রিজওয়ানের ফিফটিতে অবশেষে বাবরদের স্বস্তির জয়
পাকিস্তান ক্রিকেট দল যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিল আসরের অন্যতম ফেভারিট হিসেবে। তবে চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচ হেরে বাবর-রিজওয়ানরা বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ার শঙ্কায়। টিকে থাকতে হলে অবশ্যই বাকি দুই ম্যাচ জিততেই হতো। এমন সমীকরণে অবশেষে জয়ের দেখা পেয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। তবে এই জয় আসরে টিকে থাকার জন্য যথেষ্ঠ হবে কি না তা সময় বলে দিবে।       মঙ্গলবার (১১ জুন) নাসাউ কাউন্টি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কানাডা-পাকিস্তানের বিশ্বকাপের ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে ৭ উইকেটে জয় পেয়েছে পাকিস্তান। প্রথমে ফিল্ডিং করে বোলারদের কৃতিত্বে কানাডাকে ১০৬ রানে আটকে ফেলে মেন ইন গ্রিনরা। জবাবে মোহাম্মদ রিজওয়ানের ফিফটিতে ১৫ বল হাতে রেখে জয় পেয়েছে পাকিস্তান। বিশ্বকাপে টিকে থাকার আশা বাঁচিয়ে রাখার জন্য পাকিস্তানের এই ম্যাচে জয় লাগত। রিজওয়ানের কল্যানে সেটি এসেছে। এখন যদি শেষ ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে বাবরা হারাতে পারে তাহলে সুপার এইটে ওঠার সম্ভাবনা থাকবে। তবে সেক্ষেত্রেও বাবরদের যুক্তরাষ্ট্রের হার কামণা করতে হবে। ১০৭ রানের লক্ষ্যে পাকিস্তানের দুই ওপেনারের শুরুটা হয় সতর্ক। বাবরের জায়গায় ওপেনিংয়ে নামা সাইম আইয়ুব ফিরে যান দলীয় ২০ রানের মাথায়। অন্যদিকে অপরপ্রান্তে রিজওয়ান ঠাণ্ডা মাথায় খেলে গেছেন।   বিশ্বকাপে প্রথম দুই ম্যাচে কিছু করতে না পারলেও কানাডার বিপক্ষে এই ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন পাক দলপতি বাবর। ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন এই পিচে ৩৩ বলে ৩৩ রান করে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান। তবে পাকিস্তান তখন জয় থেকে ২৪ রান দূরে তখন নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন তিনি। এই ম্যাচে অবশ্য দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন রিজওয়ান। কঠিন এই পিচে তার ব্যাট থেকে আসা ৫৩ রানই পাকিস্তানকে ম্যাচ জিতিয়েছে। অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছেড়েছেন তিনি।  এর আগে টস জিতে শুরুতে বোলিং করে নির্ধারিত ২০ ওভারে কানাডাকে ১০৬ রানে থামিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের পক্ষে মোহাম্মদ আমির ও হারিস রউফ নেন দুটি করে উইকেট। আর কানাডার পক্ষে ওপেনার অ্যারন জনসন করেন সর্বোচ্চ ৫২ রান।
১১ জুন, ২০২৪

‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে টাইগার যুবাদের স্বস্তির জয়
