আফগানিস্তানের সুপার এইট প্রায় নিশ্চিত
যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে পাকিস্তানের হারকে নিশ্চিতভাবেই অঘটন বলা যায়। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আফগানিস্তানের বিশাল জয়কে কি অঘটন বলবেন? শক্তির বিচারে রশিদ খানের দল পিছিয়ে। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের চেয়ে এতটা পিছিয়ে নেই, যাতে অঘটন বলা যায়। কারণ, আফগানিস্তান দলের বেশকিছু ক্রিকেটার সারা দুনিয়ার সেরা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলে বেড়ান। শুধু খেলেন না, দাপটের সঙ্গে পারফর্মও করেন। তাদের সমন্বয়ে গড়া আফগানিস্তান নিজেদের দিনে কতটা ভয়ংকর হতে পারে, গায়ানার প্রভিন্স স্টেডিয়ামে শুক্রবার রাতে টের পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। ৮৪ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে তারা। আগে ব্যাটিং করে রশিদরা ৬ উইকেটে ১৫৯ রান তুলেছিল। জবাবে রশিদ খানের ঘূর্ণিতে ১৫.২ ওভারে ৭৫ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে উগান্ডার বিপক্ষে ১২৫ রানের বিশাল জয় পেয়েছিল আফগানিস্তান। এরপর নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সুপার এইট প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে। টানা দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে সি গ্রুপের শীর্ষে তারা। দুর্বল পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে একটা ম্যাচ এখনো বাকি। সেই ম্যাচে জিতলে সুপার এইট নিশ্চিত। এরপর তারা খেলবে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। সেখানে হারলেও ক্ষতি নেই। বর্তমানে আফগানের নেট রানরেট ৫.২২৫। শনিবার বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৫টা থেকে শুরু হয়েছিল আফগানিস্তান-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ। শুরুটা দারুণ করেছিল রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। ওপেনিংয়ে ১০৩ রানের জুটি গড়েন তারা। যদিও রান তোলা সহজ ছিল না। শেষ পর্যন্ত ১৫৯ রানে থামে আফগানরা। জবাবে প্রথম বলে উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। এরপর ৭৫ রানে অলআউট হয়ে থেমেছে তারা। ফারুকি ১৭ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট নেন। ৪ ওভারে ১৭ রান দিয়ে রশিদও নিয়েছেন ৪ উইকেট। নিউজিল্যান্ডের হয়ে গ্লেন ফিলিপস আর ম্যাট হেনরি ছাড়া কেউ দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি। দারুণ পারফরম্যান্সের পর রশিদ বলেছেন, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটা আমাদের অন্যতম সেরা জয়। উইকেটটা সহজ ছিল না। প্রথম ১০ ওভারে উইকেট হারাইনি আমরা। এমন একটা দলকে নেতৃত্ব দেওয়া গর্বের ব্যাপার। গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান দায়িত্ব নিয়ে খেলেছে। আর কৃতিত্ব দিতে হবে আমাদের বোলিং বিভাগকেও। যে কোনো দলের পক্ষেই আমাদের বিপক্ষে ১৬০ রান তোলা কঠিন হবে।’ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৬ বলে ৮০ রান করেন গুরবাজ। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘যে কোনো দলকে হারানোর ক্ষমতা আছে আমাদের। এটা আমরা বিশ্বাস করি। প্রথম ইনিংসে এই উইকেটে ব্যাট করা সহজ ছিল না। কিন্তু পানি পানের বিরতির সময় দলের পক্ষ থেকে একটা বার্তা পাঠানো হয়। আমার শুরুটা ভালো হয়নি। ইব্রাহিম বলছিল মাথা ঠান্ডা রাখতে। ক্রিকেটীয় শট খেলতে। মনে হয়েছিল ১৩০-১৪০ রান তুলতে পারলেই জেতা সম্ভব। বোলারদেরও কৃতিত্ব দিতে হবে। নিউজিল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে জয় সত্যিই দারুণ ব্যাপার।’ আফগানিস্তানের বিপক্ষে হারের পর কিউই অধিনায়ক উইলিয়ামসন বলেন, ‘আফগান দলকে শুভেচ্ছা। সব বিভাগেই আমাদের হারিয়ে দিয়েছে ওরা। এই পিচে ১৫৯ রান করা সহজ ছিল না। আমরা ভালো খেলতে পারিনি। আমাদের দ্রুত পরের ম্যাচের আগে গুছিয়ে নিতে হবে। আমরা জুটি গড়তে পারিনি। ওরা খুব ভালো খেলেছে। তবে এই হার নিয়ে পড়ে থাকতে চাই না।’
০৯ জুন, ২০২৪

ম্যাচ প্রিভিউ / বাঘ-সিংহের লড়াইয়ে ‘লুকিয়ে’ সুপার এইট
বাংলাদেশ সময় শনিবার (৮ জুন) শুরু হবে টাইগারদের বিশ্বকাপ মিশন। প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। যারা মানসিকভাবে কিছু বিপর্যস্ত। কারণ প্রস্ততি ম্যাচে লঙ্কানরা হেরে যায় নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাত্র ৭৭ রানে অলআউট হওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু করে বিশ্বকাপ মিশন।  এমন একটা দলের বিপক্ষে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। অবশ্য মনোবলও দূর্বল। বিশ্বকাপের আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরে যায় বাংলাদেশ দল। এরপর প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতের কাছে বিধ্বস্ত হয় টাইগাররা।  মানসিকতার এক বিন্দুতে দাঁড়িয়ে দুই দলের প্রাথমিক সুপার এইচে জায়গা করে নেওয়া। পাঁচ দলের গ্রুপে খেলতে হবে চার ম্যাচ। এতে জয় পেতে হবে অন্তত তিনটি ম্যাচে। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু করা লঙ্কানদের জন্য এ ম্যাচে জয় পাওয়া বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ টানা ম্যাচে হারলে গ্রুপ পর্ব থেকে অনেকটা বিদায় নিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের।  বর্তমান অবস্থা কিছুটা নাজুক হলেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অন্যতম সফল দল লঙ্কান। একবার চ্যাম্পিয়ন ও দুইবার রানার্স আপ হওয়ার রেকর্ড রয়েছে দলটির। বিশ্ব আসরে ঠিকে থাকতে মরিয়া হয়েই টাইগারদের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে লঙ্কান সিংহরা।  ডালাসে বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোর ৬টায় মুখোমুখি হবে দুই দল। বিশ্ব ক্রিকেটে দুই দলের লড়াইটা এখন বেশ ঝাঁজালো। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের মানেই যেন বিতর্ক, উত্তেজনা আর রোমানঞ্চ।  নিদাহাস ট্রফিতে ‘নাগিন ড্যান্স, ওয়ানডে বিশ্বকাপে ‘টাইমড আউট’ বিতর্ক। যা বারবার ফিরে আসে চলতি বছর মার্চে হওয়া দুদলের সিরিজে। এ ম্যাচেও যে এমন বিতর্ক মাথা চাড়া দেবে না, তার নিশ্চয়তা নেই।  সবকিছু মিলিয়ে দুদলের এই লড়াই ঘিরে আগ্রহ তৈরি করেছে সমর্থকদের মাঝে। এই লড়াইয়ে লুকিয়ে রয়েছে দুদলের সুপার এইটে খেলার স্বপ্ন। ২০১৪ সালে শিরোপা জয়ের পর প্রথম রাউন্ডের গণ্ডি পেরুতে পারেনি লঙ্কানরা। আর ২০০৭ সালে বিশ্বকাপের প্রথম আসরে প্রথম ও শেষবারের মতো দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলে বাংলাদেশ।  বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার গ্রুপকে বলা হচ্ছে গ্রুপ অব ডেথ বা মৃত্যুকৃপ। প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়ায় বেশ চাপে রয়েছে লঙ্কানরা। এ ম্যাচের হার-জিতে রয়েছে সুপার এইটে খেলার সম্ভাবনা। এ জন্য দুদলই এ ম্যাচে জয় পেতে মরিয়া। 
০৭ জুন, ২০২৪
X