১১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য
২০২৪-২০২৭ মেয়াদে ১১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ‘রপ্তানি নীতিমালার’ অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।  সোমবার (১ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে রপ্তানি নীতিমালা করা হয়েছে। যাতে নতুনভাবে ৩টি বিষয়ে গুরুত্ব বাড়াতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। গুরুত্বগুলো হলো- ১. ইলেকট্রনিক ডিভাইস তৈরি ও রপ্তানি বাড়াতে প্রয়োজনীয় সহায়তা বাড়াতে তাগিদ দিয়েছেন। ২. উন্নয়নশীল দেশ হলে বিশেষ কিছু সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ, তাই বেশ কিছু বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ৩. শাকসবজি-ফল আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির ব্যবস্থাগ্রহণে গুরুত্ব দিতে হবে। একই সঙ্গে দেশীয় পণ্যের গুণগত মান বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।  মো. মাহবুব হোসেন বলেন, পদ্মা সেতু রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ওই কোম্পানি ১৪ জন বোর্ড ও ডিরেক্টরের সমন্বয়ে গঠিত হবে। কোম্পানির প্রাথমিক মূলধন হবে এক হাজার কোটি টাকা। পদ্মা সেতুর ব্যবস্থাপনা পুরোপুরি দেশীয় কোম্পানি নিয়ন্ত্রণ করবে। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে যত্ন ও স্বচ্ছতার সঙ্গে পাস হওয়া নতুন অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বাজেট বাস্তবায়নের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সবাই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত না। কিছু সরকারি কর্মকর্তা এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের তথ্য সরকারের নজরে আসলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সরকারের পুরো মেকানিজম মিলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দুর্নীতিবাজদের কোনো সহানুভূতি দেখানো হবে না। 
০১ জুলাই, ২০২৪

আরও কমলো রপ্তানি সহায়তা শঙ্কা দেখছেন ব্যবসায়ীরা
ডলার সংকটের এ সময়ে পণ্য রপ্তানি বাড়ানো জরুরি হলেও দেশের রপ্তানি আয় সেভাবে বাড়ছে না। এরই মধ্যে মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে পণ্য রপ্তানিতে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা দ্বিতীয় বারের মতো কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল এ বিষয়ে একটি সার্কুলারও জারি করেছে। এতে পণ্য রপ্তানিতে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন রপ্তানিকারকরা। তারা বলছেন, করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং তারপর হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি টানাপোড়েনের মধ্যে রয়েছে। তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা কমেছে। এই কঠিন সময়ে গত বছর রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) আকার কমানো হয়েছে। প্রতিনিয়ত ব্যবসার খরচ বাড়ছে। গ্যাসের সংকট কাটছে না। অথচ ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণ করে রাখা হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে হঠাৎ নগদ সহায়তা কাটছাঁট করার সিদ্ধান্তে বড় চাপের মধ্যে পড়বে দেশের রপ্তানি খাত। এই প্রসঙ্গে নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম কালবেলাকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সিদ্ধান্ত মোটেও ঠিক হয়নি। আমরা আগামী ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবো। এর পরও আরও তিন বছর নগদ সহায়তা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু আমরা তো অন্তত ২৬ সাল পর্যন্ত এ সুবিধা পেতেই পারি। কিন্তু এর আগেই নগদ সহায়তা কমানো শুরু করেছে। এটা দেশের রপ্তানি খাতের জন্য মোটেও ভালো হবে না। এ ছাড়া রপ্তানিমুখী দেশি নিট পণ্যের ওপর থেকে সহায়তা কমায় পোশাক প্রতিষ্ঠানগুলো দেশি প্রতিষ্ঠান থেকে নিট পণ্য ক্রয় থেকে বিমুখ হবে। এতে এই শিল্পই হুমকির মুখে পড়বে। এক কথায়, তৈরি পোশাকের কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি বাড়বে। আর দেশি শিল্প ধীরে ধীরে বন্ধ হওয়া শুরু হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগে রপ্তানি আয়ের ওপর শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা প্রদান করা হতো, যাতে রপ্তানিকারকদের উৎসাহিত করা যায় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে তাদের আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তোলা যায়। এখন নতুন ঘোষণার পর, সর্বোচ্চ হার ১০ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রযোজ্য হবে বলে সার্কুলারে জানানো হয়েছে। তথ্য বলছে, নগদ সহায়তার সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হচ্ছে তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাত। তবে এখন নগদ সহায়তা কাটছাঁট করা হলে তৈরি পোশাক শিল্পের কমপক্ষে অর্ধেক পণ্য রপ্তানি প্রণোদনা থেকে বাদ পড়বে। এ ছাড়া নগদ সহায়তা কমছে শীর্ষস্থানীয় রপ্তানি খাত চামড়া, পাটজাত পণ্য, প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য, আসবাব, প্লাস্টিকসহ বেশকিছু পণ্যে। নতুন হার অনুযায়ী, রপ্তানিমুখী দেশীয় বস্ত্র খাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্রুব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা কমিয়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। আগে যা ৩ শতাংশ ছিল। ইউরো অঞ্চলে বস্ত্র খাতের রপ্তানিকারকদের প্রণোদনার হার ১ দশমিক ৫ শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তাও ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। নিট, ওভেন, সোয়েটারসহ তৈরি পোশাক খাতের সব ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প অতিরিক্ত সুবিধা ১ শতাংশ কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন পণ্য বা নতুন বাজারে ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ২ শতাংশ। তৈরি পোশাক খাতে বিশেষ নগদ সহায়তা শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ করা হয়েছে। পাটজাত চূড়ান্ত দ্রব্যে ৫ শতাংশ, পাটসুতায় ৩ শতাংশ এবং চামড়াজাত দ্রব্যাদি রপ্তানিতে ১০ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হবে। অন্য পণ্যগুলোর মধ্যে হাতে তৈরি পণ্যে ৬ শতাংশ, গরু-মহিষের নাড়িভুঁড়ি, শিং ও রগে ৬ শতাংশ, হিমায়িত চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ রপ্তানি খাতে ১ দশমিক ৫ থেকে ৮ শতাংশ, হালকা প্রকৌশল পণ্য রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, কারখানাগুলোতে উৎপাদিত ক্রাস্ট ও ফিনিশড লেদার রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, পেট বোতল-ফ্লেক্স রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, পেট বোতল-ফ্লেক্স থেকে উৎপাদিত পলইয়েস্টার স্টাপল ফাইবার রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, জাহাজ রপ্তানির বিপরীতে ৬ শতাংশ, পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত কার্বন ও জুট পার্টিকেল বোর্ড রপ্তানিতে ৮ শতাংশ, শস্য ও শাকসবজির বীজ রপ্তানিতে ৮ শতাংশ, ফার্নিচার রপ্তানিতে ৮ শতাংশ, প্লাস্টিকদ্রব্য রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, দেশে উৎপাদিত কাগজ ও কাগজ জাতীয় দ্রব্য রপ্তানিতে ৬ শতাংশ এবং আগর ও আতর রপ্তানিতে ৮ শতাংশ প্রণোদনা পাবেন রপ্তানিকারকরা। এ ছাড়া ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্যে ৫ শতাংশ, অ্যাকুমুলেটর ব্যাটারিতে ১০ শতাংশ, সফটওয়্যার, আইটিইএস ও হার্ডওয়্যার রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, সফটওয়্যার ও আইটিইএস সেবা রপ্তানিতে ব্যক্তি পর্যায়ের ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ২ দশমিক ৫ শতাংশ, মোটরসাইকেল রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, রেজার ও রেজার ব্লেড রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, সিরামিক পণ্য রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, টুপি রপ্তানিতে ৭ শতাংশ, কাঁকড়া ও কুঁচে রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, কেমিক্যাল পণ্য (ক্লোরিন, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড, কস্টিক সোডা এবং হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড) রপ্তানিতে ৫ শতাংশ, কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য রপ্তানিতে ৬ শতাংশ, চাল রপ্তানিতে ৩ শতাংশ, চা রপ্তানিতে ২ শতাংশ, স্টিল রপ্তানিতে ২ শতাংশ, বাইসাইকেল ও এর পার্টস রপ্তানিতে ৩ শতাংশ, সিমেন্ট সিট রপ্তানিতে ৩ শতাংশ, বেজা, বেপজা ও হাইটেক পার্ক এ অবস্থিত প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে রপ্তানিতে দশমিক ৩ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।
