মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১
ইসরায়েলি গায়িকাকে ঘিরে বিক্ষোভে উত্তাল সুইডেন
এডেন গোলান নামে এক ইসরায়েলি গায়িকাকে গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়ায় বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে সুইডেন। বৃহস্পতিবার হাজার হাজার মানুষ এর প্রতিবাদে বিক্ষোভে নামে। ‘ইউরোভিশন সং কনটেস্ট’ শীর্ষক ওই প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় সেমিফাইনালের আগে বৃহস্পতিবার ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ দেশটির মালমো শহরের রাস্তায় নামে। এ প্রতিবাদে অংশ নেন বিশ্বব্যাপী পরিচিত পরিবেশ আন্দোলনকারী গ্রেটা থুনবার্গ। বিক্ষোভকারীদের দাবি, গণহত্যায় অভিযুক্ত কোনো দেশের প্রতিযোগী এ ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে না। খবর বিবিসির। পরিবেশ আন্দোলনকারী গ্রেটা থুনবার্গ বলেন, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া আমাদের নৈতিক দায়বদ্ধতা। ইউরোভিশন সং কনটেস্ট চলাকালে যদি হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদ জানায়, তাহলে তা আয়োজকদের কাছে একটি শক্তিশালী বার্তা দেবে ও পরিবর্তন আনতে বাধ্য করবে। এক বিক্ষোভকারী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, তিনি চান ইউরোভিশন সংগীত প্রতিযোগিতায় ইসরায়েলকে অযোগ্য ঘোষণা করা হোক। যেমনটি রাশিয়াকে করা হয়েছিল ইউক্রেনে পুরোদস্তুর রুশ আগ্রাসন শুরুর পর। সুইডিশ পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই প্রতিবাদকারীরা ফিলিস্তিনের পতাকা ও কেফিয়াহ নিয়ে রাস্তায় জড়ো হতে থাকেন। সে সময় তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ মিছিল করে ও ফিলিস্তিনি পতাকার রঙের স্মোক ফ্লেম জ্বালায়। প্রতিবাদকারীরা জানিয়েছেন, তারা শনিবার (১১ মে) ফাইনালের আগে আবারও মিছিল করবেন। জানা গেছে, বুধবার রিহার্সাল করার সময় থেকেই দুয়োধ্বনি শুনে আসছিলেন গোলান। তবে তার বক্তব্য ছিল, তিনি তার দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে গর্বিত ও কোনো কিছুই তাকে থামাতে পারবে না। বৃহস্পতিবার বিক্ষোভের পর ‘হারিকেন’ নামক একটি গান গেয়ে প্রতিযোগিতার ফাইনালে পৌঁছেন গোলান। জার্মান বার্তাসংস্থা ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, গোলানকে তার গানের নামও বদল করতে হয়েছে। প্রথমে তার গানের নাম ছিল ‘অক্টোবর রেইন’। গত বছর ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে হামাসের চালানো হামলার সঙ্গে মিল থাকায় গোলানকে তার গানের নাম বদল করতে বলা হয়। গানের এ প্রতিযোগিতার উদ্যোক্তা হলো ইউরোপীয় ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন (ইবিইউ)। ইবিইউ জানিয়েছে, ইউরোভিশন হলো অরাজনৈতিক সংগঠন। কিন্তু সমালোচকরা বলেছেন, ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধের পর রাশিয়া ও বেলারুশের প্রতিযোগীদের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। এ বছরের প্রতিযোগিতায় ফিলিস্তিনি পতাকাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাদের প্রশ্ন, রাশিয়া ও বেলারুশ যদি নিষিদ্ধ হতে পারে, তাহলে ইসরায়েল কেন নিষিদ্ধ হতে পারবে না। এদিকে, বৃহস্পতিবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা একটি ভিডিও বার্তায় গোলানকে শুভকামনা জানান ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দাবি, সুইডেনে সফলভাবে গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার মাধ্যমে ইসরায়েলিদের মন জয় করে নিয়েছেন এ গায়িকা।
১১ মে, ২০২৪

অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটোতে সুইডেন
অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দিয়েছে সুইডেন। এর মাধ্যমে কয়েক দশকের নিরপেক্ষতার অবসান ঘটাল দেশটি। মূলত ইউক্রেন আক্রমণের পর ইউরোপে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে দেশটি তার দীর্ঘদিনের নীতি থেকে বেরিয়ে ন্যাটোর সদস্য হলো। খবর বিবিসির। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনে যোগদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর সুইডেন আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটোর ৩২তম সদস্য হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠকের পর ওয়াশিংটন ডিসিতে দেওয়া এক বিবৃতিতে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন বলেন, ‘ন্যাটো সদস্য হিসেবে সুইডেনের পথপ্রদর্শক হবে ঐক্য ও সংহতি। আমরা আমাদের মিত্রদের সঙ্গে বোঝা, দায়িত্ব এবং ঝুঁকি ভাগ করে নেব।’ এদিকে ন্যাটোতে সুইডেনের যোগদানের নথি নেওয়ার সময় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘যারা ধৈর্য ধরে তারা ভালো কিছুই পায়। এটি সুইডেনের জন্য, আমাদের জোটের জন্য এবং ট্রান্সআটলান্টিক সম্পর্কের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’ এর আগে বৃহস্পতিবার স্টকহোমে এক সংবাদ সম্মেলনে সুইডেনের কর্মসংস্থান ও একীভূতবিষয়ক মন্ত্রী জোহান পেহরসন তার দেশের ন্যাটোতে যোগদানকে সুইডেনের জন্য নতুন নিরাপত্তা নীতির যুগ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে ২০ বছর ধরে এ ধরনের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের ওপর পূর্ণ-মাত্রার আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। আর এটিই সুইডেন এবং তার প্রতিবেশী ফিনল্যান্ডকে ন্যাটোতে যোগদানের জন্য আবেদন করতে উদ্বুদ্ধ করে। এ দুটি দেশের রাশিয়ার সঙ্গে ১ হাজার ৩৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। তবে আবেদনের পর প্রাথমিকভাবে কুর্দি ইস্যুতে তুরস্ক সুইডেনের ন্যাটো সদস্য পদ প্রাপ্তিতে বাধা দেয়। পরবর্তী সময়ে এ পথে মূল বাধা হয়ে দাঁড়ায় ‘রাশিয়ার মিত্র হিসেবে পরিচিত হাঙ্গেরি। তবে গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে ন্যাটোতে সুইডেনের যোগদানের বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় হাঙ্গেরি। এ অনুমোদনের ফলে সুইডেনের ন্যাটোর সদস্য পদ পেতে সব বাধা কেটে যায়। হাঙ্গেরির এ অনুমোদনের প্রতিক্রিয়ায় সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, সুইডেন গত ২০০ বছরের সামরিক নিরপেক্ষতাকে পেছনে ফেলতে যাচ্ছে। আমরা যা আছি এবং যা কিছুতে বিশ্বাস করি সেগুলোকে ভালোভাবে রক্ষা করার জন্য আমরা ন্যাটোতে যোগ দিচ্ছি। উল্লেখ্য, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ২০২২ সালে ন্যাটোর সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করে। মূলত রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর দেশ দুটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। গত বছরের এপ্রিলে ফিনল্যান্ড ন্যাটোয় যোগ দেয়। কিন্তু তুরস্ক ও হাঙ্গেরি অনুমোদন দিতে দেরি করায় সুইডেন এতদিন ন্যাটোর সদস্য হতে পারেনি। ন্যাটোর নিয়ম হলো, সব সদস্য দেশ অনুমোদন না দিলে নতুন কোনো দেশ এই জোটের সদস্য হতে পারে না। তবে সময়ের পরিক্রমায় প্রথমে তুরস্ক ও পরে হাঙ্গেরি ন্যাটোতে সুইডেনের যোগদানের বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন দিলে আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন নেতৃত্বাধীন এই সামরিক জোটের ৩২তম সদস্য হলো দেশটি।
০৯ মার্চ, ২০২৪

আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটোতে যোগ দিল সুইডেন
