চবিতে গোলটেবিল বৈঠক : প্রধানমন্ত্রীকে জাতীয় সংলাপের আহ্বান
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। বুধবার (২৯ নভেম্বর) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চবির সমাজবিজ্ঞান অনুষদে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। ‘সমাজ ও রাষ্ট্রচিন্তা কেন্দ্র’ আয়োজিত এ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে একটি জাতীয় সংলাপের আহ্বান জানানো হয়েছে। কেন্দ্রটির নির্বাহী পরিচালক এবং চবির রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারীর আহ্বানে  আলোচনায় অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ভূঁইয়া মো. মনোয়ার কবীর, অধ্যাপক ড. আনোয়ারা বেগম, লোকপ্রশাসন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমদ, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খ. আলী আর রাজী ও রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আককাছ আহমদসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। এ সময় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হওয়া না হওয়া নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পক্ষে বিপক্ষে নানারকম মত প্রকাশ করেন। সাধারন জনগণের ভোটাধিকার ও মৌলিক অধিকারসহ গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা ধরে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ কী হতে পারে, সে বিষয়েও নানা মত প্রকাশ করা হয়। তাছাড়া, জাতীয় রাজনীতিতে বৈশ্বিক চাপ ও কূটনৈতিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক্বিদিক নিয়ে আলোচনা হয়। দেশীয় অর্থনীতিতে মার্কিন-ইউরোপের আধিপত্যের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়। এগুলোর সঙ্গে সরকার ও বিরোধীদলগুলোর কীরূপ সম্পর্ক রয়েছে সে বিষয়েও বিস্তারিত মন্তব্য উপস্থাপিত হয়। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছতা এবং তত্বাবধায়ক বা নির্দলীয় সরকারের সুফল-কুফল নিয়েও পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা উঠে আসে। বৈঠকের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী বলেন, বাংলাদেশ আজ রাজনৈতিক সংকটে নিপতিত। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার ও বিরোধীদলের অবস্থান বিপরীত মেরুতে। প্রধান বিরোধীদল বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে রাজি নয়। তারা শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করেন। এ দাবিতে বিরোধীদল গত দেড় বছর থেকে। নির্বাচনের পুনঃতফসিল ও প্রধানমন্ত্রীকে জাতীয় সংলাপের আহ্বান করে অধ্যাপক পাটওয়ারী বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলসমূহের অপরিণামদর্শী ও অসহনশীল আচরণ এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রের ভিন্ন ভিন্ন তৎপরতা দেশকে গভীর সংকটে নিপতিত করছে। এ থেকে উত্তরণের জন্য দেশের রাজনৈতিক দলসমূহ এবং নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। রাজনৈতিক সদিচ্ছার পরিচয় দিয়ে সংলাপের আয়োজন করে এ রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণ ঘটাতে হবে। সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিরোধীদলের উপর দমন পীড়ন বন্ধ করা উচিত। রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে জেল থেকে মুক্তি দিয়ে সংলাপের আহ্বান জানানো যেতে পারে। নির্বাচনের পুনঃতফসিল এ ক্ষেত্রে একটি উপায় হতে পারে।
২৯ নভেম্বর, ২০২৩

সংলাপের আহ্বান ৪৭ নাগরিকের
নির্বাচন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৪৭ জন নাগরিক। গতকাল সোমবার ওই বিবৃতিতে তারা বলেন, তপশিল ঘোষণার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন সরকারের একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের সহায়ক হিসেবে ভূমিকা রাখছে বলে আমরা মনে করি। বিবৃতিতে বলা হয়, অবিলম্বে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে তাদের এবং অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচন উপযোগী পরিস্থিতি সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে সংলাপের পথ উন্মুক্ত রাখার স্বার্থে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি। দেশি-বিদেশি নানা মহলের সংলাপের আহ্বান উপেক্ষা করে সরকার যদি আরও একটি অনুরূপ নির্বাচনের দিকে যায়, তাহলে এর দায়-দায়িত্ব মূলত সরকারকে বহন করতে হবে। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, মানবাধিকার কর্মী শিরিন হক, অধ্যাপক স্বপন আদনান, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অধ্যাপক সামিনা লুৎফা নিত্রা, রেহনুমা আহমেদ, মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন, অরূপ রাহী, রাখাল রাহা, অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক মির্জা তসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক রায়হান রাইন, সায়েমা খাতুন, অধ্যাপক আল মামুন, অধ্যাপক ড. মোস্তফা নাজমুল মানছুর তমাল, অধ্যাপক আর রাজী, সাখাওয়াত টিপু, তবারক হোসেইন, সুব্রত চৌধুরী, হানা শামস আহমেদ, নায়লা জামান খান, ড. মোশরেকা অদিতি হক, সায়দিয়া গুলরুখ, রেজাউর রহমান লেনিন, ড. মারুফ মল্লিক, মাইদুল ইসলাম, নাসরিন খন্দকার, এহসান মাহমুদ, মাহা মির্জা, বাকি বিল্লাহ, মাহবুব মোর্শেদ, মনির হায়দার, অমল আকাশ, নাজিম উদ্দিন, ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, লতিফুল ইসলাম শিবলী, ফেরদৌস আরা রুমী, রোজিনা বেগম, সাঈদ বারী, ড. সাদাফ নূর, মুহাম্মদ কাইউম, জিয়া হাসান, আসিফ সিবগাত ভূঞা ও জি এইচ হাবীব।
২১ নভেম্বর, ২০২৩

