খাগড়াছড়িতে পাহাড়ধস, ৪ ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার আলুটিলার সাপমারা এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড় ধসে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রায় ৪ ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালের দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সড়ক থেকে মাটি সরালে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সাপমারা এলাকায় সড়কের মাটি সরানোর কাজ শেষ হওয়ায় যান চলাচল শুরু হয়েছে। তবে আলুটিলা সড়কের আরও কিছু স্থানে পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে। খাগড়াছড়িতে বৃষ্টি চলমান। বৃষ্টি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তলিয়ে যাওয়া সড়কগুলো দিয়ে যানবাহন চলাচল সম্ভব হবে না।  তিনি বলেন, এ ছাড়া অতিবৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলে জেলার নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হচ্ছে। বসতবাড়িতেও প্রবেশ করছে পানি। এর আগে মঙ্গলবার (২ জুলাই) ভোর ৫টার দিকে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। সড়কের ওপর মাটি জমে থাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নৈশ কোচের যাত্রীরা আটকা পড়েন। ভোগান্তিতে পড়েন ঢাকা ও চট্টগ্রাম যাতায়াতকারী যাত্রীরা। পরে সড়ক থেকে মাটি সরানোর কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
০২ জুলাই, ২০২৪

প্রেসিডেন্ট নির্বাচন / আমেরিকার সঙ্গে কি সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে আগ্রহী ইরানিরা?
পরিবর্তনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে ইরানে? ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পর দেশটিতে নির্বাচনে এগিয়ে রয়েছেন সংস্কারবাদী নেতা মাসুদ পেজেশকিয়ান। পেশায় হার্ট সার্জন ছিলেন। কিন্তু নাম লিখিয়েছেন রাজনীতিতে। সামলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং ডেপুটি স্পিকারের মতো পদও। এরইমধ্যে দেশটিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে  সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন তিনি। তবে নিয়মানুযায়ী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় গড়িয়েছে এ নির্বাচন। ইরানে প্রথাগতভাবে ক্ষমতা দখল করে আসছে কট্টরপন্থিরা। তবে এবারের নির্বাচনে মাসুদ পেকেশকিয়ানের জনপ্রিয়তা আশা দেখাচ্ছে সংস্কারবাদীদের। নির্বাচন পূর্ব  জরিপেও  উঠে এসেছে যে পেজেশকিয়ানই জয়ী হচ্ছেনে। গেল কয়েক দশকে ইরানে যিনিই ক্ষমতায় এসেছেন, তিনিই তীব্র যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী মনোভাব পোষণ করেছেন। তবে এবার সেই ছন্দে পতন ঘটতে পারে। পেজেশকিয়ান নির্বাচনে জয়ী হলে বদলে যেতে পারে ইরানের পররাষ্ট্রনীতি। কয়েকদিন আগেই তিনি জানিয়েছিলেন, নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করবেন তিনি। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, ইসরায়েল ছাড়া বাকি সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করতে চান পেজেশকিয়ান। শুক্রবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কট্টরপন্থি সাইদ জলিলির সঙ্গে পেজেশকিয়ানের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। তবে এগিয়ে রয়েছেন মাসুদ পেজেশকিয়ান। পেয়েছেন ৪২ শতাংশের বেশি ভোট।  নির্বাচনপূর্ব এক জরিপে দেখা গেছে, শুক্রবারের ভোটাভুটিতে স্পষ্ট বিজয়ী হচ্ছেন পেজেশকিয়ান। ইরানের রিপাবলিকান গার্ডের জরিপ বলছে, নির্বাচনে কমপক্ষে ৩৭ শতাংশ ভোট পাবেন সংস্কারবাদী পেজেশকিয়ান। মাশহাদের ফেরদৌসি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত আরেকটি জরিপেও এগিয়ে রয়েছেন তিনি। ওই জরিপ বলছে, নির্বাচনে ৪২.৩ শতাংশ ভোট পাবেন পেজেশকিয়ান। তবে নির্বাচনে কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফার নির্বাচন হবে ৫ জুলাই। আজারবাইজানের বংশোদ্ভূত পেজেশকিয়ানের জীবন সংগ্রামে ভরা। স্ত্রীর মৃত্যুর পর সন্তানদের একাই মানুষ করেছেন। কিন্তু এজন্য কখনো কারও সহমর্মিতা আদায়ের চেষ্টা করেননি তিনি। সাবেক সংস্কারবাদী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামির প্রশাসনে উপস্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদে আসীন হওয়ার মাধ্যমে পেজেশকিয়ানের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু। পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীরও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এ পর্যন্ত ৫ বার পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন পেজেশকিয়ান। হাসান রুহানির শাসনামলে করা পরমাণু চুক্তির একজন কট্টর সমর্থক ছিলেন পেজেশকিয়ান। প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য বা দুর্নীতি না করেই ইরানের রাজনীতিতে নিজের জায়গা শক্ত করেছেন তিনি। দুর্নীতিবিরোধী কঠোর অবস্থানের কারণে নির্বাচনে তিনি জনপ্রিয় নেতা মাহমুদ আহমাদিনেজাদের সমর্থক ভোট পাবেন বলেও মনে করা হচ্ছে। তবে বিদেশ নীতি নিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সঙ্গে তার স্পষ্ট বিভেদ, পেজেশকিয়ানের পথ কঠিন করে দিতে পারে।