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছে সুইডেন। বৃহস্পতিবার (০৭ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে এক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদানের প্রক্রিয়া শেষ করেছে দেশটি। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। দেশটির এ হামলার পরে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করে সুইডেন। সবশেষ এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ন্যাটোর ৩২তম সদস্য দেশ হয়েছে সুইডেন। এর আগে গত বছর ৩১তম দেশ হিসেবে জোটে যোগ দেয় ফিনল্যান্ড।   পশ্চিমা এ জোটে যোগ দেওয়ার পর সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন বলেন, সুইডেনের জন্য ঐক্য ও সংহতি আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে।  মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, আমাদের প্রতিরক্ষা জোট এখন যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি শক্রিশালী ও বড়। যারা অপেক্ষা করে তারা ভালো কিছু পায়।  ন্যাটোর প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বলেন, সুইডেন তাদের সশস্ত্র বাহিনী আর প্রথম শ্রেণির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে জোটে যোগ দিয়েছে। ফলে এ জোট আরও শক্তিশালী ও নিরাপদ হয়েছে।  সুইডেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিল দুই দেশ। এর মধ্যে তুরস্ক জানায়, কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন করে তারা। তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে এ আপত্তি তুলে নেয় তুরস্ক। এ ছাড়া হাঙ্গেরি সুইডেনের সদস্যপদের জন্য আপত্তি জানায়। তারাও সম্প্রতি এ আপত্তি তুলে নেয়। 
০৮ মার্চ, ২০২৪

ক্যাশলেস সোসাইটি বিনির্মাণে বাংলাদেশ সুইডেন কাজ করবে
ক্যাশলেস সোসাইটি বিনির্মাণে বাংলাদেশ ও সুইডেন একত্রে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। পাশাপাশি প্রযুক্তি স্থানান্তর, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, রপ্তানি আয় বাড়ানো, কর্মসংস্থান তৈরি এবং ফাইভজি প্রযুক্তি নিয়েও সুইডেন বাংলাদেশের পাশে থাকবে। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্সান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে গণমাধ্যমকে এসব কথা জানান প্রতিমন্ত্রী। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সাক্ষাৎকালে তারা দ্বিপক্ষীয় স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিশেষ করে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেন। প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, অন্যান্য খাতের পাশাপাশি ৩০ বছর ধরে সুইডেনের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এরিকসন দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। দুই দেশের কল্যাণে এই বন্ধুত্ব আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। আগামী জুলাই মাসে অনুষ্ঠিতব্য স্টার্টআপ সামিটে এরিকসন, স্পটিফাই, ব্লুটুথ, ভলভোর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নেবে। অ্যালেক্সান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে বলেন, আইটি ও টেলিকমে উদ্ভাবন এবং টেকসই এর ক্ষেত্রে সুইডেনের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান এগিয়ে রয়েছে। তাদের মধ্যে এরিকসন স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নেও সঙ্গী থাকবে। বৈঠকে বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ গোলাম সরওয়ার ই কায়নাত, স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ ও হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জি এস এম জাফরউল্লাহসহ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ছিলেন। পলকের সঙ্গে সৌদি রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ: তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত এসসা ইউসেফ আলদুহাইলান। গতকাল সচিবালয়ে প্রতিমন্ত্রীর কার্যালয়ে উপয়পক্ষের এই সাক্ষাৎ পর্ব আয়োজিত হয়। সাক্ষাৎকালে তারা পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় বিশেষ করে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেন।
০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

রহমান মৃধা / সুদ, মুনাফা, দুর্নীতি : প্রসঙ্গ সুইডেন ও বাংলাদেশ
বিশ বছর আগের কথা। আমার বাবা-মা তখন সুইডেনে। তারা তাদের জীবনের শেষ সময়ের বেশিরভাগ সময় সুইডেনে বসবাস করেছেন। কোনো এক সময়ে ছুটিতে বাবা-মাকে নিয়ে লস এঞ্জেলসে ছোট বোনের বাড়িতে যাবার পরিকল্পনা করি। হঠাৎ মার শরীর খারাপ হওয়ার কারণে তিনি সফর বাতিল করলেন, মা সুইডেনে থেকে গেলেন। আমি শুধু বাবাকে নিয়ে আমেরিকা বেড়াতে গেলাম। চলছে ঘোরাঘুরি আমাদের, একদিন বাবা বললেন, ‘বাবা এখানে কি বাংলাদেশের তৈরি স্বর্ণের গয়না পাওয়া যায়?’ আমি বললাম, হ্যাঁ যায়, তবে আধা ঘণ্টার মতো জার্নি হবে গাড়িতে, জায়গার নাম আর্টিশিয়া, লস এঞ্জেলস রেঞ্জের মধ্যে। বাবা বললেন, সেখানে যেতে হবে কিছু স্বর্ণের গয়না কিনতে। আমি বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম, কার জন্য? বাবা উত্তরে বললেন, তোমার মার জন্য, আমি তাঁর ১২ ভরি স্বর্ণ তোমাদের লেখাপড়ার কাজে বিক্রি করেছি,  এখন সেটা ফেরত দিতে হবে। আমি বললাম, কেন মা কি বলেছেন সেটা? বাবা বললেন, হ্যাঁ প্রায়ই বলেন। মাকে ফোন করলাম। এ কথা, সে কথা বলতে জিজ্ঞেস করলাম, বাবার কাছে আমাদের জন্য ব্যয় করা তোমার সেই ১২ ভরি স্বর্ণ নাকি তুমি ফেরত চেয়েছো? মা সঙ্গে সঙ্গে বললেন, ‘আমার বাবা-মা আমার বিয়ের সময় সেগুলো দিয়েছিলেন, আমি সেগুলো এখন ফেরত চাই। কারণ আমি এখন যাকে খুশি তাকে দিব।’ আমি নাছোড় বান্দা নতুন প্রশ্ন করতে শুরু করলাম। বললাম, বাবা এত টাকা কোথায় পাবেন এখন? মা মুহূর্তের মধ্যে বললেন, ‘কোথায় পাবে মানে? তোমরা দিবা।’ এতক্ষণে বুঝলাম, মার ইচ্ছে তাঁর স্বর্ণ দরকারে কাজে লেগেছে, এখন তাঁর সকল সন্তানেরা নিজ নিজ পায়ে দাঁড়িয়েছে বিধায় তাঁর স্বর্ণ তিনি ফেরত চান। আমি তর্কাতর্কি না করে চলে গেলাম স্বর্ণের দোকানে। তবে গাড়িতে যেতে পথে ভেবেছিলাম বাবা-মার এখনো ৯ ছেলে-মেয়ে জীবিত, সবাই প্রতিষ্ঠিত অথচ কেউ বিষয়টাতে সাড়া দিল না! যাইহোক, বাবা তাঁর পছন্দমতো কয়েক ভরি স্বর্ণের গয়না কিনলেন, ছোট বোন জলির তখন সবে বিয়ে হয়েছে, তাকে বেশকিছু গয়না দিলেন মার তরফ থেকে। বুঝলাম মা এলে এ কাজটি তিনিই করতেন, যেহেতু আসেননি অসুস্থতার কারণে, সেক্ষেত্রে বাবাকেই বলে দিয়েছেন কাজটি করতে। বাকি স্বর্ণ সুইডেন থেকে কিনে দিয়েছি যা তিনি তাঁর অন্য দুই মেয়েসহ ছেলের বউদের দিয়েছেন। আমার বউয়ের বাবার বাড়ি স্পেনে, মার বাড়ি সুইডেনে। সে তার নানি এবং দাদির থেকে বেশ স্বর্ণ পেয়েছে। পুরোনো আমলের স্বর্ণ, তারপর মোটা, যা এ যুগের ছেলে-মেয়েরা ব্যবহার করে না। গতকাল ১৬ গ্রাম (১.