ইউক্রেন যুদ্ধ শেষের সময় জানালেন রমজান কাদিরভ
রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ প্রায় দুই বছর ধরে চলছে। এই যুদ্ধ শেষের দৃশ্যমান কোনো নিদর্শন এখনো নেই। তবে এবার এই যুদ্ধ শেষের সম্ভাব্য সময় জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ। তিনি বলেছেন, আগামী বছরের বসন্ত বা গ্রীষ্মের মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হয়ে যাবে। গতকাল বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এই পূর্বাভাস দিয়েছেন তিনি। ইউক্রেন যুদ্ধে চেচনিয়ার সেনারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। রাশিয়ার দক্ষিণের এই প্রজাতন্ত্রের প্রধান রমজান কাদিরভ যুদ্ধক্ষেত্রে অগ্রগতির প্রতি গভীর মনোযোগ রেখে চলেছেন। তিনি বলেন, জনশক্তি, অস্ত্র ও অর্থ অভাবে আগামী জুন বা জুলাইয়ের মধ্যে কিয়েভের সামরিক সক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে যাবে। রমজান কাদিরভ বলেন, রাশিয়া চাইলে এই মুহূর্তে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল যেভাবে হামলা চালাচ্ছে সেভাবে হামলা করলে তিন মাসের মধ্যে ইউক্রেনকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করতে পারত। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনের অবকাঠামো ও শহরগুলো যতটা সম্ভব অক্ষত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তা না হলে আমরা কিয়েভ দখল করে নিতাম। আমরা কিয়েভ থেকে মাত্র সাত কিলোমিটার দূরে ছিলাম। কিন্তু ইউক্রেনকে রাষ্ট্র হিসেবে ধ্বংস করার কোনো ইচ্ছে প্রেসিডেন্টের নেই। এদিকে আজ বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার লক্ষ্য অপরিবর্তিত রয়েছে। সেগুলো অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত কিয়েভের সঙ্গে কোনো শান্তি চুক্তি হবে না। তিনি বলেন, ইউক্রেনে বর্তমানে প্রায় ৬ লাখ ১৭ হাজার রুশ সেনা রয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় ২ লাখ ৪৪ হাজার মানুষকে রুশ পেশাদার সামরিক বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করার জন্য ডাকা হয়েছিল। তবে বর্তমানে ইউক্রেনে আর রিজার্ভ সেনা পাঠানোর প্রয়োজন নেই।
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩

ইউক্রেনে আরও ৩ হাজার সেনা পাঠাবেন রমজান কাদিরভ
ইউক্রেনে আরও তিন হাজার সেনা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অন্যতম সহযোগী চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ। এসব সেনারা যুদ্ধে যাওয়ার জন্য পুরো প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  সোমবার (২৭ নভেম্বর) কাদিরভ জানান, আরও তিন হাজার সেনা পুরো প্রস্তুত রয়েছে। এসব সেনা রাশিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনী ও ন্যাশনাল গার্ড ফোর্সের সাথে যুক্ত হয়ে যুদ্ধ করবেন।  রমজান কাদিরভ মূলত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একান্ত শিষ্য হিসেবে পরিচিত। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তিনি মস্কোর হয়ে যুদ্ধ করে আসছেন। অন্যদিকে তার বিরোধী জোটগুলো ইউক্রেনের পক্ষ নিয়ে সহযোগিতা করে আসছে।  টেলিগ্রামে এক ম্যাসেজে রমজান কাদিরভ জানান, এ সেনারা আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত এবং তাদের সেরা সরঞ্জাম রয়েছে। তারা ফলাফল অর্জনের বিষয়ে অত্যন্ত প্রতিজ্ঞ এবং সংগ্রামী ও অনুপ্রেরণাপ্রাপ্ত।  এর  আগে মে মাসে এ চেচেন নেতা বলেছিলেন, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ২৬ হাজার সেনা পাঠিয়েছেন। এদের মধ্যে ১২ হাজার স্বেচ্ছাসেবী রয়েছে। যাদের ৭ হাজার সেনা প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধে অংশ নিয়েছে।  রাশিয়ার ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু হলে এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছিল রাশিয়ার ভাড়াটে সেনা হিসেবে পরিচিত ওয়াগনার গ্রুপ। তবে এ সেনাদলের প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিন বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বলে জানায় রাশিয়া। রুশ বাহিনী ও রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আগ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ‘অপারেশনে’ রীতিমতো নেতৃত্ব দিয়েছে। এর আগে নভম্বরেরর শুরুতে ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান নিহতের পর ওয়াগনার সেনাদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যা নিজের দলে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি করেন রমজান কাদিরভ। তিনি বলেন, এসব সেনারা চেচেনের স্পেশাল ফোর্সের সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রশিক্ষণও নিয়েছে।   
