চড়া সুদে ঋণ দিয়ে কৌশলে সম্পত্তি দখল করেন ফরিদ
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রিচি গ্রামের ফরিদ মিয়া। দীর্ঘদিন সৌদি আরবে ছিলেন। দেশে ফিরে শুরু করেন সুদের ব্যবসা। এলাকায় সুদখোর ফরিদ হিসেবে পরিচিত তিনি। চড়া সুদে ঋণ দিয়ে কৌশলে ঋণগ্রহীতার সম্পত্তি দখল করে নেন তিনি। বিভিন্ন সময় মানুষ বিপদে পড়ে তার কাছে সুদে ঋণ নিতে এলে কৌশলে তাদের একরকম জিম্মি করে সম্পত্তি বায়না করে ঋণ দেন। কারও ঋণ শোধ করতে দেরি হলে তার সম্পত্তি দখলে নেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্তত ডজনখানেক লোক ফরিদ মিয়ার কাছ থেকে সুদে ঋণ নিয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী। এই ঋণ নিয়ে অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়েছেন। ভুক্তভোগী কয়েকজন কালবেলাকে জানান, ফরিদ মিয়ার কাছে ঋণ নিতে গেলে তিনি প্রথমে না করেন। সম্পত্তি বায়না করলে বা জমিজমার কাগজপত্র জমা দিলেই তিনি ঋণ দিতে রাজি হন। পরে যে টাকা ঋণ দেন, তার দ্বিগুণের চেয়ে বেশি টাকা দাবি করেন। ঋণের চুক্তির কাগজপত্র এফিডেভিড করে উকিল নোটিশ দিয়ে বিভিন্নভাবে ঋণগ্রহীতাদের ভয়ভীতি দেখান। কথা হয় ভুক্তভোগী সিদ্দিকুর রহমান দুলালের সঙ্গে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি রেস্তোরাঁর ব্যবসা করেন। ছেলেকে ইতালি পাঠানোর পর তার ৩ লাখ টাকার প্রয়োজন হয়। উপায়ান্তর না দেখে তিনি ফরিদ মিয়ার শরণাপন্ন হন। ঋণের সিকিউরিটি বাবদ সিদ্দিকুর রহমানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একটি বায়নাপত্র করে দিতে বলেন ফরিদ। নিরুপায় হয়ে বায়নাপত্র করে প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা সুদে এক বছরের জন্য ৩ লাখ টাকা ঋণ নেন। ৯ মাস সুদ পরিশোধ করেন সিদ্দিকুর। এর পরই বেঁকে বসেন ফরিদ। সুদের টাকা না নিয়ে বায়নাকৃত হোটেলের জমিটি রেজিস্ট্রি করে দিতে চাপ দেন। বিষয়টি স্থানীয় মাদবরদের জানান সিদ্দিকুর। কিন্তু ফরিদ মিয়া জায়গা রেজিস্ট্রি করে দিতে আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেন। নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রক্ষায় সিদ্দিকুর রহমান পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সিদ্দিকুর রহমান দুলাল কালবেলাকে বলেন, ‘বিপদে পড়ে ফরিদ মিয়ার কাছ থেকে ঋণ নিতে গেলে তিনি জমির কাগজপত্র রেখে বায়না করতে বলেন। বাধ্য হয়েই বায়না করে এক বছরের জন্য ৩ লাখ টাকা ঋণ নিই। নিয়মিত তাকে ১৫ হাজার টাকা করে সুদ দিলেও ফরিদ মিয়া ৯ মাস পর আমার জমি দখল করতে আসেন। আমি তাকে ঋণের টাকা পরিশোধ করে দিতে চাইলে তিনি টাকা না নিয়ে জমি দখলের চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’ স্থানীয় নাতিরাবাদ গ্রামের জিতু মিয়ার স্ত্রী অনুফা বেগম ৪ লাখ টাকা ঋণ নেন ফরিদ মিয়ার কাছ থেকে। কিন্তু তার কাছ থেকে ৯ লাখ টাকা দাবি করেন ফরিদ মিয়া। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অনুফা বেগমকে আইনি নোটিশ দেন ফরিদ। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘চুক্তি অনুযায়ী ঋণ নেওয়ার পর এক বছরের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পরও আপনি (অনুফা বেগম) টাকা ফেরত প্রদান না করে অহেতুক সময় কর্তন করছেন এবং দুই চেক প্রদান করছেন, তা ডিজঅনার হয়।’ নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে উল্লিখিত ৯ লাখ টাকা নগদ পরিশোধ করা না হলে আদালতে মামলা দায়ের করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। হবিগঞ্জ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আসাদ হোসেন পাঠানের স্ত্রী কামরুন নাহার সীমা ২ লাখ টাকা ঋণ নেন। তিনি সুদের টাকা পরিশোধ করলে তাকে পুরো টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দেন ফরিদ মিয়া। পরে তাকে পাঠানো হয় আইনি নোটিশ। সেখানে ৬ লাখ টাকা পাওনা দাবি করেন। অভিযোগের বিষয়ে ফরিদ মিয়া কালবেলাকে বলেন, ‘আমি কোনো সুদের ব্যবসা করি না। যারা বলছে, এসব মিথ্যা বলছে। দুলাল (সিদ্দিকুর রহমান) জমি বায়না করেছিল, এখন আমাকে জমি বুঝিয়ে দিচ্ছে না। এটা নিয়ে আমি মামলা করেছি। জিতু মিয়ার স্ত্রী আমার আত্মীয়। তিনিও টাকা নিয়ে ফেরত দিচ্ছেন না। আসাদের স্ত্রীও টাকা ফেরত দিচ্ছেন না।’
০৬ জুলাই, ২০২৪

বান্দরবানে বেনজীরের সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণে নিল প্রশাসন
সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী-কন্যার নামে থাকা বান্দরবানের খামার বাড়ি ও মৎস্য ঘেরসহ ২৫ একর জায়গা জিম্মায় নিয়েছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন।  বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকালে বান্দরবান জেলা সদরের সুয়ালকের মাঝের পাড়ায় জায়গাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে সেখানে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন জেলা প্রশাসক। এ সময় জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এস এম মঞ্জুরুল হককে আহ্বায়ক করে একটি ৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে- কমিটি এখন থেকে এই বিষয়ে সার্বিক তদারকি করার পাশাপাশি সব আয়-ব্যয়ের হিসেবে দুদকের মাধ্যমে আদালতে উপস্থাপন করা হবে। জেলা প্রশাসক বলেন, আদালতের নির্দেশনার পর বেনজির আহমেদের সম্পত্তি তত্ত্বাবধানে নেওয়া হয়েছে। এসব সম্পত্তি থেকে যা আয় হবে তা সরকারের কোষাগারে জমা হবে। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এস এম মঞ্জুরুল হক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবীবা মীরা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বান্দরবানের উপপরিচালক এমএম শাহনেয়াজ, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অভিজিৎ শীল, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমানসহ জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন এবং গণমাধ্যমকর্মী ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয়দের তথ্যমতে, বান্দরবানে সুয়ালকের মাঝের পাড়ায় সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ তার স্ত্রী জিশান মির্জা ও কন্যা ফারহিন রিশতার নামে ক্রয় করেন ২৫ একর জায়গা। এ ছাড়াও লামায় প্রায় ৫৫ একর সম্পত্তির রয়েছে পুলিশের এই সাবেক আইজিপির। এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হওয়ার পর দুর্নীতি দমন কমিশন সুয়ালকে ২৫ একর সম্পত্তির নথি খুঁজে পায়। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে র্যাবের মহাপরিচালক থাকাকালীন বান্দরবানের সুয়ালকে স্ত্রী-কন্যা ও নিজ নামে ২৫ একর জায়গা ক্রয় করেন বেনজীর আহমেদ।
০৪ জুলাই, ২০২৪

কাস্টমস কমিশনারের স্থাবর সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ
সিলেটের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ এনামুল হকের ৮ কোটি ৯৫ লাখ ৪ হাজার ৫০০ টাকার জমি ও ফ্ল্যাট জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ঢাকা দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। জব্দকৃত সম্পত্তির মধ্যে গুলশানের জোয়ার সাহারায় ৬১ লাখ টাকার তিন কাঠা জমি, খিলক্ষেতে ৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকার ৩৩ শতাংশ জমি, কাকরাইলের আইরিশ নূরজাহানে কমনস্পেসসহ ১১৭০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, যার মূল্য ২৮ লাখ ৩০ হাজার ৫০০ টাকা, একই ভবনে কারপার্কি স্পেসহ ১৮৩৫ বর্গফুটের ফ্ল্যাট। এর মূল্য ৫১ লাখ ২৯০০ হাজার টাকা।  এ ছাড়া কাকরাইলে ১৯০০ বর্গফুট ও ৩৮০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটসহ কারপার্কিং রয়েছে যার মূল্য ২ কোটি ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। গাজীপুরে ৬২ লাখ ৪০ হাজার টাকার পাঁচ কাঠা জমি।  মোহাম্মদপুরে ৩টি বাণিজ্যিক ভবনে চার হাজার বর্গফুটের ৩টি স্পেস। যার প্রতিটির মূল্য ৭১ লাখ ৩৫ হাজার করে। এ ছাড়া মোহাম্মদপুরে ১০ হাজার ৯৬৫ বর্গফুটের স্পেস রয়েছে যার মূল্য দুই কোটি ৩৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এ ছাড়া গুলশানের ৭২ লাখ টাকার ২৪২৮ বর্গফুটের ফ্ল্যাট এবং বাড্ডায় চার কাঠা নাল জমি যার মূল্য ১৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক ফারজানা ইয়াসমিন সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন করেন। ওই আবেদনে বলা হয়, ৯ কোটি ৭৬ লাখ ৯৭ হাজার ১০৭ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এনামুল হকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা দায়ের করে। তদন্তকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, আসামি তার মালিকানাধীন ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। যা করতে পারলে এ মামলার ধারাবাহিকতায় আদালতে চার্জশিট দাখিল, আদালতের বিচার শেষে সাজার অংশ হিসেবে অপরাধলব্ধ আয় থেকে অর্জিত সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করাসহ সব উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। তাই মামলার তদন্ত সম্পন্ন করে আদালতে চার্জশিট দাখিলের পর আদালতের বিচার শেষে সরকারের অনুকূলে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের সুবিধার্থে তথা সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে তার স্থাবর সম্পত্তি জব্দ করা প্রয়োজন।  
০৪ জুলাই, ২০২৪

পঞ্চগড়ে আ.লীগ নেতার সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী মাহামুদুর রহমান ডাবলুর যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ও ব্যাংক হিসাব ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) পঞ্চগড় সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক গোলাম ফারুক এ আদেশ দেন। পঞ্চগড় সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাড. হাবিবুল ইসলাম হাবিব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, গত ৯ জুন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইমরান হোসেন আদালতে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ও ব্যাংক হিসাব ক্রোকের আবেদন করেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি দুদক ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক বরাবর এজাহার দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আজমির শরিফ মারজী। জানা