উপকূলজুড়ে রেমাল আতঙ্ক / সাতক্ষীরায় কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল, কন্ট্রোল রুম চালু
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ থেকে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রেমাল সম্পর্কিত জরুরি তথ্য সংগ্রহ ও বিতরণের জন্য ‘কন্ট্রোল রুম’ চালু করেছে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন। শনিবার (২৫ মে) জেলা প্রশাসনের দপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। অপরদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের স্টেশন ত্যাগ না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমাদের স্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পাকা বাড়ি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী করা হয়েছে।    জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বে রয়েছেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার প্রনয় বিশ্বাস। কন্ট্রোল রুমের টেলিফোন নম্বর হচ্ছে- ০২-৪৭৭৭৪২৩৪৪, মোবাইল নম্বর হচ্ছে- ০১৭৭৫৯১৭০৭১। এদিকে, শ্যামনগর উপজেলার ১২৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে প্রায় ১৫ কিলোমিটার জরাজীর্ণ ও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ঝড়ের প্রভাবে নদীতে পানির চাপ বাড়লেই বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় দিন কাটছে তাদের। বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সীগঞ্জ, কৈখালী, রমজাননগর, কাশিমাড়ি ও আটুলিয়া ইউনিয়নের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব এলাকায় বেড়িবাঁধের বেশকিছু পয়েন্ট অতিঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যা সামান্য জলোচ্ছ্বাসের চাপ সামলানোর ক্ষমতাও রাখে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঝড়ের পূর্বাভাস না পেলে ঘুম ভাঙে না পানি উন্নয়ন বোর্ডের। তখন তারা তোড়জোড় শুরু করে। বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী নজরুল ইসলাম বলেন, বুড়িগোয়ালিনীর দুর্গাবাটিতে তিন জায়গায় ও দাতিনাখালীর দুই জায়গাসহ মোট ছয়টি স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জি.এম মাসুদুল আলম বলেন, ঝড়ের নাম শুনলেই আমাদের এলাকার মানুষের প্রাণ কেঁপে ওঠে। প্রায় প্রতিবছরই জলোচ্ছ্বাসের কবলে পড়ে এখানকার মানুষের জানমালের ক্ষতি হয়। তবে পাউবো যে বাঁধ নির্মাণ করে, তা কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে যায়। সাধারণ জোয়ারে সেই বাঁধ প্লাবন ঠেকাতে পারে না, আর জলোচ্ছ্বাসে কী করে ঠেকাবে? তিনি জানান, তার ইউনিয়নে অন্তত ৮টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। এর মধ্যে হরিষখালী, পার্শেমারী, খলষিবুনিয়া, লেবুবুনিয়াসহ ৫টি স্থানে বেড়িবাঁধ জরাজীর্ণ হয়ে আছে। আটুলিয়া ইউপির চেয়ারম্যান আবু সালেহ বাবু বলেন, আটুলিয়া ইউনিয়নে ছয়টি পয়েন্টে পাউবোর বেড়িবাঁধ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে বিড়ালক্ষ্মীতে তিনটি, বড়কুপটে একটি ও খোন্তাকাটার একটি জায়গা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানলে এসব জায়গায় বাঁধ টিকবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। কৈখালী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম বলেন, বর্তমানে ইউনিয়নের পূর্ব কৈখালী, নৈকাটিসহ বেশ কয়েক জায়গায় বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নদীতে পানি বাড়লে বড় ক্ষতি হতে পারে। বাঁধ ভাঙলে গোটা ইউনিয়ন নদীর পানিতে তলিয়ে যাবে। এ অঞ্চলের বেড়িবাঁধ পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের (পওর) দায়িত্বে থাকা সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দিন বলেন, শ্যামনগর উপজেলায় মোট ১২৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে ৫ কিলোমিটার, আর অতিঝুঁকিপূর্ণ ১ কিলোমিটার। ঝড়ের আভাস পেয়ে অতিঝুঁকিপূর্ণ ১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের সংস্কার করা হচ্ছে।
২৫ মে, ২০২৪

রুম দখল নিয়ে ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৭