০১ জুলাই, ২০২৪

কৃষিপণ্য রপ্তানি বাড়াতে পর্যাপ্ত কার্গো চান ব্যবসায়ীরা
ফল, শাকসবজিসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যের রপ্তানি সম্প্রসারণে পর্যাপ্ত এয়ার কার্গো চান রপ্তানিকারকরা। পাশাপাশি বিমানের ভাড়া বা ফ্রেইট কস্ট যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার দাবি জানিয়েছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। গতকাল এফবিসিসিআইর মতিঝিল কার্যালয়ে ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট অব ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবল বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভায় সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকরা এসব দাবি জানান। সভার প্রধান অতিথি এফবিসিসিআইর সভাপতি মাহবুবুল আলম ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে বলেন, ডলার সংকট, বাড়তি বিমান ভাড়া, কাস্টমস এবং এইচএস কোড-সংক্রান্ত নানা জটিলতায় পণ্য আমদানি-রপ্তানি ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এতে ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় বাড়ছে। পণ্য আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত সমস্যা দূর করতে এফবিসিসিআই এরই মধ্যে সরকারের উচ্চপর্যায়ের আলোচনা করেছে বলেও জানান তিনি। এ সময় ফল ও শাকসবজি আমদানি রপ্তানিতে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং করণীয় নির্ধারণে কমিটির সদস্যদের কাছে মতামত আহ্বান করেন এফবিসিসিআই সভাপতি। জাতীয় অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব তুলে ধরে এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি আমিন হেলালী বলেন, কৃষিপণ্য রপ্তানি বাড়াতে বিমান ভাড়া, কাগো প্রাপ্তি, কাস্টমসসহ সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে। পাশাপাশি, উপযুক্ত পলিসি এবং নির্ভুল তথ্যভান্ডার গড়ে তোলার ওপর জোর দেন তিনি। উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে ফল ও শাকসবজি রপ্তানির জটিলতা দূর করতে বিমান বন্দরে এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন স্ক্যানার (ইডিএস) মেশিনসহ কারিগরি সক্ষমতা বাড়ানোর সুপারিশ জানান কমিটির সদস্যরা। এ ছাড়া, কৃষকের হাতের নাগালে আধুনিক ওয়্যারহাউস স্থাপন, উন্নত পরিবহন ও সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, পচনশীল পণ্যের জন্য বিমানবন্দরে বিশেষ ওয়্যারহাউস স্থাপন, কৃষিপণ্যের জাত এবং গুণগতমান উন্নয়ন, চাষ-পরবর্তী ব্যবস্থাপনা (পোস্ট হার্ভেস্ট ম্যানেজমেন্ট) উন্নত করা, প্যাকেজিং প্রভৃতি বিষয়ে কৃষক, রপ্তানিকারকসহ অন্যান্য অংশীজনের দক্ষতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ গ্রহণের প্রস্তাব জানানো হয় ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে। সভায় ছিলেন এফবিসিসিআইর পরিচালক হাফেজ হাজী হারুন-অর-রশিদ, ইসহাকুল হোসেন সুইট, আবুল হাশেম, বাংলাদেশ বিমানের কার্গো এক্সপোর্ট বিভাগের ডিজিএম তফাজ্জল হোসেন আকন্দ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী প্রমুখ।
২৮ জুন, ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রসহ বড় বাজারে পোশাক রপ্তানি কমেছে
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমছেই। সেইসঙ্গে কানাডা, জার্মানিসহ তৈরি পোশাকের বড় বাজারগুলোতেও কমছে রপ্তানি। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) তৈরি পোশাকের বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইতালি ও জার্মানির মতো দেশে রপ্তানি কমেছে। যদিও এ সময় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাজ্যসহ নতুন কিছু বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি বেড়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো প্রকাশিত প্রতিবেদন (ইপিবি) বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা গেছে। এতে দেখা যায়, অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসে জার্মানির বাজারে ৫৪২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ১২ শতাংশ কম। একই সময় ইতালির বাজারে পণ্য রপ্তানি করেছে ১৯৩ কোটি ডলার; যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৬ দশমিক ১০ শতাংশ কম। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানির নেতিবাচক ধারা থেকে এখনো বের হতে পারেনি বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের জুলাই-মে পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ৭৪৭ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। রপ্তানির এ অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ কম। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৭৭৩ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। আলোচিত সময় কানাডার বাজারেও রপ্তানি করেছে দশমিক ৩১ শতাংশ। এ সময় ১৩৮ কোটি ডলারের পোশাক পণ্য রপ্তানি করেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময় ছিল ১৩৯ কোটি ডলার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রথমত বিশ্বব্যাপী মন্দার কারণে তৈরি পোশাকের চাহিদা কমে গেছে। তবে ভিয়েতনাম এবং চীনের রপ্তানি খুব বেশি না কমলেও বাংলাদেশের রপ্তানি কমছে অস্বাভাবিক হারে। এর জন্য চারটি কারণকে দায়ী করে তারা বলছেন, ব্যাংক খাতের অসহযোগিতা, কাস্টমসের প্রতিবন্ধকতা, গ্যাস-বিদ্যুতের অপর্যাপ্ততা এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে রপ্তানি প্রণোদনা বন্ধ করে দেওয়ার কারণেই কমছে তৈরি পোশাক রপ্তানি। জানতে চাইলে নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম কালবেলাকে বলেন, ‘ব্যাংক সময়মতো ব্যাক টু ব্যাক এলসি করছে না, পদে পদে কাস্টমসের হয়রানির স্বীকার হতে হচ্ছে আমাদের। আর বর্তমান সময়ের মতো গ্যাস-বিদ্যুতের অপর্যাপ্ততা আগে কখনো দেখিনি। এসব সমস্যার কারণে আমাদের লিড টাইম বেশি লাগে। ফলে ক্রেতারা আমাদের অর্ডার না দিয়ে চীন বা ভিয়েতনামকে দিয়ে দিচ্ছে। এতে তাদের রপ্তানি না কমলেও আমাদের ক্রয়াদেশ কমে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘গুদামে পণ্যের মজুত ফুরিয়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান আগের চেয়ে দ্রুত বা কম লিড টাইমে পণ্য নিচ্ছে। আমাদের লিড টাইম (ক্রয়াদেশ থেকে পণ্য জাহাজীকরণের সময়) বেশি হওয়ায় এসব ক্রয়াদেশ নিতে পারছি না আমরা। কারণ, আমাদের গভীর সমুদ্রবন্দর নেই। তা ছাড়া গ্যাস সংকটের কারণে আমাদের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আগে আমরা ৪০ থেকে ৬০ দিনে যেসব পণ্য দিতে পারতাম, সেগুলো দিতে এখন লাগছে ৫০ থেকে ৮০ দিন। ফলে চীন ও ভিয়েতনামের রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় ফিরলেও আমরা পারছি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকার আইএমএফের পরামর্শে রপ্তানিতে প্রণোদনা বন্ধ করে দিয়েছে, যা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। কারণ আইএমএফ কখনো বাংলাদেশের উন্নতি চায় না। তারা অন্য দেশের উন্নতি করতে গিয়ে বাংলাদেশকে ভুল পরামর্শ দেয়, যা বাংলাদেশের উন্নতিতে কখনোই কাজে আসে না।’ প্রধান বাজারগুলোতে কমলেও যুক্তরাজ্যের বাজারে পোশাক রপ্তানি ইতিবাচক ধারা অব্যাহত আছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের বাজারে ৫১৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়; যার প্রবৃদ্ধির হার ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। বিজিএমইএ জানায়, নতুন বাজারে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ৮১৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রপ্তানি বেড়েছে ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ। নতুন বাজারের মধ্যে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ায় তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়লেও ভারতে কমেছে। ভারতে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ৭২ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে; যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৩ শতাংশ কম। গত বছর এ সময় প্রতিবেশী দেশটিতে রপ্তানি হয়েছিল প্রায় ৯৫ কোটি ডলার। জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-মে সময়ে তৈরি পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪ হাজার ৩৮৫ কোটি ডলার। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এর আগে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪ হাজার ৬৯০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছিল। এক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১০ দশমিক ২৭ শতাংশ।
২৮ জুন, ২০২৪

আম রপ্তানি বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে : কৃষিমন্ত্রী
