সাঁতার শিখতে গিয়ে নদীতে ডুবে দুজনের মৃত্যু
পদ্মা নদীতে সাঁতার শিখতে গিয়ে পানিতে ডুবে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে রাজশাহীর পবা উপজেলার হরুপুর আইবাঁধের ধারে এই ঘটনা ঘটে। বিকেল পৌনে ৩টার দিকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতরা হলো- রাজশাহী নগরীর সায়েরগাছা এলাকার বাবু হোসেনের ছেলে বাপ্পি হোসেন (১৬)। রাজশাহী কোর্ট অ্যাকাডেমি স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল সে ও একই এলাকার শাহিন হোসেনের ছেলে মনির হোসেন (২০)। সে পেশায় থাই মিস্ত্রি। নিহদের চাচাতো ভাই আল আমিন বলেন, যেখানে তারা পানিতে ডুবেছে সেখানে স্রোত ছিল না। বাড়িতে বলে এসেছে তারা নদীতে সাঁতার শিখতে যাবে। তারমধ্যে বাপ্পি সাঁতার জানে না। তাই তাকে মনির সাঁতার শেখানোর জন্য পদ্মা নদীতে নিয়ে আসে। সাঁতারের একপর্যায়ে তারা নদীতে ডুবে যায়। বিষয়টি জানাজানি হলে রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা অভিযান চালিয়ে প্রথমে বাপ্পি ও পরে মনিরের মরদেহ উদ্ধার করে। এ বিষয়ে রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু সামা বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
২১ এপ্রিল, ২০২৪

সাঁতার শিখতে গিয়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ভেতরের একটি পুকুরে সাঁতার শিখতে গিয়ে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।  শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত অর্ণব তালুকদার (১৭) সিলেটের শাহ খুররম ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। সে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ক্ষিতীশ তালুকদারের ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, অর্ণব পুকুরে গোসল করতে নামার পর ডুব দিয়ে অনেকক্ষণ না উঠলে আশপাশের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পানিতে নেমে ডুবন্ত অবস্থায় অর্ণবকে উদ্ধার করে। অর্ণবকে দ্রুত সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শাবিপ্রবির প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, কলেজছাত্র সাঁতার শেখার জন্য পুকুরে নেমেছিল। পানিতে ডুবে তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে। পুকুর গভীর হওয়ায় এখানে গোসল না করার পরামর্শ দিয়ে একটা নির্দেশনা ফলকও আছে।
২২ মার্চ, ২০২৪

বাড়িতে পুষতেন ৩৪০ কেজির কুমির, সাঁতার কাটতে দিতেন শিশুদের
মানুষ শখ করে অনেক প্রাণীই পোষে। সাধারণত মানুষের পোষা প্রাণীর এই তালিকায় কুকুর, বিড়াল কিংবা পাখির নামই থাকে। তবে এই ব্যক্তির প্রাণিপ্রীতি সবার থেকে আলাদা। তিনি বাড়িতে কুমির পুষেছেন। তা-ও যেই-সেই কুমির নয়। তার পোষা কুমিরের ওজন ৩৪০ কেজি। ১১ ফুট লম্বা কুমিরটির বয়স প্রায় ৩০ বছর। শুধু তাই নয় সে কুমিরের সঙ্গে পাড়ার শিশুদের সাঁতার পর্যন্ত কাটতে দিতেন তিনি। এনিডিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কুমিরটির নাম আলবার্ট। এর মালিকের নাম টনি ক্যাভালারো। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার বাসিন্দা। গত ১৩ মার্চ অবৈধভাবে কুমিরটি বাড়িতে রাখার জন্য সেটিকে জব্দ করেছে মার্কিন পরিবেশ সংরক্ষণ পুলিশ। সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আলবার্টকে রাখতে বাড়িতে আলাদা একটি জায়গা করেন টনি। সেখানে প্রায় ৩০ বছর বয়সী কুমিরটির জন্য একটি সুইমিং পুল নির্মাণ করেন তিনি। পুলিশ কুমিরটি নিয়ে যাওয়ার পর টনি বলেন, ‘আমি অ্যালবার্টের বাবা। সে সবার কাছে পরিবারের একজন সদস্যের মতো ছিল।’ তিনি আরও জানান, অ্যালবার্টের মালিকানার লাইসেন্সের মেয়াদ ২০২১ সালে শেষ হয়ে যায়। তিনি এটি নবায়ন করতে পরিবেশ সংরক্ষণ বিভাগে আবেদন করলেও লাইসেন্স পাননি। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, বাড়িতে কুমির রাখা বেআইনি। এমনকি মালিক যথাযথভাবে লাইসেন্স নিলেও কুমিরের সঙ্গে জনসাধারণের সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ। নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কুমিরটির সঙ্গে সাঁতার কাটতে পাড়ার শিশুদের দাওয়াত দিতেন টনি। এ ছাড়া তিনি অন্য মানুষদেরও এর সঙ্গে সাঁতার কাটতে দিতেন। কর্মকর্তারা বলছেন, আলবার্টের বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্যসংক্রান্ত জটিলতা ছিল। যেমন কুমিরটি দুচোখে দেখতে পেত না। এর মেরুদণ্ডে জটিলতা ছিল। তবে কুমিরটি ফিরে পেতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন টনি। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে একটি অনলাইন পিটিশন করেছেন তিনি। এ ছাড়া প্রতিবেশী ও বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকেও তিনি ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছেন। সামাজিক মাধ্যমেও তার পক্ষে জনমত জোরাল হচ্ছে।
১৮ মার্চ, ২০২৪

সাঁতার কাটতে গিয়ে ২ স্কুলছাত্র নিখোঁজ, ১ জনের মরদেহ উদ্ধার
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদে সাঁতার কাটতে গিয়ে দুই স্কুলছাত্র নিখোঁজ হয়। বুধবার (৬ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্রহ্মপুত্র নদের বালাসিঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ দুই ছাত্রের নাম মাহিব ও নাহিদ। পরে ফায়ার সার্ভিস এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে মাহিবের মরদেহ উদ্ধার করে। নাহিদ এখনো নিখোঁজ রয়েছে। নিহত ওই স্কুলছাত্রের বাড়ি গাইবান্ধা শহরের ডেভিড কোম্পানিপাড়া এলাকায়। সে শহরের আহমদ উদ্দিন শিশু নিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। নিখোঁজ নাহিদের বাড়িও একই এলাকায় বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা জানান, শহর থেকে ৬ বন্ধু সাঁতার কাটার জন্য বালাসীঘাটের ব্রহ্মপুত্র নদে নামে। এ সময় চার বন্ধু কিনারে উঠে এলেও মাহিব ও নাহিদ নিখোঁজ হয়। স্থানীয়দের খবরে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম দীর্ঘ দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় নদী থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করে। ফুলছড়ি ফায়ার সার্ভিস ইউনিটের ইনচার্জ আব্দুল বারী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিখোঁজের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় মাহিব নামে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিখোঁজ নাহিদের মরদেহ উদ্ধারে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
০৬ মার্চ, ২০২৪

সাঁতার না জানায় চালকের সামনে হেলপারের মৃত্যু
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পিকআপ চালকের সামনেই পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে এক হেলপারের। নিহতের নাম বিজয় (২০)। সে হাটহাজারী উপজেলার বাসিন্দা। এদিকে চোখের সামনে হেলপারের পানিতে ডুবে মৃত্যু হওয়ায় আহাজারিতে ভেঙে পড়েন পিকআপ চালক কাউসার।  শুক্রবার (২ জানুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে পৌরসভার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে দেওয়ান দিঘিতে এ ঘটনা ঘটে। চালক কাউসার বলেন, চট্টগ্রাম নগরী থেকে একটি ভাড়া পিকআপযোগে মিরসরাই গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ফেরার পথে পিকআপটি পরিষ্কার করার জন্য সীতাকুণ্ড পৌরসভার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে দেওয়ান দিঘির পাশে দাঁড়াই। হেলপার বিজয় একটি বালতি নিয়ে পানি আনতে দেওয়ান দিঘিতে নামার সঙ্গে সঙ্গে নিচের দিকে তলিয়ে যায়। সাঁতার না জানার কারণে সে আর উঠতে পারেনি।  তিনি আরও বলেন, আমিও সাঁতার জানি না। পরে স্থানীয়রা ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মিলে তার মৃতদেহ উদ্ধার করেন। স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসেও সময়মতো উদ্ধারে নামতে পারেনি। পরে যখন স্থানীয়রা উদ্ধারের জন্য পানিতে নামে তারপর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নামে।  সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র অফিসার নুরুল আলম দুলাল বলেন, আমাদের ডুবুরি নাই। সব ফায়ার ফাইটার। যার কারণে উদ্ধার করতে সময় লেগেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার নুর উদ্দিন রাশেদ বলেন, নিহত ব্যক্তিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার আগেই তিনি মারা যান।