৩৭ ভরি) ওজনের একটি গলার হার নিয়ে আমরা স্টকহোমের একটি সেকেন্ড হ্যান্ড স্বর্ণের দোকানে গিয়েছিলাম। এখানে স্বর্ণ বা ঘড়ি বিক্রি বা বন্ধক রাখার জন্য একটি বিশেষ দোকান আছে যাকে সুইডিশ ভাষায় বলা হয় পান্ট ব্যাংক (pantbank)। আমার সঙ্গে ছিল আমার বউ মারিয়া এবং বড় ভাই প্রফেসর ড. মান্নান মৃধা। আমি দোকানে প্রবেশ করে জিজ্ঞেস করলাম স্বর্ণ বিক্রি করব, কত দিবা প্রতি গ্রাম? দোকান্দার জিজ্ঞেস করল কত ক্যারেট? বললাম ১৮ ক্যারেট। দোকান্দার বলল, ৫ হাজার ক্রোনার। আমি বললাম তিনগুণ কম বর্তমান বাজারের তুলনায়? দোকানদার বলল, না বেচতে চাইলে বন্ধক রাখতে পার, মাসে ১০% সুদ হারে। এতক্ষণে বড় ভাই চুপচাপ সব কথা শুনছেন, হঠাৎ দোকানদারকে ধরে বসলেন, মাসে ১০%? দোকানদার অল্প বয়েসের একটি মেয়ে একটু ঘাবড়ে গিয়ে বলল, হ্যাঁ। বড় ভাই বললেন, ‘আর ইউ কিডিং?’ এমন সময় দোকানের মালিক এসে হাজির। তিনি বললেন, না আমরা মাসের হিসেবে সুদ নিই। বড় ভাই বললেন, সুদের হিসেব সব জায়গায় বছরে হয়, তোমরা মাসে নাও? কবে থেকে এমনটি শুরু করেছো? উত্তরে দোকানের মালিক বলল, দুই ইহুদি বন্ধুর ডিম বণ্টনের গল্প জানো? আমি বললাম, হ্যাঁ (নয়টা ডিম দুই বন্ধু ‘ক’ এবং ‘খ’ এর  মাঝে চোখের সামনে ভাগ করার পরও একজন পেল ছয়টা অন্যজন পেল তিনটা। প্রথমে দুইজনই একটা একটা করে ডিম নিল, পরে বন্ধু ‘ক‘ তার বন্ধু ‘খ’-কে আরেকটা ডিম দিয়ে জিজ্ঞেস করল, তুমি কয়টা পেয়েছো? উত্তরে বন্ধু ‘খ’ বলল দুইটা, এখন বন্ধু ‘ক’ বলল তাহলে আমিও এখন দুইটা নিলাম। এবার বন্ধু ‘ক’ আরও একটি ডিম বন্ধু ‘খ’-কে দিয়ে জিজ্ঞেস করল তুমি এখন কয়টা ডিম পেয়েছো? বন্ধু ‘খ’ উত্তরে বলল তিনটা। বন্ধ ‘ক’ তখন  বলল তাহলে আমি এখন বাকি তিনটা নিলাম, ব্যাস, হয়ে গেল ডিম বণ্টন। বন্ধু ‘ক’ পেল ছয়টা আর বন্ধ ‘খ’ পেল তিনটা )।  বলো তো সে কোন সময়ের কথা? আমি বললাম হবে ইসলাম ধর্মের আগের সময়। নারীটি তখন হেসে দিয়ে বলল, তার মানে বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা না। এদিকে বড় ভাই রেগেমেগে সুইডিশ ছেড়ে ইংরেজিতে কথা বলা শুরু করেছেন। যেমন বললেন, এই সুদের কারণে ব্রিটিশ তাড়িয়েছি বাংলাদেশ থেকে। অথচ সেই সুদ এখনো চলছে? নারী তৎক্ষণাৎ বলে বসল, ‘তোমাদের দেশে তো সুদ দেওয়া নেওয়া আরও জোরালো হয়েছে এবং নোবেল পুরস্কারও পেয়েছে, ব্রিটিশ তাড়িয়ে তেমন লাভ হইছে কি?’ বড় ভাই হঠাৎ একটু থমকে গেলেন! পরে বল্লেন, নোবেল তো তোমরা দিয়েছো মাইক্রোক্রেডিটের ওপর, সেটা তো অন্য জিনিস। ভদ্র নারী বলল, সুদের অংক এক এক জায়গায় একেক রকম। এতক্ষণের আলোচনায় স্বর্ণ বিক্রি হলো না তবে বড় ভাই সুইডিশ রয়েল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বিশ্ব্যবিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রফেসরসহ পদার্থবিজ্ঞান এবং অংকেরও শিক্ষক, তারপর নোবেল বিজয়ী প্রফেসরের বেশ কাছের বন্ধু। তিনি কেন ক্ষেপে গেলেন মাসে সুদের হার ১০ শতাংশ শোনার পর! আমি দোকানদারের সব কথা শোনার পর বাংলাদেশে থাকাকালীন ছোটবেলার স্মৃতিচারণ করতে করতে বাড়ির পথে রওনা দিলাম। চলতি পথে মনে পড়ে গেল কত কথা। যারা চড়া সুদ নিয়ে বা বন্দক রেখে গরিবের সম্পদ আত্মসাৎ করত তাদের আমরা সুদখোর বলতাম। সুদখোরদের নাম করে গরুর গলায় গ্রামে মানুষ তাবিজ ঝুলিয়ে দিত, তাতে করে গরুর গায়ে পোকা থাকলে সেগুলো পালিয়ে যেত ইত্যাদি। জানিনে এখন এসব প্রথা গ্রামে চলমান আছে কিনা! যাইহোক সুদ এবং মুনাফা সম্পর্কে ধর্মীয় মতামত একটু ঘেটে দেখলাম, যার বিশ্লেষণ অনেকটা এরকম : সুদ গরিবের প্রতি জুলুম। আল্লাহ জুলুম হারাম করেছেন। আর মুনাফা মহান আল্লাহর দয়া ও অনুদান। সুদ রোগাক্রান্ত ও অভাবী ব্যক্তিকে বিপদে ফেলার কৌশল। আর মুনাফা হলো মানুষের চাহিদা পূরণের ফল। সুদে মানসিক ক্ষতি আছে, যা মুনাফায় নেই। মুনাফার সন্ধান করা ইবাদত। তাতে আল্লাহর ভয় থাকে। এর বিপরীতে সুদ আল্লাহর নাফরমানি ও প্রবৃত্তির অনুসরণ। মুনাফায় ঈমান বাড়ে। অন্তরে রহমত আসে। আর সুদের কারণে অন্তর পাষাণ হয়, অহংকার ও কৃপণতা আসে। মুনাফার কারণে মানুষের মধ্যে