গেছে, কাজী মাহামুদুর রহমান ডাবলু গত ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর দুদক দিনাজপুর অফিসে তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ১৩ লাখ ৩৬ হাজার ৫২ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন রেখেছিলেন। এ ছাড়া ৭৯ লাখ ৭২ হাজার ৫৫৫ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ভোগ দখলে রেখেছেন। এরই প্রেক্ষিতে দুদকে এজাহার দায়ের করা হয়। অনুসন্ধানে অভিযোগ প্রতীয়মান হওয়ায় সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন করেন দুদক। তদন্তে এসেছে আসামি কাজী মাহামুদুর রহমান ডাবলু তার নামে স্বার্থসংশ্লিষ্ট স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বিক্রি করে বিদেশে পালানোর চেষ্টাও করছেন। অভিযুক্ত তেঁতুলিয়া উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদুর রহমান (ডাবলু) বলেন, আমার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত চলছে এটা আমি জানি, তবে আজকের আদালতের আদেশ সম্পর্কে জানা নেই।
২৮ জুন, ২০২৪

কাউন্সিলর-ব্যবসায়ীদের দখলে দেবোত্তর সম্পত্তি
পুরান ঢাকায় অগাধ ভূসম্পত্তির মালিক ছিলেন ধর্মপ্রাণ জানর্কি বল্লব দত্ত। ১৯৩১ সালে জানর্কি বল্লব ঈশ্বরের কৃপা লাভের উদ্দেশ্যে শ্রীশ্রী কালাচাঁদ ঠাকুরের নামে একটি ট্রাস্ট গঠন করেন। সময়ের আবর্তে সেই সম্পত্তিতে নজর পড়েছে প্রভাবশালীদের। ভয় ও আতঙ্কে চুপ রয়েছে সেবায়েত কমিটি। আর এই সুযোগে বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি স্থানীয় দুই কাউন্সিলরও বসিয়েছেন দখলের থাবা। এমনকি ঐতিহ্যবাহী বেগম পত্রিকার অফিসও অপসারণ করা হয়েছে হুমকি-ধমকি দিয়ে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চায় না বেগম পত্রিকাও। যদিও প্রথম দিকে সেবায়েত কমিটি দখলদারদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। এ ছাড়া বিচারের দাবিতে ঘুরেছিল প্রভাবশালীদের দুয়ারে। তবে দীর্ঘ চেষ্টায় সুফল মেলেনি। জানা যায়, পাটুয়াটুলী এলাকার ৬৪, ৬৫, ৬৬, ৬৭, ৬৮ এবং ৭৬ নম্বর দাগের ভবন ও জমি কালাচাঁদ ঠাকুর জিউ এস্টেটের, যা জানর্কি বল্লব দত্ত এসব জমি শ্রীশ্রী কালাচাঁদ ঠাকুরের নামে পারিবারিক ট্রাস্টে দান করে যান। দেখা গেছে, কাগজে-কলমে জমি শ্রীশ্রী কালাচাঁদ ঠাকুর জিউ বিগ্রহ এস্টেটের নামে থাকলেও অধিকাংশ বেদখল। পুরান ঢাকার পাটুয়াটুলীর লয়াল স্ট্রিটের পুরোনো ঠিকানা ছেড়ে বেগম পত্রিকা এক বছর ধরে নারিন্দার শরৎ গুপ্ত রোডের নাসিরউদ্দিন সাহেবের নিজ বাড়িতে হস্তান্তর হয়। পরবর্তী সময়ে অফিস নেওয়া হয় প্রতিষ্ঠান মতিঝিল ও গুলশানে। জানা গেছে, বেগম পত্রিকার বর্তমান সম্পাদক ও নূর জাহান বেগমের বড় মেয়েকে হুমকি দিয়ে পাটুয়াটুলীর অফিস ছাড়তে বাধ্য করেছেন স্থানীয় কাউন্সিলরের সহযোগিতায় ব্যবসায়ীরা। তথ্য বলছে, নূরজাহান বেগমের মৃত্যুর পর নূরজাহান বেগমের বড় মেয়ে ফ্লোরা ইয়াসমিন খান সাথী বেগম পত্রিকার দায়িত্ব নেন। তার পর থেকেই স্থানীয় প্রভাবশালী এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ীর পক্ষ থেকে অফিসটি ছাড়ার জন্য চাপের অভিযোগ আসে। দীর্ঘদিন ধরে পত্রিকাটি চুক্তিতে এস্টেটের ভবনে নামমাত্র ভাড়ায় চলছিল। সরেজমিন দেখা যায়, বেগম পত্রিকা ও সওগাত প্রেসের সাইনবোর্ড নেই। সেখানে এখন কালাচাঁদ জিউ বিগ্রহ এস্টেটের সাইনবোর্ড। ভবনের দ্বিতীয়তলায় চশমা হাউস ও নিচে পাকিজা গ্রুপের বিভিন্ন নামে কয়েকটি দোকান