চট্টগ্রামে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে চামড়া সংগ্রহ
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের আড়তগুলোয় এ পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ লবণযুক্ত চামড়া সংরক্ষণ করা হয়েছে। এ ছাড়া নগরীর বাইরে জেলা-উপজেলায় রয়েছে আরও দেড় লাখ লবণযুক্ত চামড়া। বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতি লিমিটেড এবার তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। যদিও এই টার্গেট ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছে কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতি। বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ মুসলিম কালবেলাকে বলেন, চট্টগ্রামে গত বছর কোরবানির ঈদে সংগ্রহ করা হয়েছিল প্রায় তিন লাখ ৪৫ হাজার কোরবানির পশুর চামড়া। এবার সাড়ে তিন লাখ চামড়া সংগ্রহের টার্গেট নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, মোট সংগ্রহে সেই লক্ষ্যমাত্রা এবার ছাড়িয়ে যাবে। আতুরারডিপো আড়তে এরই মধ্যে সংগ্রহ হয়েছে দুই লাখ লবণযুক্ত চামড়া। জেলা- উপজেলাতেও লবণযুক্ত চামড়া সংরক্ষিত আছে দেড় লাখ। আরও সংরক্ষণের কাজ চলছে। সংরক্ষিত চামড়ার মধ্যে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, বকরির চামড়া রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, কুরবানির প্রথম দিনে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত চামড়ার দর ভালো ছিল। তবে সন্ধ্যার পর চামড়ার দরপতন দেখা গেছে। মৌসুমি ব্যবসায়ী মো. রনি কালবেলাকে জানান, লাভের ওপর টাকা নিয়ে চামড়ার ব্যবসায় নেমেছি। যে দামে কিনেছি এখন লাভ তো দূরের আশা, পুঁজিও হারাতে হবে। লাভ এখন গলার কাঁটা। তিন বছর আগে চামড়ার দরপতনের ফলে টাকা দিয়ে পাড়া-মহল্লা থেকে কেনা চামড়া গেল ময়লার ভাগাড়ে। এবারও সেই আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা। মৌসুমি ব্যবসায়ী মো. জিয়া কালবেলাকে জানান, ৫০০ টাকায় কেনা চামড়ার দাম বলে আড়িইশ থেকে তিনশ টাকা। রাতে তা নেমে আসে ১৮০ থেকে ২৫০ টাকায়। তাও আবার বাকিতে। বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ মুসলিম কালবেলাকে বলেন, একটি চামড়ায় অনেক খরচ। চামড়া থেকে গোশত ছুটানো, লবণ দেওয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া আনার সময় ট্রাক ভাড়া গুনতে হয়। সরকার যে দর নির্ধারণ করে দিয়েছে, এ খরচ তার ভেতর। তাই সব খরচ হিসাব করে আমরা চামড়া কিনে থাকি। সরকারের কাছে ট্যানারি ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে আবেদন, যে দর সরকার নির্ধারণ করেছে, তা যেন বহাল রাখে।
২০ জুন, ২০২৪

লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার আশঙ্কা
নাটোরে চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এবারের কোরবানির ঈদে এখানকার দুই শতাধিক আড়তে গরু ও ছাগল মিলিয়ে ২০ লাখ পিস চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এই আড়তে দেশের ৩৬টি জেলা থেকে চামড়া আসে। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার মোকাম নাটোরের চকবৈদ্যনাথের আড়তদাররা। কিন্তু কোরবানি অপেক্ষাকৃত কম হওয়া এবং দাম ঠিকমতো না পাওয়ায় আড়তগুলোতে আসেনি কাঙ্ক্ষিত চামড়া। সরকার নির্ধারিত বর্গফুট হিসেবে চামড়া বিক্রি হয় না নাটোরের মোকামে। এখানে পিস হিসেবে চামড়া বিক্রি হয়। গতকাল বুধবার নাটোরের চকবৈদ্যনাথ বাজারে দেখা গেছে প্রতি পিস ছাগলের চামড়া ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে গরুর চামড়া ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা প্রতি পিস বিক্রি হয়েছে। চামড়ার এমন দামের কথা শুনে অনেকেই আড়তমুখী হননি বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। বিশেষ করে ছাগলের চামড়া কিনে এবারও বিপাকে পড়েছেন নাটোরের মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা। বাসাবাড়ি থেকে সংগ্রহ করা কাঁচা চামড়া কেনা দামেরও কমে বিক্রি করতে হয়েছে জেলার চকবৈদ্যনাথ চামড়া মোকামে। বাধ্য হয়েই প্রতি পিস ছাগলের চামড়া ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীয়া। এতিমখানা, কওমি