গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড ও আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটেছে যমুনা রেফ্রিজারেটরে
লক্ষ্যই হলো ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে কাস্টমারের কাছে সেরা পণ্যটি পৌঁছে দেওয়া। সে লক্ষ্য সামনে রেখে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী যমুনা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান যমুনা ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড অটোমোবাইলস লিমিটেড ২০১৪ সালে বৃহৎ পরিসরে ইলেকট্রনিকস হোম অ্যাপ্লায়েন্স উৎপাদন শুরু করে। আধুনিক যন্ত্রপাতি, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, দক্ষ জনবল, উন্নত কাঁচামাল ও প্রতিনিয়ত উদ্ভাবনী উৎকর্ষ সাধনের ফলে যমুনা আজ দেশের এক নম্বর কোয়ালিটি রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ড। সব ধরনের ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতা অনুযায়ী যমুনা রেফ্রিজারেটর বিভিন্ন সাইজ, ডিজাইন, ক্যাপাসিটি ও দামে পাওয়া যাচ্ছে। রেগুলার রেফ্রিজারেটর মডেল ছাড়াও আমাদের রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার টেকনোলজির স্মার্ট ডাবল ডোর, টি ডোর ও ক্রস ডোর রেফ্রিজারেটর, যেগুলো এরই মধ্যে মার্কেটে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে
কালবেলা: বাজারে দেশি ব্র্যান্ডের হরেক রকম ফ্রিজ ও রেফ্রিজারেটর রয়েছে। সেখানে ক্রেতা আকৃষ্টে যমুনা ব্র্যান্ডের আলাদা বিশেষত্ব কী? সুযোগ-সুবিধাই কী রয়েছে?
সাজ্জাদুল ইসলাম: এটা ঠিক, বাজারে দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের হরেক রকম ফ্রিজ ও রেফ্রিজারেটর রয়েছে। তা সত্ত্বেও ফ্রিজ ও রেফ্রিজারেটরের জগতে ক্রেতার পছন্দের তালিকায় যমুনা ব্র্যান্ড এক অনন্য নাম। এর অন্যতম কারণ হলো, আমাদের ফ্যাক্টরিতে গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করে আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে ফ্রিজ ও রেফ্রিজারেটর উৎপাদন করা হয়, যা আর কোনো দেশীয় ব্র্যান্ডের কোম্পানির নেই। সে কারণেই আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, বিভিন্ন বিদেশি ব্র্যান্ডের ভিড়ে দেশীয় ব্র্যান্ড হিসেবে যমুনা ভোক্তাদের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য ও স্বকীয় স্থান তৈরি করে নিয়েছে।
আমরা সংখ্যাতত্ত্বে বিশ্বাসী নই—বরং গুণে ও মানে সেরা হতে চাই। আমাদের রেফ্রিজারেটরগুলোর বিক্রয়োত্তর সার্ভিস প্রায় নেই বললেই চলে (০.০১%)। প্রতি পাঁচ বছরে কম্প্রেসর পরিবর্তনের হার প্রায় ১ শতাংশের নিচে, যা বাজারে প্রচলিত রেফ্রিজারেটরের থেকে অনেক কম। একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেশের অধিকাংশ ক্রেতাই জানেন না, সিলিকন জেল দিয়ে আমাদের দেশের বাজারে প্রচলিত রেফ্রিজারেটরগুলো তৈরি হয়। এটি মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর এবং খাদ্যমান নষ্ট করে। বাংলাদেশে একমাত্র যমুনা রেফ্রিজারেটরই তার উৎপাদন প্রক্রিয়ার কোথাও সিলিকন জেল ব্যবহার করে না। এ ছাড়া যমুনার ফ্রিজগুলোতে পরিবেশবান্ধব R600a গ্যাস ব্যবহৃত হয়, যা মানবদেহের ক্ষতি করে না। আন্তর্জাতিক গুণগত মান বজায় রাখতে গিয়ে আমাদের উৎপাদন ব্যয়ও অন্যদের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে; কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা বাজারের অন্যান্য ব্র্যান্ডের তুলনায় সাশ্রয়ী মূল্যে রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি।
কেননা, আমাদের লক্ষ্যই হলো ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে কাস্টমারের কাছে সেরা পণ্যটি পৌঁছে দেওয়া। সে লক্ষ্য সামনে রেখে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী যমুনা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান যমুনা ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড অটোমোবাইলস লিমিটেড ২০১৪ সালে বৃহৎ পরিসরে ইলেকট্রনিকস হোম অ্যাপ্লায়েন্স উৎপাদন শুরু করে। আধুনিক যন্ত্রপাতি, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, দক্ষ জনবল, উন্নত কাঁচামাল ও প্রতিনিয়ত উদ্ভাবনী উৎকর্ষ সাধনের ফলে যমুনা আজ দেশের এক নম্বর কোয়ালিটি রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ড। সব ধরনের ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতা অনুযায়ী যমুনা রেফ্রিজারেটর বিভিন্ন সাইজ, ডিজাইন, ক্যাপাসিটি ও দামে পাওয়া যাচ্ছে। রেগুলার রেফ্রিজারেটর মডেল ছাড়াও আমাদের রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ইন্টেলিজেন্ট ইনভার্টার টেকনোলজির স্মার্ট ডাবল ডোর, টি ডোর ও ক্রস ডোর রেফ্রিজারেটর, যেগুলো এরই মধ্যে মার্কেটে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
কালবেলা: দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল আজহা। কোরবানি-পরবর্তী মাংস সংরক্ষণের বিষয় থাকে বলে প্রতি বছরই এ সময় বাজারে চাহিদা বেড়ে যায় ফ্রিজার ও রেফ্রিজারেটরের। তার জোগানে ব্র্যান্ড হিসেবে যমুনার এবার কেমন প্রস্তুতি রয়েছে। বাজারে ক্রেতার কেমন সাড়া মিলছে?