২৯ জুন, ২০২৪

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আড়াই ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দুর্ঘটনার দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এর আগে সলিমপুর ইউনিয়নের ফকির হাট এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাস পাংচার হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। শনিবার (২৯ জুন) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের ফকিরহাট এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২ জন নিহতসহ আহত হয়েছেন ৩ জন। নিহতের মধ্যে একজন মহিলা আরেকজন পুরুষ। পুরুষের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। তিনি চট্টগ্রাম শহরের বড়পোল আবাসিক এলাকার মৃত আবু জাফরের ছেলে আবুল কাশেম (৬৪)। অন্যজন মহিলা (৪৫)। তার পরিচয় পাওয়া যায়নি। আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতরা হলেন, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আরিফ (৩০), কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আব্দুল মেতালেব (৫২) ও ফেনীর সোনাগাজীর স্বপ্না রানী (৪৯)। আহতরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। স্থানীয় সূত্র জানা যায়, সকাল ৯টার দিকে ঢাকাগামী একটি যাত্রীবাহী বাস (স্টার লাইন) দ্রুতগতিতে যাচ্ছিল। হঠাৎ বাসটির চাকা পাংচার হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের মাঝখানে আইল্যাডে উল্টে যায়। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা বাসের মধ্যে থাকা যাত্রীদেরকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এদিকে স্থানীয়রা হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে সিনিয়র কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, খবর শুনে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। ৪ জনকে আমরা বাসের ভেতর থেকে উদ্ধার করি। তার মধ্যে একজন মৃত মহিলা ও তিনজন আহত। কিন্তু মৃত মহিলাকে হাইওয়ে পুলিশকে বুঝিয়ে দেওয়ার আগেই স্থানীয়রা তাকে নিয়ে যায়। আহত অপর তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাসের মধ্যে কয়জন যাত্রী ছিল তা বলা যাচ্ছে না। স্থানীয়দের মুখে শুনেছি প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ জন যাত্রী ছিল। বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি খোকন চন্দ্র ঘোষ বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করি। ঘটনাস্থলে নিহতের কোন সন্ধান পাইনি। কিন্তু একজন নিহতের খবর শুনেছি। তার পরিচয় সনাক্ত করেছি। তিনি হলেন, নগরীর বড়পোল আবাসিক এলাকার মৃত আবু জাফরের ছেলে আবুল কাশেম (৬৪)। আহত তিনজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনা কবলিত বাসটি উল্টে গিয়ে আইল্যান্ডের ওপরে উল্টে যায়। এতে বাসটি পূর্ব পশ্চিমমুখী হয়ে যায়। বাসের অর্ধেক অংশ আইল্যান্ডের ওপরে বাকি অংশ চট্টগ্রাম মুখে লেনে ছিল। যার কারণে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। দুর্ঘটনার প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি উদ্ধার করলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
২৯ জুন, ২০২৪

সাজ্জাদ জহিরের নিবন্ধ / সিন্ডিকেট : ঠগবাজি নাকি বাজার ব্যবস্থার স্বাভাবিক পরিণতি?