০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

শিশু মৃত্যু রোধে সাঁতার প্রশিক্ষণে হচ্ছে ৮ হাজার সেন্টার
মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি জানিয়েছেন, পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু রোধে সাঁতার প্রশিক্ষণে দেশের ৪৫ জেলায় ৮ হাজার সেন্টার করা হচ্ছে। যেখানে ৩ লাখ ৭ হাজার শিশুকে সাঁতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস-২০২৪ উপলক্ষে ‘টেকসই শান্তির জন্য শিক্ষা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ তথ্য জানান। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সভা প্রধানের বক্তব্য রাখেন এডুকেশন ওয়াচের চেয়ারপারসন ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন এবং সঞ্চলনা করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী। সভায় প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি বলেন, আপনাদের একটি সুসংবাদ দিতে চাই। আজ আমি যে ফাইল সই করে এসেছি। সেটা হলো- ৮ হাজার সেন্টার করা হচ্ছে। যেখানে ৩ লাখ ৭ হাজার শিশুকে সাঁতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। দেশের ৪৫টি উপজেলায় এসব কেন্দ্র হবে। একটি প্রকল্পের মাধ্যমে এটি শুরু হওয়ার কথা ছিল। আজকেই এটি সই হলো। আমি চাইবো এটা সারা বাংলাদেশেই হোক। আমি মনে করি এতে মৃত্যুটাও রোধ করা যাবে। এর আগে শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে পানিতে ঢুবে শিশু মৃত্যুর হার অনেক বেশি। বিশ্বের মৃত্যুর হারে সেরা পাঁচটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। প্রতিদিন প্রায় ২০ জন প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থী মারা যায়। ডায়রিয়াতেও এতো মারা যায় না। পানিতে ডুবে মারা যায় এটা গ্রহণযোগ্য না।
২৫ জানুয়ারি, ২০২৪

বন্যায় ডুবল উড়োজাহাজ, শহরে সাঁতার কাটছে কুমির
অস্ট্রেলিয়ার উত্তর কুইন্সল্যান্ডে আকস্মিক বন্যায় হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে এখনো বহু মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। কর্তৃপক্ষ বলছে, কুইন্সল্যান্ডের ইতিহাসে এবারের বন্যা সবচেয়ে ভয়াবহ। গত সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড় জাসপার অস্ট্রেলিয়ায় আঘাত হানে। ঘূর্ণিঝড় জাসপারের কারণে সৃষ্টি ভারী বৃষ্টিপাতে এই ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে উত্তর কুইন্সল্যান্ড অঞ্চলে এক বছরের সমান বৃষ্টি হয়েছে। পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিত কেয়ার্নস শহরে দুই মিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে প্রায় দেড় লাখ মানুষের এই শহরের রাস্তাঘাট, মহাসড়ক তলিয়ে গেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বিবিসির ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কেয়ার্নস শহরের বিমানবন্দরে পার্ক করে রাখা উড়োজাহাজগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। ফ্লাইট ওঠানামা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। শহরের মাঝখানে কুমির সাঁতার কাটছে। মানুষ নৌকায় করে নিরাপদে সরে যাচ্ছেন। তবে ভয়াবহ এই বন্যায় এখনো কোনো হতাহতের খবর আসেনি। কুইন্সল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী স্টিভেন মাইলস এবিসি নিউজকে বলেছেন, এমন ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় তিনি কখনো দেখেননি। তিনি বলেন, কেয়ার্ন শহরের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের সঙ্গে আমি আলাপ করেছি। তারা বলেছেন যে তারাও এ রকম কিছু আগে দেখেননি। কুইন্সল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, তাদের কাছে থাকা সব নৌকায় করে বন্যাদুর্গত মানুষকে উদ্ধার করছেন। বিশেষ করে নিজের চেষ্টায় যারা পানিবন্দি অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে পারছেন না তাদের এসব নৌকায় উদ্ধার করা হবে।