২৮ নভেম্বর, ২০২৩

আশঙ্কাজনক অবস্থায় পুতিনের একান্ত ভক্ত রমজান কাদিরভ
গুরুতর অসুস্থ পুতিনের ঘনিষ্ঠ ভক্ত ও চেচেন নেতা রমজান আখমাতোভিচ কাদিরভ। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে দাবি করেছে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সূত্র। নিউইয়র্ক টাইমস ও ইয়াহু নিউজের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  ইয়াহু নিউজ জানিয়েছে, ইউক্রেনের গোয়েন্দা কর্মকর্তা অ্যান্দ্রিয় ইয়োসোভ দেশটির সংবাদমাধ্যম অবজরিভাটেলকে বলেন, হাসপাতাল ও রাজনৈতিক একাধিক সূত্র বলছে তার অবস্থা গুরুতর। তিনি আগে থেকেই নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। বর্তমানে তার সেসব অবস্থার অনেক অবনতি হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থার তৈরি হয়েছে। তবে তিনি কোনো ধরনের আঘাত পাননি। অ্যান্দ্রিয় বলেন, এটি তার কোনো আঘাতজনিত অসুস্থতা নয়। তিনি দীর্ঘসময় ধরে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। তার এসব অবস্থার কারণেই এখন অবস্থা মারাত্মক। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।  মাদকের প্রতি তীব্র আসক্তির কারণে চেচনিয়ার এই যুদ্ধবাজ নেতার শারীরিক অবস্থা গত কয়েক মাস ধরে খারাপ বলে গুজব রয়েছে। কিডনি জটিলতাসহ নানা ধরনের সমস্যায় ভোগা রমজান কাদিরভকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে বলেও অনেকে ধারণা করেন। সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কাদিরভ মূলত পুতিনের সেনা, পুতিনের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে পরিচিত। তিনি ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহযোগিতার জন্য সেনা মোতায়েন করেছিলেন।  উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে পিতা আখমাদ কাদিরভের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় আসেন রমজান কাদিরভ। দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধে বিদ্রোহী চেচনিয়া প্রদেশটি পুনরুদ্ধার করার পর পুতিনের শাসনভার তুলে দেন তার অনুগত চেচেন নেতা আখমাদ কাদিরভের হাতে। রাশিয়ান সামরিক বাহিনী এবং অন্যান্য নিরাপত্তা পরিষদের বিরোধিতা সত্ত্বেও চেচনিয়াকে প্রায় স্বায়ত্তশাসিতভাবে পরিচালনা করতে পুতিনের সম্পূর্ণ সমর্থন পেয়েছিলেন রমজান কাদিরভ। বিনিময়ে পুতিন চেয়েছিলেন কাদিরভকে এই অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে দমন করতে হবে। চেচেন সরকারের বাজেটের প্রায় ৯-দশমাংশের জোগান দেয় রাশিয়া। বিশাল রাষ্ট্রীয় ভর্তুকির পাশাপাশি দেওয়া হয় পুরস্কার এবং প্রণোদনা। রাজধানী গ্রোজনিতে কাদিরভ এবং তার মিত্ররা সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন ভোগ করলেও, অনেক শক্তিশালী শত্রুও ছিল তার। ওয়াগনার গোষ্ঠী ছিল সেই শত্রুদের একজন। ওয়াগনারের অনেক পেশাদার সৈন্য ছিলেন যারা চেচেন যুদ্ধে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। এক সময় রমজান কাদিরভ নিজেও ছিলেন সেই বিদ্রোহীদের মধ্যে। তাই জাতিগতভাবে চেচেনদের জন্য ওয়াগনার বাহিনীতে যোগদান নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ইউক্রেন যুদ্ধে প্রিগোজিন এবং রমজান কাদিরভের মধ্যে একটি মিল দেখা গেছে। তারা দুজনেই রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেছেন। তারা দুজনেই রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে অযোগ্য বলে আক্রমণ করেছেন এবং এর মাধ্যমে তারা নিজেদের ভাড়াটে বাহিনীকে সামনে নিয়ে এসেছেন।
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

এশিয়া টাইমস থেকে / রমজান কাদিরভ কি পুতিনকে বাঁচাতে পারবেন?