রয়েছে। অফিসের জায়গায় তৈরি হয়েছে গুদামঘর। এ ছাড়া বাকিটা ব্যবহার হচ্ছে ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আরিফ হোসেন ছোটন ও ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সারোয়ার হাসানের (আলো) নেতাকর্মীদের ক্লাবঘর হিসেবে। সেখানে উপস্থিত আলী আকবর অপু বলেন, বছরখানেক আগে বেগম পত্রিকা এখান থেকে চলে গেছে। এটা এখন দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে কালাচাঁদ ট্রাস্টের নামে। এ সময় অপুকে পরিচয় জিজ্ঞেস করলে তিনি মানুষ মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের কর্মী বলে দাবি করেন। একই সঙ্গে নিজেকে কালাচাঁদ এস্টেটের কর্মচারীও দাবি করেন। জানা যায়, মানুষ মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনটির প্রতিষ্ঠাতা প্রেম নাথ সুর। কাউন্সিলর মো. আরিফ হোসেন ছোটন এবং সারোয়ার হাসান আলোর পৃষ্ঠপোষকতায় বর্তমানে সেটি পরিচালিত হয়। নিয়ে বেগম পত্রিকার সম্পাদক ফ্লোরা ইয়াসমিন খান সাথী কালবেলাকে বলেন, নানা সময় আমাদের এই জায়গা ছাড়ার জন্য হুমকি ও মানসিক নির্যাতন করেছে অনেকে। বিষয়গুলো দায়িত্বশীল জায়গায় জানানো হলেও কেউই পাশে দাঁড়ায়নি। সবশেষে এস্টেটের কাছে অফিস হস্তান্তর করে দিই। ভবন সংস্কারে কিছু অর্থ খরচ করেছিলাম। অফিস স্থানান্তরের সময় এস্টেট কর্তৃপক্ষ সেই বাবদ কিছু অর্থও দেয়। তিনি বলেন, আমাদের কাছে পরিবারের নিরাপত্তাই বড় ইস্যু। সেখান থেকে বেগম পত্রিকা ও সওগাত প্রেস সরে এলেও বেগম পত্রিকা নিয়মিতভাবে প্রতি মাসে প্রকাশ পাচ্ছে। কালাচাঁদ জিউ এস্টেটের সেবায়েত কমিটির সভাপতি অর্জুন দত্ত বলেন, আমার পিতামহ জানর্কি বল্লব দত্ত ১৯৩১ সালে শ্রীশ্রী কালাচাঁদ ঠাকুরের নামে আমাদের পারিবারিক ট্রাস্টে সম্পত্তি দান করে যান। বেগম পত্রিকা প্রায় শুরু থেকেই এখানে ছিল। কিন্তু কয়েক বছর আগে তারা আমাদের জানান এখানে থাকতে পারবেন না। তারপর থেকে সেখানে কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করে আছেন। কয়েক বছর আগে আমরা বাড়ি ভাড়া আইনে মামলা করি। তার পরও ব্যবসায়ীরা আমাদের ভাড়া দেন না। আমাদের ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় কালাচাঁদ জিউ এস্টেট তার সম্পত্তির দখল হারিয়েছি, যার আর্থিক মূল্য কয়েকশ কোটি টাকা। এখানে এখন এক ধরনের দখলদারিত্ব চলছে। যারা এখন এখানে আছে, বলতে গেলে জোর করে দখলে আছে। এর মধ্যে অন্যতম পাকিজা গ্রুপ, সিটি এন্টারপ্রাইজ, স্মৃতি এন্টারপ্রাইজ ও শুভ প্রিন্ট শাড়িসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান। আবুল বসার ও মোহম্মদ হাবিব নামে দুই ব্যবসায়ী ৭৬ নম্বর দাগের জায়গাটি সম্পূর্ণ দখল করে রেখেছে। আমাদের দাবি, সরকার উদ্যোগী হয়ে আমাদের এস্টেটের যেসব জায়গা ও মন্দির স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের দখলে, সেগুলো ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করুক। পাকিজা গ্রুপের পরিচালক (অর্থ আদায়কারী) মোহম্মদ শরীফ বলেন, কাউকে হুমকি-ধমকি দিইনি। বেগম পত্রিকা স্বেচ্ছায় অফিস ছেড়ে গেছে। উল্টো ভবনের জন্য যাওয়ার সময় টাকাপয়সা নিয়ে গেছে। আমরা নিয়মিত ভাড়া দিতে চাই; কিন্তু কালাচাঁদ জিউ এস্টেটের দায়িত্বশীল কেউ ভাড়া নেন না, ফলে আমরাও দিতে পারি না। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এখানে আছি। কালাচাঁদ জিউ এস্টেটের সেবায়েতদের করা বাড়ি ভাড়া আইনের মামলা প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে তিনি বিষয়টি নাকচ করেন। দখলকারী প্রতিষ্ঠান স্মৃতি এন্টারপ্রাইজ ও শুভ প্রিন্ট শাড়ির দোকানের ব্যবস্থাপক পরিচয় দেওয়া শীতল সাহা বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি শান্তি বাবুর। তিনি মারা গেছেন। তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দোকান দেখাশোনা করতেন। আমরা জানি না, এটা কার জায়গা, কে ভাড়া দেয়। এ বিষয়ে অভিযুক্ত বাকিদের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে ও তাদের অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
২৫ জুন, ২০২৪

এবার মতিউরের ৩০০ বিঘা জমির হদিস মিলেছে
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের ঝালপাজা মৌজায় আলোচিত কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনাল এনবিআর কর্মকর্তা ড. মো. মতিউর রহমানের গ্লোবাল সুজ লিমিটেড নামে রয়েছে বিশাল এক জুতার ফ্যাক্টরি। যেখানে দেশ-বিদেশি প্রায় চারশ কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন।  হবিরবাড়ি ইউনিয়নের ঝালপাজা মৌজায় ওরিয়র গ্রুপের সঙ্গেই গ্লোবাল সুজ লিমিটেড নামের জুতার ফ্যাক্টরির অবস্থান। প্রায় ৩০০ বিঘা জমির এলাকায় জুতার ফ্যাক্টরি ছাড়াও বাগানবাড়ি, বিভিন্ন ফলের বাগান ও পতিত জমি রয়েছে। শনিবার (২২ জুন) বিকেলে কারখানা এলাকায় প্রবেশ করতে চাইলে প্রধান ফটকেই আটকে দেন নিরাপত্তাকর্মী। একজন নিরাপত্তা কর্মী জানান, প্রায় ৩০০ বিঘা জমির উপর রয়েছে গ্লোবাল সুজ লিমিটেড কারখানা, বাগানবাড়ি, বিভিন্ন ফলের বাগান ও পতিত জমি। কিছুদিন পরপর এখানে ড. মো. মতিউর রহমান সকালে এসে বিকেলে চলে যেতেন। সেখানে দেশ-বিদেশি প্রায় চারশ কর্মকর্তা-কর্মচারী শ্রমিক রয়েছেন। ফ্যাক্টরিটির মালিক হিসেবে ড. মতিউর রহমানকে জানলেও তিনি যে সরকারি চাকরি করেন সেটি জানতেন না। এ ফ্যাক্টরিতে উৎপাদিত জুতা পৃথিবীজুড়ে সরবরাহ হয় বলে জানিয়েছেন সেখানকার দায়িত্বশীলরা। গ্লোবাল সুজ লিমিটেডের আতিক নামের এক শ্রমিক বলেন, আমি এই ফ্যাক্টরিতে এক বছর যাবৎ কাজ করছি। ফ্যাক্টরির মালিক মতিউর রহমান স্যার মাঝে মাঝে আসতেন। স্যারের ছেলে ফ্যাক্টরিতে ঘুরতে আসতেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমান উনি কিনা আমার জানা নেই। কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনাল এনবিআর কর্মকর্তা ড. মো. মতিউর রহমানের বিশাল জুতার কারখানা। কারখানার পাশে রয়েছে বাগান বাড়ি ও বিভিন্ন ফলের বাগান ও জুতার কারখানা। তার জমির দেখাশোনা করেন ভালুকা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোর্শেদ আলম। স্থানীয় বাজার দরে ওই ৩০০ বিঘা জমির দাম প্রায় ১০০ কোটি টাকা। এ বিষয়ে ভালুকা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোর্শেদ আলমের সঙ্গে মোবাইলে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
২২ জুন, ২০২৪

অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনালে ১ লাখ ১৪ হাজার ৩১০ মামলা