মিল-মহব্বত জন্মে এবং হিংসা দূর হয়। আর সুদ সমাজকে বিচ্ছিন্ন করে এবং হিংসার উদ্রেক ঘটায়। সুদ মানুষের সম্পদ বিনিময়বিহীন গ্রহণ করার পথ। আর মুনাফা এর বিপরীত। সুদ চূড়ান্তভাবে হারাম। আর মুনাফা চূড়ান্তভাবে হালাল। সুদ খাওয়া আল্লাহর নিয়ামতের অকৃতজ্ঞতা। আর মুনাফা আল্লাহর দয়া তালাশ করা। সুদে লভ্যাংশ নির্দিষ্ট। মুনাফায় অনির্দিষ্ট। তাই মুনাফা ঝুঁকি বহনের পুরস্কার। সুদে ক্ষতির আশঙ্কা নেই। আর মুনাফায় ঝুঁকি থাকে। সুদের সম্পর্ক ঋণ ও সময়ের সঙ্গে। আর মুনাফার সম্পর্ক বেচাকেনার সঙ্গে। সুদ অনেক সময় চক্রবৃদ্ধি আকারে হয়। মুনাফা এর বিপরীত। সুদ ঋণের চুক্তি। আর মুনাফা আর্থিক সম্পদের বিনিময়। সুদপ্রথা সামাজিক বন্ধন ছিন্ন করে। আর মুনাফা তা বৃদ্ধি করে। সুদ মানুষকে দুর্ভাগা বানায়। আর মুনাফা সৌভাগ্যবান বানায়। উল্লেখ্য, সুদের মাধ্যমে মূলধন বৃদ্ধি পায়, আবার ব্যবসায়ের মাধ্যমেও তা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু ইসলামে সুদের অর্জিত বৃদ্ধিকে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে আর ব্যবসার মাধ্যমে বৃদ্ধিকে হালাল করা হয়েছে। কেননা ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীকে মূলধন ও শ্রম বিনিয়োগ করতে হয়েছে এবং ঝুঁকি গ্রহণ করতে হয়েছে। মূলধন ও শ্রম বিনিয়োগ এবং ঝুঁকি গ্রহণের মাধ্যমে মূলধনের যে বৃদ্ধি তা-ই মুনাফা। এখানে আরও উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কেউ যদি কোনো ব্যক্তিকে ১০ টাকা ঋণ দেয় এ শর্তে যে এক দিন পরে তাকে ১৫ টাকা দিতে হবে। এখানে অতিরিক্ত ৫ টাকা সুদ, যা ইসলামী শরিয়তে হারাম। বিপরীত পক্ষে, কেউ যদি হাট থেকে ১০ টাকা দিয়ে এক কেজি বেগুন কিনে অন্য বাজারে গিয়ে ১৫ টাকায় বিক্রি করে, তাহলে যে ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে, তাকে সুদ বলা যাবে না। এই ৫ টাকা লাভ, যা হালাল বলে গণ্য। পরিশেষে সুদ ও মুনাফার পার্থক্য সংক্ষেপে বলা যায় এভাবে—মুনাফা বেচাকেনা বা ব্যবসার স্বাভাবিক ফল থেকে আসে। বিপরীতপক্ষে, সুদ অর্জিত হয় ঋণের ওপর। মুনাফা উদ্যোক্তার পুঁজি, শ্রম ও সময় বিনিয়োগ এবং ঝুঁকি গ্রহণের ফল; কিন্তু সুদের ক্ষেত্রে ঋণদাতা পুঁজি, শ্রম ও সময় বিনিয়োগ এবং ঝুঁকি গ্রহণ করে না, অর্থ ধার দেয় মাত্র। মুনাফা অনির্ধারিত ও অনিশ্চিত, কিন্তু সুদ পূর্বনির্ধারিত ও নিশ্চিত। মুনাফায় ঝুঁকি গ্রহণ করতে হয়, আর সুদে তা গ্রহণ করতে হয় না। তারপরও আমার ভাবনায় যা থেকে গেল সেটা হলো, আমরা বিশ্বব্যাংক বা অন্যান্য দেশ থেকে সুদে যেসব অর্থ নিয়ে দেশের নানা উন্নতি বা উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করছি, সুদে-মূলে সে সমস্থ ঋণ জাতিকে কোনো এক সময় শোধ করতে হবে। যে অর্থ বহিঃবিশ্ব থেকে সুদসহ ধার করছি তাও আবার দুর্নীতিবাজদের ছোবলে গ্রাস অথবা বেগমপাড়া, দুবাই, আমেরিকা, সিংগাপুর বা কানাডাসহ নানা দেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এটাই কি ঘটনা নাকি অন্য কিছু? এত কিছুর পরও বিশ্বের অর্থনীতি আজ এমনভাবে আমাদের জীবনে পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষভাবে জড়িত যে, আমরা  সুদ  বা  ঋণমুক্ত কেউ  না, এ  বিষয়  নিশ্চিত। সুদ এবং মুনাফার বর্ণনা দিতে গিয়ে অন্য একটি বিষয় ভেবেছি, সেটা হলো দুর্নীতি। যেমন সুদও কিন্তু অনির্ধারিত ও অনিশ্চিত, সুদে ঝুঁকি গ্রহণ এবং শ্রম বিনিয়োগ করতে হয়, তাহলে কি বাংলাদেশ দুর্নীতিকে নীতিতে পরিণত করেছে! তানা হলে সব সেক্টরে এত দুর্নীতি কেন? খুব জানতে ইচ্ছে করে। তবে আমার মার স্বর্ণ বিক্রি করে বাবা আমাদের লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করেছিলেন। মা