গত দেড় বছরের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে যত নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে খুব কম ঘটনাই গত সপ্তাহের মতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করতে পেরেছে। রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান অভিযোগ এবং হুমকির কয়েক মাস পর প্রকাশ্যে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন ওয়াগনার মার্সেনারি বাহিনীর প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন। মস্কোর দিকে অগ্রসর হওয়ার আগে তার লোকরা প্রথমে দক্ষিণ-পশ্চিম রাশিয়ার শহর রোস্তভ-অন-ডন দখল করে নেয়। একাধিক রাশিয়ান হেলিকপ্টারকে তারা গুলি করে ভূপাতিত করে যা তাদের অগ্রগতি থামানোর চেষ্টা করেছিল। অবশেষে, রাজধানী থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরে প্রিগোজিন তার পদযাত্রা শেষ করতে এবং বেলারুশে নির্বাসনে যেতে সম্মত হন। যার চূড়ান্ত রূপটি এখনো খুব অস্পষ্ট। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার চারপাশে যে দলগুলোকে সমবেত করেছিলেন তাদের মধ্যে একটির নেতৃত্বে ছিলেন ক্রেমলিন-নিযুক্ত চেচনিয়ার যুদ্ধবাজ নেতা রমজান কাদিরভ। যার লোকরা ওয়াগনারের মুখোমুখি হওয়ার জন্য রোস্তভ এবং মস্কো উভয় দিকেই অবস্থান নিয়েছিল। এই দৃষ্টিতে, ভবিষ্যতে এই ধরনের বিদ্রোহের ক্ষেত্রে, কাদিরভের সৈন্যরা ক্রেমলিনকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে–তবে সেটা কতটা?  পুতিনের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে রাশিয়ার অনেক রাজনীতিবিদ এবং নিরাপত্তা প্রধান লাভবান হয়েছেন। তবে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন রমজান কাদিরভ।  ২০০৪ সালে পিতা আখমাদ কাদিরভের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় আসেন রমজান কাদিরভ। দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধে বিদ্রোহী চেচনিয়া প্রদেশটি পুনরুদ্ধার করার পর পুতিনের শাসনভার তুলে দেন তার অনুগত চেচেন নেতা আখমাদ কাদিরভের হাতে। রাশিয়ান সামরিক বাহিনী এবং অন্যান্য নিরাপত্তা পরিষদের বিরোধিতা সত্ত্বেও চেচনিয়াকে প্রায় স্বায়ত্তশাসিতভাবে পরিচালনা করতে পুতিনের সম্পূর্ণ সমর্থন পেয়েছিলেন রমজান কাদিরভ। বিনিময়ে পুতিন চেয়েছিলেন কাদিরভকে এই অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে দমন করতে হবে।  চেচেন সরকারের বাজেটের প্রায় ৯-দশমাংশের জোগান দেয় রাশিয়া। বিশাল রাষ্ট্রীয় ভর্তুকির পাশাপাশি দেওয়া হয় পুরস্কার এবং প্রণোদনা। রাজধানী গ্রোজনিতে কাদিরভ এবং তার মিত্ররা সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন ভোগ করলেও, অনেক শক্তিশালী শত্রুও ছিল তার। ওয়াগনার গোষ্ঠী ছিল সেই শত্রুদের একজন। ওয়াগনারের অনেক পেশাদার সৈন্য ছিলেন যারা চেচেন যুদ্ধে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। এক সময় রমজান কাদিরভ নিজেও ছিলেন সেই বিদ্রোহীদের মধ্যে। তাই জাতিগতভাবে চেচেনদের জন্য ওয়াগনার বাহিনীতে যোগদান নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।  ইউক্রেন যুদ্ধে প্রিগোজিন এবং রমজান কাদিরভের মধ্যে একটি মিল দেখা গেছে। তারা দুজনেই রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেছেন। তারা দুজনেই রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে অযোগ্য বলে আক্রমণ করেছেন এবং এর মাধ্যমে তারা নিজেদের ভাড়াটে বাহিনীকে সামনে নিয়ে এসেছেন।  