ও হাফেজিয়া মাদ্রাসা এবং লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের সংগৃহীত ছাগলের কাঁচা চামড়া লবণ দ্বারা সংরক্ষণে প্রতি পিস চামড়া খরচ দাঁড়িয়েছে ২০ টাকা। কিন্তু আড়তগুলোতে প্রতি পিস দাম বলছে ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা। মৌসুমি কাঁচা চামড়ার ব্যবসায়ীরা জানান, শুধু ছাগলের চামড়া নয়, গরুর চামড়ার ক্ষেত্রেও ঘটেছে এমন ঘটনা। আড়তদাররা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রতি পিস চামড়া সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকায় কিনতে। কিন্তু পাড়ামহল্লা থেকে চামড়ার সংগ্রহ করে নিয়ে আসার পরে তারা দাম বলছেন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। এতে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। তারা দাবি করেন, আড়ত মালিকরা সরকার নির্ধারিত বর্গফুট হিসেবে চামড়া কিনলে তারা ঠকতেন না। কানাইখালী মহল্লার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী মোর্তজা জানান, তাদের সঙ্গে আড়তদাররা প্রতারণা করেছে। তাদের কথামতো চামড়া কিনলেও এখন সেই দামে তারা আর নিতে চাচ্ছে না। ফলে লোকসানেই চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে। কাঁচা চামড়া নষ্ট হওয়ার ভয়ে লোকসানেই বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে আড়ত মালিকরা সর্বোচ্চ মুনাফা লুটে নিচ্ছে। অন্যদিকে গরুর চামড়া প্রতি পিস ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত কেনাবেচা হতে দেখা গেছে নাটোরের মোকামে। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দাবি, সিন্ডিকেট করে এখানকার ব্যবসায়ীরা চামড়ার দাম হাজারের ওপর তুলছেন না। অন্যদিকে চামড়ার দাম ঠিকমতো না দিলেও আড়তদারির ৩৫ টাকা করে ঠিকই তারা তুলে নিচ্ছেন। নলডাঙ্গা থেকে আসা একজন মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী মোস্তাক আলী জানান, এভাবে ক্রমাগতভাবে চামড়ার বাজার নিম্নমুখী হলে পাচার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেবে। প্রশাসন এখনই এই বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে নাটোরের চামড়ার মোকামের সুনাম বিনষ্ট হবে এবং এখানকার ব্যবসায়ীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
২০ জুন, ২০২৪

বাজেটে অর্থনৈতিক সূচকের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না : সিপিডি
গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি)  নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি, জিডিপি গ্রোথ, বিনিয়োগের যেসব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তা অতি উচ্চাভিলাষী ও বাস্তবসম্মত নয়। বাজেটে অর্থনৈতিক সূচকের অনেক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না।  শুক্রবার (৭ জুন) প্রস্তাবিত বাজেটের পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। ফাহমিদা খাতুন বলেন, চলমান অর্থনৈতিক উদ্বেগ মোকাবিলায় যে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, তা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে নেয়া হয়নি। মূল্যস্ফীতি রোধ ও নিম্ন আয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে বাজেটে যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা যথেষ্ট নয়। এছাড়া বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, বেসরকারি ও ব্যক্তিগত খাতের বিনিয়োগে অবাস্তব লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি, জিডিপি গ্রোথ, বিনিয়োগের যেসব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তা অতি উচ্চাভিলাষী ও বাস্তবসম্মত নয়। বাজেটে অর্থনৈতিক সূচকের অনেক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ অনুধাবন করতে না পারায়, বাজেটে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা দুর্বল ও অপর্যাপ্ত। সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটটি অসাধারণ সময়ে একটি সাধারণ বাজেট। ফাহমিদা খাতুন বলেন, মন্ত্রী এমপিদের করমুক্ত গাড়ি পাওয়ার যে আইন রয়েছে সে আইন পরিবর্তন করতে হবে। তাদের কিছু পরিমাণ হলেও কর দেওয়া উচিত।  সিপিডি নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে স্পষ্ট বলা হয়েছে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সে থাকবে সরকার। কিন্তু বাজেটে কর ও ঋণ খেলাপিসহ দুষ্টচক্রকে মাথায় হাত বুলিয়ে তাদের টাকা অর্থনীতিতে আনার প্রচেষ্টায় কর হার কমানো হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।  