সাধারণত, ব্যবসা জগতে সিন্ডিকেট বলতে কিছু ব্যবসায়ী-গোষ্ঠীর মধ্যকার জোট-বাঁধাকে বোঝায়। কোনো বৃহৎ আকারের কাজ সম্পাদনের উদ্দেশ্যে, ভিন্নধর্মী পারদর্শিতার সমন্বয় ঘটানোর জন্য, একাধিক ব্যবসায়ী গোষ্ঠী সাময়িককালের জন্য ‘সিন্ডিকেট’ গঠন করতে পারে, যা কার্যসম্পাদনের পর বিলুপ্ত হয়। (নির্দিষ্ট ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় একটি সাধারণ উদ্দেশ্যে (স্বার্থে) কিছু ব্যক্তি, কোম্পানি, করপোরেশন বা সত্তার একটি স্ব-সংগঠিত জোটকে সিন্ডিকেট নামে সংজ্ঞায়িত করা হয়  (ইন্টারনেট সূত্রে)। ক্রেতাদের নিয়ে সিন্ডিকেট গঠন হতে পারে। তবে এই নিবন্ধে কেবল সরবরাহের দিকের সিন্ডিকেট আলোচনা করা হয়েছে।) ভিন্নধর্মী না হওয়ার দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় ব্যাংকিং খাতে। সেখানে ‘সিন্ডিকেশন’ এর মাধ্যমে কয়েকটি ব্যাংক একত্র হয়ে সিন্ডিকেট গঠন করে, যার পক্ষে বৃহৎ অংকের প্রকল্প-ঋণ দেয়া সম্ভব। এই ব্যবস্থার ফলে ঋণ দেয়ার ঝুঁকির দায়ে অনেকের অংশীদারত্ব থাকে এবং একক পর্যায়ে ঝুঁকি কম হয়।  এসব দৃষ্টান্তে সিন্ডিকেট নামক জোট-গঠনকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হয়েছে, এবং সুষ্ঠু সরবরাহ নিশ্চিত করতে সিন্ডিকেটের ভূমিকার স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। একইভাবে, যে কোনো বাজারে, সীমিত সংখ্যক উৎপাদক বা সরবরাহকারীদের আন্তঃসমন্বয়কারী সংস্থা, বিধিসম্মত লেনদেন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। অর্থাৎ, বাজারের ক্রীড়কদের আচরণ বিধিসম্মত কিনা তা নিশ্চিত করায় নিযুক্ত সংস্থার (অর্থাৎ, রেগুলেটর-এর) (ইংরেজি শব্দ ‘রেগুলেটর’ এর বাংলা রূপান্তর হিসেবে নিয়ন্ত্রক (অর্থাৎ, কন্ট্রোলার) শব্দটি ধারণাগত ভাবে বেমানান। বিধি-পালন নিশ্চিতকারী সংস্থা অতি দীর্ঘ হওয়ার কারণে রেগুলেটরি সংস্থাকে ‘বিধি-সংস্থা’ নামে আখ্যায়িত করবো।) কাজকে সহজ করতে সিন্ডিকেট ও সিন্ডিকেট-সম ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্ভাব্য ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে।  সিন্ডিকেট গঠনের পেছনে অনেকক্ষেত্রে ভালো উদ্দেশ্য থাকলেও এটা অনস্বীকার্য যে, সিন্ডিকেট গঠনের ফলে সৃষ্ট গোষ্ঠীক্ষমতা অনেক সময় বাজারব্যবস্থার কল্যাণমুখী অবদানকে খর্ব করে। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট কোন বাজারে, ক্ষুদ্রস্বার্থের পক্ষে আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে গুটিকতক সংস্থা সিন্ডিকেটে জোটবদ্ধ হতে পারে, অথবা স্বাভাবিকভাবে গড়ে ওঠা জোটকে (সিন্ডিকেট) কোনো বহিঃশক্তি নিজ স্বার্থে ব্যবহার করতে পারে। সম্ভবত সে কারণেই সিন্ডিকেট গঠনকে অনেকে প্রতিযোগিতামূলক বাজারব্যবস্থার পরিপন্থি গণ্য করে। অস্থিতিশীল বাজারে, বিশেষত বাজারদাম বৃদ্ধিকালে, কোন কোন বিধিসংস্থার অতিউৎসাহের ফলে, ‘সিন্ডিকেট’-কে দানবরূপে দেখানোর মাত্রা বৃদ্ধি পায়। দুঃখজনক যে, এই হুজুগের সাথে সায় দেয় আমাদের দেশের কিছুসংখ্যক প্রচারমাধ্যম এবং (বুদ্ধি-বিক্রয়কারী) অনেক ব্যক্তি ও সংস্থা, যারা সিন্ডিকেট-এর দ্বৈত চরিত্র ধর্তব্যে আনতে ভুলে যায়।  বুঝে হোক, বা না বুঝে হোক, অনেকেই তাই গোষ্ঠী বা একচেটিয়া সিন্ডিকেট-স্বার্থের প্রসার প্রতিহত করার নামে নির্বিচারে ‘প্রতিযোগিতা আইন’ প্রয়োগের ‘ডাণ্ডাবাজি’ সংস্করণের পক্ষ নেয়! ‘দানবরূপী’ সিন্ডিকেটের ধারণাটি প্রায়শই সর্বগ্রাসী এবং বারংবার এজাতীয় ধ্যানধারণা খণ্ডন করা হলেও এর অপ্রতিরোধ্য পুনর্জাগরণ অনেক ক্ষেত্রে সর্বনাশার ইঙ্গিত দেয়। একদিকে বিধিসংস্থাগুলোকে ‘সিন্ডিকেট’-এর উপর দোষ চাপিয়ে নিজেদের দায় এড়াতে সচেষ্ট হতে দেখা যায়। অপরদিকে, স্থানীয় ‘সিন্ডিকেট’দের বাধা হিসেবে গণ্য করে, সেই বাজারে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে, বাইরের স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী সিন্ডিকেটবিরোধী উগ্র মনোভাবে ইন্ধন জোগায়। উপরোক্ত ব্যাখ্যায়, একটি দেশের রাজনৈতিক দল বা সরকারও একটি সিন্ডিকেট, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে জোটবেঁধে সমাজ ও অর্থনীতির বিবিধ অঙ্গনে, প্রণীত বা চাপিয়ে দেয়া আইনের আশ্রয়ে, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই অন্য পাঁচটা সিন্ডিকেটের মতো একটি দেশের সরকার সুশাসন ও প্রজ্ঞা-বলে জনগণের যেমন মঙ্গল আনতে পারে, একইভাবে, অপকর্মের দ্বারা অথবা প্রজ্ঞার অভাবে তারা জনজীবনকে অতিষ্ঠ করতে পারে। এমনকি স্বাধীন সত্ত্বা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্থানীয় একটি (সিন্ডিকেটরূপী) সরকার বিদেশি শক্তির সম্প্রসারণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে সক্ষম। সাধারণ বৈশিষ্ট্যের বাইরে সিন্ডিকেট গঠন ও বিন্যাসের অতিরিক্ত তিনটি দিক উল্লেখ করব, যা উভয় ব্যবসা-বাণিজ্য ও রাজনীতির অঙ্গনে সিন্ডিকেট গঠন প্রক্রিয়া বোঝার জন্য প্রাসঙ্গিক। প্রথমত, সমাজের বিভিন্ন অঙ্গনে সিন্ডিকেটসম সংগঠন গড়ে উঠলে তাদেরকে সমন্বয় করার জন্য একক কোনো সংস্থা বা ব্যক্তির উদ্ভব ঘটা স্বাভাবিক, যা বৃহত্তর সিন্ডিকেটের জন্ম দেয়। দ্বিতীয়ত, সুষ্ঠুভাবে কার্যপরিচালনার জন্য একটি প্রতিষ্ঠিত