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) রুম দখল নিয়ে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৭ জন। রোববার (১২ মে) বিকাল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুস সামাদ আজাদ হলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, সিকৃবির আজাদ হলের ৫০৭ নম্বর রুম দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা পড়ে ছিল। পরে হল থেকে রুম বরাদ্দ পাওয়া কয়েকজন ছাত্রকে রুমে তুলে দেন ছাত্রলীগের সভাপতি পক্ষের রিয়াজুল ইসলাম রিয়াদ গ্রুপের নেতাকর্মীরা। তবে সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান হোসেন গ্রুপের নেতাকর্মীরা এটা নিজেদের রুম বলে দাবি করেন। এ নিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ বাধে। পরে সমাধানের জন্য ছাত্র পরামর্শ, প্রক্টর, প্রভোস্টরা ছাত্রলীগের সঙ্গে বসলে কথাকাটাকাটির জেরে দ্বিতীয় দফায় আবার সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে মাঠে অবস্থান করে দুটি পক্ষ। সিকৃবির চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. অসিম রঞ্জন রায় কালবেলাকে বলেন, দুই দফা সংঘর্ষে ১৭ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুজনকে ওসমানী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছেন। আব্দুস সামাদ আজাদ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মীর মো.  ইকবাল হাসান বলেন, ক্যাম্পাসে একটি রুমকে নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে কয়েকজন ছাত্র আহত হয়েছেন। আমরা আহতদের দেখতে গিয়েছি। আর ওই রুমটা তালা মেরে রেখেছি। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিজেরা বসে বিষয়টা সমাধান করবে বলে জানিয়েছে।  এ বিষয়ে জানতে সিকৃবি ছাত্রলীগ সভাপতি আশিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এমাদুল হোসেনকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তারা কল রিসিভ করেননি। সিকৃবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাদ উদ্দিন মাহফুজ কালবেলাকে বলেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে আব্দুস সামাদ আজাদ হলের একটি রুম নিয়ে ছাত্রলীগের দুগ্রুপের ঝামেলা হয়েছে। কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আমরা সকলের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কারা এ ঝামেলায় জড়িত খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনো সমস্যা হলে প্রশাসন থেকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সিলেট শাহপরাণ থানার এসি শাহজাহান ভূঁইয়া বলেন, একটা রুম নিয়ে ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ এখনও ক্যাম্পাসের আশপাশে অবস্থান করছে।
১৩ মে, ২০২৪

রুম তোমার নাম দেব কী
অর্ধশত থেকে শতবছর, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন জরাজীর্ণ হলে বাস করছে শিক্ষার্থীরা। ‘গণরুম’ তো আছেই, আছে ‘মন্ত্রীপাড়া’ ‘দরবার’ ‘চিলেকোঠা’ ‘আল মদিনা হোটেল’। রুমগুলোর মেজাজ-মর্জির সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয় বিচিত্র সব নাম। সোনার খাঁচায় পুরে রাখা দিনগুলোর শত শত স্মৃতি মিশে যায় সেই নামের বাঁকে বাঁকে। নানা ক্যাম্পাস ঘুরে এমনই কিছু কক্ষের নাম সংগ্রহ করেছেন সিফাত রাব্বানী— ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বড় আবাসিক হল শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল। এই হলের একটি কক্ষে অন্ধকারের সঙ্গে বসবাস করতে হয় বলে নাম ‘লাদেন গুহা’। একটি কক্ষের নাম ‘ক্রেমলিন’; এখানে থাকেন শাহরিয়ার। তার মতে, ‘ক্রেমলিন হলো শহরের অভ্যন্তরে দুর্গের মতো। রাশিয়ার ক্রেমলিনের মতোই আমাদের কক্ষ। আর আমরা এই কক্ষের গর্বিত বাসিন্দা। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার দা সূর্য সেন হলেও তিনটি কক্ষ নিয়ে গঠিত একটি গণরুম ‘লাদেন গুহা’ নামে পরিচিত। ঢাকা কলেজ বেশ পুরোনো এই বিদ্যাপীঠে হলের কক্ষগুলোর নাম অবাক না করে ছাড়বে না। অনেক আগের নামকরণ হওয়া কক্ষের বাসিন্দাদের খোঁজ পাওয়া যায়নি তেমন। তবে নামগুলো টিকে আছে ঠিকই। তালিকায় আছে ছায়াবীথি, খোয়াব, ভ্যাগাবন্ড, লাইসিয়াম, চিলেকোঠা, গাংচিল, রাজদরবার, পদ্মা প্যালেস, বঙ্গনিবাস, বন্ধন, কুরুক্ষেত্র ও চিলেকোঠার সেপাই। ইমদাদ হোসেন সোহাগ, সোহান সিকদার, সোহান মামুন, খালিদ হাসান দিপু কক্ষগুলোর বাসিন্দা। তারা জানালেন, অনেক দিন আগ থেকে সিনিয়র ভাইরা নামগুলো দিয়েছিলেন। নামকরণের ইতিহাস জানা নেই; তবে এগুলো এখানকার ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। এগুলো আর বদলানো হবে না বলেও জানান তারা। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাকৃবির শহীদ শামসুল হক হলের ১২২/সি কক্ষে ক্যাম্পাসের জনপ্রিয় ছবিয়াল সাদিক খানের আবাসস্থলের নাম ‘আঁতুড়ঘর’। তিনি বলছিলেন, ‘বাকৃবি ক্যাম্পাসে আমার সব শৈল্পিক চিন্তাভাবনা হয় এ রুম থেকেই। গান, ছবি কিংবা সাহিত্যচর্চার আঁতুড়ঘর আমার প্রিয় হলের এই ১২২ নম্বর রুম। বাকিরাও বহুমুখী প্রতিভাধর। লিটন দারুণ রান্না করে। তার কাছে রন্ধনশিল্পেই যত মজা। নাহিদ সবসময় পড়ালেখা করে। পড়াটাকে সে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এজন্য রুমের নামও এটা।’ একই হলের ৩২২/বি ব্লকের কক্ষটির নাম ‘কারাগার’। এখানে থাকতেন আবু রায়হান মিথুন। সম্প্রতি ৪৩তম বিসিএস এ সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন কৃষি ক্যাডারে। কক্ষটির নামকরণ তিনিই করেছিলেন। তার মতে, ‘আমার ক্যাম্পাস জীবনে দিন ও রাতের অধিকাংশ সময় রুমের বাইরে কেটেছে। রুমে এলেই মনে হতো কারাগারে আছি।’ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নুরুজ্জামান শুভ। তার রুমের নাম ‘পুতিনস ওয়ারিয়র্স’। জানালেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সবার পদচারণা বলে এর এমন প্যারোডি নামকরণ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রাবির শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের কক্ষ নম্বর ১৪০। নতুন নাম ‘প্যালেস্টাইন’। এর বাসিন্দা অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র মোস্তফা কামাল জানালেন, ফিলিস্তিনকে সমর্থন দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এ নামকরণ। একই হলের আরেকটি কক্ষ ‘নোঙরখানা’। এখানে থাকেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের আব্দুর রহমান। বললেন, ‘আমাদের রুমে যে কেউ যখন ইচ্ছে চলে আসতে পারে। এখানে চাইলে এসে নিজে রান্নাও করে খেতে পারে। তাই রুমের এমন নাম।’ ‘ডাকবাংলো’ নামে আরেকটি রুম আছে একই হলে। ক্যাম্পাসের মতিহার হলের একটি কক্ষের নাম দিয়েছে কক্ষের বাইরের বন্ধুরাই। নাম ‘হোটেল আল মদিনা’। ওই বন্ধুরা বললেন, ‘যখনই ক্লাস শেষে দুপুরের খাবার কোথাও না পাই, তখন বন্ধুর রুমে গেলে কিছু না কিছু খাবার পাওয়া যায়, এজন্য সবাই মিলে রুমের নাম দিয়েছে হোটেল আল মদিনা।’ একই বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের সি-ব্লকে থাকেন মিম্মা রহমান রিতি। তাদের কক্ষের নাম ‘জলসা ঘর’। জানালেন, তাদের কক্ষে যে চার-পাঁচজন থাকেন, তারা ব্লকের অন্যদের চেয়ে বেশি আমোদে সময় কাটান। টিপটপ বাতি জ্বালিয়ে গানের আসর আর আড্ডাবাজি দেখলে মনেই হবে এটি জলসা ঘর। ব্লকের যে কোনো ছোটখাটো অনুষ্ঠান যেমন—বিয়ের ট্রিট, হরেক রকম পাওনা ট্রিট, বাড়ি থেকে আনা খাবার কিংবা জন্মদিন; সব পালন হয় ওই রুমে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় জবির একমাত্র ছাত্রী হলের একটি কক্ষের নাম ‘আট সতিন’। এর এক বাসিন্দা জানালেন, আটজনই তারা সতিনের মতো। এই ভালো এই মিল মহব্বত হারিয়ে গেল বুঝি—এমন অবস্থা! হলের আরেকটি কক্ষের নাম ‘মায়াকুঠির’। ওই রুমে থাকেন নাসরিন নাঈমা। বললেন, ‘হলের রুমে আমরা একেকজন শিক্ষার্থী একেক জেলার। ভিন্ন সংস্কৃতির হলেও একই রুমে থাকতে থাকতে মায়ার বন্ধনে আটকে আছি। তাই এমন নাম দিয়েছি আমরা।’ হলের আরেক কক্ষের নাম ‘তন্দ্রালয়’। আলো বাতাস আসে না এই রুমে। কখন দিন, কখন রাত বোঝা মুশকিল। ‘কুইন্স ক্যাসেল’, ‘ক্ষণিকা’, ‘পদ্মরাগ’ এ নামের রুমও আছে এখানে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রায়হান জাকারিয়া। তার রুমের নাম ‘চিলেকোঠা’। সকালে ছোট জানালা দিয়ে আলোর ঝকঝকানি, নিরিবিলি পরিবেশ, এসব কারণে রুমটাকে নিজের বাড়ির মতোই মনে হয় তার। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসটির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সানজিদা ইসলাম। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার কক্ষের নামকরণের ইতিহাস। তার মতে, বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য নিয়ে আমরা একত্র হয়েছি আমাদের কক্ষে, যেখানে সবার হাসি-ঠাট্টা-আনন্দ-বেদনা মিলেমিশে একাকার। নানা পাগলামিতে একেকজনের সেই বিশেষ বৈশিষ্ট্য আমাদের করে তুলেছে পাগলাগারদের সদস্যদের মতো। তাই রুমের নাম ‘পাগলাগারদ’। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের নতুন ব্লকের ৫০৭ নম্বর কক্ষের নাম দিয়েছেন কক্ষের শিক্ষার্থীরা ‘লিলিঝিলি ৫০৭’। কক্ষের শিক্ষার্থী সালসাবিল আলাইকা ইকা বলেন, “আমাদের কক্ষের চারজনের মধ্যে অন্যরকম একটা কেমিস্ট্রি আছে, কেউ খুব চঞ্চল, কেউ দুষ্টু, কেউ মিষ্টি আর কেউ একটু চাপা। চারজনের জেলাও ভিন্ন। সব মিলিয়ে ‘লিলিঝিলি ৫০৭’।” সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এই ক্যাম্পাসে আছে নিজস্ব কটেজ। যার যার কটেজের নাম নিজেরাই দিয়ে থাকেন। এখানে পড়েন তানভীর। তার দেওয়া নিজের কটেজের নাম ‘দরবার’। প্রতি সাপ্তাহিক ছুটিতে কাছের বন্ধুরা মিলে গানের আসর জমান এখানে।
২১ এপ্রিল, ২০২৪

আজ রুমমেটের প্রশংসা করুন