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আম রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য উত্তম কৃষি চর্চা (গ্যাপ) অনুসরণ করে দেশে চলছে নিরাপদ আম উৎপাদন। এ কার্যক্রম সরেজমিনে ঘুরে দেখলেন ঢাকায় নিযুক্ত প্রায় ২০টি দেশের রাষ্ট্রদূত/মিশনপ্রধানরা। বাংলাদেশের এ উদ্যোগকে তারা প্রশংসা করেছেন এবং নিরাপদ আম উৎপাদন কার্যক্রম দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কান্দবোনা গ্রামে উত্তম কৃষি চর্চা (গ্যাপ) অনুসরণ করে পরিচালিত আম চাষি রুহুল আমিনের আম বাগান পরিদর্শন করেন তারা। কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মো. আব্দুল ওয়াদুদ, স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহা. জিয়াউর রহমান, কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার এবং ব্রুনাই দারুস সালাম, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, স্পেন, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভুটান, ভিয়েতনাম, শ্রীলংকা, মিয়ানমার ও লিবিয়ার রাষ্ট্রদূতগণ এ পরিদর্শনে অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) এর বাংলাদেশ প্রতিনিধিও এ টিমে ছিলেন। পরিদর্শন শেষে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের আম স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় এবং বিদেশেও খুবই জনপ্রিয়। প্রতিবছর দেশ থেকে লক্ষাধিক টন আম রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু আমরা মাত্র তিন হাজার টনের মতো আম রপ্তানি করতে পারি। এক্ষেত্রে মূল প্রতিবন্ধকতা ছিল গ্যাপ অনুসরণ না করা। সেজন্য, গ্যাপ মেনে আমরা নিরাপদ আম উৎপাদন শুরু করেছি। আজকে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা এ কার্যক্রম ঘুরে দেখেছেন।  মন্ত্রী বলেন, আমরা বেশি পরিমাণ আম রপ্তানির চেষ্টা করছি। এ পরিদর্শনের মাধ্যমে রাষ্ট্রদূতদের উৎসাহিত করছি যাতে করে বেশি পরিমাণ আম রপ্তানি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হয়। আমি মনে করি, এ ভিজিটের ফলে আম রপ্তানি বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। এ সময় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, কৃষি, বাণিজ্য এবং পররাষ্ট্র তিন মন্ত্রণালয় মিলে আমরা আমাদের আমকে বিদেশে ব্র্যান্ডিং করব। যাতে বিদেশে রপ্তানি আরও বৃদ্ধি পায়। আম রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের বহু সমস্যা আছে, থাকতে পারে। এগুলো আমরা সমাধান করব।   তিনি বলেন, গ্যাপ না থাকলে চাইলেই বিদেশে আম রপ্তানি করা যায় না। গ্যাপ বাস্তবায়ন আমরা শুরু করেছি। সামনে কোনো সমস্যা থাকবে না।  কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেন, আমরা উত্তম কৃষি চর্চা শুরু করেছি। এটি সারা বিশ্বের প্রতিনিধিরা দেখল। আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমাদের আমের কোয়ালিটি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে প্রত্যেকটি দেশেই ফাইটোস্যানিটারি ইস্যু আছে, এর একটা নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড আছে। গ্যাপ মেনে আম উৎপাদন করতে পারলে বিশ্বের সব দেশেই আম রপ্তানি করা যাবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের সুস্বাদু ও সম্ভাবনাময় আম রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে উত্তম কৃষি চর্চা (গ্যাপ) অনুসরণ করে নিরাপদ আমের উৎপাদন কার্যক্রম ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত/মিশনপ্রধানদের নিকট তুলে ধরতে আমবাগান পরিদর্শনের আয়োজন করে মন্ত্রণালয়। উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের ৩৮টি দেশে আম রপ্তানি হচ্ছে; যদিও এর পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। ২০২১ সালে বিশ্বে প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের আম রপ্তানি হয়। আর বাংলাদেশ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ হাজার ৭৫৭ টন আম রপ্তানি এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩ হাজার ১০০ টন আম রপ্তানি হয়েছে। 
২৭ জুন, ২০২৪

১০ বছরে পাট রপ্তানিতে আয় কত, জানালেন নানক