সাজ্জাদুল ইসলাম: পবিত্র ঈদুল আজহা তথা কোরবানির ঈদ কেন্দ্র করে আমাদের দেশে ফ্রিজের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। সাধারণ প্রয়োজনের পাশাপাশি কোরবানির মাংস সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজ বা ডিপ ফ্রিজ কেনেন ক্রেতারা। যমুনা ইলেকট্রনিকস ক্রেতাদের এই বর্ধিত চাহিদা পূরণে বেশ আগে থেকেই সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। অতি সম্প্রতি আমরা বাজারে বেশ কিছু নতুন ডিজাইনের ডিপ ফ্রিজ ও গ্লাসডোর রেফ্রিজারেটর দিয়েছি এবং ভোক্তাদের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছি।
কালবেলা: আপনাদের এসব ফ্রিজ কতটা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী? আপনারা ফ্রিজে কী ধরনের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ এনেছেন?
সাজ্জাদুল ইসলাম: ইনোভেশন বা উদ্ভাবন প্রযুক্তিগত যে কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাজার চাহিদা ও ভোক্তার রুচির সঙ্গে তাল মিলিয়ে Latest Technological Advancement নিয়ে কাজ করছি আমরা আর যে কারণে আমাদের ব্র্যান্ডের Payoff Line ‘Innovation for Smarter Life’। উৎপাদনের প্রথম দিন থেকেই যমুনা রেফ্রিজারেটর অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, উন্নত কাঁচামাল, দক্ষ জনবল দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের ইলেকট্রনিকস পণ্য উৎপাদন ও বিপণন করছে। রেফ্রিজারেটর উৎপাদনে আমরা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছি, যার ফলে আমাদের ফ্রিজে ৭০ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয় এবং খাবারের মান সঠিক থাকে। আমরা প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন ফিচার ও ডিজাইনের ফ্রিজ গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে নিরলস কাজ করছি। আমাদের রয়েছে একদল মেধাবী ইঞ্জিনিয়ারের সমন্বয়ে গঠিত নিজস্ব আরএনডি টিম; যারা পণ্যের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ ও মানোন্নয়নে সদা তৎপর।
কালবেলা: কোরবানির ঈদ সামনে রেখে প্রায় সব দেশি ব্র্যান্ডই বিভিন্ন ধরনের অফার দিয়েছে। আপনারা কী ধরনের অফার রেখেছেন?