অনেক আশা নিয়ে বিশ্বকাপে গিয়েও ভারতের বিপক্ষে রীতিমতো বাজেভাবে হেরে যুব বিশ্বকাপ শুরু করেছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। শঙ্কা ছিল আগেই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ার। তবে তা হতে দিল না মাহফুজুর রহমান রাব্বির দল। ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপ স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল জুনিয়র টাইগাররা। সোমবার (২২ জানুয়ারি) ব্লুমফনটনে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৩৫ রান সংগ্রহ করেছিল আয়ারল্যান্ড। যেখানে একাই ৯০ রান করেন কিয়ান হিল্টন। বাংলাদেশের হয়ে ২টি করে উইকেট শিকার করেন মারুফ মৃধা ও শেখ পারভেজ জীবন। জবাবে খেলতে নেমে ৪৬ ওভার ৫ বলে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। যেখানে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন মোহাম্মদ শিহাব জেমস। আইরিশদের হয়ে ৪১ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট শিকার করেছেন স্কট ম্যাকবেথ।    ব্লুমফন্টেইনে আয়ারল্যান্ডের দেয়া ২৩৬ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যে শুরু থেকেই দেখে শুনে খেলতে থাকে বাংলাদেশের দুই ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলী ও আদিল সিদ্দিক। ওপেনিং জুটি থেকেই ৯০ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ। তবে তারপরই দ্রুত দুই উইকেট হারায় যুবারা। আদিল সিদ্দিক ৩৬ ও আশিকুর রহমান ৪৪ করে ফিরলে ম্যাচে ফেরার স্বপ্ন দেখে আইরিশরা। মোহাম্মদ রিজওয়ান ও আরিফুল ইসলামকে অল্পতে ফিরিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয় আইরিশরা। ১৩০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে তখন চাপে বাংলাদেশ।  তবে এরপর আইরিশদের আর কোনো সুযোগ দেয়নি বাংলাদেশের যুবারা। আহরার আমিন এবং মোহাম্মদ শিহাব জেমস বাংলাদেশকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। আমিন ৬৩ বলে ৪৫ ও শিহাব ৫৪ বলে ৫৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।    এর আগে টস জিতে আইরিশদের ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। মাস্ট উইন ম্যাচে শুরুটা খারাপ হয়নি বাংলাদেশের। গত ম্যাচে ৫ উইকেট শিকার করা মারুফ মৃধা এবারও নতুন বলে টাইগারদের প্রথম উইকেট এনে দেন। রায়ান হান্টারকে ফিরিয়ে ২৬ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন তিনি। এরপর নিয়মিতই উইকেট তুলেছে বাংলাদেশ। তবে এক প্রান্তে উইকেট তুললেও অপর প্রান্তে একাই লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন কিয়ান হিল্টন। এই টপ অর্ডার ব্যাটারের ১১২ বলে ৯০ রানে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় আয়ারল্যান্ড। অল্পের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া হলেও দলকে বড় সংগ্রহ এনে দিতে মুখ্য ভূমিকা রেখেছেন তিনি। তার ৯০ রানে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৩৫ রান করে আইরিশরা।   বাংলাদেশের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন মারুফ মৃধা ও শেখ পারভেজ জীবন। তারা দুজনই দুটি করে উইকেট শিকার করেছেন। তাছাড়া ৯ ওভারে ২৭ রান দিয়ে এক উইকেট পেয়েছেন মাহফুজুর রহমান রাব্বি।
২২ জানুয়ারি, ২০২৪

আবাহনীর স্বস্তির জয়