সিন্ডিকেট, খাতভিত্তিক দায়িত্ব বণ্টনের উদ্দেশ্যে, অনেকগুলো অধীনস্ত সিন্ডিকেটের জন্ম দিতে পারে। রাজ্য-কার্যপরিচালনার ইতিহাসে এই দুই ধারারই দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। স্থানীয় সামন্তরা একত্র হয়ে শশাঙ্ককে রাজা বানিয়ে নেয়ার কাহিনি যেমন রয়েছে, তেমনি দূরবর্তী মসনদ থেকে সুবেদার-নিয়োগের প্রথা বারংবার দেখা গেছে। তৃতীয় লক্ষণীয় দিক হলো, সিন্ডিকেটের সাথে তাদের কর্মক্ষেত্রে দায়িত্বরত বিধি সংস্থার মধ্যকার সম্পর্ক সবসময় একমুখী নয়। কোনো কোনো খাতের ‘সিন্ডিকেট’ এতই ক্ষমতাশালী হয়ে উঠে যে তারাই বিধি সংস্থার কার্যকলাপকে নিয়ন্ত্রণ করে। এক্ষেত্রে কেউ কেউ বলতে পারেন যে নির্দিষ্ট কোনো খাতে উন্নতি আনতে চাইলে সেখানকার সুবুদ্ধি-সম্পন্ন ব্যবসায়ী/উদ্যোক্তাদের স্বপ্রণোদিত আত্মনিয়ন্ত্রণের জন্য সেজাতীয় প্রভাব প্রয়োজন।  বাজারব্যবস্থার ঊর্ধে থেকে সরকারী প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা, আইন-প্রয়োগকারী সংস্থা এবং রাজনীতিবিদরা যে নৈর্ব্যক্তিক ভূমিকায় রাখবেন, এ ব্যাপারে শঙ্কা থাকার কারণেই এজাতীয় উল্টোভাবনা জাগে। যে উদ্দেশ্যেই হোক না কেন, রাজনীতির মাধ্যম ব্যতিরেকে বিধিসংস্থার ওপর সিন্ডিকেটের আধিপত্য নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই, সমাজ ও অর্থনীতির স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য উপযোগী ও আবশ্যিক জোটসমূহকে (বা সিন্ডিকেটকে) ধ্বংস করতে সচেষ্ট অশুভ সিন্ডিকেট থেকে মুক্তি পেতে হলে রাজনীতির অঙ্গনে পরিবর্তন জরুরি। নিবন্ধের বাকি অংশে নিত্যপণ্যের বাজারে ‘সিন্ডিকেট’ নামক সংগঠনের বিবিধ দিক আলোচনায় এনে উপযোগীমূলক (এবং স্বাভাবিকভাবে গড়ে ওঠা) সিন্ডিকেটের সাথে (অসৎ উদ্দেশ্যে গঠিত) নিপীড়নমূলক সিন্ডিকেটের পার্থক্য টানার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেব।  নিত্যপণ্যের বাজারে সিন্ডিকেট:  বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্য প্রথমে ছোট-বড় পাইকারদের মাধ্যমে আড়তদারদের কাছে যায়। পরবর্তীতে, ভোক্তা বাজারের পাইকারদের মাধ্যমে সেসব পণ্য খুচরা বাজার হয়ে ভোক্তাদের হাতে আসে। বাজারচক্রের এই পণ্যপ্রবাহে আমরা লম্বালম্বি উল্টোমুখো দুটো পিরামিডের চিত্র পাই, যেখানে বহু উৎপাদক ও বহু সংখ্যক ভোক্তাদের মাঝে স্বল্পসংখ্যক আড়তদার ও পাইকারদের ক্ষীণ সমাবেশ দেখা যায়। এ ছাড়াও ভোগ্যপণ্য বিপণনের পূর্বে প্রক্রিয়াকরণের প্রয়োজন থাকতে পারে (যেমন, ধান ভাঙানো বা আলুর হিমায়ন)। পণ্য সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণন প্রক্রিয়ায় পণ্যের স্থানান্তর ঘটে, যার বিভিন্ন ধাপে পরিবহণ জড়িত। পণ্যপ্রবাহের সুনির্দিষ্ট কয়েকটি স্তরে স্বল্পসংখ্যক ব্যক্তি-ব্যবসায়ী বা সংস্থার ভূমিকা আবশ্যিক।  আরো লক্ষণীয় যে প্রক্রিয়াকরণে ও পরিবহনে অধিক পরিমাণ লেনদেন করলে এককপ্রতি খরচ কম পড়ে। এসব কারণে, নির্দিষ্ট স্থানীয় উৎপন্নের বাজারে, স্বাভাবিকভাবে স্বল্পসংখ্যক ব্যবসায়ীর হাতে বাজার ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হবার সম্ভাবনা থাকে। তবে স্থানীয় পণ্যের ক্ষেত্রে সারাদেশব্যাপী এধরণের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীজোট ছড়িয়ে থাকার ফলে ভোক্তাবাজারে প্রবেশের পূর্বে, পরিবহন খাত ব্যতিরেকে, তাদের দ্বারা সিন্ডিকেট গঠনের সম্ভাবনা কম। অবশ্য স্থানীয় পর্যায়ে পাইকার বা মাস্তান/চাদাবাজ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় উৎপাদকের প্রাপ্তি কম হয়। নাগরিক ভাবনা অধিকাংশ ক্ষেত্রে খুচরা বাজারকে নিয়ে, যেখানে দাম নিয়ন্ত্রণের কারসাজি থাকতে পারে বলে অনেকেরই ধারণা। সাধারণত সনাতনী প্রথায় ভোগ্যপণ্যের খুচরা বাজারে একজন বিক্রেতা স্বনিয়োজিত এবং দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ সীমিত হওয়ায় সংসারের ভরণপোষণ মেটাতে তারা মার্জিনের মাত্রা অধিক রাখে। এটা অবশ্য সিন্ডিকেটের উপস্থিতি প্রমাণ করে না। বরং সম্মিলিতভাবে ন্যূনতম দাম ধার্য – জোটগঠনের বা নেপথ্য নিয়ন্ত্রণের ইঙ্গিত দেয়। খোঁজ নিলে জানা যাবে যে একটি বাজার বা একটি এলাকার কয়েকটি খুচরা বাজারে কোনো একটি পণ্য (যেমন, মুরগি বা ডিম) ধারে-কাছে অবস্থিত একটি আড়ত থেকে সরবরাহ করা হয়।  