০৭ জুন, ২০২৪

মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৬ জিডিপি ৬.৭৫%
দেশে খাদ্যদ্রব্যের বাজারদর ঊর্ধ্বমুখিতার প্রভাব পড়েছে সার্বিক মূল্যস্ফীতিতে। দুই বছর ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। খাদ্যপণ্যের বাড়তি দামের চাপে পিষ্ট সাধারণ মানুষের দিন যাপন। উচ্চ মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিলেও তা কাজে আসেনি। ক্রমবর্ধমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে আগামী অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রস্তাবিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ। একই সঙ্গে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির আশা করছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বাজেট বক্তৃতায় তিনি আগামী অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) এবং মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা তুলে ধরেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতির হার কমাতে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অনুসরণ করা হচ্ছে এবং রাজস্ব নীতিতেও সহায়ক নীতিকৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে মানুষকে সুরক্ষা দিতে ফ্যামিলি কার্ড, ওএমএস ইত্যাদি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। আমাদের গৃহীত এসব নীতিকৌশলের ফলে আশা করছি আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসবে। যদিও চলতি অর্থবছরের বাজেটেও একই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। কিন্তু তার ধারে কাছেও যাওয়া সম্ভব হয়নি। পরে যদিও লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। তবে সেই লক্ষ্যও পূরণ করা যায়নি।
০৭ জুন, ২০২৪

বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৬, জিডিপি ৬.৭৫ শতাংশ  
দেশে খাদ্যদ্রব্যের বাজারদর ঊর্ধ্বমুখিতার প্রভাব পড়েছে সার্বিক মূল্যস্ফীতিতে। গত দুই বছর ধরে বাংলাদেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। খাদ্যপণ্যের বাড়তি দামের চাপে পিষ্ট সাধারণ মানুষের দিন যাপন। উচ্চ মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিলেও কোনো কাজে আসেনি। এমতাবস্থায় ক্রমবর্ধমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে আগামী অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রস্তাবিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ। একইসঙ্গে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির আশা করছে সরকার। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বাজেট বক্তৃতায় তিনি আগামী অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) এবং মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা তুলে ধরেন। বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতির হার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অনুসরণ করা হচ্ছে এবং রাজস্বনীতিতেও সহায়ক নীতিকৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দিতে ফ্যামিলি কার্ড, ওএমএস ইত্যাদি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। আমাদের গৃহীত এসব নীতিকৌশলের ফলে আশা করছি আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসবে। যদিও চলতি অর্থবছরের বাজেটেও একই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। কিন্তু তার ধারে কাছেও যাওয়া সম্ভব হয়নি। পরে যদিও লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। তবে সেই লক্ষ্যও পূরণ করা যায়নি। যার ফলে চলতি অর্থবছরজুড়েই মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী গত মে মাসে দেশের সার্বিক মূল্যষ্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ। জিডিপি প্রবৃদ্ধির বিষয়ে আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, ২০০৯-১০ অর্থবছর হতে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত বাংলাদেশের গড় প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির এ গতি ধরে রাখার লক্ষ্যে কৃষি ও শিল্প খাতের উৎপাদন উৎসাহিত করতে যৌক্তিক সব সহায়তা অব্যাহত রাখা হবে। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পসমূহের যথাযথ বাস্তবায়ন এবং রপ্তানি ও প্রবাস আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। আশা করছি আমাদের গৃহীত এসব নীতিকৌশলের ফলে আগামী অর্থবছরে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে এবং মধ্যমেয়াদে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশে পৌঁছাবে। যদিও চলতি অর্থবছরে এই হার শুরুতে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হলেও পরে তা ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। কিন্তু সেই লক্ষ্যও পূরণ হচ্ছে না। বিবিএসের সম্প্রতি চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রাথমিক হিসাবে চলতি অর্থবছর প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ। এদিকে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে বড়জোর ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। প্রায় কাছাকাছি প্রবৃদ্ধি প্রক্ষেপণ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। গত এপ্রিল মাসে আইএমএফের এক পূর্বাভাসে জানানো হয়েছিল ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৬ শতাংশ হতে পারে।
০৬ জুন, ২০২৪

বিদেশি ঋণের রেকর্ড লক্ষ্যমাত্রা
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে ১ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হবে।  এবারই প্রথম বিদেশি ঋণের রেকর্ড লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা বেশি।  বৃহস্পতিবার (১৬ মে) প্রধানমন্ত্রী ও এনইসির চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত এনইসি সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার।  সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নতুন এডিপির আকার চলতি অর্থবছরের মূল এডিপির তুলনায় ২ হাজার কোটি টাকা বা শূন্য দশমিক ৭৬ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি) তুলনায় ২০ হাজার কোটি টাকা। মূল এডিপির সঙ্গে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের প্রায় ১৩ হাজার ২৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার টাকা এডিপিও অনুমোদিত হয়েছে। অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ৭০ হাজার ৬৮৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। তবে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাবে স্থানীয় সরকার বিভাগ ৩৮ হাজার ৮০৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এদিকে সবচেয়ে কম বরাদ্দপ্রাপ্ত খাত হলো প্রতিরক্ষা। বরাদ্দ প্রদানের ক্ষেত্রে বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্যে কৃষি, কৃষিভিত্তিক শিল্প, বিদ্যুৎ খাত, শ্রম-শক্তির দক্ষতা বৃদ্ধি, দারিদ্র্য হ্রাসকরণ সংক্রান্ত প্রকল্পে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।  অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনের গতিশীলতা বজায় রাখা, কর্মসৃজনের আওতা সম্প্রসারণ এবং দারিদ্র বিমোচনে লক্ষ্যভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহণের যে নীতি-কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়নে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের এডিপি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। এডিপিতে সর্বোচ্চ বরাদ্দপ্রাপ্ত ১০টি খাত- ১. পরিবহন ও যোগাযোগ : প্রায় ৭০ হাজার ৬৮৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা (২৬.৬৭%)। ২. বিদ্যুৎ ও জ্বালানি : প্রায় ৪০ হাজার ৭৫১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা (১৫.৩৮%)। ৩. শিক্ষা : প্রায় ৩১ হাজার ৫২৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা (১১.