পিরোজপুরে রাসেলস ভাইপার সাপ মারার গুজব
দেশব্যাপী এখন আতঙ্ক ও আলোচনায় বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপার। দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষের মধ্যে এই সাপের আতঙ্ক বিরাজ করছে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই সাপ নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। কিন্তু এবার পিরোজপুরের নেছারাবাদে রাসেলস ভাইপার সাপ মেরেছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুক গুজব ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার (২২ জুন) সন্ধ্যা থেকে একাধিক ফেসবুক আইডিতে নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের জিলবাড়ি গ্রামে রাসেলস ভাইপার সাপের দেখা মেলার ছবি ও লেখা প্রচারিত হয়। এসব পোস্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ফেসবুকে এসব ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সরেজমিনে জানার যায়, নেছারাবাদ উপজেলার ১নং বলদিয়া ইউনিয়নের জিলবাড়ী গ্রামের ৮নং ওয়ার্ডে বসবাসরত ইব্রাহিম নামের এক যুবকের মাছ ধরার জালে আটকা পরে এই সাপটি। তাৎক্ষণিক জিরবাড়ি বাজারের ফার্মেসি ব্যবসায়ী মো. মহসিন রেজার কাছে সাপটি চিহ্নিত করার জন্য নিয়ে আসে। তিনি নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. ফিরোজ কিবরিয়ার কাছে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে মৃত সাপটির ছবি পাঠিয়ে দেয়। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানিয়ে দেন এটি রাসেলস ভাইপার সাপ নয়। এরই মধ্যে কিছু যুবক সাপটির ছবি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ও ফেসবুকের মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর পোস্ট দিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বলছে, ফেসবুকে ছড়ানো রাসেলস ভাইপার নামের সাপটি মূলত অন্য প্রজাতির সাপের ছবি। অন্য একটি ছবি রাসেলস ভাইপার সাপের হলেও ঘটনাটি গুজব। উপজেলা প্রশাসন বলছে, গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জিলবাড়ী গ্রামের একাধিক বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের গ্রামে রাসেলস ভাইপার সাপ ধরা পড়েছে এমন ঘটনা কেউ শোনেননি। তবে সন্ধ্যায় যে সাপটি ধরা হয়েছে সেটি আমারা কোন জাতের তা শনাক্ত করতে পারেননি। অফিশিয়াল ও আঞ্চলিক নামও তারা জানেন না বলে জানিয়েছেন। এই সাপ সর্বদা জলে বাস করে এবং মাছ খেয়ে জীবনধারণ করে তাই মাছ ধরার কারেন্ট জালে প্রায়শই ধরা পড়তে দেখা যায়। স্থানীয় পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী রক্ষা কমিটির সভাপতি হেলাল উদ্দিন জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাব্বির আহমেদ নামের একটি ফেসবুক আইডির পোস্টে রাসেলস ভাইপারের হত্যার বিষয়টি নজরে এলে যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে পুরোপুরি ভিত্তিহীন ও গুজব। নেছারাবাদে এখন পর্যন্ত রাসেলস ভাইপার সাপের দেখা মেলেনি। গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। এ বিষয়ে ইউপি সদস্য বাবুল হোসেন বলেন, আমি স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি, ওই এলাকায় রাসেলস ভাইপার সাপ ধরার কথা সত্যি না। ঘটনাটি গুজব। যে সাপটি ধরেছে সেটি অন্য কোনো প্রজাতির সাপ হবে। যাচাই-বাছাই করে সাপের নামটি জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বন কর্মকর্তা। এ প্রসঙ্গে নেছারাবাদ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হক জানান, নেছারাবাদ উপজেলায় রাসেলস ভাইপার সাপের দেখা মেলার ঘটনাটি সঠিক নয়। যারা এ ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে তাদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২৩ জুন, ২০২৪
X