ফ্ল্যাটমেট বা রুমমেট শব্দটি কম বেশি আমাদের সকলেরই জানা। বিশেষ করে যারা পরিবার ছাড়া একা থাকতে পছন্দ করেন কিংবা প্রয়োজনের তাগিদে একা থাকেন। ফ্ল্যাটমেট বা রুমমেট এমন একজন যে আপনি অসুস্থ হলে আপনার সেবা করে। সুখ-দুঃখে আপনার পাশে থাকে। আর আজকের এই দিনটিই সেই ফ্ল্যাটমেট বা রুমমেটের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন। অর্থাৎ আজ ২৪ মার্চ ফ্ল্যাটমেট বা রুমমেটের প্রশংসা করার দিন। ফ্ল্যাটমেট দিবস বিষয়টি শুনে অনেটা হাস্যকর হলেও আজ কিন্তু এমন কিছুই করার দিন। প্রতি বছর ২৪ মার্চ এ বিচিত্র দিবসটি পালিত হয়। বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ফ্ল্যাটমেট বা রুমমেটের সংখ্যা। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৪ সালে আমেরিকানদের প্রায় ৭ দশমিক ৭ শতাংশ রুমমেটদের সাথে বসবাস করত, যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফ্ল্যাটমেট দিবসের ইতিহাস প্রতি বছর ২৪ মার্চ পালিত ফ্ল্যাটমেটস ডে পালন করা হয়। ২০১৬ সাল থেকে এ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। তবে ঠিক কে বা কারা এই দিবসটি পালন করা শুরু করেছিল সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। তবে ডেইজ অব দ্য ইয়ার-এ জানা গেছে, কোনো এক ব্যক্তি তার রুমমেটের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য দিনটি উদযাপন শুরু করেছিলেন। কীভাবে ফ্ল্যাটমেট দিবস উদযাপন করবেন ফ্ল্যাটমেট দিবস উদযাপনের মজার উপায় খুঁজছেন? আপনার রুমটাকে একটু গুছিয়ে কিছুটা পরিবর্তন দিয়ে শুরু করুন। আপনার ফ্ল্যাটমেট যখন একটি পরিষ্কার এবং পরিপাটি জায়গায় বাড়িতে আসবে তখন তার মুখের আনন্দ কল্পনা করুন। এটা একটা দিনের জন্য ক্লিনিং সুপারহিরো হওয়ার মত! একটি বিশেষ খাবার রান্না করার কথা ভাবতে পারেন। রাতে একসঙ্গে বসে আপনার প্রিয় সিরিজ বা সিনেমা দেখতে পারেন। এরপর যদি আপনার একটি বাইক থাকে তাহলে তবে একটি মিনি রোড ট্রিপের পরিকল্পনা করতে পারেন। একসাঙ্গে নতুন জায়গায় ঘুরা আপনার বন্ধন শক্তিশালী করতে পারে।  বিকল্পভাবে, কয়েক ঘণ্টার জন্য বেরিয়ে এসে আপনার ফ্ল্যাটমেটকে একাকী সময় উপভোগ করার একটি সুযোগ করে দিতে পারেন। 
২৪ মার্চ, ২০২৪

বিশ্বমানের জুয়েলারি শোরুম চালু করল ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড
দেশের শীর্ষস্থানীয় জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড গুলশানে বিশ্বমানের জুয়েলারি শো রুম ‘দ্য সিগনেচার’-এর উদ্বোধন করেছে। শুক্রবার (১ মার্চ) বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ফিতা ও কেক কেটে এর উদ্বোধন করেন। এর আগে প্রধান অতিথিকে ফুল দিয়ে বরণ করেন ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা।  এ সময় উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি ও বেঙ্গল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জসিম উদ্দিন, সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু , স্কয়ার গ্রুপের চেয়ারম্যান স্বপন চৌধুরী, একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু,  ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের পরিচালক অমিয় কুমার  আগরওয়ালা, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের চেয়ারম্যান সবিতা আগরওয়ালা, পরিচালক পিন্টু কুমার আগরওয়ালাসহ বিভিন্ন খাতের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।  প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালমান এফ রহমান বলেন, ‘এ ধরনের অত্যাধুনিক শো রুমের শুভযাত্রায় ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের দেশে জুয়েলারি খাতে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে। শুধু আমাদের দেশের মার্কেটের জন্য নয়, বিদেশেও রপ্তানি করার সুযোগ আছে। আমি ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডকে অনুরোধ করবো, তারা যেন এটিও করে।   প্রধান অতিথিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, ‘আমরা অল্প সময়ের মধ্যে ৩২টি আউটলেট করতে পেরেছি। গ্রাহকদের ব্যাপক সাড়া ,আস্থা ও বিশ্বাস আমাদের এত দূর নিয়ে এসেছে। আমরা দুটি কারখানা করেছি। আমরাই প্রথম রাফ ডায়মন্ড কাটিং করে রপ্তানি করেছি। গোল্ডের রিফাইনারির মাধ্যমে গোল্ডের র-ম্যাটারিয়াল পাওয়া গেলে রপ্তানি করা আমাদের জন্য সহজ হবে। আমার বিশ্বাস, আগামীতে জুয়েলারি খাত দেশের জিডিপিতে ভালো অবদান রাখবে।’ প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ‘দ্য সিগনেচার’ নামের এই শো রুমটি গুলশান-১-এর মোড়ে টাওয়ার অব আকাশের লিফটের ২ ও ৩ এ অবস্থিত। এটি শুধু কোনো শোরুম নয়; এটি আধুনিক স্থাপত্যের একটি মাস্টারপিস। শো রুমের প্রতিটি দেওয়াল থেকে শুরু করে প্রতিটি কোনায় আধুনিক স্থাপত্যের ছোঁয়া লেগেছে। এখানে প্রবেশ করে গ্রাহকরা অন্য রকম এক রোমাঞ্চকর পরিবেশ অনুভব করবেন। চোখ ধাঁধাঁনো অত্যাধুনিক এই শো রুমে দুবাই, সিঙ্গাপুর, হংকংয়ের অভিজাত বিপণিগুলোর মতো উন্নতমানের পণ্য পরিসেবা পাবেন জুয়েলারি প্রেমীরা।
০১ মার্চ, ২০২৪

টাইম জোন লিভিং রুম সেশানে সাধক কবি জালাল খাঁর গান