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নিজেদের প্রথম জয় তুলে নিয়েছে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। প্রতিযোগিতায় প্রথম দুই ম্যাচে প্রথমটিতে রহতমগঞ্জের সঙ্গে ড্র করার পরের ম্যাচে ফর্টিস এফসির কাছে হেরেছিল বর্তমান রানার্সআপরা। তৃতীয় ম্যাচেও পয়েন্ট হারানোর শঙ্কা ছিল আবাহনীর। তবে লাল কার্ড পাওয়া ম্যাচেও লিগের প্রথম জয় তুলে নিয়েছে ১০ জনের আবাহনী। গতকাল শুক্রবার গোপালগঞ্জের শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে ১-০ গোলে হারিয়েছে ঢাকা আবাহনী। ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন আবাহনীর সেইন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রানাডার কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট। প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে জয়হীন ছিল ঢাকা আবাহনী। রহমতগঞ্জের কাছে ড্রয়ের পর ফর্টিস এফসির কাছে হারের স্বাদ পায় বর্তমান লিগ রানার্সআপরা। তৃতীয় ম্যাচেও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের কাছে পয়েন্ট হারানোর শঙ্কা ছিল আর্জেন্টাইন কোচ আন্দ্রে ক্রুসিয়ানির দলের। কারণ ম্যাচের ৩৮ মিনিটের মাথায় লাল কার্ড দেখেন আবাহনীর ডিফেন্ডার রিয়াদুল হাসান রাফি। ম্যাচের বাকিটা সময় দশজন নিয়ে খেলতে হয় আবাহনীকে। প্রথমার্ধ গোলশূন্যভাবে শেষ করে দুদল। দ্বিতীয়ার্ধেও কোনোভাবেই গোলের দেখা পাচ্ছিলেন না স্টুয়ার্ট-ফার্নান্দেজরা। আরও একবার পয়েন্ট হারানোর শঙ্কায় ছিল আবাহনী। তবে ৮৮ মিনিটের মাথায় গোলমুখ খোলেন কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট। সেইসঙ্গে চলতি মৌসুমে লিগের প্রথম জয় পেল আবাহনী। দিনের আরেক ম্যাচে রাজশাহীতে ঢাকা মোহামেডান ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে। সোলেমান দিয়াবাতে ও সানডে ইমানুয়েল জোড়া গোল করেন। সাদা-কালোদের হয়ে অন্য গোলটি করেন উজবেকিস্তানের মুজাফ্ফর মুজাফফরভ। তিন ম্যাচে একটি করে হার, ড্র ও জয়ে ৪ পয়েন্ট ঢাকা আবাহনীর। অন্যদিকে সমান ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে মোহামেডানের সংগ্রহ ৭ পয়েন্ট।
১৩ জানুয়ারি, ২০২৪

এফএ কাপে স্বস্তির জয় ম্যানইউর
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে (ইপিএল) ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ও লিগ কাপ থেকেও ছিটকে গিয়েছে রেড ডেভিলসরা। এমনকি প্রিমিয়ার লিগের সবশেষ ম্যাচেও হারের স্বাদ পেয়েছে এরিক টেন হাগের শিষ্যরা। অবশেষে এফএ কাপের চতুর্থ রাউন্ডে জায়গা করে নিয়েছে ইংলিশ জায়ান্টরা। সোমবার ( ৮ জানুয়ারি) এফএ কাপের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে উইগ্যান অ্যাথলেটিক্সকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ম্যানইউ। রেড ডেভিলসদের হয়ে গোল দুটি করেন দুই পর্তুগিজ দিয়োগা দালোত ও ব্রুনো ফার্নান্দেজ।    