৩৬%)। ৪. গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধাবলি : প্রায় ২৪ হাজার ৮৬৮ কোটি ৩ লাখ টাকা (৯.৩৮%)। ৫. স্বাস্থ্য : প্রায় ২০ হাজার ৬৮২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা (৭.৮০%)। ৬. স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন : প্রায় ১৭ হাজার ৯৮৬ কোটি ২১ লাখ টাকা (৬.৭৯%)। ৭. কৃষি : প্রায় ১৩ হাজার ২১৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা (৪,৯৯%)। ৮. পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ: প্রায় ১১ হাজার ৮৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা (৪.১৮%)। ৯. শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা : প্রায় ৬ হাজার ৪৯২ কোটি ১৮ লাখ টাকা (২.৪৫%)। ১০. বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি : প্রায় ৪ হাজার ৭৮৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা (১.২৫%)। সর্বোচ্চ বরাদ্দপ্রাপ্ত ১০টি মন্ত্রণালয়- ১. স্থানীয় সরকার বিভাগ : প্রায় ৩৮ হাজার ৮০৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা (১৫.০০%)। ২. সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ : প্রায় ৩২ হাজার ৪২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা (১২.৩৯%)। ৩. বিদ্যুৎ বিভাগ : প্রায় ২৯ হাজার ১৭৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা (১১.২৮%)। ৪. প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় : প্রায় ১৬ হাজার ১৩৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা (৬.২৪%)। ৫. স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ : প্রায় ১৩ হাজার ৭৪১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা (৫.৩১%)। ৬. রেলপথ মন্ত্রণালয় : প্রায় ১৩ হাজার ৭২৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা (৫.৩১%)। ৭. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় : প্রায় ১২ হাজার ৮৮৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা (৪.৯৮%)। ৮. মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ : প্রায় ১১ হাজার ৩৮৭ কোটি ৬৯ লাখ টাকা (৪.৪০%)। ৯. নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় : প্রায় ১০ হাজার ৩৭৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা (৪.০১%)। ১০. পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় : প্রায় ৮ হাজার ৬৮৭ কোটি ৯ লাখ টাকা (৩.৩৬%)।
১৬ মে, ২০২৪

জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চট্টগ্রামের উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, বন্দর নগরী চট্টগ্রাম সবসময় সারা বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে। চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক রাজধানী উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে চট্টগ্রামের অবদান অনস্বীকার্য তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশের গড়ার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন সেই লক্ষ্য অর্জনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন অতি গুরুত্বপূর্ণ।  আজ ৯ মার্চ, (শনিবার) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ষষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৩য় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।  মো. তাজুল ইসলাম এ সময় বলেন, স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করতে শুধু বরাদ্দকেই বুঝায় না বরং নির্দিষ্ট এলাকার মানুষের আয় বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করে স্বাবলম্বী স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে বুঝায়। তিনি বলেন, প্রতিটি সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদকে তাদের নিজ নিজ এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার বিষয়ে ভাবতে হবে। মানুষের আয় বৃদ্ধি পেলে এবং সহজে নাগরিক সেবা পেলে মানুষ রাজস্ব দিতে উৎসাহ বোধ করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সে বরাদ্ধের সুফল যাতে জনগণ সঠিকভাবে পায় সেজন্য সিটি করপোরেশনের সব স্তরের সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামকে যানজট ও জলাবদ্ধতামুক্ত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর বলেও জানান তিনি।  