ফিউশানের মধ্য দিয়ে গানের মৌলিক সুর ও ঢংয়ের কোনো পরিবর্তন নয়, নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলা সংগীতের অফুরন্ত ভাণ্ডার হতে অনন্য সব গান নতুন রূপে উপস্থাপনের প্রত্যয় নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘টাইম জোন লিভিং রুম সেশান’। ইউটিউবে প্রকাশিত হয়েছে এ সংগীত উদ্যোগের প্রথম সিজনের দ্বিতীয় গানটি। সাধক কবি জালাল উদ্দিন খাঁর ‘আমায় যত দুঃখ দিলি বন্ধুরে’-গানটি প্রকাশিত হয়েছে ২৯ ফেব্রুয়ারি লিপ ডে-তে। পাভেল আরিনের সংগীত পরিচালনায় গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন মাতাল কবি রাজ্জাক দেওয়ানের উত্তরসুরী শিল্পী কাজল দেওয়ান। গানটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সাধক কবি জালাল উদ্দিন খাঁ অনেক ধরণের গান লিখেছেন। সুফিবাদের ওপরও তার অনেক গান লেখা আছে। কিছু গান আমরা মঞ্চেও গেয়েছি। কিন্তু এবার যে গানটি গেয়েছি তা সত্যিই অন্যমাত্রার গান। কেন অন্যমাত্রার তা না শুনে বোঝা যাবে না। এমন আয়োজনে গাইতে পেরে খুবই ভালো লেগেছে। মন থেকে গানটা গেয়েছি।” গানের কথাগুলো এমন-আমায় যত দুঃখ দিলি বন্ধুরে, আমি তোর প্রেমেরই দেওয়ানারে দেওয়ানা, এই মন জানে আর কেউ জানে না। পাভেল আরিন বলেন, “গানটির কথায় আমি দারুণভাবে আলোড়িত হয়েছি। জীবন দিয়ে অনুভব করেছি- তাই এটি বেছে নেয়া। শিল্পী কাজল দেওয়ান যখন গান করেন তখন তিনি এত প্রাণবন্ত এত সততার সঙ্গে সুর উচ্চারণ করেন যে কারণে তার সঙ্গে এ গানটি নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী হয়েছি। তার অন্যতম শক্তির জায়গা গানে টান দিয়ে তিনি একটানা দীর্ঘক্ষণ ধরে রাখতে পারেন। এমন ক্ষমতা বাংলা গানে দুস্প্রাপ্য। এ গানেও তার একটি নমুনা শ্রোতারা পাবেন।”         পাভেল জানান, গানের ‘অরিজিনালিটি’ রক্ষা করে এ ধরণের কালজয়ী গানগুলোর শ্রতিমধুর নতুন রেকর্ডেড ভার্সন তৈরির লক্ষ্যেই কাজ করছে টাইম জোন লিভিং রুম সেশান। ভালোবাসা দিবসে রবীন্দ্রনাথের ‘ভালোবেসে সখী’-গানটির দারুণ শ্রোতাপ্রিয়তা অর্জনের পর এবার এলো জালাল খাঁর গানটি। গানটিতে বাঁশি বাজিয়েছেন সোহাগ, ভায়োলিন- পলাশ দেওয়ান, ইয়ার হোসাইন। গিটারে ছিলেন হাসিবুল নিবিড়, মিছিল, এ এমএম নওয়াজ শরীফ, মেন্ডোলিন বাজিয়েছেন রায়হান পারভেজ আখন্দ। পিয়ানোতে ছিলেন আরিফুল হাসান শান্ত। পারকেশান-  মো:সোহেল মিয়া, এসকে সাগর খান, দোতারা-আনন্দ শিকদার। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই আয়োজনের সহযোগী ও পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছে কল্লোল গ্রুপ অব কোম্পানিজের আওতাধীন ইন্টারন্যাশনাল ব্র্যান্ড ঘড়ির অথরাইজড রিটেইল চেইনশপ ব্র্যান্ড “টাইম জোন”। এবং ডিজিটাল স্ট্র্যাটেজি ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে আছেন কল্লোল গ্রুপ অব কোম্পানিজের হেড অব ডিজিটাল মার্কেটিং রিফাত আহমেদ।  এই উদ্যোগের সম্পর্কে তিনি জানান; ‘লিভিং রুম সেশন’ মূলত ট্যালেন্টেড সংগীত পরিচালক পাভেল আরিনের ব্রেইন চাইল্ড। বাংলা গান ও সংস্কৃতির প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে বাংলদেশের মিউজিককে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই আমরা ‘টাইম জোন’ এই উদ্যোগের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছি। এই উদ্যোগের সঙ্গে থাকতে পেরে আমরা উচ্ছ্বসিত।  ‘টাইম জোন লিভিং রুম সেশন’ এর পরবর্তী পরিকল্পনা সম্পর্কে রিফাত আহমেদ বলেন, এই সিজনের গানগুলোর প্রোডাকশন সম্পন্ন হওয়ার পরে এসে আমরা সম্পৃক্ত হয়েছি, এটি আমাদের মাত্র শুরু, আশা করছি পরবর্তী সিজনগুলোতে একদম গ্রাউন্ড লেভেল থেকে আমরা একসঙ্গে কাজ করবো এবং আরও বড় পরিসরে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্নতা গুরুত্ব দিয়ে ‘টাইম জোন লিভিং রুম সেশন’ কে নিয়ে আসা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ‘‘টাইম জোন লিভিং রুম সেশন’’-সংগীত প্রযোজনা করেছে বাটার কমিউনিকেশন। গানগুলোর ভিডিও নির্মাণ করেছেন মারুফ রায়হান। পরিবেশনায়-মাশরুম এন্টারটেইনমেন্ট। ওয়াড্রোব পার্টনার- সেইলর ও পি আর পার্টনার হিসেবে সহযোগিতা করছে ইষ্টিশন কমিউনিকেশনস।  নিয়মিত বিরতিতেই নতুন নতুন চমক নিয়ে প্রথম সিজনের গানগুলো প্রকাশিত হতে থাকবে। ‘‘টাইম জোন লিভিং রুম সেশন’’ ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল এবং স্পটিফাইসহ বিভিন্ন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম -এর মাধ্যমে সঙ্গীতপ্রেমীরা এই গানগুলো উপভোগ করতে পারবেন।
০১ মার্চ, ২০২৪

হাসপাতালের কক্ষকে বেড রুম বানিয়ে বসবাস