পরে বাবার থেকে সুদে নয় শুধু মূলে সেই স্বর্ণ ফেরত নিয়েছিলেন এবং পরে সেই স্বর্ণ তাঁরই প্রিয় সন্তানদের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর মৃত্যুর আগে, এটা ছিল মা-বাবার ভালোবাসা সে বিষয় আমি আজ নিশ্চিত হয়েছি। রহমান  মৃধা:  সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন [ নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, প্রতিক্রিয়া প্রভৃতিতে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। দৈনিক কালবেলার সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে নিবন্ধ ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক, আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের, দৈনিক কালবেলা কর্তৃপক্ষের নয়। ]  
২২ ডিসেম্বর, ২০২৩

এফ-১৬ দিলেই ন্যাটোর সদস্যপদ পাবে সুইডেন : এরদোয়ান
রাশিয়ার আগ্রাসনের ভয়ে গত বছর পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আনুষ্ঠানিক আবেদন করে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। গত এপ্রিলে ফিনল্যান্ড সবুজ সংকেত পেলেও তুরস্কের বাধায় সুইডেনের বিষয়টি ঝুলে রয়েছে। তবে এবার সুইডেনে ন্যাটোর সদস্যপদ নিয়ে নিজেদের আগের অবস্থান থেকে সরে আসার কথা জানিয়েছে তুরস্ক। খবর রয়টার্স। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন যদি তুরস্ককে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা সামনে এগিয়ে নিয়ে যায় তাহলে ন্যাটোতে সুইডেনের সদস্যপদ অনুমোদন দেবে তুর্কি সংসদ। আজ মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) আজারবাইজান সফর শেষে দেশে ফিরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন এরদোয়ান। গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে সুইডেনের ন্যাটোর সদস্যপদ নিয়ে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আলোচনা করেছেন বলেও জানান তুর্কি প্রেসিডেন্ট। এরদোয়ান বলেন, সুইডেনের সদস্যপদ অনুমোদনের বিষয়টি তুরস্কের কাছে যুদ্ধবিমান এফ-১৬ বেচার সঙ্গে যুক্ত করেছে মার্কিন প্রশাসন। তারা যদি তাদের প্রতিশ্রুতি রাখে, আমাদের পার্লামেন্টও নিজেদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে। তুর্কি সংসদই সুইডেনের ন্যাটোর সদস্যপদ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়ে কয়েক দশক ধরে নিরপেক্ষতার নীতি অবলম্বন করে আসছিল সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। তবে ইউক্রেন যুদ্ধের পর পরিস্থিতি বদলে যায়। রাশিয়ার আগ্রাসনের ভয়ে ন্যাটো জোটের সদস্য হতে আনুষ্ঠানিক আবেদন করে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। তবে গত এপ্রিলে ফিনল্যান্ড এ জোটের সদস্যপদ পেলেও নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে সুইডেনের সদস্যপদ আটকে রাখে তুরস্ক। কেননা ন্যাটোর নিয়ম অনুযায়ী, নতুন সদস্য যুক্ত করতে হলে আগের সব সদস্য দেশের সম্মতির প্রয়োজন হয়।
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

ঢাকাস্থ সুইডেন দূতাবাসে চাকরির সুযোগ
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ঢাকাস্থ সুইডেন দূতাবাস। প্রতিষ্ঠানটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট/ আর্কিভিস্ট পদে লোকবল নিয়োগের জন্য এ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। আগ্রহী প্রার্থীদের ই-মেইলে সিভি পাঠাতে হবে। নির্বাচিত প্রার্থী মাসিক বেতন ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবেন।  