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

জাতীয় সাঁতারে পুরোনো জটিলতা
নৌবাহিনীর নথিতে আরিফুল ইসলাম পলাতক- যদিও এ সাঁতারুর দাবি ভিন্ন। ফ্রান্সে অবস্থান করায় জাতীয় সাঁতারে খেলা হচ্ছে না আরিফুলের। গত কয়েক বছর পুলে ঝড় তোলা জুনাইনা আহমেদও থাকছেন না এবার। গুরুত্বপূর্ণ দুই সাঁতারুকে বাইরে রেখে কাল শুরু হচ্ছে জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতা। নৌবাহিনী সাঁতার দল সূত্র জানিয়েছে, আরিফুল ইসলাম ফ্রান্সে ট্রেনিং করতে গিয়ে পলাতক। এ সাঁতারু অবশ্য দাবি করলেন, আমি সংশ্লিষ্টদের অবহিত করেই এসেছি। লন্ডনপ্রবাসী জুনাইনা আহমেদ চুক্তিভিত্তিক ক্রীড়াবিদ হিসেবে নৌবাহিনীর হয়ে খেলতেন। চুক্তির মেয়াদ শেষে জুনাইনা পড়াশোনায় মনোযোগী। জাতীয় সাঁতারে খেলা হচ্ছে না কৃতী এ সাঁতারুর। জটিলতা নিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের প্রতিযোগিতা। স্কোরবোর্ড নামক গলার কাঁটা ছাড়ানো যায়নি; আরেক জটিলতার নাম স্টার্টিং ব্লক। হাতঘড়ি দিয়ে কাজ চালিয়ে টাইমিংয়ের জটিলতা এড়ানো যাবে; স্টার্টিং ব্লকের জটিলতা কাটবে কী করে? জাতীয় সাঁতার শুরুর প্রাক্কালে উত্তর খুঁজছেন ফেডারেশন কর্মকর্তারাও! মিরপুর জাতীয় সুইমিং কমপ্লেক্সের মালিক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। দেশের ক্রীড়াঙ্গনের গুরুত্বপূর্ণ ভেন্যুর রক্ষণাবেক্ষণও করে সংস্থাটি। ২০১৯ সালে সম্পন্ন হওয়া সর্বশেষ সংস্কার কাজের পর থেকে স্কোরবোর্ড ও স্টার্টিং ব্লক নিয়ে জটিলতায় সাঁতার ফেডারেশন। বোর্ড সঠিকভাবে সময় দিতে পারছে না। পুলে ডাইভ দেওয়ার সময় স্টার্টিং ব্লকের ওপরের অংশ সরে যাওয়ায় তা সাঁতারুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘স্কোরবোর্ড আগের অবস্থাতেই আছে। এ কারণে এটা আমরা বুঝে নিইনি। নতুন স্টার্টিং ব্লকগুলো ব্যবহার অনুপযোগী। আমরা এগুলো তুলে পুরোনো ব্লক স্থাপন করে দিতে এনএসসিকে অনুরোধ করেছি’—গতকাল বলছিলেন বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোল্লা বদরুল সাইফ। আগামীকাল শুরু হতে যাওয়া জাতীয় সাঁতারে পৃষ্ঠপোষকতা করছে ম্যাক্স গ্রুপ। ৫২ দলের ৫৫০ সাঁতারু এ আসরে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছে সাঁতার ফেডারেশন। আসরে সম্পৃক্ত থাকছেন ৮৫ টিম অফিসিয়াল ও ১০০ মিট অফিসিয়াল। নারী ও পুরুষ দুই বিভাগে সমান ১৯টি করে ইভেন্টে পদকের লড়াই হবে। এ ছাড়া ডাইভিংয়ের তিন ইভেন্ট থাকছে। ওয়াটার পোলো নিয়ে মোট ইভেন্ট সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ৪২। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিযোগিতার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের সহসভাপতি আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মোল্লা বদরুল সাইফ, যুগ্ম সম্পাদক সেলিম মিয়া, কোষাধ্যক্ষ রেজাউল হোসেন বাদশা, ম্যাক্স গ্রুপের প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল পলাশ এবং নৌবাহিনীর প্রতিনিধি কমান্ডার বদরুদ্দোজা।  
১৪ অক্টোবর, ২০২৩

জেলায় জেলায় ভাড়াটে সাঁতারু / সিন্ডিকেটে বন্দি দেশের সাঁতার