মানিকগঞ্জের পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে সদর উপজেলার ফৌজিয়া মালেক মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের একটি কক্ষ নিজের দখলে রেখে বসবাস করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে পরিবার ও পরিকল্পনা অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এক ব্যক্তি। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মো. মনিরুজ্জামান ক্ষমতার অপব্যবহার করে সদর উপজেলার ফৌজিয়া মালেক মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের চারতলার একটি কক্ষ নিজের দখলে রেখে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। তিনি মেটারনিটি সংলগ্ন মসজিদের দুই টনের জেনারেল এসি আরাম আয়েসের জন্য নিজ রুমে বসিয়েছেন।  মেটারনিটি হাসপাতালের ভেতর বহিরাগতদের গাড়ি অবৈধভাবে পার্কিংয়ের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, বিভিন্ন কৌশলে উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বদলি বাণিজ্য করা এবং পরিবার, পরিকল্পনাসংক্রান্ত কোনো অনুষ্ঠানে উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায় থেকে যেসব জনপ্রতিনিধিরা আসেন তাদের যথাযথ মূল্যায়ন না করে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া প্রায় দেড় বছর আগে গঙ্গাধরপট্টি এলাকায় ভাড়া অফিসে নিজ নারী সহকর্মীকে জরিয়ে ধরে অশ্লীলতা করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। পরে লাজলজ্জার ভয়ে স্থানীয়রা নারীসংক্রান্ত বিষয়টি মিটমাট করে ফেলেন। মেটারনিটি হাসপাতালের চতুর্থ তলায় পশ্চিম পাশে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের এক পরিছন্নতা কর্মী মনিরুজ্জামানের থাকার কক্ষটি ধোয়ামোছা করছেন। কক্ষের ভেতরে ফ্রিজ, মাইক্রোওভেন, সোফা, বিলাশবহুল খাট, স্মার্ট টিভি, স্টিলের আলমারি, ড্রেসিং টেবিলসহ আরও অনেক ব্যবহারিক আসবাপপত্র রয়েছে। এ বিষয়ে ফৌজিয়া মালেক মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসার ডা. জেরিন সুলতানার কাছে জানতে চাইলে তিনি মেটারনিটি হাসপাতালের চতুর্থ তলার একটি কক্ষে মনিরুজ্জামানের থাকার কথাটি স্বীকার করে জানান, যেহেতু ডিডি স্যার তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা এ ব্যাপারে তিনি কোনো বক্তব্য না দিয়ে তার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।  অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান খান বলেন, সকল আইনকানুন মেনে তিনি ফৌজিয়া মালেক মা ও শিশু পরবার কণ্যাণ কেন্দ্রের চতুর্থ তলার কক্ষে বসবাস করছেন। অন্যসব অভিযোগ সঠিক না বলে জানান তিনি। জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার বলেন, অভিযোগের কোনো কপি এখনো আমার হাতে এসে পৌঁছায়নি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

দেড় লাখ টাকার রুম ভাড়া নিয়ে হোটেলে থাকছে বিড়াল
মানুষ হোটেলে থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কোনো বিড়াল বা কুকুর হোটেলে থাকছে, শুনে হয়তো চোখ কপালে উঠবে আপনার। কিন্তু এই ঘটনাই সত্যি। তাও আবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। স্থানীয় একটি হোটেলে প্রায় এক বছর ধরে থাকছে এক চিকিৎসকের পোষা বিড়াল। বিড়ালটির নাম প্যান্ডা। এর মালিক ডাক্তার মাইমুনা সিফা। বর্তমানে তিনি আছেন ইউরোপের কোনো একটি দেশে। বিদেশে যাওয়ার পর প্যান্ডার দেখভাল করতেন তার বাবা-মা। কিন্তু তাদের অসুস্থতার কারণে যত্নআত্মিতে ঘাটতি পড়ে প্রিয় প্রাণীটির। এরপর বিড়ালটিকে হোটেলে পাঠায় সিফা। প্যান্ডার প্রিয় খাবার মুরগির মাংস। প্রতিদিন ৩ বেলা সেদ্ধ করে দিতে হয় মাংস। মাসে ১২ কেজির মতো মাংস লাগে প্যান্ডার। ৪২০ টাকা কেজি দরে তার পেছনে খাবারে খরচ হয় ৫ হাজার টাকার মতো। বছরে ৬০ হাজার টাকার কিছু বেশি। তাছাড়া প্যান্ডার নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ চিকিৎসা বাবদ খরচ হয় আরও কিছু টাকা। প্রতিমাসে বিদেশ থেকে প্যান্ডার জন্য মাসিক হোটেল ভাড়া পাঠায় তার মালিক ডা. সিফা। হোটেলে বিড়াল রাখতে প্রতিদিনের জন্য ভাড়া গুণতে হয় ৭শ টাকা। প্যান্ডা যেহেতু বছরব্যাপী থাকছে, তাই তার জন্য ছাড় দিয়ে ভাড়া প্রতিদিন ৪শ টাকা। সেই হিসেবে বিড়ালের জন্য প্রায় দেড় লাখ টাকা রুম ভাড়া পরিশোধ করেছেন ডাক্তার সিফা। নিয়মিত ফোন করে প্রিয় বেড়ালের খোঁজখবরও রাখেন তিনি। পশু হলেও হোটেলে আদর-সোহাগের কমতি নেই প্যান্ডার। ফারিঘরের ম্যানেজার তোয়ানুর রাহা জানান ২০২৩ সালের মার্চ থেকে এই প্যাট হোটেলে আছে প্যান্ডা এমাস পার হলেও ওর এক বছর হয়ে যাবে। ও হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে পুরাতন গেস্ট এবং সবচেয়ে লম্বা সময়ের গেস্ট। এই হোটেলে বিড়াল রাখতে চাইলে প্রতিদিনের জন্য ভাড়া গুনতে হবে ৭শ টাকা । তবে প্যাকেজে ৭ দিনের বেশি রাখতে তার জন্য ছাড় দিয়ে রাখা হয় ৫৭০ টাকা করে। ১৫ দিনের বেশি সময় রাখলে তার জন্য ভাড়া ৫শ টাকা করে। ১ মাসের বেশি সময় কেউ রাখলে তার জন্য ৪শ টাকা হোটেল ভাড়া দিতে হয়। প্যান্ডা যেহেতু ১ বছর ধরে আছে তার জন্য ৪শ টাকা হারে ভাড়া দিয়ে যাচ্ছেন তার মালিক ডা. সিফা। প্যান্ডার আরও অন্তত ৩৬টি পোষা প্রাণী রয়েছে ফারি ঘর নামে মিরপুরের এই প্যাট হোটেলে। তাদের দেখাশোনা করেন হোটেল ম্যানেজার তোয়ানুর রাহা। তিনি জানান, বিড়াল বা কুকুরকে বিদেশে নিতে দেশ ভেদে ভ্যাক্সিনেশনের পাশাপাশি লাগে বিশেষ পাসপোর্টও। সেই জটিলতা এড়াতেই অনেকে তার হোটেলে রেখে যান প্রিয় পশুটি।  