহিত এই রিয়া একা থাকতে পারল না। তার ওপর নজর পড়ে একি হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ সরকারি চিকিৎসক আসিফ আলভীর। সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা চট্টগ্রাম হালিশহরে বসবাসকারী ৩৫ বছর বয়সী এই চিকিৎসক এক সন্তানের জনক। তিনি বিবিএ পাস করা প্রথম  স্ত্রী রেখে ২৬ বছর বয়সী নার্সকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন।   ২০২২ সালের ১২ মে আন্তর্জাতিক নার্সেস দিবসের কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে প্রথমে নজরে পড়েন ডা. আলভীর। এরপর থেকে সম্পর্ক প্রেম-ভালোবাসা এবং বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়।   ২০২৩ সালের ১২ মে এক মৌলভীর মাধ্যমে ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী বিয়ে পড়ে ডক্টরস কোয়ার্টার আসিফ আলভীর বাসায় তোলেন এবং গত ১৬ জুলাই ১৫ লাখ টাকার দেনমোহর নির্ধারণ করে কক্সবাজার শহরে গিয়ে নোটারি ও কাজি অফিসে গিয়ে কাবিননামা সম্পাদন করেন। এর মধ্যে নার্স হিসেবে স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশ যাওয়ার পথ রোধ করে এবং হাসপাতালের চাকরিও শেষ হয়ে যায়। তারপর একটি এনজিওতে চাকরি রিয়ার। বিয়ের কারণে স্বামী আর চাকরি করতে দেননি। জুলাই মাসে ওই চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। এই ফাঁকে ডাক্তার-নার্সের মধ্যে প্রেম-ভালোবাসার সম্পর্ক বছর খানেক মধুর হলেও বিপত্তি বাধে মৌলভি দিয়ে নিকাহ করার পর থেকে। তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে টেকনফ হাসপাতালের ডক্টরস কোয়ার্টার অবস্থানকালীন সময়ে তর্কাতর্কি শুরু হয় স্ত্রীর বেতনের টাকা ভোগ করা নিয়ে। চিকিৎসক স্বামী চায় স্ত্রীর বেতনের টাকা নিজে ভোগ করতে। নার্স স্ত্রী চায় তার অর্জিত টাকা নিজে রাখতে।  এ প্রসঙ্গে রিয়া বলেন, তার মা ক্যান্সার আক্রান্ত। চিকিৎসার জন্য মায়ের কাছে টাকা পাঠানো লাগে। তা নিয়ে বারবার ঝগড়া করে চিকিৎসক স্বামী। তা ছাড়া বিয়ের পরে জানানো হয় তার আরও এক স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। অথচ সম্পর্ক তৈরি করার সময় তিনি অবিবাহিত বলে জানিয়েছিলেন এবং সেইভাবেই কাবিননামা সম্পাদন করেন।  গত ৩১ জুলাই টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হাসপাতালের ডক্টরস কোয়াটারে সকালে স্ত্রীকে মারধর করে রুমে তালা লাগিয়ে সটকে পড়ে আসিফ আলভী। চার দিন পর ৩ আগস্ট বিকেলে তালা ভেঙে তাকে রুম থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখনও স্বামী হাসপাতালের বাইরে থেকে মেসেজ বা বিভিন্ন মাধ্যমে স্ত্রীকে চিকিৎসার খবর তো দূরের কথা টিকেট কেটে এলাকা ছাড়ার পরামর্শ দেন। এমন পরিস্থিতিতে রিয়া ৮ আগস্ট হাসপাতাল থেকে রিলিজ সিলিপ নিয়ে ঢাকায় এক আন্টির বাড়িতে চলে যান। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) তিন হাজার টাকা গাড়ি ভাড়ার ব্যবস্থা করে দেন। এ ঘটনায় রিয়া বাদী হয়ে টেকনাফ মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।  তিনি জানান, চাকরির সুবাদে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. আসিফ আলভীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ডা. আসিফ আলভীর সঙ্গে ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক ১৫ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে চলতি বছর ১৬ জুলায় সরকারি নেকাহ রেজিস্টার কার্যালয় কক্সবাজারে কাবিন মূলে তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়।  বিয়ের পর তার স্বামী বিভিন্ন সময় চাহিদামতো টাকা চাইতো তার কাছে। এরপরেও বিভিন্ন সময় তার বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা আনার জন্য চাপ দেয়। যৌতুকের টাকা আনতে অস্বীকৃতি জানালে ডাক্তার স্বামী তাকে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করে এবং তার সঙ্গে সংসার করবে না, প্রাণে হত্যা এবং তালাক দিয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৩১ জুলাই সকাল সাড়ে ৬টার দিকে তাকে শারীরিক, মানসিক নির্যাতনসহ শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে, তখন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। জ্ঞান ফেরার পর দেখে বাসা তালাবদ্ধ এবং স্বামী ডা. আসিফ আলভি বাসায় নেই এবং সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। একপর্যায়ে গত ৩ আগস্টে হোয়াটসআপে কল দিয়ে স্ত্রী রিয়া ডক্টরস কোয়াটারের বাসা ছেড়ে অন্যত্রে চলে যাওয়ার জন্য বলে। পরে অসুস্থ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।  একটি নির্ভরশীল সূত্র মতে, স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা ও নির্যাতনের পর থেকেই ডাক্তার স্বামী কর্মস্থল থেকে অনেক দিন অনুপস্থিত ছিলেন। এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে ড. আসিফ আলভীকে কর্মস্থলে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি সুরাহার জন্য বলা হলে তিনি জানান, প্রয়োজনে চাকরি ছাড়বেন তারপরও স্ত্রী টেকনাফ ত্যাগ না করা পর্যন্ত আসবেন না। পরে স্ত্রীকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডা. আসিফ আলভীর সহকারী আয়াস রুম থেকে পরার মাত্র কয়েক জোড়া কাপড় চোপড় বের করে দেয়। যাতে টেকনাফ ত্যাগ করেন রিয়া। তবে ডাক্তার আসিফ আলভীর সহকারী আয়াস তার বস ও বসের স্ত্রীর কাবিননামার প্রথম স্বাক্ষী হলেও কেন দুজনের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হলো তার বিষয়ে অবগত নন বলে জানান।  এ বিষয়ে ডা. আসিফ আলভী দ্বিতীয় স্ত্রীকে বেতন বা যৌতুকের জন্য মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিভিন্ন কারণে আমি ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছি। প্রাপ্য দেনমোহর পরিশোধ করার জন্য প্রস্তুত আছি। এই সংসার আর করব না। নিজকে অবিবাহিত বলে বিয়ে করবেন আর তালাক দিবেন এমন অনৈতিক কাজ কেন করছেন এমন প্রশ্নে তিনি জানান, দ্বিতীয় স্ত্রীকে কাছে পাওয়ার কৌশল হিসেবে এমন তথ্য কাবিননামায় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ জুবায়ের সৈয়দ বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবুল কাশেম বলেন, অনেকেই অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারে। প্রতিবেদকের সঙ্গে সাক্ষাতে কথা বলবে বলে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X