কিন্তু এটি ছিল একটি ‘চুক্তিভিত্তিক বিয়ে’র মতো। যার প্রমাণ পাওয়া যায় ওয়াগনারের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার দিমিত্রি উতকিনের মন্তব্য থেকে। গত ১ জুন দিমিত্রি উতকিন কাদিরভের শীর্ষ ডেপুটিকে তাদের সঙ্গে মুখোমুখী যুদ্ধে নামার হুমকি দিয়েছিলেন। বিদ্রোহে কাদিরভের ভূমিকা প্রিগোজিনের বিদ্রোহকে চ্যালেঞ্জ করার এবং পুতিনের পতনের কোনো সম্ভাবনাকে রুখে দেওয়ার জন্য রমজান কাদিরভের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। পুতিনের অব্যাহত আর্থিক ও রাজনৈতিক সমর্থনের একমাত্র কারণ নয়। ওয়াগনার গ্রুপের প্রতি পুরোনো ক্ষোভও রয়েছে এই চেচেন নেতার। এই হিসাব থেকেই শনিবারের বিদ্রোহে ওয়াগনার বাহিনীর বিরুদ্ধে উভয় হটস্পটে নিজের লোকদের যথাযথভাবে মোতায়েন করেছিলেন রমজান কাদিরভ। তিনি তার বাহিনীর একটি সাঁজোয়া দলকে রোস্তভের দিকে প্রেরণ করেছিলেন অন্যটিকে মস্কোর উপকণ্ঠে অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দেন যেখানে রাশিয়ান বাহিনী এবং অন্যান্য অনুগত সৈন্যরা অবস্থান করছিল। রোস্তভে, কাদিরভের চেচেনরা ওয়াগনার বাহিনীর সঙ্গে প্রায় মুখোমুখি হয়ে পড়েছিল। উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যেই শহরে প্রবেশ করেছিল তারা এবং এমন সময়েই প্রিগোজিনের পক্ষে বিদ্রোহ থেকে সরে আসার ঘোষণা আসে। ওয়াগনারের বিরুদ্ধে দাড়ালেও তারা ওয়াগনারের সাথে সরাসরি কোন যুদ্ধে জড়ায়নি। তারা প্রিগোজিনের লোকদের উপর একটি গুলিও চালায়নি এবং তারা সেই সময়েই ওয়াগনারের সামনে দাড়ায় যখন ওয়াগনার এবং ক্রেমলিনের মধ্যে সমঝোতা ঘোষণা হয়েছে। ওয়াগনার বাহিনীর বিদ্রোহ ঘোষণার পর কাদিরভ অবিলম্বে তার লোকদের মোতায়েন করে পুতিনের প্রতি তার আনুগত্য প্রদর্শন করেছিলেন। কিন্তু যুদ্ধে জড়ানো থেকে বিরত ছিলেন। পরিবর্তে বাক্ যুদ্ধ শুরু করেছিলেন এবং উচ্চস্বরে প্রিগোজিনকে বিশ্বাসঘাতক বলে ঘোষণা করেছিলেন। প্রিগোজিনের মস্কো যাত্রার প্রতি কাদিরভের প্রতিক্রিয়া ছিল ইউক্রেনে রাশিয়ান আক্রমণে তার ভূমিকার মতো।  আনুগত্য প্রদর্শন করা কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় নিজের লোকদের ঝুঁকি নেওয়া থেকে বিরত থাকা।  যুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে কাদিরভ তার বাহিনী নিয়ে কিয়েভের প্রাথমিক অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন। পাশাপাশি সেভেরোডোনেটস্কের ডনবাস শহর এবং মারিউপোল আক্রমণে ভূমিকা পালন করেছিল তারা। কিন্তু এরপর রমজান কাদিরভ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে তার সৈন্যদের পিছিয়ে নিয়ে আসেন। গত গ্রীষ্ম থেকে তারা খুব কমই ইউক্রেনে যুদ্ধ করেছে। চেচনিয়ার সীমানার বাইরে এখন পর্যন্ত এটিই ছিল কাদিরভের ভূমিকার সারমর্ম। চেচনিয়ায় বিদ্রোহের চূড়ান্ত অবসান এবং ইউক্রেনে রাশিয়ান আক্রমণের মধ্যে আট বছর বা তারও বেশি সময়–এই দীর্ঘ সময়ে রমজান কাদিরভ কখনোই তার সৈন্যদের যুদ্ধে জড়াননি। তিনি সর্বদাই তার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য বিদ্রোহ এবং রাশিয়ান নিরাপত্তা পরিষেবাগুলোর সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে চিন্তিত ছিলেন।   চেচনিয়ার বিদ্রোহীরা যখন নতুন করে ইউক্রেনে সংগঠিত হচ্ছে এবং প্রকাশ্যে কাদিরভকে উৎখাত করার পরিকল্পনা করছে এই সময় কাদিরভ তার বাহিনীকে কোন ধরণের ঝুঁকির মুখে ফেলতে চাননা। পুতিনের শাসনের উপর তার নির্ভরশীলতা সত্ত্বেও, চেচেন নেতা পুতিনকে রক্ষা করার জন্য তার নিজের সৈন্যদের দৃঢ় ভাবে মোতায়েন করেছেন তা কল্পনা করা কঠিন। কাদিরভ নিজেকে ‘পুতিনের পদাতিক সৈনিক’ হিসাবে ঘোষণা করতে পারেন। কিন্তু নিজের শক্তি ও ক্ষমতা ক্ষয় করার খুব কমই আগ্রহ আছে তার। যে ক্ষমতা তার প্রয়োজন হতে পারে রাশিয়ায় বা চেচনিয়ায় ভবিষ্যত সম্ভাব্য ভাঙ্গন ঘটলে। মূল - নেইল হাওয়ার (NEIL HAUER), জর্জিয়ান সাংবাদিক ও বিশ্লেষক ভাষান্তর: মুজাহিদুল ইসলাম  
০৬ জুলাই, ২০২৩
X