সারা দেশে ‘ক’ তালিকাভুক্ত অর্পিত সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনালে ১ লাখ ১৪ হাজার ৩১০টি মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ, যার মধ্যে ৩৩ হাজার ৮৯২টির রায় ঘোষিত হয়েছে। এতে ১৪ হাজার ৭১৪ মামলায় ভুক্তভোগীদের পক্ষে রায় হয়েছে, যাতে সম্পত্তির পরিমাণ ১২ হাজার ১১৫ দশমিক ৯১ একর। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে স্বতন্ত্র এমপি পংকজ দেবনাথের এক প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী এসব তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়। মন্ত্রী আরও জানান, বাতিলকৃত ‘খ’ তফসিলভুক্ত সম্পত্তির দাবি করে ৪ লাখ ১৫ হাজার ৩৯৮ নামজারির আবেদন দাখিল করা হয়। তাদের পক্ষে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৮৪১ আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। যাতে ভুক্তভোগীর কাছে ২ লাখ ৫৩ হাজার ২০৭ দশমিক ০৭ একর। স্বতন্ত্র এমপি তাহমিনা বেগমের প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী বলেন, এলাকাভিত্তিক প্রত্যন্ত এলাকায় নেটওয়ার্ক দুর্বল হওয়ার কারণে যে কোনো সময় সমস্যা হয়। তবে সারা দেশেই অনলাইন সিস্টেম চালু রয়েছে। নাগরিকদের নিরবচ্ছিন্ন ভূমিসেবা প্রদানের লক্ষ্যে শক্তিশালী সার্ভার স্থাপনসহ ইন্টারনেটের গতি বাড়ানোর জন্য বিসিসির সঙ্গে একাধিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৪ জুন, ২০২৪

ঢাকার পান্থপথে ৮০ কোটি টাকার সম্পত্তি উদ্ধার
রাজধানীর মোহাম্মদপুর রাজস্ব সার্কেলের আওতাধীন শুক্রাবাদ মৌজায় পান্থপথ সড়কে ৮০ কোটি টাকা মূল্যের শতাংশ খাস জমি উদ্ধার করেছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) ঢাকার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমানের নির্দেশনায় এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. শিবলী সাদিকের তত্ত্বাবধানে এ অভিযান চালানো হয়। মোহাম্মদপুর রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুবকর সিদ্দিক এ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় মহানগরীর অন্যান্য রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) গণউপস্থিত ছিলেন এ অভিযানের সময় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালের দখলে থাকা শুক্রাবাদ মৌজার এস এ আর.এস ও  সিটি ১ নং খতিয়ানের  ০.০৮৭৪ একর ভূমি ভূমিতে ০৪ তলা স্থাপনাসহ সরকারের দখল পুনরুদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত সরকারি এ সম্পত্তির মূল্য স্থাপনাসহ প্রায় ৮০ কোটি টাকা। 
১৩ জুন, ২০২৪

বেনজীরের আরও সম্পত্তি জব্দের আদেশ
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের পরিবারের সদস্যদের নামে আরও সম্পত্তি ও ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১২ জুন) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহা্ম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।   জব্দ হওয়া সম্পদ ও ফ্ল্যাটের মধ্যে- রূপগঞ্জে ২৪ কাঠা জমি, উত্তরায় ৩ কাঠা, বাড্ডায় ৩৯.৩০ জমির উপর ২টি ফ্লাট, বান্দরবান জেলায় ২৫ একর জমি, স্ত্রী জিসানের নামে আদাবর থানার পিসিকালচারে ৬টি ফ্ল্যাট, গুলশানে বাবার কাছ থেকে পাওয়ার অব এটর্নি মূলে সম্পত্তিতে ৬ তলা ভবন, সিটিজেন টিভির শেয়ার ও টাইগার এপারেলসের শেয়ার রয়েছে।  এর আগে গত ২৩ ও ২৬ মে দুই দফায় বেনজীর আহমেদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ৬২১ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জমির মালিক বেনজীরের স্ত্রী জীশান মীর্জা। তাঁর নামে প্রায় ৫২১ বিঘা জমি খুঁজে পেয়েছে দুদক। বাকি ১০০ বিঘার মতো জমি রয়েছে বেনজীর, তাঁর তিন মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর, তাহসিন রাইশা বিনতে বেনজীর ও জারা জেরিন বিনতে বেনজীর এবং স্বজন আবু সাঈদ মো. খালেদের নামে। বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জীশান মীর্জার নামে মাদারীপুরের সাতপাড় ডুমুরিয়া মৌজায় ২৭৬ বিঘা জমি পাওয়া গেছে। ২০২১ ও ২০২২ সালের বিভিন্ন সময় ১১৩টি দলিলে এসব জমি কেনা হয়। দলিলমূল্য দেখানো হয় মোট ১০ কোটি ২২ লাখ টাকা। ৮৩টি দলিলে ৩৪৫ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। যার দলিলমূল্য দেখানো হয়েছিল ১৬ কোটি ১৫ টাকার কিছু বেশি।  