২০১৩-১৪ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ১০ বছরে পাট রপ্তানি বাবদ ১০ হাজার ৪৫৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা আয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক।  বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) জাতীয় সংসদে নোয়াখালী-২ আসনের সরকার দলীয় এমপি মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান পাটমন্ত্রী।  মন্ত্রী জানান ভারত, পাকিস্তান, চীন, নেপাল, ব্রাজিল, ইউকে, জিবুতি, ভিয়েতনাম, অস্ট্রিয়া, ইউ এস এ, স্পেন, জার্মানি, মেক্সিকো, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া, জাপান, কোরিয়া, তুর্কি, ইন্দোনেশিয়া, বেলজিয়াম, তিউনিশিয়া, কেনিয়া, উগান্ডা, সিংগাপুরসহ ১৩৫ টি দেশে রপ্তানি করা হয়েছে। এ সময় পাট রপ্তানি বাবদ ১০ হাজার ৪৫৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা আয় হয়েছে। ঢাকা-৮ আসনের সরকার দলীয় এমপি আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৮ সাল হতে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ১২ লাখ ৯ হাজার ২৬ টন কাঁচাপাট এবং দুই হাজার ১৬৪ দশমিক ১২১ টন পাটবীজ উৎপাদন করা হয়েছে। স্বতন্ত্র এমপি সাদ্দাম হোসেন পাভেলের প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের স্থানীয় বাজারে বস্ত্রের চাহিদার পরিমাণ প্রায় সাত বিলিয়ন মিটার। দেশের স্থানীয় বাজারে বস্ত্রের চাহিদার ঘাটতি নেই। চাহিদা অনুযায়ী পুরোটাই দেশে উৎপাদিত হয়। তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে ওভেন এবং ডেনিম বস্ত্রের চাহিদা প্রায় আট বিলিয়ন মিটার। এর মধ্যে প্রায় চার বিলিয়ন মিটার দেশে উৎপাদিত হয় এবং প্রায় চার বিলিয়ন মিটার আমদানি করা হয়। তবে তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে নিট সুতার চাহিদা প্রায় ১৬ লাখ টন। তার মধ্যে প্রায় ১২ লাখ টন সুতা দেশে উৎপাদিত হয় এবং প্রায় চার লাখ টন ঘাটতি রয়েছে যা আমদানি করা হয়। ঘাটতি (ওভেন ও ডেনিম বস্ত্রের) পূরণের জন্য প্রধানত চীন ও ভারত হতে আমদানি করা হয়। তিনি বলেন, শিল্প উদ্যোক্তারা দেশে নতুন নতুন বস্ত্র ও সুতা উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করছে। ফলে তৈরি পোশাক রপ্তানির জন্য ওভেন ও ডেনিম বস্তের ঘাটতি ক্রমান্বয়ে কমে আসবে। স্বতন্ত্র এমপি পংকজ নাথের প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, সরকারি সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে বিজেএমসির ২৫টি মিলের উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। উৎপাদন করা ২০টি মিল ইজারার ভিত্তিতে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পুনঃচালুর সরকারি সিদ্ধান্তে ১৪টি মিলের লিজচুক্তি স্বাক্ষরিক হয়েছে। যার মধ্যে ৭টি মিল ইতোমধ্যে পাটজাত পণ্য উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যার মধ্যে ‍কিছু কিছু ‍মিল তাদের পাটজাত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করেছে।
২৭ জুন, ২০২৪

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি বন্ধ
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে গতকাল শুক্রবার থেকে টানা আট দিন আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দুই দেশের মাঝে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত বন্দরের ভেতরের কার্যক্রম চালু থাকবে। হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৪ থেকে ২১ জুন পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। চিঠি দিয়ে বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি আমরা। ঈদের ছুটি শেষে ২২ জুন থেকে যথারীতি কার্যক্রম শুরু হবে।
১৫ জুন, ২০২৪

ইসরায়েলে কয়লা রপ্তানি স্থগিত করবে কলম্বিয়া
ইসরায়েলে কয়লা রপ্তানি স্থগিত করতে যাচ্ছে কলম্বিয়া। শনিবার কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো এই ঘোষণা দেন। ইসরায়েলের রক্তক্ষয়ী গাজা যুদ্ধের জেরে কলম্বিয়া এমন পদক্ষেপের ঘোষণা দিল। খবর এএফপির। ইসরায়েলের প্রধান কয়লা সরবরাহকারী দেশ কলম্বিয়া। দেশটি ২০২৩ সালে ইসরায়েলের কাছে ৪৫ কোটি ডলারের কয়লা রপ্তানি করে। কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোতায় অবস্থিত ইসরায়েলি দূতাবাস এ তথ্য জানায়। গাজায় ইসরায়েলি হামলার জেরে কলম্বিয়া-ইসরায়েলের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। গত মে মাসে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়ে ঘোষণা দেন। এর আগে ইসরায়েল থেকে কলম্বিয়া রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও এতদিন ইসরায়েলে কলম্বিয়ার কয়লা রপ্তানি কার্যক্রম চলছিল। কলম্বিয়ার প্রথম বামপন্থি প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো। তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর একজন কঠোর সমালোচক।