এসব এলাকাভিত্তিক আড়তদারদের পেছনে অনুমেয় যে বড় ব্যবসায়ী/আড়তদার রয়েছে। এটা অবাক হওয়ার নয় যে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে, এলাকাভিত্তিক একচেটিয়া ব্যবসায়ীর উদ্ভব ঘটতে পারে, যে বা যারা, ক্রয়ক্ষমতা বিশেষে ভিন্নভিন্ন বাজারে ভিন্নভিন্ন দাম ধার্য করতে পারে। কিন্তু যারা দীর্ঘকালীন ব্যবসায়ী, তারা কি বাজারের (ক্রেতাদের) ক্রয়ক্ষমতা উপেক্ষা করে এবং দাম ওঠানামার সাধারণ রীতি অগ্রাহ্য করে অতিমাত্রায় মজুত বা অতিরিক্ত দাম ধার্য করতে চাইবে? একাজটি তাদের দ্বারাই সম্ভব যারা স্বল্পমেয়াদে পটে অবতীর্ন হন এবং অতিদ্রুত অর্থ আত্মসাৎ করে বেরুতে চায়, যেমনটি স্বল্পমেয়াদি শেয়ার কেনাবেচার বাজারের খেলুড়েরা করে। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের মাঝে এই আচরণ দেখা গেলে বলতে হয়, তারা ব্যবসা পরিবর্তন বা দেশান্তরে আগ্রহী। অন্যথায়, বাজারের অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের ব্যাখ্যা দিতে তৃতীয় কোনো ব্যবসাবহির্ভূত শক্তির উপস্থিতি ও বাজারে তার নেতিবাচক প্রভাব অনুসন্ধান করা প্রয়োজন।  এই তৃতীয় শক্তি দেখা যায় আমদানির ক্ষেত্রে, যেখানে সিন্ডিকেট গঠনে সরকারের পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে – আমদানি লাইসেন্স দেয়া অথবা বৈদেশিক মুদ্রা পেতে সহায়তার মাধ্যমে। দেশে পণ্য আমদানির পর সেই সিন্ডিকেটকে অভ্যন্তরীণ পরিবহন ও বিপণন ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করতে হয়। বিভিন্ন স্তরে মজুতের পরিমাণ নির্ধারণ সাধারণত প্রত্যাশিত বাজার দামের ওপর নির্ভরশীল। তবে সিন্ডিকেট কর্তৃক আমদানিদামের ঊর্ধ্বে বাজারদাম নির্ধারণ কেবল শীর্ষে (আমদানিকালে) অবস্থিত স্বল্পসংখ্যক ব্যবসায়ীদের পক্ষে সম্ভব। বহুসংখ্যক আমদানিকারক থাকলেও অধিক আমদানিতে পরিবহন খরচে সাশ্রয়ের ফলে সিন্ডিকেট বা একচেটিয়া বাজার উদ্ভবের সম্ভাবনা রয়েই যায়।  ১৯৯০-এর দশকে বেসরকারিভাবে গম আমদানিকালে যে গ্রেইন মার্চেন্ট নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক বাজার কাঠামো ছিল, তার কাঠামোগত পরিবর্তন না হলেও এখনকার আমদানি লাইসেন্স-প্রাপ্ত ব্যবসায়ীগোষ্ঠী বাইরের গ্রুপগুলোর সাথে অধিকতর সম্পৃক্ত। লক্ষণীয় যে আঞ্চলিক পর্যায়ে সম্পদশালী ব্যবসাগোষ্ঠীর উদ্ভব ঘটেছে যারা নিজ দেশের সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পায় এবং পার্শ্ববর্তী ছোটছোট দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যকে নিজেদের মাঝে অন্তর্ভুক্ত করতে সচেষ্ট। বিস্তারিত ব্যাখ্যায় না যেয়ে দৃষ্টান্তস্বরূপ উল্লেখ্য যে, মিয়ানমার থেকে ডাল বা অন্য শস্যবীজ সংগ্রহ করে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা অন্য দেশে বিক্রয় করত। ভোজ্যতেলের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশকে পার্শ্ববর্তী দেশের বাণিজ্যসংস্থার ওপর নির্ভর করতে হয়, যে আমদানি সিন্ডিকেটে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ীরাও সক্রিয়ভাবে জড়িত। এই সমগ্র প্রক্রিয়াকে আমরা ঠগবাজি সিন্ডিকেট আখ্যা দিব, না কি বিশেষ বাজার ও পরিবহণ ব্যবস্থার স্বাভাবিক পরিণতি হিসেবে গণ্য করব, তা ভেবে দেখা প্রয়োজন। হয়তো দুটোই সত্য! উপসংহার:  পরিশেষে বলব, বাংলাদেশ সমাজে সিন্ডিকেটকে একটি অদৃশ্য অশুভশক্তি হিসেবে দেখানো হয়। আজকাল যেমন অজানা ভাইরাসকে রোগবিদ্যায় করোনা আখ্যা দেয়ার প্রবণতা রয়েছে, তেমনি বাজার ব্যবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ফল দেখলেই তার জন্য অদৃশ্য সিন্ডিকেটকে দায়ী করা হয়! অথচ সমাজ ও বাজারব্যবস্থা সংগঠিত হতে ‘সিন্ডিকেট’ বা ‘সিন্ডিকেটধর্মী’ সংগঠনের প্রয়োজন। বিশেষত, বাজারের সকল ক্রীড়নক যেন বিধিসম্মত ভাবে কার্যপরিচালনা করে, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নির্দিষ্ট বিধিসংস্থার এবং সেসব বাজারে ব্যবসায়ী জোট থাকলে তারা সহায়কের ভূমিকা পালন করতে পারে। অবশ্য সেটা নিশ্চিত করার মুখ্য দায়িত্ব ওই সকল বিধিসংস্থার। তাদের ব্যর্থতার ফলে ব্যবসায়ী জোট অসাধু কর্মকাণ্ড চালাতে পারে। এই ব্যর্থতা ঢাকবার জন্য অসাধু ব্যক্তি-ব্যবসায়ী বা সংস্থাকে চিহ্নিত করে উপযুক্ত (শাস্তিমূলক) পদক্ষেপ না নিয়ে, ‘সিন্ডিকেট’ এর ধুয়ো তুলা আজ নিত্যকার ঘটনা। এই একপেশে অবস্থানের ফলে, যেসকল অঙ্গনে ভালো ‘সিন্ডিকেট’ রয়েছে এবং যারা (রাষ্ট্রীয় বিধি লঙ্ঘন না করে) বিদেশি শক্তিকে রুখে দেশীয় সত্তার বিকাশ সাধন করার সম্ভাবনা রাখে, সেসব শুভশক্তির অস্তিত্ব আজ বিপন্ন।  দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত কর্তৃপক্ষ, ভোক্তা-অধিকার দপ্তরের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা, সংবাদকর্মী এবং আমার মতো বুদ্ধি-বিক্রেতাদের প্রতি আহবান জানাব, তারা যেন সিন্ডিকেট নামক বায়বীয় জুজুর ভয় দেখিয়ে ব্যবসা ও সমাজ অঙ্গনের স্বাভাবিকভাবে গড়ে ওঠা এবং বাজার-ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য আবশ্যকীয় জোট/ সিন্ডিকেট ধ্বংস করতে মদদ না জোগান। অবশ্যই বাজারে ও সমাজ-রাজনীতিতে দুষ্টচক্র রয়েছে, যারা নাগরিকের কষ্টার্জিত আয় ও সঞ্চয় নিংড়ে নিতে সদা-উন্মুখ। বাজারের সহজাত সংস্থার ধ্বংসযজ্ঞে না নেমে রাষ্ট্রীয় প্রশাসনে, অর্থ-বাজারে এবং রাজনীতির অঙ্গনের সেইসব দুষ্টচক্রকে চিহ্নিত করে তাদের অপকর্ম দমনের উদ্যোগ নেয়া জরুরি। (নিবন্ধটিতে প্রকাশিত অভিমত ও ব্যাখ্যা লেখকের একান্তই নিজস্ব, যার সাথে ইআরজি-এর অন্যান্য সদস্যদের সহমত নাও থাকতে পারে) সাজ্জাদ জহির: ইকনোমিক রিসার্চ গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক  
২৮ জুন, ২০২৪

সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটির দুটি বগি লাইনচ্যুতের ৯ ঘণ্টা পর জেলার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। ট্রেন দুর্ঘটনার পর বুধবার (২৬ জুন) রাত সাড়ে তিনটায় কুলাউড়া স্টেশনে আটকেপড়া জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস চালুর মাধ্যমে সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ শুরু হয়।  এর আগে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের মাইজগাঁও-মোগলাবাজার সেকশনের কটালপুরে চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় পড়ে। পরে কুলাউড়া ও আখাউড়া থেকে রিলিফ ট্রেন এসে উদ্ধারকাজ শুরু করে।  ট্রেনের যাত্রী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দ্রুতগামী ট্রেনটির চলার মধ্যেই কয়েকটি কামরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। টের পেয়ে ট্রেনের সামনের অংশ হঠাৎ গতি কমালে দুটি অংশের ধাক্কা লেগে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। এ সময় আতঙ্কে ট্রেনের কয়েক যাত্রী লাফ দিয়ে পাশের খালে গিয়ে পড়েন বলে জানান স্থানীয়রা। কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার রুমান আহমদ রেল যোগাযোগ শুরু হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সারাদেশের সঙ্গে সিলেটের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
২৭ জুন, ২০২৪

বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়েতে স্বস্তির ঈদযাত্রা, যান চলাচল স্বাভাবিক
দক্ষিণবঙ্গের প্রবেশপথ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক্সপ্রেসওয়েতে স্বাভাবিক সময়ের মতোই চলছে যান চলাচল। মহাসড়কে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ কিংবা নেই কোনো বিড়ম্বনা। স্বস্তিতে ঈদযাত্রায় গন্তব্যে যাচ্ছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। শনিবার (১৫ জুন) সকাল পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে ও পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণাঞ্চলে যান চলাচল স্বাভাবিকভাবে চলছে। মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ জিয়াউল হায়দার কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, স্বজনদের সঙ্গে ইদুল আজহা উদযাপন করতে বাড়ি ফিরছেন মানুষ। দূরপাল্লার গণপরিবহনের পাশাপাশি এ মহাসড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেলে অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে ছুটছেন। জিয়াউল হায়দার আরও বলেন, শনিবার ভোর থেকে বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সিগঞ্জ প্রান্তে যানবাহনের জটলা বা যাত্রীদের কোনো বিড়ম্বনা দেখা যায়নি। নির্বিঘ্নে ওই মহাসড়ক হয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিচ্ছে যানবাহনগুলো।  পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা সেতু দিয়ে ৪৪ হাজার ৩৩টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। টোল আদায় হয়েছে ৪ কোটি ৮০ লাখ ৩০ হাজার ১০০ টাকা। পদ্মা সেতুর দক্ষিণবঙ্গ অভিমুখের টোল প্লাজায় ৭টি বুথে নিরবচ্ছিন্ন টোল আদায় করা হচ্ছে। টোল আদায়ে প্রতি গাড়িতে সময় লাগছে মাত্র ৫-৬ সেকেন্ড।
১৫ জুন, ২০২৪

সাত ঘণ্টা বন্ধের পর সৈয়দপুরে বিমান চলাচল স্বাভাবিক