এছাড়া বেনজীর আহমেদের পরিবারের সদস্যদের নামে গুলশানে যে চারটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেন আদালত। তার মধ্যে তিনটি তাঁর স্ত্রীর নামে এবং একটি ছোট মেয়ের নামে। দুটি ফ্ল্যাটের আয়তন ২ হাজার ৩৫৩ বর্গফুট, দাম ৫৬ লাখ টাকা করে। বাকি দুই ফ্ল্যাটের আয়তন ২ হাজার ২৪৩ বর্গফুট করে, দাম সাড়ে ৫৩ লাখ টাকা করে। চারটি ফ্ল্যাট কেনা হয়েছে একই দিন একই ভবনে। ভবনটির নাম র‍্যানকন আইকন টাওয়ার।
১২ জুন, ২০২৪

দেবোত্তর সম্পত্তি নিয়ে অপহরণ ও গুলি
ভরদুপুরে সবার সামনে একটি সাদা প্রাইভেটকার থেকে নেমে এলো কয়েকজন। একজনকে মারধর করে তুলে নেওয়া হয় ওই প্রাইভেটকারে। একজনকে তুলে নিয়ে গাড়িটি যখন পালিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই অস্ত্র উঁচিয়ে ছুটে আসেন অন্য একজন। ছুটতে ছুটতে গুলিও ছুড়েন তিনি; কিন্তু ততক্ষণে এলাকা ছেড়েছে প্রাইভেটকারটি। প্রকাশ্য দিবালোকে এ অপহরণ ও গুলির ঘটনা ঘটেছে খোদ রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা মতিঝিলে। গতকাল রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের ওই অঞ্চলের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেছনের একটি জমি রয়েছে, যা দেবোত্তর সম্পত্তি। এ জমির দখল নিয়ে বিরোধের জেরে এ অপহরণ ও গুলির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার হায়াতুল ইসলাম খান কালবেলাকে বলেন, অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ কাজে ব্যবহৃত সাদা গাড়িটিও জব্দ করেছে পুলিশ। এ ছাড়া কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, যে জমি নিয়ে এ বিরোধ, তা দেবোত্তর সম্পত্তি। কিছুদিন আগে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জমিটির বিষয়ে মতিঝিল পুলিশের কাছে তদন্ত আসে। তদন্তে পাওয়া যায়, এ জমিটি দেবোত্তর সম্পদ, যা আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। দুপুরে অপহরণ ও গুলির ঘটনা প্রসঙ্গে এ কর্মকর্তা বলেন, এ জমি দেবোত্তর সম্পদ হলেও রাজু নামে একজন তা দখলে নিয়ে কাজের জন্য মহিউদ্দিন নামে একজনকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিয়েছিলেন। মহিউদ্দিন ওই জায়গায় কিছু কাজও করেন; কিন্তু এরই মধ্যে রাজু ফের ইলিয়াস নামে আরেকজনকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেন। এতে রাজুর সঙ্গে মহিউদ্দিন ও ইলিয়াসের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। রোববার দুপুরে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন ইলিয়াস। প্রাইভেটকারে করে মহিউদ্দিন ও তার লোকজন এসে ইলিয়াসকে মারধর করে গাড়িতে তুলে নেন। আর পেছন থেকে অস্ত্র হাতে ছুটতে থাকা ব্যক্তির নাম গাজী, যিনি রাজুর হয়ে কাজ করেন। অপহৃত ইলিয়াসকে উদ্ধার করা হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, আমরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনকে আটক করেছি। আরও কয়েকজনকে আটকের চেষ্টা করছি।
১০ জুন, ২০২৪
X