প্রিমিয়ার লিগে ধুঁকতে থাকা ম্যানইউ এফএ কাপে স্বস্তির জয় তুলে নিয়েছে। উইগ্যানের মাঠে প্রথম থেকেই আক্রমণের ফোয়ার ছুটিয়েছে এরিক টেন হাগের দল। একের পর আক্রমণে প্রতিপক্ষের ডিফেন্স লাইন ব্যস্ত রাখেন রাশফোর্ডরা। স্বাগতিকদের গোলপোস্টে ৩৩টি শট নিয়েছিল ম্যানইউ। যার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল ১৪টি। ইংলিশ ফরোয়ার্ড রাশফোর্ড একাই ৮ বার শট নিয়ে লক্ষ্যে রেখেছিল ৪টি। এফএ কাপে তৃতীয় বিভাগের দল উইগ্যানের বিপক্ষে ম্যাচের ২২ মিনিটে লিড নেয় ম্যানইউ। মার্কাস রাশফোর্ডের অ্যাসিস্টে পর্তুগিজ ডিফেন্ডার দালোত সফরকারীদের এগিয়ে দেন। দ্বিতীয়ার্ধে ৭৪ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষার পর লিড দ্বিগুণ করে ম্যানইউ। এবারও গোলদাতা আরেক পর্তুগিজ মিডফিল্ডার ব্রুনো ফার্নান্দেজ।  উইগ্যানকে ২-০ গোলে হারিয়ে এফএ কাপের চতুর্থ রাউন্ডে পৌঁছেছে ম্যানইউ। এ জয়ে স্বাভাবিকভাবেই খুশি কোচ এরিক টেন হাগ। ম্যানইউ কোচ বলেন, ‘এফএ কাপে জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবার সুযোগ নেই, এটা নকআউট। আপনি কাজটা শেষ করতে চাইবেন। এটাই আমি ড্রেসিংরুমে বলেছি, কাজটা করতে পেরেছি।’
০৯ জানুয়ারি, ২০২৪

প্রশ্ন রেখে স্বস্তির জয়
সাগরিকার গ্যালারিতে অবশেষে একটা শব্দ শোনা গেল, ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’। প্রথম দুই ম্যাচে যা ছিল একদমই অচেনা; শোনা যেত শুধু—‘আফগানিস্তান, আফগানিস্তান’। গতকাল সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের জুটি থিতু হতেই মাঠ ছাড়েন আফগান সমর্থকরা। প্রথম দুই ম্যাচের গ্যালারির এক অংশজুড়ে রংবেরঙের আফগানি সাজে মেতেছিলেন তারা। প্রথম দুই ম্যাচের শেষ অবধি শ পাঁচেক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আফগানিকে স্টেডিয়ামে দেখা গেলেও গতকাল আগেভাগেই বাড়ি ফেরেন তারা। আগের দুই ম্যাচে বিপরীত দৃশ্য ছিল বাংলাদেশ সমর্থকদের। লিটনদের ব্যাটিং ব্যর্থতা দেখে দ্রুত মাঠ ছেড়েছিলেন তারা। দর্শকদের থাকা-চলে যাওয়াই বলে দেয় ম্যাচের ফল কী হয়েছে। তাই কাঙ্ক্ষিত জয়ের পর স্বস্তি ফেরা কথা সাকিব-লিটনদেরও। কিন্তু এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের আগে টিম ম্যানেজমেন্টের জন্য অনেক প্রশ্ন এখনো থেকে গেছে এ সিরিজে। গতকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড গড়ে হাসমতউল্লাহ শহিদীর দল। আজমতউল্লাহ ওমরজাইর ৫৬ রানে ইনিংসে স্কোর বোর্ডে ১২৬ রান তোলে তারা। সহজ লক্ষ্য ৭ উইকেট ও ২৬.৩ ওভার বাকি রেখে উতরে যায় স্বাগতিকরা। ৫৩ রানে অপরাজিত থেকে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লিটন। পুরস্কার বিতরণীতে জয়ের স্বস্তি প্রকাশ করে লিটন বলেছেন, টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে এ জয় সতীর্থদের আত্মবিশ্বাস ফেরাতে সাহায্য করবে। তারা দারুণ করেছে। দারুণ জয়ের উজ্জ্বল বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। একাদশে সুযোগ পেয়েই ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে আফগানদের টপঅর্ডার ধসিয়ে দেন তিনি। তাসকিন আহমেদের সঙ্গে তার প্রথম স্পেল এখন বাংলাদেশের ইতিহাস। ইনিংসের প্রথম ৬০ বলের ৫২টিতে কোনো রান নিতে পারেননি রহমানউল্লাহ গুরবাজ-ইব্রাহিম জাদরানরা; উইকেট বিলিয়েছেন ৪টি। সেই যে শুরু, তার শেষ টানলেন তাসকিন। তবে মাঝখানে রেকর্ড গড়েছেন সাকিব। ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মতো ১০ ওভার বোলিং করে ১৫ রানের কম দিয়ে উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন বাঁহাতি এ স্পিনার। শন পোলকের সঙ্গে সমানে সমান তিনি। আরও একটি রেকর্ড ভাগাভাগি করেছেন বাংলাদেশ অলরাউন্ডার। যৌথভাবে ওয়ানডে ইতিহাসের দ্বিতীয় সফলতম বাঁহাতি স্পিনার তিনি। ৩০৫ উইকেট নিয়ে স্পর্শ করলেন কিউই কিংবদন্তি স্পিনার ড্যানিয়েল ভেট্টোরিকে। তবে কিউই স্পিনারের চেয়ে ৪৮ ইনিংস কম লেগেছে বাংলাদেশ অলরাউন্ডারের। বোলিংয়ের ইতিকথা ভালো হলেও ব্যাটিংয়ে অস্বস্তি থেকে গেছে। প্রিমিয়ার লিগের সেরা ব্যাটার হওয়া মোহাম্মদ নাঈম ফিরেছেন শূন্য রানে। এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষার শেষ সিরিজ ছিল এটি। সে পরীক্ষার সাফল্য কতটুকু হলো, তা এখন টিম ম্যানেজমেন্টই ভালো বলতে পারে। কিন্তু ওপেনিং ও নাম্বার-৭-এ বাড়তি শঙ্কা থেকেই গেল। তামিম ইকবাল না থাকায় সিরিজের দুই ম্যাচে লিটনের সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন মোহাম্মদ নাঈম। প্রথম ম্যাচে ২১ বলে ৯ রান, দ্বিতীয়টিতে ৮ বলে শূন্য। সামনের দুই টুর্নামেন্টে ব্যাকআপ ওপেনারের ভাবনায় ছিলেন তিনি; সে পরীক্ষায় কতটা উতরে গেলেন, তা সময় বলে দেবে। আয়ারল্যান্ড সিরিজের মাঝপথে বাদ পড়েন আফিফ হোসেন ধ্রুব। প্রিমিয়ার লিগে খেলে নিজেকে প্রস্তুত করতে বার্তা দিয়েছিলেন প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে, দারুণ মৌসুমও কাটালেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে ছন্দপতন; ৪, ০ তার দুই ম্যাচের রান। এ দুই জায়গা নিয়ে এতদিন ধরে চলতে থাকা প্রশ্নের কোনো সমাধান খুঁজে পাবে কি টিম ম্যানেজমেন্ট! ওপেনিং ও সাত নম্বর পজিশন ছাড়াও শঙ্কা থেকে যাচ্ছে বাকিদের ছন্দপতনে। দেড় মাস পরই এশিয়া কাপ, নিজেদের কতটা ছন্দে ফেরাবেন নাজমুল হোসেন শান্ত বা আফিফরা, তা-ই দেখার অপেক্ষা। চোট কাটিয়ে ফেরা সাকিব হয়তো স্বস্তি পাবেন ৩৯ রানের শেষ ইনিংসে। আর বোলিংয়ের প্রস্তুতির দিক থেকে ভালোই সিরিজ ভাবতে পারেন সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামরা। কিন্তু নাঈম ও আফিফকে ঘিরে প্রশ্নটা থেকেই গেল…।
১২ জুলাই, ২০২৩

সাফ প্রস্তুতি / বাংলাদেশের স্বস্তির জয়
কম্বোডিয়ার মাটিতে স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে জয়টা বাংলাদেশের জন্য স্বস্তির; যাকে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শুরুর আগে জেগে ওঠার টনিক হিসেবে দেখা হচ্ছে। মজিবুর রহমান জনির গোলে ১-০ ব্যবধানে পাওয়া জয়ের ম্যাচ দলের ফাকফোঁকরগুলোও কিন্তু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল! ডিপ-ডিফেন্ডিংয়ে বারবার খোলসবন্দি হয়ে যাচ্ছিল দল। একাধিকবার ডিফেন্ডাররা তালগোল পাকিয়েছেন, কম্বোডিয়া সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে ম্যাচে ফিরতে পারেনি। আক্রমণ প্রতিহত করে কম্বোডিয়ার গোলমুখে হানা দেওয়ার মিশনেও বাংলাদেশ ছিল সমন্বয়হীন। ডেড-বল ধরে লম্বা পাস বাড়ালেও প্রতিপক্ষের গোলমুখে বল ধরার মতো কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রতিপক্ষের আক্রমণ রুখতে বারবার বল প্রয়োগ করে খেলার কৌশল নিচ্ছিলেন ফুটবলাররা। কুফল হিসেবে একাধিক হলুদ কার্ড দেখতে হয়েছে, অতিরিক্ত সময়ে মার্চিং অর্ডার পান ডিফেন্ডার তারিক কাজী। ম্যাচের যা হাল, তাতে শক্তি-সামর্থ্যে কম্বোডিয়ার চেয়ে এগিয়ে থাকা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে প্রতিপক্ষ দলগুলোর বিপক্ষে বাংলাদেশ কী করে সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে থাকছে! ম্যাচে রক্ষণে অতিরিক্ত সুরক্ষার জন্য এদিন উইঙ্গার ফয়সাল আহমেদ ফাহিমকে খুব একটা ওপরে উঠতে দেখা যায়নি। আবাহনীর এ ফরোয়ার্ড আক্রমণে খুব বেশি ভূমিকা রাখতে না পারলেও কাজের কাজটি ঠিকই করেছেন। ২৪ মিনিটে তার লম্বা করে বাড়ানো বলকে দারুণ ভলিতে জালে পাঠিয়ে ম্যাচের ভাগ্য লিখে দিয়েছেন মজিবর রহমান জনি (১-০)। লিড নেওয়ার পর ৪১ মিনিটে কম্বোডিয়া দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিল। চেনপলিনের ক্ষিপ্রগতির শট আনিসুর রহমান জিকো কোনোক্রমে ফিরিয়েছেন। ৫৬ মিনিটে কম্বোডিয়ার আক্রমণে বাংলাদেশ রক্ষণ ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল; আনিসুর রহমান জিকো পোস্ট ছেড়ে এগিয়ে এসে হেড বল ক্লিয়ার করেছেন। ৬৮ মিনিটে রক্ষণের সমন্বহীনতায় লিম পিসোথ সমতার জোড়ালো সম্ভাবনা জাগিয়েও হেডে বল বাইরে পাঠান। বিরতির পর হাভিয়ের ক্যারবেরা মাঠে পাঠান শেখ মোরসালিন ও রফিকুল ইসলামকে। জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষিক্ত দুই তরুণ আহামরি কিছু করতে না পারলেও প্রতিপক্ষ রক্ষণে তাদের দৌড়ঝাঁপ ছিল ইতিবাচক। বদলি হিসেবে মাঠে আসার পর মোরসালিন ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম দূরপাল্লার শটে চেষ্টা চালিয়ে ছিলেন। অধিকাংশ সময় রক্ষণ জমাট রেখে খেলার চেষ্টা করা বাংলাদেশ ম্যাচের বিভিন্ন সময় সমন্বিত আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। তরুণ রফিকুল ইসলাম-মোরসালিনরা মাঠে আসার পর সে প্রচেষ্টাগুলোকে মসৃণ মনে হয়েছে। প্রিমিয়ার লিগে বসুন্ধরা কিংসের হয়ে ১০ ম্যাচে মাত্র ৯০ মিনিট খেলার সুযোগ পাওয়া সুমন রেজাকে এদিন ৮২ মিনিটে একমাত্র ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলিয়েছেন ক্যাবরেরা। কিন্তু মাঝমাঠের সঙ্গে আক্রমণের সঠিক সংযোগ না থাকায় এ ফরোয়ার্ড ম্যাচের অধিকাংশ সময় বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হয়ে থাকলেন! তারপরও জয়টা স্বস্তির হয়ে থাকল। ম্যাচের পর উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের ক্যাবরেরা বলেছেন, ‘আমি মনে করি দল যা করেছে তাতে সবাই গর্ববোধ করবেন। আমাদের দলটা তরুণ। কম্বোডিয়া যে ধরনের ফুটবল খেলেছে, তাতে কাজটা কঠিন ছিল।’
১৬ জুন, ২০২৩
X