মাদকের ছোবলে যুব সমাজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে
জামায়াতে ইসলামীর সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দীন বলেছেন, মাদকের করালগ্রাসে আক্রান্ত হয়ে আমাদের যুব সমাজ এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আমাদের দেশে অবাধে মাদক আসার কারণে নতুন প্রজন্মের একটি বিরাট অংশ আজ মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। নতুন প্রজন্মকে মাদকের কালো থাবা থেকে বাঁচাতে ইসলামী অনুশাসন মেনে চলতে যুব সমাজের প্রতি আহবান জানান তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের যুব বিভাগ আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাদক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মহানগর উত্তর জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি ও যুব বিভাগের সভাপতি ডা. ফখরুদ্দীন মানিকের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য আতিক হাসান রায়হানের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য দেন ইয়াছিন আরাফাত, আব্দুল মতিন খান, আমিনুর রহমান আমান, মাহবুবুল ইসলাম, ইরফানুল হক নবীন প্রমুখ।
২৮ জুন, ২০২৪

স্মার্ট বাংলাদেশের প্রতিবন্ধকতা ও যুব সমাজ
স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়েছে বাংলাদেশ। একজন তরুণ হিসেবে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ থেকে বর্তমানে একবিংশ শতকের চলমান পর্যন্ত অনেক কিছুই আমার অবলোকনের সৌভাগ্য হয়েছে। একাত্তরের যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হচ্ছে। ‘তলাবিহীন ঝুঁড়ি’ আখ্যা পাওয়া বাংলাদেশ এখন পৃথিবীতে ‘উন্নয়নের রোল মডেল’। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলেছে সোনার বাংলা। এ পথে চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবে তা অতিক্রম করা সম্ভব। অর্থনীতিবিদরা ‘উন্নয়ন’ বলতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির এমন একটি প্রক্রিয়াকে বুঝিয়ে থাকেন। তবে, সাধারণভাবে যে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তনই উন্নয়ন বলে মনে করা হয়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, লিঙ্গ-সমতা, সুশাসন, স্বাধীনতা, সক্ষমতা, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি ইত্যাদি সবকিছুই উন্নয়ন ধারণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। উন্নয়ন হলো একটি পদ্ধতি, যা একই সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অবকাঠামোগত পরিবর্তন, পরিবেশগত পরিশুদ্ধিসহ সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ইত্যাদি বিষয়ের ইতিবাচক পরিবর্তনকে নির্দেশ করে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমরা উন্নয়ন বা ইতিবাচক পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করছি। বিশেষত, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, আইসিটি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে অনেক অবকাঠামো নির্মাণ উল্লেখ করার মতো। যেমন—কর্ণফুলী নদীতে টানেল, তৃতীয় পায়রা বন্দর, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ইত্যাদি। এ ছাড়া মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলেই সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়নযজ্ঞ বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। দীর্ঘ জটিলতার অবসান ঘটিয়ে প্রমত্ত পদ্মার বুকে দীর্ঘ সেতু নির্মাণ সাম্প্রতিক সময়ে উন্নয়নের বড় উদাহরণে পরিণত হয়েছে। পদ্মা সেতু আমাদের গৌরব ও সক্ষমতার প্রতীক। ভাবা যায়, দাতা সংস্থাগুলো যখন এই প্রকল্পে অর্থায়ন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, সেই সময়ে পূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন—আমরা নিজস্ব অর্থে পদ্মার বুকে সেতু তৈরি করব। তিনি তা করে দেখিয়েছেন। ২৫ জুন ২০২২ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। বিশাল এই সেতু নির্মাণ বাংলাদেশের জন্য যেমন গর্বের তেমনি, বিশ্বের মানচিত্রেও স্থান পেয়েছে বৈচিত্র্যময় এই পদ্মা সেতু। সড়ক পরিবহনে ভোগান্তি কমাতে বর্তমান সরকারের উদ্যোগে দীর্ঘমেয়াদি যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে অন্যতম। সম্প্রতি উদ্বোধন হয়েছে এক্সপ্রেসওয়েটি। বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার রাস্তা ব্যবহারের জন্য চালু করা হয়েছে। মাত্র ১০ মিনিটে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট যাওয়া যাবে। বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই দীর্ঘস্থায়ী বা টেকসই উন্নয়ন ভাবনা সন্নিহিত ছিল। ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার, মানবিক মর্যাদা ও মানবিক মূল্যবোধের অঙ্গীকার করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা, বিশ্ব শান্তি, পারস্পরিক সম্পর্ক ইত্যাদির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে নৃশংসভাবে হত্যার পর জননেত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে দেশে ফেরেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন এবং এরই মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় মেয়াদ পার করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে অর্থনীতির সব ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। জাতিসংঘ ঘোষিত ‘সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’ (এমডিজি) ২০০০ অর্জনে বাংলাদেশ যথেষ্ট সাফল্য দেখিয়েছে। এসডিজি অর্জনেও চলছে জোরালো কর্মযজ্ঞ। আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তার উন্নয়ন দর্শনে যুক্ত করেছেন অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ভাবনা এবং নিজস্ব চিন্তাপ্রসূত বিশেষ বিশেষ উদ্ভাবনী উদ্যোগ। উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশ উন্নয়নের প্রতি সমান গুরুত্ব প্রদান করেছেন। পিছিয়ে পড়া দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে উন্নয়ন কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্তকরণ ও তাদের মধ্যে এর সুফল পৌঁছাতে ও তাদের জীবনমান উন্নয়নে সরকারপ্রধান গ্রহণ করেছেন বিশেষ সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ ও কর্মসূচি। সর্বজনীন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বর্তমান সরকার বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বিনামূল্যে বই বিতরণসহ দরিদ্র ছাত্রদের জন্য উপবৃত্তি প্রবর্তনের মাধ্যমে এই সরকারের আমলেই প্রাথমিক শিক্ষাকে সর্বজনীন করা হয়েছে। প্রায় ১৪ হাজার ২০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন প্রান্তিক গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এতে করে শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস হয়েছে। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনাকালীন সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও ভ্যাকসিনেশনে বাংলাদেশ অত্যন্ত সফল হয়েছে। উন্নয়নের মূলধারায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করতে গ্রামীণ রাস্তাঘাট নির্মাণসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান উন্নয়নেও নেওয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। ডিজিটাল সেবা প্রাপ্তির লক্ষ্যে প্রতিটি ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ‘ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার’, যার সুফল আমরা পাচ্ছি। আমাদের গ্রোস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.২৫ শতাংশ। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। বেড়েছে মাথাপিছু আয়ও। বর্তমানে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার। একথা সত্য যে, যুদ্ধ ও বৈশ্বিক রাজনীতিতে সংকট তৈরি হওয়ায় বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি রয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি ও বিভিন্ন কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ সমস্যা পোহাচ্ছে। ডলারের মূল্য বৃদ্ধিতেও বিভিন্ন সেক্টরে প্রভাব পড়ছে তবে, সরকার তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় আছে। সরকার এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার দিকে মনোনিবেশ করে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ভিশন ২০২১’-এর মূল ভিত্তি হিসেবে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দেন। বর্তমানে সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ দৃশ্যমান। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় সবখানেই ইন্টারনেট ও প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে জনগণের তথ্য-উপাত্ত, কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রাপ্তিসহ প্রাত্যহিক জীবনযাপন এবং অসংখ্য কাজ সহজ হয়েছে। বর্তমান সরকার ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারেও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছিল, যা আমরা বাস্তবে প্রত্যক্ষ করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের যুব সমাজের ওপর খুবই আশাবাদী। তারুণ্যের শক্তি দিয়ে তিনি বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নতি করতে চান। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। এখন অপেক্ষা উন্নত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ দেখার। আমরাও আশাবাদী সেই মাহেন্দ্রক্ষণ আসবে। আমরা দেখে যেতে পারব। এজন্য তারুণ্যের সর্বোত্তম ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। বর্তমান বাংলাদেশের বড় অংশের জনগোষ্ঠী কিশোর-তরুণ, যে কারণে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীকে বলা হয় ইয়ুথ ডিভিডেন্ট। বর্তমানে বাংলাদেশে মাদকাসক্তি পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। সামাজিক অবক্ষয়সহ সব অপরাধের পেছনে অন্যতম প্রধান অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে মাদক। গণমাধ্যমের প্রকাশিত তথ্য মতে, দেশে প্রায় কোটি মানুষ মাদকাসক্ত, যাদের মধ্যে প্রায় ৯০% তরুণ-কিশোর। অন্যদিকে, মাদকাসক্তির বড় কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে ধূমপান। ধূমপান হচ্ছে মাদকের রাজ্যে প্রবেশের মূল দরজা। এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাদকাসক্তদের মধ্যে শতকরা ৯৮ ভাগই ধূমপায়ী এবং তাদের মধ্যে শতকরা ৬০ ভাগ বিভিন্ন অপরাধ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। যারা মাদকদ্রব্য সেবন করে তারা প্রথমে ধূমপানে অভ্যস্ত হয়, তারপর মাদকদ্রব্য সেবন শুরু করে থাকে। পরবর্তীকালে তারা গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিল, সিসা, হেরোইন, কোকেনসহ বিভিন্ন মরণনেশায় আসক্ত হয়। বর্তমানে কিশোর-তরুণদের অনেকে বন্ধুদের প্ররোচনায় ধূমপান শুরু করে এবং ক্রমান্বয়ে এর একটি বিরাট অংশ মাদক সেবন ও বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। কিশোর-তরুণদের মধ্যে এহেন বাজে অবস্থাকে আরও উসকে দিচ্ছে বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানিগুলো। বলা যায়, আগুনে ঘি ঢালছে! সিগারেট কোম্পানিগুলো শহরের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে (যেখানে কিশোর-তরুণদের যাতায়াত বেশি) ধূমপানের স্থান তৈরি করে দিচ্ছে। যেখানে বসে ধূমপান থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাদকও সেবন করা হয়ে থাকে। তরুণদের মধ্যে থেকে সামাজিক রীতি-নীতি, মূল্যবোধ উঠে যাচ্ছে। পাশাপাশি এসব স্থানে পরিবার-পরিজন নিয়ে উপভোগ্য সময় কাটাতে আসা মানুষজন ভয়াবহ স্বাস্থ্যগত ক্ষতির শিকার হচ্ছে। ধূমপানের আখড়া তৈরি করে ব্যবসা প্রসার করাই মূল উদ্দেশ্য সিগারেট কোম্পানির। ভয়েসের গবেষণায় দেখা গেছে, তামাক কোম্পানিগুলো এসব ‘স্মোকিং জোন’ তৈরিতে অবস্থান অনুসারে রেস্টুরেন্ট মালিককে এককালীন ৪ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত নগদ অর্থ সুবিধা দেয়। এসব জোনে তামাক কোম্পানির বিজ্ঞাপন সামগ্রী প্রদর্শন করা হয়। আশঙ্কার বিষয় হলো, সিগারেট কোম্পানিগুলোর মিথ্যা প্রচারণা ও প্রলুব্ধকরণ কার্যক্রমে আশঙ্কাজনক হারে দেশে বাড়ছে ই-সিগারেট, ভেপ ও হিটেট টোব্যাকো প্রোডাক্টগুলোর ব্যবহার। সাধারণ সিগারেটের তুলনায় কম ক্ষতিকর ও সিগারেটের বিকল্প হিসেবে ই-সিগারেটকে সামনে আনছে তারা। মূলত, সাধারণ সিগারেটের চেয়ে ই-সিগারেট ১০ গুণ বেশি ক্ষতিকর। অধিকাংশ মানুষ (বিশেষ করে তরুণরা) ই-সিগারেটের ক্ষতিকর দিক জানেন না। ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণে দেশে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট আইন, নীতি না থাকা এবং অসচেতনতা মানুষের মধ্যে প্রাণঘাতী এসব নেশাদ্রব্যের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ার অন্যতম কারণ এবং মাদকাসক্তির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যারা বর্তমানে মাদকাসক্ত রয়েছে তাদের রোগ নির্ণয় এবং নিরাময় কেন্দ্রে নিয়ে সুস্থ করা এখন বড় কাজ, নতুবা তাদের মাধ্যমে নতুন মাদকাসক্ত তৈরি হবে। মাদক ও তামাকবিরোধী আইন আছে, প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে দেশ থেকে তামাক নির্মূল করতে ঘোষণা দিয়েছেন। মাদকের বিরুদ্ধেও তিনি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছেন। এসব পদক্ষেপ হলো—উন্নয়নশীল বাংলাদেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করার যে রসদ সেটাকে সমুন্নত রাখা। অর্থাৎ তরুণদের সুরক্ষিত রাখা, যেদিকে তিনি সদাতৎপর। সুতরাং, তরুণ জনগোষ্ঠীকে তামাকের দীর্ঘদিনের ভোক্তা বানাতে কোম্পানিগুলো যে অপতৎপরতা চালাচ্ছে, তা রুখতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন করতে হলে মাদকাসক্তি প্রতিরোধে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। সুতরাং, আগামী প্রজন্মকে রক্ষার জন্য দায়িত্ব সবার। এক্ষেত্রে সবাইকে সক্রিয় হতে হবে। শিশু-কিশোর, তরুণরা ধূমপানের মাধ্যমে ভয়াবহ মাদকের নেশায় নীল হয়ে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াক, এটা কোন সচেতন, বিবেকবান মানুষের কারও কাম্য হতে পারে না। লেখক: অধ্যাপক ও মুক্তিযোদ্ধা (একুশে পদকপ্রাপ্ত)
২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X