সাজ্জাদুল ইসলাম: ভোক্তাদের চাহিদা, সন্তুষ্টি ও বিক্রয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরা ‘ডাবল খুশি অফার’ নামে কনজ্যুমার প্রমোশন চালু করেছি, যার আওতায় সম্মানিত ক্রেতারা যমুনা রেফ্রিজারেটরসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিকস পণ্য কিনলে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড় পেতে পারেন। এ ছাড়া পণ্য কিনে ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে মোটরসাইকেল, ফ্রিজ, টিভি, এসি, হোম অ্যাপ্লায়েন্সসহ অসংখ্য পুরস্কার জিতে নেওয়ার সুযোগ থাকছে।
কালবেলা: আপনাদের বিক্রয়োত্তর সেবা সম্পর্কে বলবেন।
সাজ্জাদুল ইসলাম: আমরা রেফ্রিজারেটরে ১০ বছরের ওয়ারেন্টি দিচ্ছি। সাধারণত রেফ্রিজারেটর উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ৭ থেকে ১০ শতাংশ ত্রুটি থাকে। কিন্তু যমুনা বাংলাদেশের একমাত্র রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ড, যার উৎপাদন ত্রুটি বা Production Error ১ শতাংশের নিচে। সে কারণে রেফ্রিজারেটর বাজারজাত করার খুব অল্প সময়ের ভেতরেই ভোক্তাদের মনে ধারণা জন্মেছে যে, একমাত্র যমুনাই ৯৯ শতাংশ গুণগত মানসম্পন্ন রেফ্রিজারেটর সরবরাহ করে। ফলে যমুনার পণ্যের ক্ষেত্রে বিক্রয়-পরবর্তী অভিযোগের সংখ্যা শূন্যের কাছাকাছি। এর পরও ভোক্তাদের যে কোনো ক্রয়-পরবর্তী সমস্যা সমাধানে দেশব্যাপী আমাদের বিস্তৃত সার্ভিস সেন্টার রয়েছে, যেখান থেকে সহজেই তারা বিক্রয়োত্তর সেবা নিতে পারবেন।
কালবেলা: যমুনা তার বিপণন নেটওয়ার্কের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অনেক সচেতনভাবে কাজ করছে। এ ব্যাপারে একটু বিস্তারিত জানাবেন।
সাজ্জাদুল ইসলাম: ইলেকট্রনিকস ইন্ডাস্ট্রিতে লক্ষ করা গেছে যে, নিজস্ব নেটওয়ার্ক ছাড়া পরিবেশক নেটওয়ার্কের স্থায়িত্ব খুবই কম। পরিবেশক ব্যবসায়ীরা সঠিকভাবে ব্যবসা দাঁড় করানো ও সম্প্রসারণের আগেই নিজেদের গুটিয়ে নেয়। একমাত্র যমুনা ইলেকট্রনিকস একটি শক্তিশালী ডিস্ট্রিবিউটর নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সফলভাবে বাজারে ব্যবসা পরিচালনা করছে। একজন সফল ডিস্ট্রিবিউটরের রেফারেন্স থেকে আমরা আরও অনেক ডিস্ট্রিবিউটর পেয়েছি, যারা বিভিন্ন ট্রেড থেকে এসেছেন। তাদের প্রশিক্ষণ, দক্ষ জনবল প্রদান, সুষ্ঠু ব্যবসায়িক কাঠামো গড়ে দেওয়া থেকে শুরু করে অন্য আরও সাপোর্ট দেওয়ার মাধ্যমে তাদের ব্যবসায়িক অগ্রযাত্রার সঙ্গী হয়েছি। পরিবেশকের ব্যবসা সম্প্রসারণের সঙ্গে কোম্পানির পক্ষ থেকে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থেকে তার ব্যবসায়িক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা বিপণন নেটওয়ার্ক সুন্দরভাবে এগিয়ে নিচ্ছি।
কালবেলা: দেশে ফ্রিজের বাজার এখন কতটা বিস্তৃত হয়েছে?
সাজ্জাদুল ইসলাম: মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে, ফলে জীবনমানের উন্নয়ন হয়েছে, দেশব্যাপী এখন বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে গেছে। ফলে শহর কিংবা গ্রাম, উচ্চবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্ত, এমনকি নিম্ন আয়ের মানুষের ঘরেও স্থান করে নিয়েছে ফ্রিজ। তা ছাড়া স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হওয়ায় দেশীয় ফ্রিজের দাম ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যে, এ বিষয়টিও ফ্রিজের বাজার বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ফলে দেশে দিন দিন ফ্রিজের ব্যবহার বাড়ছে। বাজার গবেষকদের মতে, বছরে এ বৃদ্ধির হার ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত।
কালবেলা: ডলারের উচ্চমূল্য এবং গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে উৎপাদন খাত চাপে আছে। ফ্রিজের দামের ক্ষেত্রে এ পরিস্থিতি কোনো প্রভাব ফেলেছে কি?
সাজ্জাদুল ইসলাম: ডলার সংকট ও দাম বৃদ্ধির ফলে পণ্য উৎপাদনে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী ও স্থানীয়ভাবে জ্বালানি মূল্যের বৃদ্ধির ফলে পরিবহন ব্যয়সহ অন্যান্য খাতে উৎপাদন খরচ বহুগুণ বেড়ে গেছে, ফলে ইলেকট্রনিকস পণ্য উৎপাদনকারীদের মূল্যবৃদ্ধি ছাড়া কোনো উপায় থাকছে না। তবে এমন বহুমুখী চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও যমুনা দেশ ও মানুষের সার্বিক কল্যাণে ব্যবসা পরিচালিত করে। পরিবর্তিত চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতেও আমরা পণ্যের দাম না বাড়িয়ে ক্রেতাদের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে সেরা পণ্যটি তুলে দিচ্ছি।
১০ জুন, ২০২৪