১০ জুন, ২০২৪

রপ্তানি আয়ে বড় ধাক্কা, মে মাসে কমেছে ১৬ শতাংশ
চলতি অর্থবছরের শেষ দিকে এসে বড় ধরনের সংকটে পড়তে যাচ্ছে সরকার। একদিকে ব্যয় মেটাতে ব্যাংক ঋণের নির্ভরতা বাড়ছে অন্যদিকে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে দেশের রপ্তানি খাতে। বৈশ্বিক এবং অভ্যন্তরীণ নানা ধরনের সংকট এবং চ্যালেঞ্জের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে খাতটিতে। গত মে মাসে ৪০৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ শতাংশ কম। রপ্তানিতে এই পরিমাণ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরের ১১ মাসে আর হয়নি। বুধবার (৫ জুন) প্রকাশিত রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।   প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউরোপ ও আমেরিকাসহ সারা বিশ্বে তৈরি পোশাক, ওষুধ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য এবং বাইসাইকেলসহ সকল খাত মিলে দেশে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য বিশ্ববাজারে রপ্তানি করে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) রপ্তানি আয় এসেছে ৫ হাজার ১৫৪ কোটি ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ৫ হাজার ৫২ কোটি ডলার। সেই হিসেবে ১১ মাসে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ২ দশমিক ০১ শতাংশ। আর একক মাস হিসেবে মে মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪০৭ কোটি ডলার। যা গত বছরেরে একই সময়ে ছিল ৪৮৪ কোটি ডলার। সেই হিসাবে মে মাসে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে ১৬ দশমিক ০৬ শতাংশ।  রপ্তানি আয়ের পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় দু’দিক থেকেই পিছিয়ে রয়েছে দেশের রপ্তানি খাত। চলতি অর্থবছরের জন্য ৬ হাজার ২০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আর অর্থবছরের ১১ মাসে রপ্তানি আয় এসেছে ৫ হাজার ১৫৪ কোটি ডলার। ফলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি আয় কম এসেছে ৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আর মে মাসের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫৩৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। যদিও এসময়ে রপ্তানি আয় এসেছে ৪৮৪ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। সেই হিসাবে মে মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি আয় কম এসেছে ২৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।  বৈশ্বিক এবং অভ্যন্তরীণ নানা সংকটে রপ্তানি আয় কমছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, সম্প্রতি রপ্তানি প্রণোদনা কমানোর যে সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে তৈরি পোশাকসহ পুরো রপ্তানি খাত। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে আগামী দিনে রপ্তানি আয় আরও কমবে। আগামী বাজেটে এই বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগ থাকা দরকার বলে জানিয়েছেন তারা।  এই প্রসঙ্গে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা বলছেন, ১১ মাসে তৈরি পোশাক খাতে খুব বেশি প্রবৃদ্ধি হয়নি। গড়ে মাত্র দুই শতাংশের মতো হয়েছে। নিট পোশাকে প্রবৃদ্ধি কিছুটা বাড়লেও ওভেনে এখনও সংকট রয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে এখনও যে সংকট আছে, তাতে পুরো অর্থবছর শেষে খুব ভালো কিছু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন দেশ তাদের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে যে কৌশলগুলো নিয়েছে তার উপর ভিত্তি করেই চলতি মাসে এই প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এর পাশাপাশি পণ্য বৈচিত্র্যকরণ এবং নতুন বাজার খোঁজার ক্ষেত্রেও তারা কাজ করছে বলে জানান।  বিভিন্ন খাতে রপ্তানি আয়ের উত্থান-পতন ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে তৈরি পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য ও চামড়াবিহীন জুতা রপ্তানি বাড়লেও চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, হিমায়িত খাদ্য, আসবাব, বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানি কমে গেছে। