মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০২৪, ২৫ আষাঢ় ১৪৩১
সেই দিনটি / চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেন
উপমহাদেশীয় বাংলা চলচ্চিত্রের ট্রিলজি বলা হয় সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক ও মৃণাল সেনকে। তিনজনই ছিলেন নিজ নিজ স্থানে স্বতন্ত্র ও অতুলনীয়। তাদের মধ্যে অন্যতম প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেন। কিংবদন্তি এ চলচ্চিত্র নির্মাতা বাংলাদেশের ফরিদপুরে ১৯২৩ সালের ১৪ মে জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবনে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রতি ছিল মৃণাল সেনের দারুণ আগ্রহ। গণনাট্য সংস্থার হয়ে গ্রামের হাটে-মাঠে-ঘাটে ঘুরে ঘুরে মৃণাল সেন দেখা পান জীবনের শতধারার। মনের ক্যানভাসে গেঁথে রাখা সেসব ছবি সেলুলয়েডে আঁকার স্বপ্নে বিভোর হয়ে নির্মাণ করেন প্রথম ছবি ‘রাতভোর’। কিন্তু ছবিটি ব্যবসা সফল হয়নি। শক্তিশালী নির্মাতা মৃণাল সেনের পরিচয়টা আসে আরও চার বছর পর, ১৯৫৯ সালে যখন মুক্তি পায় তার দ্বিতীয় ছবি ‘নীল আকাশের নিচে’। ১৯৬০ সালে মুক্তি পায় তার তৃতীয় ছবি ‘বাইশে শ্রাবণ’। শুরু হয় চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেনের জয়যাত্রা। এ ছবিই তাকে প্রথম আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দেয়। এরপর ১৯৬৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ভুবন সোম’ সিনেমার মাধ্যমে প্রচলিত ধারাকে বদলে দেন তিনি। ১৯৭১ সালে ‘ইন্টারভিউ’ মুক্তির পর একে একে ক্যালকাটা ৭১, পদাতিক, একদিন প্রতিদিন, মহাপৃথিবী, অন্তরীণ, আকালের সন্ধানে ও খারিজ চলচ্চিত্রগুলো নির্মাণ করেন মৃণাল সেন। বাংলা ছাড়াও হিন্দি, ওড়িয়া ও তেলেগু ভাষায়ও দেখিয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাণের মুনশিয়ানা। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর এই কিংবদন্তি মারা যান।
১৪ মে, ২০২৪

সেই দিনটি / চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেন
উপমহাদেশীয় বাংলা চলচ্চিত্রের ট্রিলজি বলা হয় সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক ও মৃণাল সেনকে। তিনজনই ছিলেন নিজ নিজ স্থানে অতুলনীয়। তাদের মধ্যে অন্যতম প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেন। কিংবদন্তি এ চলচ্চিত্র নির্মাতা বর্তমান বাংলাদেশের ফরিদপুরে ১৯২৩ সালের ১৪ মে জন্মগ্রহণ করেন। এ দেশের আলো-বাতাস গায়ে মেখেই কেটেছে মৃণাল সেনের শৈশব-কৈশোর। ফরিদপুরের কাদামাটিতে হেঁটে হেঁটেই পা রাখেন তারুণ্যের চৌকাঠে। দেশ বিভাগের রাজনৈতিক ডামাডোল তাকে ঠেলে দেয় কলকাতায়। কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা বিষয়ে পড়াশোনা করেন মৃণাল সেন। পদার্থবিজ্ঞানের একজন ছাত্র হয়ে শিল্পকলার সেরা মাধ্যম চলচ্চিত্রকেই বেছে নিয়েছিলেন জীবনের ধ্যান-জ্ঞান হিসেবে। ছাত্রজীবনে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রতি ছিল মৃণাল সেনের দারুণ আগ্রহ। কমিউনিস্ট পার্টির সাংস্কৃতিক শাখার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও সরাসরি কখনো কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হননি। চল্লিশের দশকে গণনাট্য সংস্থার আইপিটিএর সঙ্গে যুক্ত হন। এ সংস্থার মাধ্যমে তিনি সমভাবাপন্ন মানুষের কাছাকাছি আসতে সক্ষম হন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র থাকাকালে তিনি সাংবাদিকতাও করেছেন। গণনাট্য সংস্থার হয়ে গ্রামের হাটে-মাঠে-ঘাটে ঘুরে ঘুরে মৃণাল সেন দেখা পান জীবনের শতধারার। মনের ক্যানভাসে গেঁথে রাখা সেসব ছবি সেলুলয়েডে আঁকার স্বপ্নে বিভোর হয়ে নির্মাণ করেন প্রথম ছবি ‘রাতভোর’। ১৯৫৫ সালে মুক্তি পাওয়া মৃণাল সেন পরিচালিত প্রথম ছবিটি ব্যবসায়িকভাবে সাফল্যের মুখ দেখেনি। তবে চলচ্চিত্রকার হিসেবে এনে দেয় পরিচিতি। শক্তিশালী নির্মাতা মৃণাল সেনের পরিচয়টা আসে আরও চার বছর পর, ১৯৫৯ সালে যখন মুক্তি পায় তার দ্বিতীয় ছবি ‘নীল আকাশের নিচে’। ১৯৬০ সালে মুক্তি পায় তার তৃতীয় ছবি ‘বাইশে শ্রাবণ’। শুরু হয় চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেনের জয়যাত্রা। এ ছবিটিই তাকে প্রথম আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দেয়। এরপর ১৯৬৯ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ভুবন সোম’ সিনেমার মাধ্যমে প্রচলিত ধারাকে বদলে দেন তিনি। এতে অভিনয় করেন উপমহাদেশের শক্তিমান অভিনেতা উৎপল দত্ত। ১৯৭১ সালে মুক্তি পায় ‘ইন্টারভিউ’ ছবিটি। এরপর ক্যালকাটা ৭১, পদাতিক, একদিন প্রতিদিন, মহাপৃথিবী, অন্তরীণ, আকালের সন্ধানে ও খারিজ চলচ্চিত্রগুলো নির্মাণ করেন মৃণাল সেন। বাংলা ছাড়াও হিন্দি, ওড়িয়া ও তেলেগু ভাষায়ও দেখিয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাণের মুনশিয়ানা। কালীন্দিচরণ পাণিগ্রাহীর গল্প অবলম্বনে ১৯৬৬ সালে ওড়িয়া ভাষায় নির্মাণ করেন ‘মাটির মনীষ’। ‘খারিজ’ ১৯৮৩ সালের কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার ও ‘আকালের সন্ধানে’ ১৯৮১ সালের বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার অর্জন করে। এ ছাড়া ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মভূষণ, ভারতীয় চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ পুরস্কার দাদাসাহেব ফালকে অর্জন করেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাকে অর্ডার অব ফ্রেন্ডশিপ সম্মানে ভূষিত করেন, ফরাসি সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান কমান্ডার অব দ্য আর্টস অ্যান্ড লেটারসে ভূষিত হন এ প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার। একবার ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব দ্য ফিল্মের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি। গুণী এই চলচ্চিত্রকার ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর মারা যান।
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩
X