স্থানীয় সরকারমন্ত্রী আসন্ন বর্ষাকালে এডিস মশা ও ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, বাসা-বাড়ি, স্কুল কলেজ, হাসপাতাল ও থানা থেকে শুরু করে যেসব জায়গায় পরিষ্কার স্বচ্ছ পানি জমাট বাঁধতে পারে সেখানে নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করতে হবে যাতে এডিস মশা জন্মাতে না পারে। এ বিষয়ে উপস্থিত জনপ্রতিনিধিদের তাদের নিজ নিজ এলাকায় এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী চট্টগ্রাম নগরীর যানজট নিরসনে রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য নেওয়া যে কোনো উদ্যোগে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। ইনসিনারেশন পদ্ধতিতে চট্টগ্রাম নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করে মন্ত্রী বলেন, কর্নফুলী নদী ও বঙ্গপসাগরকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে এ ছাড়া বিকল্প নেই।  তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের রাস্তাগুলো সংস্কার করার জন্য আইডি নম্বর দিয়ে কাজ করা হবে যাতে একই রাস্তায় বরাদ্দ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে পুনরাবৃত্তি না ঘটে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এবং আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য এম আব্দুল লতিফ, মহিউদ্দিন বাচ্চু এবং আব্দুস সালাম, সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম, ভারতীয় দূতাবাসের সহকারী হাই কমিশনার রাজিব রঞ্জন।  
০৯ মার্চ, ২০২৪

ফরিদপুরে বেড়েছে সরিষা চাষ, লক্ষ্যমাত্রা ১৫০ কোটি টাকা
গত বছরের তুলনায় কয়েক হাজার হেক্টর বেশি জমিতে সরিষা চাষ করেছেন ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষকরা। তারা বলছেন, বর্তমানে সরিষার তেলের চাহিদা বেড়েছে। অনেকে একে ভোজ্যতেল সয়াবিনের বিকল্প হিসাবেও ব্যবহার করছেন। আর এই ফসল স্বল্প খরচ ও সময়ে পাওয়া যায়। ফরিদপুর সদরপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায় বলেন, দেশীয় বাজারের ভোজ্য তেলের দর বৃদ্ধিতে এবার সদরপুরে বেড়েছে সরিষার চাষ। রবি মৌসুমের ফসল হিসাবে কৃষকের এতে আগ্রহ বেড়েছে। উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি মাঠেই এবার আবাদ বেড়েছে সরিষার। সার, ওষুধ, পানি ও অল্প পরিচর্যায় এবং সরকারি প্রণোদনা পাওয়ায় দিন দিন সরিষা আবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা। উপজেলার ভাষানচর, চরবিষ্ণপুর, আকোটেরচরসহ বিভিন্ন এলাকার মাঠে অপরূপ শোভা ছড়াচ্ছে সরিষা ফুল। সদরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, প্রচলিত দেশি সরিষার চেয়ে বারি-১৪ ও বারি-১৮ ফলন বেশি হওয়ায় চাষিরা আগ্রহী হচ্ছে। এ বছর উপজেলায় ২০৯০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় ৩৯০ হেক্টর বেশি। এ বছর সময়মতো ৪ হাজার কৃষককে উন্নত জাতের বারি-১৪ ও বারি-১৮ জাতের সরিষা বীজ, সার ও কীটনাশক দেয়া হয়েছে। ফলে তারা আমন ধান সংগ্রহের পর জমি ফেলে না রেখে সরিষা চাষ করেছেন। সরজমিনে সদরপুর উপজেলার আকোটেরচর ও চরবিষ্ণপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, গাছ দুই থেকে চার ফুট পর্যন্ত বড় হয়ে উঠেছে। হলুদ ফুলে ফুলে ভরে গেছে মাঠ। বাতাসে দোল খাচ্ছে ফুলে ভরা সরিষার গাছ। চাষিরা জানালেন, বারি-১৪, ১৫, ১৬, ১৭, বিনা-৪, ৮, ৯, টরি-৭ জাতের সরিষা চাষ করেছেন বেশিরভাগ। উচ্চ ফলনশীল জাত হওয়ায় ভালো ফলনের আশা করছেন তারা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ মৌসুমে জেলায় ১৪ হাজার ৮৪২ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে হেক্টরপ্রতি ১ হাজার ৩৬০ কেজি বা ১.