ফিলিস্তিনি শিশুর আনবক্সিয়ের উচ্ছ্বাস দেখে মুগ্ধ মুসলিম বিশ্ব
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশ চুম্বি। যুদ্ধের কারণে পেঁয়াজ, চিনি থেকে শুরু করে চাল, ডাল, তেলসহ সব জিনিসেরই দাম বেড়েছে অবিশ্বাস্যভাবে। এ অবস্থায় ফিলিস্তিনি এক শিশুর একটি ত্রাণের প্যাকেজ আনবক্স করার আনন্দ দেশে মুগ্ধ মুসলিম বিশ্ব।  খালিজ টাইমস জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সাধারণ মানুষের জন্য ত্রাণ পাঠিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। সেই ত্রাণের একটি প্যাকেট পেয়েছে রিনাদ নামের ১০ বছর বয়সী এক শিশুর পরিবার। আমিরাতের পাঠানো ওই প্যাকেটে কি কি আছে সেটি ক্যামেরা সামনে দেখিয়েছিল রিনাদ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি প্রকাশের পর এটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটিতে দেখা যায়, প্যাকেটের ভেতর খাবার দেখে বেশ খুশি হয়েছে রিনাদ। বিশেষ করে যখন দুই প্যাকেট চিনি দেখতে পায় তখন খুশিতে আত্মহারা হয়ে ওঠে সে। কারণ গাজায় এখন এক কেজি চিনি কিনতে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ হাজার টাকা খরচ করতে হয়।           View this post on Instagram                       A post shared by Dr Nourhan (@dr.nourhan99) রিনাদের বোন ডাক্তার নুরহান আতাউল্লাহ খালিজ টাইমসকে বলেছেন, চিনি দেখে রিনাদ বেশি খুশি হয়েছিল কারণ এখন গাজায় এক কেজি চিনির দাম ২৭ ডলার। সাধারণত সেহরিতে তারা চা খান। কিন্তু গত এক মাস চায়ের জন্য কোনো চিনি পাননি।  আমিরাতের ত্রাণের যে প্যাকেটটি তারা পেয়েছে সেটিও সবার ভাগ্যে জোটে না। রিনাদের বোন জানিয়েছেন, এক পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে তারা এই ত্রাণ সহায়ত পেয়েছেন। যিনি প্রায় এক মাস আগে তাদের তালিকা নিয়েছিলেন। গাজার এই বাসিন্দা আরও জানিয়েছেন, তারা যে গাজা থেকে পালিয়ে মিসরে চলে যাবেন সেই সুযোগও নেই। কারণ গাজা থেকে মিসরে যেতে বিপুল অর্থ দিতে হয়। সেই সামর্থ্য তাদের নেই। এমনকি যাদের অর্থ আছে তারাও যে পালাতে পারবেন এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ মিসরে যেতে হলে আগে এজেন্সিতে বুক করতে হবে। যা সম্পন্ন হতে মাসের পর মাস সময় লাগতে পারে।  রিনাদের বোন আরও জানিয়েছেন, অনেকেই গাজা থেকে পালানোর জন্য অর্থ দিয়ে এজেন্সিতে বুক করেছিলেন। কিন্তু গাজা ছাড়ার আগেই ইসরায়েলি হামলায় তারা নিহত হয়েছেন। গাজায় বর্তমানে সবকিছুর দাম বেশি। খাবার থেকে শুরু করে বাসস্থান এমনকি রাস্তায় থাকার জন্য তাঁবুও ক্রয়সীমার বাইরে চলে গেছে। যুদ্ধের মধ্যে গাজার সাধারণ মানুষ কীভাবে জীবন-যাপন করছেন সেটি ইন্সটাগ্রামে ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে জানিয়েছেন রিনাদের বোন।  
৩১ মার্চ, ২০২৪

ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের পাল্টাপাল্টি হামলা যেভাবে দেখছে মুসলিম বিশ্ব
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের দিকে একের পর এক রকেট হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। ইসরায়েলও ফিলিস্তিনের গাজায় বিমান হামলা চালাচ্ছে। হামলা-পাল্টা হামলার পর দুদেশেই যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।  এখন পর্যন্ত এসব হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে গাজা থেকে হামাসের মুহুর্মুহু রকেট হামলায় ইসরায়লে কমপক্ষে ২০০ জন নিহত হয়েছে, আর ইসরায়েলি বাহিনীর পাল্টা হামলায় গাজায় নিহত ২৩২ জন ছাড়িয়েছে। এই হামলার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মুসলিম বিশ্বের নেতারা। আজ আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে তা তুলে ধরা হয়েছে। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, ‘দখলদার সন্ত্রাসী ও দখলকারীদের’ বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার পূর্ণ অধিকার রয়েছে ফিলিস্তিনি জনগণের। মিশর মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার এই উত্তেজনা বৃদ্ধির ‘গুরুতর পরিণতি’ সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। দেশটি ‘সর্বোচ্চ সংযম’ দেখাতে এবং ‘বেসামরিক নাগরিকদের আরও বিপদের সম্মুখীন হওয়া এড়াতে’ আহ্বান জানিয়েছে। মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শউকরিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান জোসেপ বোরেলের সঙ্গে এক আলোচনায় বলেছেন, গুরুতর ঝুঁকি এড়াতে উভয়পক্ষের ‘সংযম দেখানো উচিত’। ইরান ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী হোসেইনি খামেনির এক উপদেষ্টা বলেছেন, ইরান ফিলিস্তিনিদের হামলাকে সমর্থন করছে। ইরানি বার্তা সংস্থা আইএসএনএ তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, খামেনির উপদেষ্টা রহিম সাফাভি বলেছেন, আমরা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের অভিনন্দন জানাই। ফিলিস্তিন ও জেরুজালেমের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের পাশে থাকব। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের মিত্র হামাসের এই হামলা প্রমাণ করেছে যে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব প্রতিরোধে ফিলিস্তিনিরা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএকে দেশটির সরকারের মুখপাত্র আলি বাহাদোরি-জাহরোমি বলেছেন, এই হামলা প্রমাণ করেছে যে ইহুদিবাদী সরকার আগের চেয়ে অনেক বেশি দুর্বল এবং এখন পরিস্থিতি ফিলিস্তিনি যুবকদের হাতে রয়েছে। কুয়েত ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে চলমান পরিস্থিতি বিষয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করে কুয়েত এ ঘটনায় ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ‘দখলদারদের উসকানি দেওয়া বন্ধ’ করতে এবং ‘বসতি সম্প্রসারণ নীতি’ বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। কাতার কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে চলমান সহিংসতার জন্য ইসরায়েল একাই দায়ী। দেশটি উভয়পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযমের আহ্বান জানিয়েছে এবং হামাসের এই হামলার অজুহাতে গাজায় বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলায় বাধা দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। সৌদি আরব সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়েছে, তারা অবিলম্বে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যকার সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। সৌদি সরকারের ভাষ্য, ‘আমরা বেশ কয়েকটি ফিলিস্তিনি গ্রুপ এবং ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর মধ্যকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি, যা বেশ কয়েকটি ফ্রন্টে অনেক বেশি সহিংসতার দিকে এগোচ্ছে।’ তুরস্ক তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আমরা সবপক্ষকেই সংযমের আহ্বান জানাই। তাদের অবশ্যই আক্রমণাত্মক কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। সংযুক্ত আরব আমিরাত সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারি বার্তা সংস্থা দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাত সর্বোচ্চ সংযম দেখাতে এবং গুরুতর পরিস্থিতি এড়াতে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছে।’ হিজবুল্লাহ লেবাননের সংগঠন হিজবুল্লাহ তাদের বিবৃতিতে বলেছে, তারা গাজার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের নেতৃত্বের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছে। ইসরায়েলে রকেট হামলার বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি ইসরায়েলের অব্যাহত দখলদারিত্বের একটি নিষ্পত্তিমূলক প্রতিক্রিয়া এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে যারা চাইছে তাদের জন্য একটি বার্তা।
০৮ অক্টোবর, ২০২৩

কোরআন অবমাননার ঘটনায় একাট্টা মুসলিম বিশ্ব
মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে সুইডেনে বেশ কয়েকবার কোরআন অবমাননার মতো ঘটনা ঘটে। সবশেষ গত বৃহস্পতিবারও পুলিশি নিরাপত্তায় অবমাননা করা হয় পবিত্র এই গ্রন্থ। যার বিরুদ্ধে একাট্টা হয়ে নিন্দা ও ক্ষোভে ফেঁটে পড়ছে মুসলিম বিশ্ব।  বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, পুলিশের অনুমতি নিয়ে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সুইডেনের রাজধানী স্টোকহোমে বিক্ষোভ করে কিছু কট্টরপন্থি। ওই বিক্ষোভ থেকে ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ কোরআন অবমাননা করেন এক কট্টরপন্থি। যিনি এর আগেও ঈদুল আজহার দিন কোরআন অবমাননা করেছিলন। এ ঘটনায় ফুঁসে ওঠে মুসলিম বিশ্ব।  সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ জানায়, কোরআন অবমাননার পর ইরাকের বাগদাদে সুইডেন দূতাবাসে হামলা চালায় দেশটির সাধারণ মুসলিমরা। শুধু তাই নয়, দেশটিতে থাকা সুইডিশ রষ্ট্রদূতকে ইরাক ছাড়ার নির্দেশ দেয় পশ্চিম এশিয়ার দেশটি।  এ ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানায় মুসলিম দেশগুলোর জোট ওআইসি। শুক্রবার এক বিবৃতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জোটের মহাসচিব হুসেইন ইব্রাহীম তাহা। তিনি বলেন, কোরআন অবমাননা কখনোই স্বাধীনতার বহিঃপ্রকাশ হতে পারে না, এটা স্পষ্টত উসকানি। সুইডিশ কর্তৃপক্ষকে এ ধরনের ঘৃণিত কাজ বন্ধ করার আহ্বান জানান তিনি।  কোরআন অবমাননার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মুসিলম বিশ্বের প্রভাবশালী দেশ সৌদি আরবও। ওই ঘটনার পর দেশটিতে নিযুক্ত সুইডিশ দূতকে ডেকে প্রতিবাদলিপি দেয় রিয়াদ। যেখানে বলা হয়, বারবার এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিশ্বের কোটি কোটি মুসলিমের হৃদয়কে আহত করছে স্টকহোম। অবিলম্বে এ ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধে দেশটির প্রতি আহ্বান জানায় সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।  এদিকে বৃহস্পতিবারের ওই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মিশরের সর্বোচ্চ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়। কোরআন অবমাননার শাস্তি হিসেবে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোকে সুইডিশ পণ্য বয়কটের আহ্বান জানান প্রতিষ্ঠানটির স্কলাররা। পবিত্র কোরআনের অবমাননার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে কৃষ্ণসাগরীয় তীরবর্তী দেশ তুরস্কও। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থের ওপর জঘন্য এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে আঙ্কারা। একই সঙ্গে, এই বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধে নর্ডিক দেশটির প্রতি আহ্বানও জানায় তুরস্ক।   
২২ জুলাই, ২০২৩
X