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসে মোট পণ্য রপ্তানির ৮৫ শতাংশ আয় তৈরি পোশাক খাত থেকে এসেছে। এ সময় ৪ হাজার ৩৮৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেড়েছে। যদিও এসময়ে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রপ্তানি আয় কম হয়েছে ৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ। তৈরি পোশাকের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পণ্য রপ্তানি আয় চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাত থেকে এসেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে ৯৬ কোটি ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ দশমিক ১৭ শতাংশ কম। এসময় হোম টেক্সটাইল খাতের রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ২৪ দশমিক ২৯ শতাংশ কমে ৭৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারে উন্নীত হয়েছে।  এছাড়া, কৃষি পণ্যের রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে ৮৪ কোটি ৬৩ লাখ ডলারের কৃষিপণ্য রপ্তানি আয় এসেছে। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭৮ কোটি ২১ লাখ ডলার।  ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, এ সময় পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানিও কমেছে ৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। আর লক্ষ্যমাত্রা থেকে কম এসেছে ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। হিমায়িত এবং জীবন্ত মাছের রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি কমেছে ১৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ। তবে এসময়ে প্লাস্টিক পণ্যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ। তবে সামগ্রিকভাবে সব ধরনের পণ্যেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি আয় কমেছে।
০৫ জুন, ২০২৪

৭৪ পদে আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে নিয়োগ
সম্প্রতি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর। প্রতিষ্ঠানটি তাদের ০৬টি শূন্য পদে বিভিন্ন গ্রেডে মোট ৭৪ জনকে নিয়োগ দেবে। আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন আগামী ১০ জুন পর্যন্ত। প্রতিষ্ঠানের নাম : আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর পদ ও জনবল : ০৬টি ও ৭৪ জন  প্রার্থীর ধরন : নারী-পুরুষ (উভয়) আবেদন শুরুর তারিখ : ২০ মে, ২০২৪ আবেদনের শেষ তারিখ : ১০ জুন, ২০২৪ ১. পদের নাম : সাঁটলিপিকার কাম-কম্পিউটার অপারেটর (পিএ) পদসংখ্যা : ০১টি  শিক্ষাগত যোগ্যতা : এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বেতন : ১২,৫০০-৩০,২৩০ টাকা (গ্রেড-১১) ২. পদের নাম : সাঁটলিপিকার কাম-কম্পিউটার অপারেটর  পদসংখ্যা : ০১টি  শিক্ষাগত যোগ্যতা : এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বেতন : ১১,৩০০-২৭,৩০০ টাকা (গ্রেড-১২) ৩. পদের নাম : সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদসংখ্যা : ০৪টি  শিক্ষাগত যোগ্যতা : এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বেতন : ১১,০০০-২৬,৫৯০ টাকা (গ্রেড-১৩) ৪. পদের নাম : উচ্চমান সহকারী পদসংখ্যা : ০৬টি শিক্ষাগত যোগ্যতা : এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বেতন : ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা (গ্রেড-১৪) ৫. পদের নাম : অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদসংখ্যা : ২১টি শিক্ষাগত যোগ্যতা : এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বেতন : ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা (গ্রেড-১৬) ৬. পদের নাম : অফিস সহায়ক পদসংখ্যা : ৪১টি শিক্ষাগত যোগ্যতা : এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বেতন : ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা (গ্রেড-২০) আবেদনের বয়সসীমা : ১৮ থেকে ৩০ বছর হতে হবে। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধী প্রার্থীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩২ বছর। আবেদন ফি : ১ থেকে ২নং পদের জন্য টেলিটক সার্ভিস চার্জসহ ৩৩৫ টাকা, ৩ থেকে ৫নং পদের জন্য সার্ভিস চার্জসহ ২২৩ টাকা ৬নং পদের জন্য সার্ভিস চার্জসহ ১১২ টাকা জমা দিতে হবে। যেভাবে আবেদন করবেন : আগ্রহীরা আবেদন করতে ও বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তিটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
২৮ মে, ২০২৪
X