৩৬ টন। সরিষার গড় বাজার মূল্য মণপ্রতি ৩ হাজার টাকার বেশি। সেই হিসাবে এই মৌসুমেই ১৫১ কোটি ৩৮ লক্ষাধিক টাকার সরিষা উৎপাদন করবেন জেলার চাষিরা। ভাষানচরের চাষি মুন্নি মৃধা, ফজল শেখসহ কয়েকজন জানালেন, বোরো ধান রোপণের আগেই কম সময়ে একটি বাড়তি ফসল আবাদ করতে কৃষি বিভাগ পরামর্শ দিয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে বীজ রোপণের মাত্র ৮০-৯০ দিনের মধ্যেই ফসল তোলা যায়। বিঘাপ্রতি ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে। বৈরী আবহাওয়া না হলে বিঘাপ্রতি ৫-৬ মণ সরিষা বীজ পাওয়া যায়। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, গত মৌসুমের তুলনায় ফরিদপুরে এ বছর ২ হাজারের বেশি হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে। চাষিরা আগে যেখানে দুই ফসল ফলাত এখন সেখানে তিন ফসল চাষাবাদ করছেন। এতে তারা বাড়তি লাভের মুখ দেখছেন।
২৩ জানুয়ারি, ২০২৪

জুনের মধ্যে টেশিসকে লাভজনক করার লক্ষ্যমাত্রা পলকের
আগামী জুনের মধ্যে টেলিফোন শিল্প সংস্থাকে (টেশিস) লাভজনক করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এজন্য বিগত ৫ বছরের আয়-ব্যয়ের বিশ্লেষণ করে আগামী ৫ মাসের পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশনা দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। এর ভিত্তিতে টেশিস’কে লাভজনক করতে পারবেন বলে বিশ্বাস পলকের।  সোমবার (২২ জানুয়ারি) গাজীপুরের টঙ্গিতে টেশিস পরিদর্শনকালে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন তিনি।  এ সময় পলক বলেন, আমি টেশিসের প্রত্যেকটা ফ্লোর, অপারেশন্স রুম, অ্যাসেম্বলিং প্ল্যান্ট ঘুরে দেখেছি। আমি বুঝতে চেয়েছি, আমাদের সম্পদ ও সক্ষমতা কতটুকু আছে, সমস্যা ও সংকট কতটুকু আছে এবং সেই জায়গা থেকে আমরা সম্ভাবনার দিকে কতটুকু এগিয়ে যেতে পারি। আমার কাছে মনে হয়েছে- আমাদের মেধা, শ্রম ও অর্থের অপচয় রোধ করে সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করলে সেই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে। কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি টেশিসের কর্মকর্তারা দেশের ও মানুষের কষ্টার্জিত ট্যাক্সের টাকা অপচয় করবেন না বা অলাভজনক খাতে বিনিয়োগ করবেন না। আমরাও চাইব একটা গর্বিত প্রতিষ্ঠানের সদস্য হতে, যারা দেশ ও মানুষের কল্যাণে ভূমিকা রাখতে পারে। আমি যেটা উপলব্ধি করছি- আমাদের অপারেশন্স, ম্যানেজমেন্ট, প্রোডাকশন, মার্কেটিং ও আফটার সেলস সার্ভিসিংয়ের জায়গাগুলোতে উন্নতি করতে না পারলে আমরা প্রোডাক্ট সেলস বা বিনিয়োগ বাড়াতে পারব না। পলকের পরিদর্শনকালে মন্ত্রণালয় এবং টেশিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। 
২২ জানুয়ারি, ২০২৪

ঠাকুরগাঁওয়ে সরিষা চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বাম্পার ফলন
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে গতবারের তুলনায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষা আবাদ করেছেন কৃষকরা। সরিষা চাষে দ্বিগুণ লাভের আশায় বুক বাঁধছেন উপজেলার কৃষকরা। সোমবার (২২ জানুয়ারি) উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দিগন্ত জোড়া মাঠে, মাঠে হলুদের সমারোহ। মাঠের পর মাঠ শুধু হলুদের বিশাল গালিচা, যত দূরে চোখ পড়ে শুধু হলুদ আর হলুদ। চিরসবুজের বুকে যেন কাঁচা হলুদের আলপনা। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে এখন মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত। ফুলে ফুলে মৌমাছিরা মধু আহরণে ব্যস্ত। প্রকৃতিতে হলুদ বর্ণে শোভা পাচ্ছে বিস্তীর্ণ সরিষার মাঠ। চারদিক ছড়িয়ে পড়ছে ফুলের গন্ধের সুবাস। পরিবেশকে করে তুলেছে মোহনীয়। সেই মোহনীয় পরিবেশ ও হলদে আভার পরশ নিতে ক্ষেতে ছুটছেন প্রকৃতিপ্রেমী উৎসুক অনেকেই। সেই সঙ্গে সরিষা ফুলের ছবি তুলতে ভিড় করছেন নানা বয়সী মানুষ। কৃষকের মুখে সরিষার বাম্পার ফলনের আশায় হাসির ঝিলিক। শীতের শিশির ভেজা সকালে কুয়াশার চাদরে ঘেরা বিস্তীর্ণ প্রতিটি মাঠ যেন হলুদ বর্ণে ঘেরা এক স্বপ্নীল পৃথিবী। যেদিকে তাকাই শুধু সরিষা ফুলের হলুদ রঙের চোখ ধাঁধালো বর্ণিল সমারোহ। মৌমাছির গুনগুন শব্দে সরিষা ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে পদার্পণ এ অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনোমুগ্ধকর এক মুহূর্ত। ভোরের বিন্দু বিন্দু শিশির আর সকালের মিষ্টি রোদ ছুঁয়ে