রাহা জানায় কোথায় গেলে তার প্রিয় পশুটিকে কোথায় রেখে যাবে তা নিয়ে এক সময় দুশ্চিন্তায় থাকতে হতো এখন তার অবসান ঘটেছে। কারণ সব জায়গায় এসব প্রাণী নিয়ে যাওয়া যায় না। তার জন্যই ২০২২ সালে সৃষ্টি হয়েছে ফারিঘরের।  ফারিঘর কুকুর বিড়ালের ফাইভস্টার হোটেল হিসেবে পরিচিত। যেখানে প্রতিটি বিড়ালের জন্য রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পৃথক কেবিন। বিশেষ আদর আপ্যায়নের সঙ্গে আছে ক্যাট ট্রি, কুশন ও লিটারের ব্যবস্থা। কুকুরের জন্য বিছানা বালিশ তো আছেই, আবার প্রাকৃতিক কাজ সারার জন্যও রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। রাহা জানান এই হোটেলে শুধু থাকার ব্যবস্থা আছে তার বিড়াল বা কুকুরের জন্য খাবার দিয়ে যেতে হয় বিড়াল বা কুকুরের মালিককে। কারণ প্রতিটি বিড়াল বা কুকুর আলাদা আলাদা খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত। কেউ প্যাকেট ফুড খায়, কেউ ড্রাই ক্যাট বা ডগ ফুট খায়। কেউ পাউচ খায়। কেউ মাছ খায় কেউ মাংস খায়। তবে যে যে খাবারে অভ্যস্ত তাকে সেই খাবার দিতে হয় না হয় তাদের ফুড পয়জনিং হতে পারে বমি হতে পারে। তবে এসব বিড়াল অন্যন্য বিড়ালের মতো মাছের কাঁটা খায় না। কাঁচা মাছও খায় না। এদের মাছ বা মাংস সিদ্ধ করে দিতে হয়। স্প্যাম্পু দিয়ে গোসল করাতে হয়। গরমে এসি ছাড়া ঘুমাতে পারে না। শীতে হিটার ব্যবহার করতে হয়। লোম যাতে ঝড়ে না পড়ে তার জন্য ব্যবহার করতে হয় মেডিসিন।  যত্নের কুকুর বা বিড়ালকে রাখার জায়গা না থাকায় এতদিন সমস্যায় পড়তে হতো প্রাণীপ্রেমীদের। ফারিঘরের মতো হোটেল গড়ে ওঠায় এখন স্বস্তি কর্মব্যস্ত মানুষের। সারা দিনের কর্মব্যস্ততায় নিজেদের পোষ্যকে হোটেলে রেখে যান অনেকে। মিরপুরের চিড়িয়াখানা সড়কে কয়েক বছর ধরে গড়ে ওঠা এমন হোটেলের চাহিদাও দিনে দিনে বাড়ছে বলেও জানান প্যাট হোটেল কর্তৃপক্ষ।
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

যাত্রা শুরু করল ‘টাইম জোন লিভিং রুম সেশন’
উন্মুক্ত মঞ্চে কিংবা সাজানো কোনো সেটে নয়, বসার ঘরে বসে গান শোনার অনুভূতি নিয়ে এলো ‘টাইম জোন লিভিং রুম সেশন’। টাইম জোনের পৃষ্ঠপোষকতায় রবীন্দ্রনাথের গানে ভালোবাসার দিনে যাত্রা শুরু হলো এ সংগীত উদ্যোগের। পাভেল আরিনের সংগীত পরিচালনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিরায়ত প্রেমের গান ‘ভালোবেসে সখী’ গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কনা।  গত বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৩টায় ‘টাইম জোন লিভিং রুম সেশন’-এর ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয় গানটি। এর আগে, গত ২ ফেব্রুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের অন্যতম আকর্ষণীয় ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান টাইমস স্কয়ারের একটি বিলবোর্ডে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে মিউজিক্যাল প্ল্যাটফর্মটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়। টাইমস স্কয়ারের বিলবোর্ডে এই প্রকল্পটির টিজার প্রকাশ করা হয়। সেখানে ৯ বাংলাদেশি শিল্পী ইমরান মাহমুদুল, ঐশী, কণা, মাশা ইসলাম, জাহিদ নিরব, মুজিব পরদেশী, ইনিমা রশ্নি, কাজল দেওয়ান ও সংগীত পরিচালক পাভেল আরিনকে দেখা যায়। এই আইকনিক প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশের শিল্পীদের মুখ দেখে ইতোমধ্যেই ইন্ডাস্ট্রি এবং সংগীতপ্রেমীদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই আয়োজনের সহযোগী ও পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছে কল্লোল গ্রুপ অব কোম্পানিজের আওতাধীন ইন্টারন্যাশনাল ব্র্যান্ড ঘড়ির অথরাইজড রিটেইল চেইনশপ ব্র্যান্ড ‘টাইম জোন’ এবং পরিকল্পনা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে আছেন কল্লোল গ্রুপ অব কোম্পানিজের হেড অব ডিজিটাল মার্কেটিং রিফাত আহমেদ।  এই উদ্যোগের সম্পর্কে তিনি জানান, ‘লিভিং রুম সেশন’ মূলত ট্যালেন্টেড সংগীত পরিচালক পাভেল আরিনের ব্রেইন চাইল্ড। বাংলা গান ও সংস্কৃতির প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে বাংলদেশের মিউজিককে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই আমরা ‘টাইম জোন’ এই উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছি। এই উদ্যোগের সঙ্গে থাকতে পেরে আমরা উচ্ছ্বসিত।  ‘টাইম জোন লিভিং রুম সেশন’-এর পরবর্তী পরিকল্পনা সম্পর্কে রিফাত আহমেদ বলেন, এই সিজনের গানগুলোর প্রোডাকশন সম্পন্ন হওয়ার পরে এসে আমরা সম্পৃক্ত হয়েছি, এটি আমাদের মাত্র শুরু, আশা করছি পরবর্তী সিজনগুলোতে একদম গ্রাউন্ড লেভেল থেকে আমরা একসঙ্গে কাজ করব এবং আরও বড় পরিসরে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্নতা গুরুত্ব দিয়ে ‘টাইম জোন লিভিং রুম সেশন’-কে নিয়ে আসা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।  বাংলা গানের উৎকর্ষ সাধনের পাশাপাশি নিজের মিউজিক ক্যারিয়ারের জন্য এই সংগীত আয়োজনকে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক মনে করছেন পাভেল। নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ছয় বছর বয়স থেকে মিউজিকের সঙ্গে আছি। প্রায় দুই দশক ধরে জড়িয়ে আছি জনপ্রিয় ব্যান্ড চিরকুটের সঙ্গে। সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছি অসংখ্য জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্রে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মিউজিক প্ল্যাটফর্ম ও কনসার্টের ভেতরকার মানুষ হিসেবে দেশি-বিদেশি গুণী শিল্পীদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করার সৌভাগ্য  হয়েছে। সবসময় দেশের সংগীতকে আন্তর্জাতিকমানে পৌঁছাতে, নতুন কিছু শিখতে চেষ্টা করেছি। এখন সময় এসেছে নিজের ভাবনাগুলো মানুষের সামনে নিয়ে আসার। আশা করি সবাই উপভোগ করবেন এই মিউজিক্যাল প্রজেক্টটি।’ প্রথম সিজনে ৯টি গানের মধ্যে ৮টি রিমিক্স ও একটি মৌলিক গান রয়েছে বলে জানান পাভেল। ‘টাইম জোন লিভিং রুম সেশন’- অডিও প্রোডাকশন করেছে বাটার কমিউনিকেশন। গানগুলোর ভিডিও নির্মাণ করেছেন মারুফ রায়হান। পরিবেশনায় থাকছে মাশরুম এন্টারটেইনমেন্ট। নিয়মিত বিরতিতেই নতুন নতুন চমক নিয়ে প্রথম সিজনের গানগুলো প্রকাশিত হতে থাকবে। ‘টাইম জোন লিভিং রুম সেশন’ ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল এবং স্পটিফাইসহ বিভিন্ন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সংগীতপ্রেমীরা এই গানগুলো উপভোগ করতে পারবেন। বাংলা গানের প্রতি পাভেল আরিন আর টাইম জোনের এই ভালোবাসা ছুঁয়ে যাক কোটি শ্রোতার হৃদয়।
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

বেরোবি ছাত্রলীগ সভাপতির রুম বিলাস
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ‍পর থেকে শিক্ষার্থীরা তীব্র আবাসন সংকট রয়েছেন। এদিকে বিলাসবহুল রুমে বসবাসের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পমেল বড়ুয়ার বিরুদ্ধে। সরেজমিনে দেখা যায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হলের ৩০৫ নম্বর কক্ষে গড়ে তুলেছেন বিলাসবহুল রুম। সেখানে ৮ জনের সিট নির্ধারিত রয়েছে। তবুও একাই থাকছেন তিনি। রুমে বাইরে নেমপ্লেট লাগানো, দামি সোফা, রুমজুড়ে লালগালিচা বিছানো, জানালায় দামি পর্দা টানিয়ে নিজস্ব ডেরা গড়ে তুলেছেন এই ছাত্রলীগ সভাপতি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল সূত্রে জানা যায়, কোনো শিক্ষার্থী নিজ উদ্যোগে কক্ষে ডেকোরেশন করতে পারেন না। এমনকি পড়াশোনা শেষ হলে কক্ষে আর অবস্থান করারও সুযোগ নেই। যতদিন পড়াশোনা আছে ততদিন শিক্ষার্থীরা হলে থাকতে পারেন। কিন্তু কমিটি গঠনের পর থেকেই বর্তমান সভাপতি বিলাসবহুলভাবেই থাকছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী পরিচয় গোপন রেখে কালবেলাকে অভিযোগ করে বলেন, যেদিন হল খুলেছে, বাড়িতে সমস্যা থাকায় সেদিন আমি উঠতে পারি নাই। পরে আমার রুমমেট বলে, তোমার বেডে আরেকজনকে তুলে দিছে। তখন আমি হলে এসে ওই ছেলেকে জিজ্ঞেস করলাম, আমার লিগ‍্যাল সিটে তুমি কে। পরে সে বলে পমেল বড়ুয়া ভাইয়ের ছেলেরা তুলে দিছে। আমি সিট চাইলে আমার কাছে টাকা দাবি করে পমেল বড়ুয়া গ্রুপের সদস্যরা। টাকা না দিতে চাইলে তারা আমাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকিও দেয়। বেরোবি ছাত্রলীগের সভাপতি পমেল বড়ুয়া বলেন, নৈতিকভাবে বলতে গেলে পড়াশোনা শেষ হওয়ার পরেও হলে থাকা ঠিক না। রুম ডেকেরেশনের বিষয়ে বলেন, আমরা সাতজন মিলে রুমটা ডেকোরেশন করেছি। রাজনীতি করি, বিভিন্ন সময় নেতাকর্মীরা রুমে আসেন। তাই একটু রুমটা পরিপাটি করে রেখেছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হল প্রভোস্ট ড. বিজন মোহন চাকী বলেন, আমাদের আবাসন সংকট রয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী হলে থাকতে পারে না, তারা বাইরে মেসে থাকেন। পড়াশোনা শেষ হলেই হল ছাড়তে হবে। এমন নিজের ইচ্ছেমতো রুম ডেকেরেশন করা ঠিক না। এই সংকট কাটিয়ে তোলার জন্য কাজ চলছে, আশা করি দ্রুতই সমাধান হয়ে যাবে। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৩১ জুলাই লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী পোমেল বড়ুাকে সভাপতি ও রসায়ন বিভাগের মাহফুজুর রহমান শামীমকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছরের জন্য বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
০৭ নভেম্বর, ২০২৩
X