পেনশন স্কিম / রাবিতে চলছে শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি
সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষকরা। সোমবার (১ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে তাদের কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১ ঘণ্টা অবস্থান করেন। রাবি শিক্ষক সমিতি সূত্রে জানা যায়, আজ শুরু হওয়া এ কর্মবিরতির কর্মসূচিতে সব বিভাগ/ইনস্টিটিউটের নিয়মিত ব্যাচের পাশাপাশি অনলাইন, সান্ধ্যকালীন, শুক্র ও শনিবারের প্রফেশনাল কোর্সের ক্লাস ও সব ধরনের লিখিত, মৌখিক ও ভর্তি পরীক্ষাসহ সব পরীক্ষা বন্ধ থাকবে; বিভাগীয় অফিস, সেমিনার, কম্পিউটার ল্যাব ও গবেষণাগার বন্ধ থাকবে; অ্যাকাডেমিক ও পরিকল্পনা কমিটি, প্রশ্নপত্র সমন্বয় ও অন্যান্য সভা বন্ধ, ভর্তি পরীক্ষাসহ ডিন অফিসের সব কার্যক্রম বন্ধ ছাড়াও কোনো সিলেকশন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে না; দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো শিক্ষক প্রশাসনিক কোনো দায়িত্ব পালন করবেন না। এ ছাড়াও, শিক্ষকরা ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে প্রতিদিন ১ ঘণ্টা সিনেট ভবনের মূল ফটকে অবস্থান করে এই আন্দোলনকে বেগবান করবেন। এ সময় রাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ওমর ফারুক সরকার বলেন, আমরা বাংলাদেশের মানুষকে জানাতে চাই আমরা রাস্তায় নেমেছি। কর্মবিরতি মানে ঘরে বসে থাকা নয় আমরা রাস্তায় বসেছি। আমাদের আহ্বানে উপাচার্য স্যার একাত্মতা পোষণ করছেন। প্রত্যয় স্কিমের এ দায়িত্ব অর্থ মন্ত্রণালয় ব্যতীত কেউ নিচ্ছে না। এই মন্ত্রণালয়ে যারা বসে আছেন তারাই কি সব? আমাদের কি স্পেশালিস্ট নেই? আমাদের এর পরিবর্তে নতুন কিছু চিন্তা ভাবনা দরকার। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আলাদা বেতন কাঠামো উন্নত বিশ্ব সব জায়গায় আছে কিন্তু বাংলাদেশে নেই। পরিশেষে বলতে চাই এটা কোনো আন্দোলন নয় এটা আমাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। তিনি আরও বলেন, একটু খেয়াল করলে এখানের বৈষম্য দেখা যাবে। আপনি যদি আজ চাকরিতে জয়েন করেন আপনার বেতন থেকে ৫ হাজার টাকা কাটা হবে। যা আগে যারা জয়েন করেছে তাদের ক্ষেত্রে হবে না। তাহলে আর্থিক ক্ষতিটা কোথায় বোঝা গেল। এ ছাড়াও আজ যিনি পেনশন পান তিনি আমৃত্যু পাবেন তার মৃত্যু হলেও তার স্ত্রী পাবে যেটা তার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। তবে, এই নিরাপত্তা বলয় ভেঙে ফেলা হচ্ছে। সুতরাং আমরা চাই না এই প্রত্যয় স্কিম থাকুক।  কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন বকুল বলেন, আমরা দেখেছি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আর্থিক সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক তারতম্য থাকে। আপনারা জানেন- উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি ঠিকঠাক মতো না চলে তাহলে জাতির জন্য অশনি সংকেত অপেক্ষা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি মেধাবী শিক্ষার্থী না পায় তাহলে তারা কীভাবে শিক্ষা দান করবে। মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনতে তাদের এই পেশায় আকর্ষণ করাতে হবে। আর এ আকর্ষণ করতে আর্থিকভাবে সুবিধা প্রদান করতে হবে। আরও যত বেশি সুবিধা দেওয়া যায় সে চেষ্টা করতে হবে।  উল্লেখ্য, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ওমর ফারুক সরকারের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, ইংলিশ অ্যান্ড আদার ল্যাংগুয়েজের ইনস্টিটিউটে পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞাপন বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম। এ সময় অবস্থান কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের প্রায় ৫০ জন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
০১ জুলাই, ২০২৪

কাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি
গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত পেনশন (প্রত্যয় স্কিম) সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবিতে চলমান আন্দোলনের মাঝে এবার দেশব্যাপী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। রোববার (৩০ জুন) সকাল থেকেই এই কর্মবিরতি শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা।  শিক্ষকদের এই সংগঠনটি জানিয়েছে, আগামীকাল সোমবার (১ জুলাই) থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে।  এ বিষয়ে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন তিন মাসেরও অধিক সময় ধরে বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছে। গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে বিবৃতি প্রদান, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, মানববন্ধন, প্রতীকী কর্মবিরতি, স্মারকলিপি প্রদান এবং অবস্থান কর্মসূচি মতো শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময়ে সরকারের তরফ থেকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় গত ২৫, ২৬ ও ২৭ জুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালিত হয় এবং আজ পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে।  এতে আরও বলা হয়, প্রস্তাবিত প্রত্যয় স্কিম বাস্তবায়ন করা হলে বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, যাঁরা আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় আসতে আগ্রহী, তারাও এর ভুক্তভোগী হবেন। কাজেই আমাদের এ আন্দোলন আগামী দিনের তরুণ সমাজের স্বার্থরক্ষার পক্ষে এবং উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন। আমরা এখনো আশা করি, সরকার অনতিবিলম্বে এই যৌক্তিক দাবি মেনে নেবেন যাতে আমরা ক্লাসে ফিরে যেতে পারি। অন্যথায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ১ জুলাই থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে।
৩০ জুন, ২০২৪
X