যায় সেই ফুলগুলোকে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় সরিষার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছেন কৃষকরা। তাই তো ভালো ফলনের আশায় উপজেলার কৃষকেরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রাণীশংকৈল উপজেলার ১টি পৌরসভাসহ ৮টি ইউনিয়নের অধিকাংশ কৃষকরা তাদের জমিতে উচ্চ ফলনশীল বারি-১৪,বারি-১৭,বারি-১৮ ও বিনা সরিষা-৯ আবাদ করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখ করার মতো সরিষা আবাদ করেছেন উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের রবিউল মানিক ১০ একর, বনগাঁও গ্রামের গয়গাম বিএসসি ১১ একর, বাচোর ইউনিয়নের সুরেন চন্দ্র ৫ একর, ধর্মগড় ইউনিয়নের আকবর আলী ১০ একর এবং কাশিপুর কাদিহাট মালশাডাঙ্গা এলাকায় কৃষি অফিসের সার্বিক তত্বাবধায়নে ১০ জন কৃষককে নিয়ে তাদের জমিতে ২৫ একর জমিতে বারি সরিষা-১৮ আবাদ করা হয়েছে। এ মৌসুমে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৬৯৪০ হেক্টর জমি নির্ধারণ করা হয়েছে, যা গত মৌসুমে সরিষার অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬ হাজার ৫০ হেক্টর। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আশা করছে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উপজেলায় এ মৌসুমে প্রায় ১১০৪ টন সরিষা কৃষক ঘরে তুলতে পারবে। এ ছাড়াও মৌওয়ালরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সরিষা ক্ষেত থেকে প্রায় সাত শত বক্সের মাধ্যমে মণকে মণ মধু সংগ্রহ করছেন ।  এ ব্যাপারে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুল ইসলাম বলেন, সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌমাছির চাষ হলে সরিষার ফলন প্রায় ১৫-২০ ভাগ বেড়ে যায়। এতে সরিষার ফলন ভালো হয়। এ ছাড়া সরিষা ক্ষেত থেকে বিনা খরচে মধু সংগ্রহ একটি লাভজনক ব্যবসা। এতে মৌমাছি ব্যবসায়ী যেমন একদিকে মধু বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, অন্য দিকে ক্ষেতে মধু চাষ করায় সরিষার ফলনও বাড়ছে।  এ ব্যপারে উপজেলার নন্দুয়ার ইউনিয়নের,পয়গাম বিএসসি, বাচোর ইউনিয়নের, আবু সালেহ, লেহেম্বা ইউনিয়ের রওশন আলী, হোসেনগাঁও ইউনিয়নের আব্দুল খালেক এবং ধর্মগড় ইউনিয়নের নাসরিন বেগম বলেন, আমরা সরিষা চাষ কেরেছি, খরচ তেমন নেই। শুধু গোবর সার দিয়ে জমি চাষের পর বীজ ছিটিয়ে দিতে হয়। তারপর গাছ বড় হলে দিতে হয় সেচ। সার বা কীটনাশক তেমন একটা দিতে হয় না। এ কারণে সরিষা চাষে কম খরচে বেশি লাভ। তাছাড়া এলাকার অনেক চাষি উচ্চফলনশীল জাতের সরিষা বীজ বিনামূল্যে পেয়ে বেশ আবাদে ঝুঁকেছেন। কেমন ফলন আশা করছেন? জিজ্ঞাসা করলে মুচকি হেসে তারা বলেন, বিঘাপ্রতি ৭ থেকে ৯ মন তো হবেই ইনশাল্লাহ। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন, সরকার দেশে ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরিষা ও তেলজাতীয় ফসল আবাদের ওপর জোর দিয়েছে। রাণীশংকৈল উপজেলায় একটি তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পের কার্যক্রমের কারণে  উপজেলায় সরিষার আবাদ ও ফলন প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে উপজেলার প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে বিনামূল্যে সরিষার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে গত এক বছরেই দেড়গুণ উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি জনসংখ্যা অনুপাত হিসেবে ৪০- ৫০ ভাগ সরিষার চাহিদা পূরণ হবে । তিনি আরও বলেন, সরিষা একটি লাভজনক ঝুঁকিমুক্ত ফসল। সরিষার আবাদ বৃদ্ধিতে সরকার কৃষকদের বীজ, সার ও পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করছে। সরিষা চাষ সম্প্রসারণের জন্য কৃষি বিভাগ অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। আমাদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে প্রতিনিয়ত দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। আমিসহ প্রতিটি উপসহকারী কৃষি অফিসার প্রতিদিন বিভিন্ন সরিষা ক্ষেতের মাঠ পরিদর্শনে যাচ্ছি । এতে করে কৃষকরা সঠিক পরামর্শ পাচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।
২২ জানুয়ারি, ২০২৪
X