দীর্ঘ সাত ঘণ্টা পর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে সৈয়দপুর-ঢাকা রুটে সব ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর বিমানের বাংলাদেশের উড়োজাহাজের ত্রুটি মেরামত কাজ বিলম্বিত হওয়ায় উড়োজাহাজটিকে রানওয়ে থেকে সরিয়ে পার্কিং বেতে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল সাড়ে ৮টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ অবতরণের পরপরই নোজ হুইলে (সামনের চাকায়) ক্রটি দেখা দেয়। ফলে রানওয়েতে ফ্লাইটটি বিকল হয়ে যায়। পরে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বিমানটির ত্রুটি মেরামত করে সচল করার চেষ্টা চালায়। কিন্তু দীর্ঘ সময় লাগায় বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিকল বিমানটিকে পার্কিং বেতে রেখে ফ্লাইটের চলাচল চালু করা হয়। তবে পার্কিং বেতে উড়োজাহাজের ত্রুটি মেরামতের কাজ করছেন টেকনিশিয়ান ও সেনা প্রকৌশলীরা। রানওয়ে ফাঁকা করার পর দুপুর ২টার পর থেকে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে ফ্লাইটের চলাচল স্বভাবিক হয়েছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক সুপ্লব কুমার ঘোষ জানান, উড়োজাহাজের ত্রুটি সরাতে টেকনিশিয়ান ও সেনাবাহিনীর একটি প্রকৌশলীর দল কাজ করছে। কিন্তু ত্রুটি সরাতে দীর্ঘ সময় লাগায় ত্রুটিপূর্ণ বিমানটি পার্কিং বেতে নিয়ে আসা হয়েছে। এতে রানওয়ে ফাঁকা করে অন্যান্য ফ্লাইটের চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। বিমান বন্দরে ধীরে ধীরে যাত্রীদের চাপ কমে আসছে। তবে পার্কিং বেতে প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানরা ত্রুটি মেরামতের কাজ করছেন বলে জানান তিনি।
২৮ মে, ২০২৪

সৈয়দপুরে বিমান চলাচল স্বাভাবিক
অবশেষে সৈয়দপুর বিমানবন্দরের রানওয়ের রাতের লাইটিং সিস্টেম সচল করা হয়েছে। সোমবার (১৩ মে) সৈয়দপুর ও ঢাকা থেকে আসা প্রকৌশল বিভাগ দুপুর ৩টার পর রানওয়ে লাইটিং সিস্টেম ত্রুটিমুক্ত করে। ফলে রাতে বিমানের ফ্লাইট ওঠা-নামা স্বাভাবিক হয়েছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দর সূত্র জানায়, গতকাল রোববার সন্ধ্যায় রানওয়ের লাইটিং সিস্টেমের বিদ্যুৎ সংযোগে ত্রুটি দেখা দেয়। এতে করে রানওয়ের লাইটিং সিস্টেম সচল করা যায়নি। তবে সন্ধ্যা থেকে রাত অবধি সৈয়দপুর বিমানবন্দরের প্রকৌশল বিভাগ লাইটিং সিস্টেম সচল করার চেষ্টা চালায়। কিন্তু বিদ্যুৎ লাইনের ক্যাবল মাটির নিচে থাকায় মেরামত কাজ করতে বেগ পেতে হয়।  সোমবার সকালে ঢাকা থেকে একটি প্রকৌশলী দল সৈয়দপুর বিমানবন্দরে পৌঁছে মেরামত কাজে যোগ দেয়। পরে সৈয়দপুর ও ঢাকার প্রকৌশলীরা রানওয়ের একটি সার্কিটের লাইটিং সিস্টেম সচল করেন। এর দ্বিতীয় লাইটিং সিস্টেম রাতের মধ্যে চলাচল করার কাজ চলছে। সচল করা একটি সার্কিটে লাইটিং সিস্টেম দিয়ে বিমান ওঠা-নামায় সমস্যা নেই। ফলে রাতের সব ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক সুপ্লব কুমার ঘোষ জানান, গতকাল রোববার রানওয়েতে রাতে আলো না জ্বলায় ফ্লাইট ওঠা-নামা করতে পারেনি। এতে করে রাত ৯টার পর নভোএয়ার, ইউএস-বাংলা ও এয়ারএস্ট্রা এয়ারলাইন্সের ৩টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়। এতে প্রায় দুই শতাধিক যাত্রী বিমানবন্দরে আটকা পড়েন। এসব স্থানীয় যাত্রীরা বাড়ি ফিরে গেলেও দূরের যাত্রীরা আজ (সোমবার) সকালের ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরেন।  তবে জরুরিভিত্তিতে সৈয়দপুর ও ঢাকার প্রকৌশল বিভাগ কাজ করে লাইটিং সিস্টেমের একটি সার্কিট সচল করেছে। দ্বিতীয় সার্কিটটি সচল করার কাজ চলছে। রাতের মধ্যেই দ্বিতীয় সার্কিটটিও সচল করা সম্ভব হবে। বর্তমানে রাতে বিমান ওঠা-নামা স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তিনি।
১৩ মে, ২০২৪

কবে থেকে স্বাভাবিক হচ্ছে প্রাথমিকের পাঠদান, জানাল মন্ত্রণালয়
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম আগামীকাল মঙ্গলবার (৭ মে) থেকে স্বাভাবিক নিয়মে চলবে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সোমবার (৬ মে) দুপুরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মঙ্গলবার থেকে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিশু কল্যাণ ট্রাস্টের প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর লার্নিং সেন্টারগুলোর শ্রেণি কার্যক্রমসহ সব কার্যক্রম চলতি শিক্ষাবর্ষের (২০২৪) বর্ষপঞ্জী অনুযায়ী চলবে। ঈদের ছুটি শেষে ২১ এপ্রিল স্কুল-কলেজ খোলার কথা থাকলেও সারা দেশে তীব্র দাবদাহের কারণে বন্ধের মেয়াদ ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। প্রচণ্ড দাবদাহের মধ্যেই গত ২৮ এপ্রিল থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। পর দিন হাইকোর্ট দেশের সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসার ক্লাস বন্ধের নির্দেশ দেন। পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
০৬ মে, ২০২৪

ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