শর্তহীন সংলাপের আহ্বান জানিয়ে তিন দলকে ডোনাল্ড লু’র চিঠি
বাংলাদেশের প্রধান তিন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে চিঠি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। চিঠিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে শর্তহীন সংলাপের আহ্বানও জানানো হয়েছে। আজ সোমবার (১৩ নভেম্বর) ঢাকার বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে পিটার হাস দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক উপস্থিত সাংবাদিকদের এ কথা জানান। মুজিবুল হক বলেন, তাদের কাছে চিঠিটি দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। রাষ্ট্রদূত তাকে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কাছেও চিঠিটি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করে যুক্তরাষ্ট্র। এতে শর্তহীন সংলাপের আহ্বানও জানানো হয়েছে। মুজিবুল হক বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত মূলত তাদের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লুর লিখিত একটি চিঠি নিয়ে এসেছেন। তিনি চিঠিটা আমাদের পার্টির চেয়ারম্যানকে হস্তান্তর করেছেন। পিটার হাস জানিয়েছেন, একই চিঠি আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি-তিন দলকেই দেওয়া হয়েছে। মুজিবুল হক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, চিঠিতে মূলত তিনটি বিষয়ে বলা হয়েছে- প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন দেখতে চায়। দ্বিতীয়ত, শর্তহীনভাবে সংলাপের কথা বলা হয়েছে। তৃতীয়ত, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসানীতি গ্রহণ করেছে, চিঠিতে তা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে বেলা ৩টায় পিটার হাসের সঙ্গে জাতীয় পার্টির বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক চলে প্রায় ৪০ মিনিট। বৈঠকে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ছাড়াও দলের মহাসচিব মুজিবুল হক, দলের কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও বিশেষ দূত মাসরুর মওলা উপস্থিত ছিলেন।
১৩ নভেম্বর, ২০২৩

সংলাপের আহ্বান জানিয়ে বিএনপিকে ইসির চিঠি
সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এর আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরই প্রেক্ষিতে অন্য দলের পাশাপাশি বিএনপিকেও আলোচনায় অংশ নিতে চিঠি দিয়েছে ইসি।  বুধবার (১ নভেম্বর) ইসির জনসংযোগ পরিচালক বিএনপি মহাসচিব বরাবর চিঠিটি পাঠিয়েছেন।  চিঠিতে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদপূর্তির কারণে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্বাচনের মূল অংশীজন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলসমূহের সাথে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পূর্বপ্রস্তুতির অগ্রগতিসহ সার্বিক বিষয়ে আগামী ৪ নভেম্বর এক আলোচনা সভার অয়োজন করা হয়েছে। আলোচনা অনুষ্ঠানটি নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল সভায় সভাপতিত্ব করবেন এবং নির্বাচন কমিশনাররা উপস্থিত থাকবেন। সভায় আপনার দলের সম্মানিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অথবা আপনাদের কর্তৃক মনোনীত দুজন উপযুক্ত প্রতিনিধিকে অংশগ্রহণের জন্য কমিশন অনুরোধ জানিয়েছেন। জানা গেছে, আগামী শনিবার ৪৪টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে আওয়ামী লীগসহ ২২টি দলকে সকালে এবং বিএনপিসহ ২২টি দলকে বিকেলে আলোচনায় বসার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।  এর আগেও সংলাপের জন্য বিএনপিকে চিঠি দিয়েছিল ইসি। কিন্তু ইসির সেই ডাকের সাড়া দেয়নি দলটি। 
০১ নভেম্বর, ২০২৩
X