প্রতিষ্ঠানের নাম : সুইডেন দূতাবাস, ঢাকা পদের নাম : অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট/ আর্কিভিস্ট  পদের সংখ্যা : ১টি  শিক্ষাগত যোগ্যতা : স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এ ধরনের বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে।  অন্যান্য যোগ্যতা : বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় সাবলীল হতে হবে। এমএস অফিস অ্যাপ্লিকেশনের কাজ জানতে হবে। অভিজ্ঞতা : কোনো দূতাবাস, আন্তর্জাতিক সংস্থা বা বড় কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৩ বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।  কর্মস্থল : ঢাকা বেতন :  আকর্ষণীয় অন্যান্য সুবিধা : দূতাবাসের নীতিমালা অনুযায়ী অন্যান্য সুবিধা পাবেন।  কাজ : সপ্তাহে ৫ দিন (৩৭ ঘণ্টা) আবেদন করবেন যেভাবে : আগ্রহী প্রার্থীরা আবেদন করতে ও বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তিটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন। আবেদনের শেষ সময় : ০৫ অক্টোবর ২০২৩   
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সুইডেন তৃতীয়
এবারের নারী বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট ছিল সুইডেন। গতকাল স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে তারা তৃতীয় হয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শেষ করেছে। সেমিফাইনালে তারা স্পেনের কাছে হেরেছিল। অস্ট্রেলিয়া হেরেছিল ইংল্যান্ডের কাছে। গতকাল তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে তৃতীয় হয় সুইডেন। এর আগে ১৯৯১, ২০১১ ও ২০১৯ আসরেও তৃতীয় হয়েছিল তারা। সানকর্প স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই স্বাগতিকদের ওপর আক্রমণ করতে থাকে সুইডেন। ৩০ মিনিটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে গোল এনে দেন সুইডেনের উইঙ্গার ফ্রিডোলিনা রোল্ফো। বিরতির পর ৬২ মিনিটে অস্ট্রেলিয়ার জালে দ্বিতীয় গোল করেন সুইডিশ অধিনায়ক কোসোভারে অ্যাসলানি। নারী বিশ্বকাপে একবারই ফাইনাল খেলার সুযোগ পেয়েছিল সুইডেন।
২০ আগস্ট, ২০২৩

কোরআন অবমাননা বন্ধে আইন সংশোধন করছে সুইডেন
পবিত্র কোরআন পোড়ানো বন্ধ করতে দেশের আইন সংশোধনের কথা জানিয়েছে সুইডেন সরকার। আইন সংশোধন হলে যেকোনো বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের অনুমতি দেবে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার (১৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।   শুক্রবার রাজধানী স্টকহোমে এক সংবাদ সম্মেলনে সুইডেনের বিচারমন্ত্রী গানার স্ট্রম জানান, দেশের আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধন করতে শিগগিরই একটি কমিশন নিয়োগ দেওয়া হবে। সুইডেনের বিতর্কিত বাকস্বাধীনতা আইনের কারণে দেশটিতে বিশিষ্ট ব্যক্তি ও ধর্ম অবমাননার ঘটনা ঘটছে। এতদিন এই আইন পরিবর্তনের বিষয়টি নাকচ করে আসছিল সরকার। গানার স্ট্রম বলেন, সম্প্রতি দেশে টানা বেশ কয়েকটি কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে সুইডেনের বিরুদ্ধে হুমকি আসছে। ফলে সুইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তাকে আমরা কোনোভাবেই ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না। সম্প্রতি সুইডেনে বেশ কয়েকটি কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় সমগ্র বিশ্বে নিন্দার ঝড় ওঠে। এমনকি বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোর জোট ওআইসির উদ্যোগে জাতিসংঘে সুইডেনের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব গৃহীত হয়। তবে সরকারের এমন উদ্যোগকে ভালোভাবে নেয়নি সুইডেনের বেশ কয়েকটি দল। তারা বলছে, ইসলামপন্থিদের সামনে সরকার নতজানু হয়ে পড়েছে।
১৯ আগস্ট, ২০২৩
X