দেশে সাঁতারু পরিচর্যা হয় হাতেগোনা কয়েকটি জেলায়। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এসব পরিচর্যাকেন্দ্র থেকে ভাড়ায় সাঁতারু সরবরাহ করে। ভাড়াটে সাঁতারু খেলিয়ে অধিকাংশ জেলা কাউন্সিলরশিপ টিকিয়ে রাখছে। এভাবে বছরের পর বছর সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই চলছে দেশের সাঁতার। তৃণমূলে সাঁতারু পরিচর্যায় এগিয়ে কিশোরগঞ্জ ও কুষ্টিয়া জেলা। কিশোরগঞ্জে কারার ছামেদুল, আব্দুল জলিল, শরিফুল ইসলাম ও আব্দুল হাশেম খুদে সাঁতারুদের নিয়ে কাজ করেন। কুষ্টিয়ার আমিরুল ইসলাম, কামাল হোসেন, শরিফুল ইসলাম খুদে সাঁতারুদের নিয়ে কাজ করছেন। এ ছাড়া রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লায় কিছু কার্যক্রম চলে। বাকি জেলাগুলোতে প্রতিযোগিতামূলক সাঁতারের জন্য পরিচর্যা নেই বললেই চলে। তার পরও সর্বশেষ জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে ৯০টি দল। দলগুলোর প্রায় ৩০০ খুদে সাঁতারু বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে, যাদের বেশিরভাগই হাতেগোনা কিছু ক্লাব ও দলে অনুশীলন করেছে; কিন্তু ভাড়ায় খেলেছে ভিন্ন দল ও জেলার হয়ে। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাবেক সাঁতারু মাহফুজা রহমান তানিয়া এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘অনেক জেলায় সাঁতার কার্যক্রম নেই। কিন্তু জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় জেলাগুলো দাপটের সঙ্গেই খেলে। ভাড়াটে সাঁতারু থাকার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। তা না হলে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে হলে সাঁতারু পরিচর্যা করেই আসতে হতো জেলাগুলোকে।’ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাঁতারের কাউন্সিলরশিপ টিকিয়ে রাখতে হলে চার বছরে অন্তত দুটি জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা বাধ্যতামূলক। ভাড়াটে সাঁতারু থাকার কারণে নিজেরা পরিচর্যা না করেও কাউন্সিলরশিপ টিকিয়ে রাখছে বিভিন্ন জেলা। কাউন্সিলরশিপ টিকিয়ে রাখার এসব সিন্ডিকেটের কারণে বিভিন্ন জেলার সাঁতার প্রতিভা পরিচর্যার বাইরে থেকে যাচ্ছে বলে মনে করেন মাহফুজা রহমান তানিয়া। সাবেক এ সাঁতারুর কথায়, ‘অনেক জেলায় সুইমিংপুল থাকলেও অযত্নে পড়ে আছে। সেখানে সাঁতার পরিচর্যা না করলেও তো জেলার কাউন্সিলরশিপ টিকিয়ে রাখা যাচ্ছে। যেসব জেলা ভাড়াটে সাঁতারু দিয়ে চলে আসছে, সে জেলাগুলোতেও কিন্তু প্রতিভা রয়েছে। কার্যক্রম না থাকায় সে প্রতিভা বিকশিত হতে পারছে না। সিন্ডিকেটই সাঁতারে উন্নতির পথ বন্ধ করে দিচ্ছে।’ ‘তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’ শিরোনামে সাঁতার ফেডারেশনের সাইনবোর্ডের আড়ালে প্রতিভা বাছাই করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। সে কার্যক্রম দিয়ে উঠে আসা কৃতী সাঁতারুদের খেলিয়ে জাতীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিভিন্ন ক্লাব। এমনই এক ক্লাবের সঙ্গে সম্পৃক্ত খোদ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) এক কর্মকর্তা। বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশনের সাবেক কর্মকর্তা ও কোচ গোলাম মোস্তফাও মনে করেন, এ সিন্ডিকেট দেশের সাঁতারকে পেছন থেকে টেনে ধরছে। অভিজ্ঞ এ কোচের কথায়, ‘এখন আর কেউ জামাকাপড়ের জন্য দর্জির কাছে যায় না, বেশিরভাগ মানুষ তৈরি করা পোশাকের ওপর নির্ভরশীল। এ কারণে কত দর্জির যে না খেয়ে মরার উপক্রম হয়েছে—তার খবর কি কেউ রাখে? সিন্ডিকেটের কারণে তৃণমূলে কত প্রতিভা অকালে ঝরেছে, তার খবর কি আমরা রাখছি? পুরোপুরি ভুলপথে চলছি আমরা।’ এ সম্পর্কে সাঁতার ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক ও প্রতিযোগিতা আয়োজন সংক্রান্ত সাব-কমিটির প্রধান সেলিম মিয়া বলেছেন, ‘অনেক সময় এক জেলা থেকে নির্দিষ্টসংখ্যক সাঁতারু ছাড়া বাকিদের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকে না। সে দৃষ্টিকোণ থেকে এ নিয়মটা ইতিবাচক।’ কিন্তু স্থানীয়ভাবে পরিচর্যা না থাকায় অনেক জেলার প্রতিভা মুকুলে ঝরে যাচ্ছে কি? প্রশ্নের জবাবে সাবেক এ সাঁতারু বলেন, ‘কিছু ক্ষেত্রে হয়তো সেটা হয়। এ কারণে বাইরের সাঁতারু খেলানোর ক্ষেত্রে জেলাগুলোকে নির্দিষ্ট কোটা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।’
২৩ আগস্ট, ২০২৩
X