গাজীপুরের জয়দেবপুরে ট্রেন দুর্ঘটনার প্রায় ৩১ ঘণ্টা পর লাইনচ্যুত সব বগি উদ্ধার করা হয়েছে। এতে করে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ওই রুটে ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। এ বিষয়ে জয়দেবপুর জংশন রেলওয়ে স্টেশনের উপসহকারী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হওয়ার পর দুর্ঘটনাকবলিত লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ঘোষণা করা হয়েছে। এখন দুই লাইন দিয়েই ট্রেন চলাচল করতে পারবে। এর আগে, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে স্টেশনের দক্ষিণে আউটার সিগন্যালে টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের সঙ্গে তেলবাহী ওয়াগনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুটি ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় লোকোমাস্টারসহ চারজন আহত হন। এরপর ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রুটের ট্রেন চলাচল ২ ঘণ্টা বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিকল্প লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। বিকেলে রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়। রাত দিন উদ্ধার অভিযানে তেলবাহী ওয়াগনের লাইনচ্যুত ৪টি বগি অপসারণ করে পার্শ্ববর্তী স্টেশনে সরিয়ে নেওয়া হয়। এছাড়া যাত্রীবাহী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের ক্ষতিগ্রস্ত ৪টি বগি রেললাইনের পাশে ফেলে রাখা হয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দুটি ইঞ্জিন ও ওয়াগনের বগি সরিয়ে ফেলে রেলওয়ে বিভাগ। স্থানীয়রা বলছেন, রেলকর্মীদের গাফিলতির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ভয়াবহ সিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছেন যাত্রীরা। রাজধানীর কমলাপুরের ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন থেকে দৈনিক ৫৩টি ট্রেন ছেড়ে গেলেও মাত্র ৪টি ট্রেন সঠিক সময়ে ছেড়ে যায়। বাকি অর্ধশত ট্রেনের অধিকাংশ ২ থেকে ৭ ঘণ্টা বিলম্বে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। রেলস্টেশনে সময়সূচিতে দেখা গেছে, রংপুর এক্সপ্রেস প্রায় সাত ঘণ্টা বিলম্বে রয়েছে। সকাল ৯টা ১০ মিনিটে এ ট্রেন ছাড়ার কথা থাকলেও বিকেল ৪টায়ও ঢাকা থেকে ছাড়তে পারেনি। বিকেল পর্যন্ত ট্রেনটি বাতিলও করা হয়নি। স্টেশনের ইলেকট্রনিক বোর্ডে বিলম্বে ছাড়ার কথা লেখা ছিল। এ নিয়ে যাত্রীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যারা অনলাইনে টিকিট কেটেছেন তারা যাত্রা বাতিল করে টাকা ফেরত পাচ্ছিলেন না। রেল স্টেশন সূত্র বলছে, লাইন ক্লিয়ার না হওয়ার কারণে জয়দেবপুর হয়ে যে ট্রেনগুলো যাতায়াত করে সেগুলোর বিলম্ব হচ্ছে। গতকাল থেকেই এসব ট্রেন বিলম্বে ছাড়ছে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার কালবেলাকে বলেন, উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় সব ট্রেনই ২ থেকে ৩ ঘণ্টা বিলম্বে ছাড়ছে। এখনো লাইন পুরোপুরি ঠিক হয়নি। সকাল থেকে এ রুটে ৮টি ট্রেন ছেড়ে গেছে। আর সবই বিলম্বে চলছে। এদিকে ট্রেন বিলম্বে ছাড়ায় ছুটির দিনেও কমলাপুর স্টেশনে ছিল যাত্রীদের ভিড়। সাধারণত দিনে ৫৩টি ট্রেন কমলাপুর স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছেড়ে যায়। তবে জয়দেবপুর দুর্ঘটনার কারণে গতকাল থেকে সব ট্রেনই দেরি করে ছাড়ছে। এসব ট্রেন ঢাকায় পৌঁছেছেও দেরি করে। এর আগে সকাল ৬টার রাজশাহী ধূমকেতু এক্সপ্রেস সকাল ৮টায়, ৬টা ১৫ মিনিটের কক্সবাজারগামী পর্যটন এক্সপ্রেস সকাল সাড়ে ৮টায়, ৬টা ৪৫ মিনিটের চিলাহাটিগামী চিলাহাটি এক্সপ্রেস ৯টায়, ৭টা ১৫ মিনিটের নীলফামারীগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস সাড়ে ৯টায়, চট্টগ্রামগামী ৭টা ৪৫ মিনিটের মহানগর প্রভাতী ১০টার দিকে ছেড়ে যায়। রাজশাহী কমিউটার, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস, কালনী এক্সপ্রেস, উপকূল এক্সপ্রেস, চট্টলা এক্সপ্রেস এর কোনোটিই সময়মতো ছেড়ে যায়নি। স্টেশনে সরেজমিনে দেখা যায়, সন্তান ও স্বজন নিয়ে কেউ বসে আছেন, কেউবা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়েছেন বসার জায়গা না পেয়ে। স্টেশনের ভেতর অনেক যাত্রীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন কালবেলাকে বলেন, জয়দেবপুর হয়ে উত্তর পশ্চিমের সব ট্রেন বিলম্বে ছেড়ে যাচ্ছে। একটি লাইন দিয়ে এ রুটে ট্রেন চলছে। আজকের মধ্যে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
০৪ মে, ২০২৪
X